৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ নমুনা ১ : হাবিব সোমবার সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছাল। সে রবিবার রাতের ট্রেনে তার বড়ো বোনের সাথে রাজশাহী থেকে রওনা দিয়েছিল। এই প্রথম সে ঢাকায় এসেছে। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বোনের বাসায় যাওয়ার পথে ফ্লাইওভার দেখে হাবিব অবাক হয়ে গেল। এটাকে তার মনে হলো দোতলা রাস্তা।
বোনের বাসার কাছে রাস্তার পাশে একটি ফুলের দোকান। সেখানে রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা-সহ নানা রকম ফুল থরে থরে সাজানো রয়েছে। তার ঠিক পাশেই একটা ফলের দোকান। সেখান থেকে বড়ো বোন কিছু পেয়ারা কিনল। ঘরে ঢোকার পর পরিবারের সবার সাথে কুশল বিনিময় হলো।
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ নমুনা ১
টেবিলে নাশতা দেওয়া ছিল। হাত-মুখ ধুয়ে সে নাশতা করতে বসল। সেদিন ছিল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেট খেলা। তাই খাওয়া শেষ করেই টেলিভিশনের সামনে গিয়ে বসল। ভ্রমণের কারণে হাবিবের কিছুটা ক্লান্তি ছিল, তবে সব মিলিয়ে তার খুব আনন্দ হচ্ছিল।
উপরের নমুনা থেকে নাম বোঝায় এমন শব্দ খুঁজে বের করো এবং নিচের খালি জায়গায় লেখো: (মূল বইয়ের ২০ নম্বর পৃষ্ঠা)
উত্তর: হাবিব, সোমবার, ঢাকায়, রবিবার, রাজশাহী, কমলাপুর, রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, পেয়ারা, বাংলাদেশ, ক্রিকেট।
বিশেষ্য (মূল বই থেকে)
বাক্যে যেসব শব্দ দিয়ে কোনো নাম বোঝায় সেগুলোকে বিশেষ্য বলে। অনেক রকম বিশেষ্য রয়েছে, যেমন-
- মানুষ, জায়গা ইত্যাদির নাম: রাসেল, ঢাকা, গীতাঞ্জলি।
- একই জাতের কাউকে বা কোনোটিকে বোঝায় এমন নাম: শিক্ষক, নদী, গাছ।
- কোনো জিনিসের নাম: ইট, চেয়ার, বই।
- একত্রে থাকা বোঝায় এমন নাম: জনতা, বাহিনী, মিছিল।
- কোনো পুণের নাম: সরলতা, মাধুর্য, দয়া।
- কোনো কাজের নাম: ভোজন, শয়ন, পড়ানো।
১. বিশেষ্য কাকে বলে?
উত্তর: বাংলা ব্যকরণ অনুযায়ী যে পদের দ্বারা কোনো বস্তু, প্রাণী, শ্রেণি, সমষ্টি, ভাব, কাজ ইত্যাদির নাম বোঝানো হয় তাকে বিশেষ্য বলে। এক কথায় বলা যায়: যে পদের দ্বারা যে কোনো কিছুর নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন-
বাংলাদেশ (দেশের নাম), রাজু (মানুষের নাম), ইলিশ (মাছের নাম), গোলাপ (ফুলের নাম), বুড়িগঙ্গা (নদীর নাম), আম (ফলের নাম), ডাক্তার (পেশার নাম), রিক্সা (যানের নাম)
২. বিশেষ্য কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: বিশেষ্য মোট ৬ প্রকার। নিচে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য: যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, ভৌগোলিক স্থান, গ্রন্থ ইত্যাদির নাম বা সংজ্ঞা প্রকাশ পায় তাকে নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন-
ক. ব্যক্তির নাম: নজরুল, ওমর, আনিস, মাইকেল
খ. ভৌগোলিক স্থানের নাম: ঢাকা, দিল্লি, লন্ডন, মক্কা
২. জাতিবাচক বিশেষ্য: যে পদ দ্বারা কোনো একজাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায় তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: মানুষ, গরু, পাখি, গাছ, পর্বত, নদী, ইংরেজ।
