অর্থনীতি ১ম পত্র ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে। সাধারণত অন্যান্য অবস্থা স্থির রেখে অর্থের মূল্য হ্রাস করা হলে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পায় এবং অর্থের যোগান বৃদ্ধি পেলে দ্রব্যসামগ্রীর দামস্তর বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ অর্থের মূল্য অর্ধেক করা হলে অর্থের যোগান দ্বিগুণ হবে। আর অর্থের যোগান ও দ্রব্যসামগ্রীর দামস্তরও দ্বিগুণ হবে। কাজেই বলা যায়, অর্থের মূল্য ও দ্রব্যমূল্যের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দামস্তর বাড়বে।
অর্থনীতি ১ম পত্র ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১: ‘ক’ দেশটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লাগামহীন ঋণ প্রদান কার্যক্রম সম্প্রসারণের ফলে সাম্প্রতিককালে দ্রব্যমূল্যের ওপর বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ফলশ্রুতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজার নীতি ও ব্যাংক হার পরিবর্তনের নীতি গ্রহণ করে।
ক. মুদ্রার চাহিদা কাকে বলে?
খ. অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দ্রব্যমূল্যের কীরূপ পরিবর্তন হবে? ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘ক’ দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টির পিছনে বাণিজ্যিক ব্যাংকই দায়ী- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত নীতি দুটি কীভাবে কার্যকরী হবে তা বিশ্লেষণ করো।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময়ে দেশের জনগণ বিভিন্ন প্রয়োজনে যে পরিমাণ নগদ মুদ্রা হাতে ধরে রাখতে চায় তাকে মুদ্রার চাহিদা বলে।
খ. অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে।
সাধারণত অন্যান্য অবস্থা স্থির রেখে অর্থের মূল্য হ্রাস করা হলে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পায় এবং অর্থের যোগান বৃদ্ধি পেলে দ্রব্যসামগ্রীর দামস্তর বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ অর্থের মূল্য অর্ধেক করা হলে অর্থের যোগান দ্বিগুণ হবে। আর অর্থের যোগান ও দ্রব্যসামগ্রীর দামস্তরও দ্বিগুণ হবে। কাজেই বলা যায়, অর্থের মূল্য ও দ্রব্যমূল্যের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দামস্তর বাড়বে।
গ. ‘ক’ দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টির পিছনে বাণিজ্যিক ব্যাংকই দায়ী।
ফিশারের বিনিময় সমীকরণ হতে জানা, অর্থের যোগানের সাথে দ্রব্যসামগ্রীর দামস্তর সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান। অর্থাৎ অর্থের যোগান বাড়লে দামস্তর বাড়বে। যেখানে অর্থের যোগান হলো প্রচলিত নোট বা ধাতব মুদ্রা এবং ব্যাংক সৃষ্ট মুদ্রা যেমন- চেক, বিনিময় বিল, ঋণপত্র ইত্যাদির সমষ্টি।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, ‘ক’ দেশটিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো লাগামহীন ঋণ প্রদান কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে। অর্থাৎ দেশটিতে ব্যাংক সৃষ্ট মুদ্রা তথা ঋণ এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে দেশটির মুদ্রা মোট যোগান বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রব্যসামগ্রীর দামস্তর বৃদ্ধি পেযেছে। তথা মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। সুতরাং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লাগামহীন ঋণ প্রদান কার্যক্রমের ফলে ‘ক’ দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত ‘ক’ দেশটির মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খোলা বাজার নীতি ও ব্যাংক হার পরিবর্তনের নীতি গ্রহণ করলে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাবে।
কোনো দেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মুদ্রার যোগান নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক। তাই মুদ্রাস্ফীতির মতো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলা বাজার নীতি ও ব্যাংক হার পরিবর্তন নীতি অনুসারে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ প্রদান ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক সৃষ্ট ঋণ মুদ্রা যোগানের অন্যতম অংশ হওয়ায় ব্যাংক হার বাড়ানো হলে ‘ক’ দেশটিতে অর্থের যোগান হ্রাস পাবে। ফলে দামস্তর হ্রাস পাবে। আবার খোলা বাজারে সরাসরি ঋণ পত্র বিক্রয় করলে ক্রেতারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাদের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চেক কেটে ঋণ পত্রের মূল্য পরিশোধ করে। আর কেন্দীয় ব্যাংক এই চেকের অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গচ্ছিত আমানত থেকে আদায় করে। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ প্রদানের ক্ষমতা হ্রাস পায়। তথা দেশটিতে অর্থের যোগান হ্রাসের মাধ্যমে দামস্তর হ্রাস পায়।
কাজেই বলা যায়, ‘ক’ দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খোলা বাজার ও ব্যাংক হার পরিবর্তন নীতি যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২: ‘ক’ দেশের বিহিত মুদ্রার পরিমাণ ৫০০০, ব্যাংক সৃষ্ট মুদ্রা ৩০০০, উভয় মুদ্রার প্রচলন গতি ৪, ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য দ্রব্যসামগ্রীর পরিমাণ ৪০০০। সময়ের পরিবর্তনে ‘ক’ দেশের বিহিত মুদ্রা ও ব্যাংক সৃষ্ট মুদ্রার যোগান দ্বিগুণ হলো।
ক. বাণিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে?
