অবাক জলপান সুকুমার রায় : “অবাক জলপান” সুকুমার রায়ের রচিত একটি হাস্যরসাত্মক নাটিকা। নাটিকাটির কাহিনী একটি পথিকের তেষ্টার অভিজ্ঞতা নিয়ে গড়ে উঠেছে। পথিকটি সকালে হেঁটে আসছিল এবং তেষ্টা পেয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে জল চাইতে থাকে। প্রথমে সে এক ঝুড়িওয়ালা, তারপর এক বৃদ্ধ এবং পরিশেষে তার মামাকে জিজ্ঞেস করে।
প্রতিটি চরিত্রই অদ্ভুতভাবে কথোপকথন করে, যা পথিকের সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে। সুকুমার রায় এই নাটিকায় মানুষের অদ্ভুত আচরণ, বাতিক এবং সমাজের নানা দৃষ্টিভঙ্গির উপহাস করেছেন। এছাড়া, তিনি চরিত্রগুলির মধ্য দিয়ে হাস্যরস এবং ব্যঙ্গের মাধ্যমে জীবনের দৈনন্দিন সমস্যাগুলিকে তুলে ধরেছেন।
অবাক জলপান সুকুমার রায়
শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় ৩০ শে অক্টোবর ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটদের জন্য হাসির গল্প ও কবিতা লিখেছেন। ‘আবোল-তাবোল’, ‘হ-য-ব-র-ল’, ‘পাগলা দাশু’, ‘বহুরূপী’, ‘খাইখাই’, ‘অবাক জলপান’ তাঁর অমর সৃষ্টি। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীও শিশুসাহিত্যিক ছিলেন, আর পুত্র সত্যজিৎ রায় বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনিও শিশু-কিশোরদের জন্য প্রচুর লিখেছেন। ১০ই সেপ্টেম্বর ১৯২৩ সালে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন।
অবাক জলপান নাটিকা’র শুরু এখানে
পাত্রগণ : পথিক | বুড়িওয়ালা | কৃষক | ছোকরা | খোকা | মামা
প্রথম দৃশ্য : রাজপথ
(ছাতা মাথায় এক পথিকের প্রবেশ। পিঠে লাঠির আগায় লোটা-বাঁধা পুঁটলি। উষ্কখুষ্ক চুল। প্রান্ত চেহারা)
পথিক: নাঃ, একটু জল না পেলে আর চলছে না। সেই সকাল থেকে হেঁটে আসছি, এখনও প্রায় এক ঘণ্টার পথ বাকি। তেষ্টায় মগজের ঘিলু পর্যন্ত শুকিয়ে উঠল। কিন্তু জল চাই কার কাছে?
গেরস্তর বাড়ি, দুপুর রোদে দরজা এঁটে সব ঘুম দিচ্ছে, ডাকলে সাড়া দেয় না। বেশি চ্যাঁচাতে গেলে হয়তো লাঠি নিয়ে তেড়ে আসবে। পথেও লোকজন দেখছি নে। ওই একজন আসছে! ওকেই জিজ্ঞেস করা যাক।
[ঝুড়ি মাথায় এক ব্যক্তির প্রবেশ।
পথিক : মশাই, একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন?
ঝুড়িওয়ালা: জলপাই? জলপাই এখন কোথায় পাবেন? এ তো জলপাইয়ের সময় নয়। কাঁচা আম চান তো দিতে পারি-
পথিক : না না, আমি তা বলিনি –
ঝুড়িওয়ালা: না, কাঁচা আম আপনি বলেননি, কিন্তু জলপাই চাচ্ছিলেন কিনা, তা তো আর এখন পাওয়া যাবে না, তাই বলছিলুম
পথিক: না হে, আমি জলপাই চাচ্ছিনে-
ঝুড়িওয়ালা: চাচ্ছেন না তো, ‘কোথায় পাব’ ‘কোথায় পাব’ কচ্ছেন কেন? খামাখা এরকম করবার মানে কী?