৩. বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য: যে পদে কোনো উপাদানবাচক পদার্থের নাম বোঝায় তাকে বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। এই জাতীয় বস্তুর সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। যেমন: বই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, মাটি, চাল, চিনি, লবণ, পানি।
৪. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য: যে পদে বেশ কিছু সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণির সমষ্টি বোঝায় তাই সমষ্টিবাচক বিশেষ্য। যেমন: সভা, জনতা, সমিতি, পঞ্চায়েত, মাহফিল, ঝাঁক, বহর, দল।
৫. ভাববাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয় তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: গমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ), দর্শন (দেখার কাজ)।
৬. গুণবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায় তাই গুণবাচক বিশেষ্য। যেমন: মধুর মিষ্টত্বের গুণ-মধুরতা, তরল দ্রব্যের গুণ-তারল্য।
পাঠ থেকে বিশেষ্য খুঁজি
“চিঠি বিলি ছড়া ও “সুখী মানুষ’ নাটক থেকে বিশেষ্য শব্দ খুঁজে বের করে তার একটি তালিকা তৈরি করো: (মূল বইয়ের ২১ নম্বর পৃষ্ঠা)
- ‘চিঠি বিলি’ থেকে পাওয়া: ছাতা, ব্যাঙ, চিঠি, খেয়া, মাঝি, চিংড়ি, মাছ, বিল, নদী, ভাই, ভেটকি, নাতনি, দেশ, কাতলা, বর্ষা।
- ‘সুখি মানুষ’ থেকে পাওয়া: মোড়ল, বিছানা, কবিরাজ, হাসু, মিয়া, চাকর, রহমত, আলী, নাড়ি, সুবর্ণপুর, গোরু, ধান, মানুষ, প্রাণী, ভাই, মনিব, বাঘ, হিমালয়, পাহার, সমুদ্র, চন্দ্র, নক্ষত্র, হাড়, শরবত, মুরগি, মাথা, রাত্রি, ফতুয়া, জামা, ওষুধ, দুনিয়া, মাছ, ভূত, বন, কাঠ, বাজার, চাল, ডাল, রাত, চোর, সোনা, জুতা, রাজা, বাদশা, ঘর।
অনুচ্ছেদ লিখে বিশেষ্য খুঁজি
কোনো একটি বিষয় নিয়ে ১০০ শব্দের মধ্যে একটি অনুচ্ছেদ লেখো। লেখা হয়ে গেলে বিশেষ্য শব্দগুলোর নিচে দাগ দাও: (মূল বইয়ের ২২ নম্বর পৃষ্ঠা)
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। এ ঋতুগুলো হচ্ছে- গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল, শরৎকাল, হেমন্তকাল, শীতকাল এবং বসন্তকাল। বিভিন্ন ঋতুতে আমাদের দেশ অপূর্ব সাজে সজ্জিত হয়। গ্রীষ্মকালে চারিদিকে খাঁখাঁ রোদ, শান্ত-স্নিগ্ধ বাতাস, পুকুরের শান্ত জল। বর্ষাকালে নদী ভরা জল, সারাদিন টাপুর-টুপুর বৃষ্টি। শরৎকালে ধবধবে সাদা কাশফুলের সমারোহ মন জুড়িয়ে দেয়। হেমন্তকালে ক্ষেতে পাকা ধান আর শীতে খেজুরের রস, নানা স্বাদের পিঠা। আর সবশেষে বসন্তে কোকিলের মিষ্টিমধুর গান। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের এ বাংলাদেশ যেন ঈশ্বরের হাতে তৈরি এক টুকরা স্বর্গ। বাংলাদেশে যে মাছগুলো পাওয়া যায়, তা স্বাদে এবং পুষ্টিগুণে অনন্য। বিশেষ করে বাংলাদেশের ইলিশ পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। আমি আমার দেশকে অনেক ভালোবাসি। আর দেশের প্রতিটি নাগরিকের উচিত দেশকে ভালোবাসা এবং দেশের প্রয়োজনে নিজেকে উৎসর্গ করা।
আরো দেখো: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ নমুনা ১ সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post