বাংলা ব্যকরণের নতুন একটি টপিক অষ্টম শ্রেণি অনুধাবন শক্তি নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করবো। এই পোস্টে আমরা অনুধাবন শক্তি কি, কীভাবে লেখে এবং এর কয়েকটি উদাহরণ দেখবো।
অনুধাবন শক্তি কী?
লিখিত যে কোনো বিষয়ে কোনো না কোনো মানুষ পাঠ করে থাকে। কিন্তু যে অংশটুকু পড়ে তার মূলভাব সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে তাকে বলা হয় তার অনুধাবন দক্ষতা। একটি পাঠে কিছু শব্দ থাকে, কিছু নতুন বিষয় থাকতে পারে যার অর্থ বা ধারণা জানা না থাকলে পাঠটির পূর্ণ ধারণা লাভ সহজ হয় না।
তাই একটি পাঠ সম্পূর্ণরূপে বুঝতে হলে পাঠ সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ও জানতে এবং বুঝতে হয়। আবার তা কেবল মুখস্ত করলে সেটি বেশিদিন মনে নাও থাকতে পারে। সেই জানা জ্ঞান অন্য কোনো পাঠের সাথে বা জ্ঞানের সাথে মেলাতে পারার ক্ষমতাও থাকতে হয়। এ ভাবেই অনুধাবন দক্ষতা পরিপূর্ণভাবে অর্জিত হয়।
অষ্টম শ্রেণি অনুধাবন শক্তি
১. নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নকশিকাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ লুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাঁদের মনের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন। কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের লুকিয়ে আছে এক একটি পরিবারের কাহিনি, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাথা।
আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে। খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত।
i. ‘গ্রামীণ’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
ii. ‘আধুনিক’ শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ কী?
ii. ‘অনুপ্রেরণা’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ লেখ।
iv. লোকশিল্প কী?
v. নকশিকাঁথার নকশাগুলো সংগ্রহ করা হতো কোথা থেকে?
উত্তর :
i. ‘গ্রামীণ’ শব্দের বিপরীত শব্দ ‘শহুরে’।
ii. ‘আধুনিক’ শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ ‘আধুনিকা’।
iii. ‘অনুপ্রেরণা’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হচ্ছে উৎসাহ ও উদ্দীপনা।
iv. দেশি জিনিস দিয়ে দেশের মানুষের হাতে তৈরি শিল্পসম্মত দ্রব্যকে লোকশিল্প বলে। যেমন- মাটির পুতুল আমাদের গ্রামীণ লোকশিল্প।
v. নকশিকাঁথার নকশাগুলো সংগ্রহ করা হতো গ্রামীণ আপন পরিবেশ থেকে। নকশিকাঁথার শিল্পীদের জীবনবাস্তবতার প্রতিফলন ঘটে নকশাগুলোতে।
২. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
দুঃখ চোখে জল হয়ে দেখা দেয়। চোখের পাতায় দুঃখ টলমল করে এক ফোঁটা জল হয়ে। শহিদ মিনারের দিকে তাকালে মনে হয় মুক্তোর মতো; কিন্তু তা দুঃখের মুক্তো। শহিদ মিনারও সুন্দর, কিন্তু অনেক বেদনার। অনেক দীর্ঘশ্বাসের। কার চোখে টলমল করছে ওই জলের ফোঁটা, ওই দুঃখে নীরবে কাঁদছে সবুজ বাংলাদেশ, তার চোখে টলমল করছে কানড়বা। শহিদ মিনার বাংলাদেশের চোখের জল।
ক. ‘নীরব’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
খ. শহিদ মিনার বেদনার কেন?