পথিক : আপনি ভুল বুঝছেন- আমি জল চাচ্ছিলাম-
ঝুড়িওয়ালা: জল চাচ্ছেন তো ‘জল’ বললেই হয়- ‘জলপাই’ বলবার দরকার কী? জল আর জলপাই কি এক হলো? আলু আর আলুবোখারা কি সমান? মাছও যা আর মাছরাঙ্গাও তাই? বরকে কি আপনি বরকন্দাজ বলেন? চাল কিনতে গিয়ে কি চালতার খোঁজ করেন?
পথিক : ঘাট হয়েছে মশাই। আপনার সঙ্গে কথা বলাই আমার অন্যায় হয়েছে।
ঝুড়িওয়ালা: অন্যায় তো হয়েছেই। দেখছেন ঝুড়ি নিয়ে যাচ্ছি- তবে জল চাচ্ছেন কেন? ঝুড়িতে করে কি জল নেয়? লোকের সঙ্গে কথা কইতে গেলে একটু বিবেচনা করে বলতে হয়।
[ঝুড়িওয়ালার প্রস্থান]
পথিক: দেখলে! কী কথায় কী বানিয়ে ফেলল! যাক, ঐ বুড়ো আসছে, ওকে একবার বলে দেখি।
[লাঠি হাতে, চটি পায়ে, চাদর গায়ে এক বৃদ্ধের প্রবেশ।
বৃদ্ধ: কে ও? গোপলা নাকি?
পথিক: আজ্ঞে না, আমি পুবগাঁয়ের লোক একটু জলের খোঁজ কচ্ছিলুম-
বৃদ্ধ: বল কিহে? পুবগাঁও ছেড়ে এখেনে এয়েছ জলের খোঁজ করতে?-হাঃ, হাঃ, হাঃ। অবাক জলপান সুকুমার রায় তা, যাই বল বাপু, অমন জল কিন্তু কোথাও পাবে না। খাসা জল, তোফা জল, চমৎকার জল।
পথিক: আজে হাঁ, সেই সকাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে বেজায় তেষ্টা পেয়ে গেছে।
বৃদ্ধ: তা ত পাবেই। ভালো জল যদি হয়, তা দেখলে তেষ্টা পায়, নাম করলে তেষ্টা পায়, ভাবতে গেলে তেষ্টা পায়। তেমন জল ত খাওনি কখনো! বলি ঘুমড়ির জল খেয়েছ কোনোদিন?
পথিক: আজ্ঞে না, তা খাইনি-
বৃদ্ধ: খাওনি? অ্যাঃ। ঘুমড়ি হচ্ছে আমার মামাবাড়ি আদত জলের জায়গা। সেখানকার যে জল, সে কি বলব তোমায়? কত জল খেলাম-কলের জল, নদীর জল, ঝরনার জল, পুকুরের জল-কিন্তু মামাবাড়ির কুয়োর যে জল, অমনটি আর কোথাও খেলাম না। ঠিক যেন চিনির পানা, ঠিক যেন ক্যাওড়া-দেওয়া সরবৎ!
পথিক: তা মশাই, আপনার জল আপনি মাথায় করে রাখুন- আপাতত এখন এই তেষ্টার সময়, যা হয় একটু জল আমার গলায় পড়লেই চলবে-
বৃদ্ধ: তাহলে বাপু তোমার গাঁয়ে বসে জল খেলেই ত পারতে? পাঁচ ক্রোশ পথ হেঁটে জল খেতে আসবার দরকার কি ছিল? ‘যা হয় একটা হলেই হল’ও আবার কি রকম কথা? আর অমন তাচ্ছিল্য করে বলবারই বা দরকার কি? আমাদের জল পছন্দ না হয়, খেওনা-ব্যস্। গায়ে পড়ে নিন্দে করবার দরকার কি? আমি ওরকম ভালোবাসিনে। হ্যাঁঃ-
[রাগে গজগজ করিতে করিতে বৃদ্ধের প্রস্থান।
[পাশের বাড়ির জানালা খুলিয়া এক বৃদ্ধের হাসিমুখ বাহিরকরণ।
বৃদ্ধ: কী হে? এত তর্কাতর্কি কিসের?