খ. ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ কে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলা হয় কেন?
গ. ফিশারের বিনিময় সমীকরণের আলোকে উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্যের ভিক্তিতে দামস্তর নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে অর্থের যোগান ও অর্থের মূল্যের বিপরীত সম্পর্ক আরভিং ফিশারের অর্থের পরিমাণ তত্ত্বের ভিক্তিতে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: মি. ‘ক’ একজন অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক। তিনি শ্রেণি কক্ষে মুদ্রার মূল্য ও দামস্তরের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে একজন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ এর বক্তব্য পেশ করেন। বক্তব্যটি হলো: মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা ও দামস্তর বিপরীতভাবে সম্পর্কযুক্ত। মুদ্রার পরিমাণ দ্বিগুণ হলে দ্রব্যের দামস্তর দ্বিগুণ হয় কিন্তু মূল্য অর্ধেক হয়।
ক. বিহিত মুদ্রা কী?
খ. ব্যাংক হার কীভাবে মুদ্রার যোগানকে প্রভাবিত করে?
গ. উদ্দীপকের উল্লেখিত বক্তব্যটির সাথে সম্পর্কিত তত্ত্বটি আলোচনা করো।
ঘ. উদ্দীপক অনুযায়ী মুদ্রার পরিমাপ চারগুণ হলে মুদ্রার মূল্য কত হবে? গাণিতিক উদাহারণের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: মি. করিম একটি ব্যাংকে চাকরি করেন যাকে মুদ্রা বাজারের অভিভাবক বলা হয়। ব্যাংকটি নোট প্রচলনের একচেটিয়া অধিকার ভোগ করে। তার ভাই মি. সালাম অপর একটি ব্যাংকে চাকরি করেন যা জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে এবং স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি ঋণদান করে।
ক. অর্থের মূল্য কাকে বলে?
খ. মুদ্রা কী শুধু বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবেই কাজ করে?
গ. মি. করিম ও মি. সালাম কোন ধরনের ব্যাংকে কাজ করেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মি. করিমের ব্যাংকের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আলোচনা করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: অর্থনীতিবিদ আরভিং ফিশারের অর্থের পরিমাণ তত্ত্বে, M = 100, V = 5, T = 10
এখানে, M = বিহিত মুদ্রা, T = লেনদেনের পরিমাণ এবং V = প্রচলন গতি।
ক. অর্থ কী?
খ. জনগণের আয় বৃদ্ধি পেলে অর্থের চাহিদা হ্রাস পায়-ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত তথ্যের ভিক্তিতে দামস্তর নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকে M এর মান ২০০ হলে অর্থের ওপর কী প্রভাব পড়বে? বিশ্লেষণ করো।
◉ আরও দেখো: অর্থনীতি ১ম ও ২য় পত্র সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতি ১ম পত্র ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে মোট ৫টি প্রশ্ন উত্তর আমরা তোমাদের জন্য তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। সবগুলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post