অনলাইন শপিং বা অনলাইনে কেনাকাটার সঙ্গে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। আধুনিক শহুরে ব্যবস্থায় অনলাইন কেনাকাটা বা ই-কমার্স (e-commerce) পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ই-কমার্স এখন কেনাকাটার সহজ ও নিরাপদ মাধ্যম।
ই-কমার্স যতই সহজ পদ্ধতি হোক না কেন, অনলাইনে কেনাকাটার সময় আমাদের বিশেষভাবে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকা আবশ্যক। অনলাইনে কেনাকাটার সময় Think Before Click কথাটি মেনে চলার দিকে যদি লক্ষ্য রাখি, তাহলে আমরা প্রায় অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপদ থাকতে পারবো।
কারণ হ্যাকাররা আপনার প্রোফাইল হ্যাক করার জন্য প্রথমে যা করে তা হচ্ছে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং।একজন হ্যাকার যে কোনভাবে ভিক্টিমকে তার জালে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। আর এ জন্য সে ভিক্তটিমের দুর্বল দিকগুলো খুঁজে বের করে। সাধারণত একজন ভিক্টিম না বুঝে ভুল ক্লিকের মাধ্যমেই হ্যাকিং এর শিকার হয়ে থাকেন।
কিন্তু, প্রশ্ন হল, অনলাইনে আমাদের তথ্য ও লেনদেন নিরাপদ রাখব কীভাবে? অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে হ্যাকারদের হাতে চলে যাচ্ছে না তো আমাদের অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ড?
অনলাইনে কেনাকাটার ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে, যে ওয়েবসাইটে কেনাকাটা করছেন সেই সাইটটি কতটা বিশ্বস্ত এবং সাইটটি এনক্রিপটেড কিনা? ডেটা এনক্রিপশন পদ্ধতি অনুসরণ করে কিনা? যদি এনক্রিপটেড না হয়, তাহলে অর্থ লেনদেনে ঝুঁকি থেকেই যায়।
তো চলুন, জেনে নেই অনলাইনে কেনাকাটায় কীভাবে সতর্ক থাকবো ও নিরাপদ লেনদেন করবেন তার ১৩ টি উপায় ও সতর্কতা
১। আপনি যে ব্রাউজারটি ব্যবহার করছেন তা নিয়মিত আপডেটেড রাখুন।
২। এমন কোন ওয়েবসাইটে লেনদেন করবেন যে ওয়েবসাইট ডেটা এনক্রিপশন করে না। বা সহজে বলতে গেলে যেসব ওয়েবসাইটে HTTPS নেই। HTTP – এর শেষে S লেখাটি দেখে নিবেন।
৩। আপনার মেইলে পাঠানো লোভনীয় কোন ই-মেইল যাচাই-বাছাই ছাড়া ক্লিক করা ও লেনদেন করবেন না।
৪। লোভনীয় কোন পপ-আপে ক্লিক করা ও লেনদেন করা যাবে না।
৫। খ্যাতিসম্পন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠান ছাড়া লেনদেন না করাই ভালো।
৬। পাসওয়ার্ডে তৈরি করার ক্ষেত্রে নম্বর, সিম্বল, ছোট-বড় হাতের অক্ষর মিলিয়ে তৈরির চেষ্টা করবেন। যেমন PrIvaTi$%-y32o@ur
৭। পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে অনলাইনে কেনাকাটা না করাই ভালো। তবে চাইলে ইমারজেন্সিতে ভিপিএন ব্যবহার করে করতে পারেন।
৮। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে কেনাকাটা করা ভালো। কারণ, ডেবিট কার্ড আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত থাকে, আর ক্রেডিট কার্ডে নির্দিষ্ট একটা আমাউন্ট ব্যবহারের পর বিল পে না করে ব্যবহার করা যায় না।
৯। ফিশিং সাইট থেকে দূরে থাকুন, লেনদেন করার আগে ওয়েবসাইটটি ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুন।
১০। আপনি যে ওয়েবসাইটে লেনদেন করছেন তারা আপনার দেয়া ডেটাগুলো কতটুকু নিরাপদে রাখবে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
১১। ক্রেডিট কার্ড বিল ও ব্যাংক স্টেটমেন্টে লক্ষ্য রাখুন। খেয়াল করুন যে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ট্রানজেকশন আছে কি না। থাকলে তা ব্যাংককে রিপোর্ট করুন।
১২। নিজের ডিভাইসটিকে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাসমুক্ত রাখার জন্য ভাল একটি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। যাতে হ্যাকাররা আপনার ডিভাইস হ্যাক করে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক বা পেমেন্টের তথ্য নিতে না পারে।
১৩। কেনাকাটার পর সকল অনলাইন কোম্পানী থেকেই আপনি একটি ফেরত মেইল পাবেন, সেটি চেক করুন।
যেকোন ধরনের সাইবার ক্রাইম বা অনলাইনে আর্থিক প্রতারণার শিকার হলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। জরুরি পুলিশি সাহায্যের জন্য জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে (টোল ফ্রি) কল করুন।
Discussion about this post