পথিক: আজ্ঞে না, তর্ক নয়। আমি জল চাচ্ছিলুম, তা উনি সে কথা কানেই নেন না-কেবলই সাত-পাঁচ গল্পো করতে লেগেছেন। তাই বলতে গেলুম তো রেগেমেগে অস্থির।
বৃদ্ধ: আরে দূর দূর। তুমিও যেমন। জিজ্ঞেস করবার আর লোক পাওনি? ও হতভাগা জানেই বা কী আর বলবেই বা কী? ওর যে দাদা আছে, খালিসপুরে চাকরি করে। সেটা তো একটা আস্ত গাধা। ও মুখ্যুটা কী বলল তোমায়?
পথিক: কী জানি মশাই- জলের কথা বলতেই কুয়োর জল, নদীর জল, পুকুরের জল, কলের জল, মামাবাড়ির জল বলে পাঁচ রকম ফর্দ শুনিয়ে দিলে-
বৃদ্ধ: হুঁঃ – ভাবলে খুব বাহাদুরি করেছি। তোমায় বোকামতো দেখে খুব চাল চেলে নিয়েছে। ভারি তো ফর্দ করেছেন, আমি লিখে দিতে পারি, ও যদি পাঁচটা জল বলে থাকে তো আমি এক্ষুণি পঁচিশটা বলে দেব-
পথিক: আজ্ঞে হ্যাঁ। কিন্তু আমি বলছিলুম কি একটু খাবার জল-
বৃদ্ধ: কী বলছ? বিশ্বাস হচ্ছে না? আচ্ছা শুনে যাও। বিষ্টির জল, ডাবের জল, নাকের জল, চোখের জল, জিবের জল, হুঁকোর জল, ফটিক জল, রোদে ঘেমে জ-ল, আহ্লাদে গলে জ-ল, গায়ের রক্ত জ-ল, বুঝিয়ে দিলে যেন জ-ল- কটা হয়? গোনোনি বুঝি?
পথিক: না মশাই, গুনিনি-আমার খেয়েদেয়ে কাজ নেই-
বৃদ্ধ: তোমার কাজ না থাকলেও আমার কাজ থাকতে পারে তো? যাও, যাও, মেলা বকিয়ো না- একেবারে অপদার্থের একশেষ।। বৃদ্ধের সশব্দে জানালা বন্ধকরণ।
[নেপথ্যে বাড়ির ভিতরে বালকের পাঠ।
[পৃথিবীর তিন ভাগ জল এক ভাগ স্থল। সমুদ্রের জল লবণাক্ত, অতি বিস্বাদ।]
পথিক: ওহে খোকা। এদিকে শুনে যাও তো?
ব্রিক্ষমূর্তি, মাথায় টাক, লম্বা দাড়ি খোকার মামা বাড়ি হইতে বাহির হইলেন।
মামা: কে হে? পড়ার সময় ডাকাডাকি করতে এয়েছ? (পথিককে দেখিয়া) ও! আমি মনে করেছিলুম পাড়ার কোনও ছোকরা বুঝি। আপনার কী দরকার?
পথিক: আজ্ঞে, জলতেষ্টায় বড় কষ্ট পাচ্ছি-তা একটু জলের খবর কেউ বলতে পারলে না।
[মামার তাড়াতাড়ি ঘরের দরজা খুলিয়া দেওয়া।]
মামা: কেউ বলতে পারলে না? আসুন, আসুন, কী খবর চান, কী জানতে চান, বলুন দেখি? সব আমায় জিজ্ঞেস করুন, আমি বলে দিচ্ছি।
[পথিককে মামার ঘরে টানিয়া নেওয়া।]
দ্বিতীয় দৃশ্য : ঘরের ভিতর
[ঘর নানা রকম যন্ত্র, নকশা, রাশি রাশি বই ইত্যাদিতে সজ্জিত।
মামা: কী বলছিলেন? জলের কথা জিজ্ঞেস করছিলেন না?
পথিক: আজ্ঞে হ্যাঁ, সেই সকাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে আসছি!
মামা: আহা হা! কী উৎসাহ, কী আগ্রহ! শুনেও সুখ হয়। এরকম জানবার আকাঙ্ক্ষা ক-জনের আছে, বলুন তো? বসুন! বসুন। (কতকগুলি ছবি, বই আর এক টুকরো খড়ি বাহির করিয়া) জলের কথা জানতে গেলে প্রথমে জানা দরকার, জল কাকে বলে, জলের কী গুণ –
পথিক: আজ্ঞে, একটু খাবার জল যদি-
মামা: আসছে ব্যস্ত হবেন না। একে একে সব কথা আসবে। জল হচ্ছে দুইভাগ হাইড্রোজেন আর একভাগ অক্সিজেন।
পথিক: এই মাটি করেছে!
মামা: বুঝলেন? রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জলকে বিশ্লেষণ করলে হয়-হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন। আর হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনের রাসায়নিক সংযোগ হলেই, হবে জল! শুনছেন তো?
পথিক: দেখুন মশাই। কী করে যে কথাটা আপনাদের মাথায় ঢোকাব তাতো ভেবে পাইনে। বলি, বারবার করে যে বলছি তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল, সেটা তো কেউ কানে নিচ্ছেন না দেখি। একটা লোক তেষ্টায় জল জল করছে, তবু জল খেতে পায় না, এরকম কোথাও শুনেছেন?
মামা: শুনেছি বইকি, চোখে দেখেছি। বদ্যিনাথকে কুকুরে কামড়াল, বদ্যিনাথের হলো হাইড্রোফোবিয়া- যাকে বলে জলাতঙ্ক। আর জল খেতে পারে না-যেই জল খেতে যায় অমনি গলায় খিঁচ ধরে। মহা মুশকিল।
পথিক: নাঃ-এদের সঙ্গে পেরে ওঠা গেল না কেনই মরতে এসেছিলাম এখানে? বলি মশাই, আপনার এখানে নোংরা জল আর দুর্গন্ধ জল ছাড়া ভালো খাঁটি জল কিছু নেই?
মামা: আছে বইকি। এই দেখুন না বোতল-ভরা খাঁটি টাটকা ডিস্টিল ওয়াটার-যাকে বলে পরিপ্লুত জল।
বড় সবুজ একটি বোতল আনিয়া মামা পথিককে দেখাইলেন।
পথিক : (ব্যস্ত হইয়া) এ জল কি খায়?
মামা : না, ও জল খায় না, ওতে তো স্বাদ নেই- একেবারে অবাক জলপান সুকুমার রায় বোবা জল কিনা, এইমাত্র তৈরি করে আনল-এখনও গরম রয়েছে।
[পথিকের হতাশ ভাব।
তারপর যা বলছিলুম শুনুন- এই যে দেখছেন গন্ধওয়ালা নোংরা জল-এর মধ্যে দেখুন এই গোলাপি জল ঢেলে দিলুম- ব্যস, গোলাপি রং উড়ে সাদা হয়ে গেল। দেখলেন তো?
পথিক :না মশাই, কিচ্ছু দেখিনি, কিচ্ছু বুঝতে পারিনি, কিচ্ছু মানি না ও কিচ্ছু বিশ্বাস করি না।
মামা: কী বললেন। আমার কথা বিশ্বাস করেন না?
পথিক: না, করি না। আমি যা চাই, তা যতক্ষণ দেখাতে না পারবেন, ততক্ষণ কিচ্ছু শুনব না, কিছু বিশ্বাস করব না।
মামা: বটে, কোনটা দেখতে চান একবার বলুন দেখি- আমি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি।
পথিক: তা হলে দেখান দেখি। সাদা, খাঁটি চমৎকার এক গেলাস খাবার জল নিয়ে দেখান দেখি। যাতে গন্ধ পোকা নেই, কলেরার পোকা নেই, ময়লা-টয়লা কিচ্ছু নেই, তা দিয়ে পরীক্ষা করে দেখান দেখি। খুব বড় এক গেলাস ভর্তি জল নিয়ে দেখান তো!
মামা: এক্ষুণি দেখিয়ে দিচ্ছি- ওরে ট্যাপা, দৌড়ে আমার কুঁজো থেকে এক গেলাস জল নিয়ে আয় তো।
[পাশের ঘরে দুপদাপ শব্দে খোকার দৌড়া
নিয়ে আসুক, তারপর দেখিয়ে দিচ্ছি। ওই জলে কী রকম হয়, আর নোংরা জলে কী রকম তফাত হয়, আমি সব এক্সপেরিমেন্ট করে দেখিয়ে দিচ্ছি।
[জল লইয়া ট্যাপার প্রবেশ।
এই খানে রাখ।
[জল রাখিবামাত্র পথিকের আক্রমণ-মামার হাত হইতে জল কাড়িয়া এক নিঃশ্বাসে চুমুক দিয়া শেষ করা।
পথিক: আঃ! বাঁচা গেল!
মামা: (চটিয়া) এটা কী রকম হলো মশাই?
পথিক : পরীক্ষা হলো এক্সপেরিমেন্ট। এবার আপনি নোংরা জলটা একবার খেয়ে দেখান তো, কীরকম হয়?
মামা: (ভীষণ রাগিয়া) কী বললেন?
পথিক: আচ্ছা থাক, এখন নাই বা খেলেন পরে খাবেন। আর গাঁয়ের মধ্যে আপনার মতো আনকোরা পাগল আর যতগুলো আছে, সবকটাকে খানিকটা করে খাইয়ে দেবেন। তারপর খাটিয়া তুলবার দরকার হলে আমায় খবর দেবেন আমি খুশি হয়ে ছুটে আসব, হতভাগা জোচ্চোর কোথাকার।
[পথিকের দ্রুত প্রস্থান।
[পাশের গলিতে সুর করিয়া হাঁকিতে লাগিল ‘অবাক জলপান’।
এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজ
১. নাটিকাটির মূলভাব জেনে নিই।
সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান’ একটি নাটিকা। ছোট্ট নাটককে নাটিকা বলে। এতে একটি গল্প বলা হয়েছে। ‘অবাক জলপান’ নাটিকার কাহিনি হচ্ছে-ভীষণ তৃষ্ণার্ত একটি লোক তেষ্টায় নানান জনের কাছে গিয়ে জল চাইছে, কিন্তু কেউ তাকে জল দিচ্ছে না।
বরং তার কথা বলার মধ্যে নানারকম খুঁত ধরছে। শেষ পর্যন্ত বেশ বুদ্ধি খাটিয়ে ফন্দি এঁটে এক বিজ্ঞানীর নিকট থেকে সে জল আদায় করল। অনেক সময় আমরা অপরের কথা বুঝতে ভুল করি। এই নাটিকায় তা মজা করে দেখানো হয়েছে।
২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
গেরস্ত, বরকন্দাজ, তেষ্টা, খাটিয়া, এক্সপেরিমেন্ট, রুক্ষমূর্তি
৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
গেরস্ত, বরকন্দাজ, এক্সপেরিমেন্ট, তেষ্টায়, রুক্ষমূর্তি, খাটিয়ার
ক. ______বাড়ি, দুপুর রোদে দরজা এঁটে সব ঘুম দিচ্ছে।
খ. বরকে কি আপনি ______ বলেন?
গ. একটা লোক ______ জল জল করছে, তবু জল খেতে পায় না।
ঘ. পথিক ক্লান্ত হয়ে অবশেষে ______ ওপর বসে পড়ল।
ঙ. নোংরা জলের ভিতর কী আছে তা ______ করে বলা যাবে।
চ. ______ লোকটিকে দেখলেই ভয় লাগে।
৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক. ‘বোবা জল’ বলতে কী বোঝায়?
খ. ‘জলাতঙ্ক’ কাকে বলে?
গ. জলের তেষ্টায় পথিকের মন ও শরীরের অবস্থা কী হয়েছিল? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মনে করো এই পথিকের সঙ্গে তুমি কথা বলছ। তোমাদের দুজনের কথোপকথন কেমন হতে পারে তা নিজের ভাষায় লেখো।
ঙ. পথিককে এক বৃদ্ধ কত রকম জলের কথা শুনিয়েছিল? নামগুলো লেখো।
চ. তুমি তোমার সহপাঠীর সাথে আলোচনা করে ইচ্ছেমতো একটি নাটিকা লেখো।
৫. কর্ম-অনুশীলন
শিক্ষকের সহায়তায় নাটিকাটি শ্রেণিকক্ষে অভিনয় করি।
◉ আরও দেখুন: পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ের সকল গল্প-কবিতার সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা মূল বই থেকে অবাক জলপান সুকুমার রায় নাটিকাটি আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজগুলোর সমাধান পেতে উপরের উত্তরমালা অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত বেশকিছু প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে।
Discussion about this post