গ. ‘দুঃখ’-এর দু’টি প্রতিশব্দ লেখ।
ঘ. শহিদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের মধ্যে চেতনাগত সাদৃশ্য উল্লেখ করো।
উত্তর :
ক. ‘নীরব’ শব্দের বিপরীত শব্দ ‘সরব’।
খ. শহিদ মিনারের সাথে আমাদের ভাই হারানোর বেদনার স্মৃতি জড়িত। তাই শহিদ মিনার বেদনার।
১৯৫২ সালে ভাষা-আন্দোলনে পাকিস্তান সরকারের পুলিশের গুলিতে নৃশংস হত্যার শিকার হন- সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ নাম না জানা আরও অনেকে। তাঁদের সেই মহান আত্মত্যাগের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় শহিদ মিনার। ভাই হারানোর স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় বলে শহিদ মিনার বেদনার।
গ. ‘দুঃখ’-এর দুটি প্রতিশব্দ হলো- কষ্ট ও বেদনা।
ঘ. শহিদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ উভয়ই আমাদের জাতীয় প্রতীক।
শহিদ মিনার আমাদের মনে করিয়ে দেয় ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন ও সেই আন্দোলনের শহিদদের কথা। আর স্মৃতিসৌধ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি মাতৃভাষার অধিকার। আর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন স্বদেশভূমি। তাই উভয় স্থাপত্যই আমাদের মনে দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়ে তোলে।
৩. নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সৌভাগ্য আকাশ থেকে পড়ে না। জীবনে সৌভাগ্য অর্জনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও নিরন্তর সাধনার দরকার হয়। সব মানুষের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। পরিশ্রমের দ্বারা সেই সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে হয়।
যে মানুষ কর্মকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছে, জীবন সংগ্রামে তারই জয় হয়েছে। কর্মের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি জীবনে সফল সৈনিক হতে পারে। কর্মহীন ব্যক্তি সমাজের বোঝাস্বরূপ। অন্যদিকে, শ্রমশীলতাই মানব জীবনের সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। আমাদের জীবনে উন্নতি করতে হলে, জীবনে সুখী হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
i. ‘সৌভাগ্য’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
ii. সৌভাগ্য অর্জনের জন্য কী করতে হয়?
iii. কে সমাজের বোঝা?
iv. জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে হলে কিসের প্রয়োজন?
উত্তর :
i. ‘সৌভাগ্য’ শব্দের বিপরীত শব্দ হচ্ছে ‘দুর্ভাগ্য’।
ii. সৌভাগ্য অর্জনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও নিরন্তর সাধনা করতে হয়।
iii. কর্মহীন ব্যক্তি সমাজের বোঝা।
iv. জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে হলে কর্মকাকে জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। পরিশ্রমই উন্নতির মূল চাবিকাঠি। কর্মের প্রতি একনিষ্ঠ ব্যক্তিগণই জীবন সংগ্রামে সফল হয়েছেন।
৪. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সুন্দরকে জানার যে জ্ঞান তার নাম ‘নন্দনতত্ত্ব’। নন্দনতত্ত্ব মানে সুন্দরকে বিশ্লেষণ করা, সুন্দরকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা। সব সুন্দরের সৃষ্টির মধ্যেই একটা রূপ আছে, তার নাম স্বাধীনতা- অপর নাম যা খুশি তাই করা। যে কাজ সকলকে আনন্দ দেয়, খুশি করে তাই সুন্দর। স্বার্থপর বা অসংগত আমির খুশি নয়, অনেক মনে খুশির বিস্তার করা আমি। অন্ধকার ঘর আলোকিত করার জন্যে নিয়ম মেনে প্রদীপ জ্বালতে হয়, ঘরে অসংগত আগুন লাগিয়ে ঘর আলোকিত করা নয়।
i. ‘আগুন’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ লেখ।
ii. সুন্দর-এর বিপরীত শব্দ লেখ।
iii. সুন্দরকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার নাম কী?
iv. অন্ধকার ঘরে কীভাবে আগুন জ্বালাতে হবে?
v. অনুচ্ছেদে ‘স্বাধীনতা’ কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর :
i. ‘আগুন’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হলো অগিড়ব ও হুতাশন।
ii. সুন্দর-এর বিপরীত শব্দ হলো কুৎসিত।
iii. সুন্দরকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার নাম নন্দনতত্ত্ব।
iv. অন্ধকার ঘরে নিয়ম মেনে আগুন জ্বালাতে হবে। সারা ঘরে যথেচ্ছভাবে আগুন না জ্বালিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে হবে।
iv. অনুচ্ছেদে স্বাধীনতা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মনের আনন্দ প্রকাশ করা অর্থে। সুন্দর সৃষ্টির জন্য মানুষ নানা শিল্পমাধ্যম বেছে নেয়। সে মাধ্যমগুলোতে মনের স্বাধীনতা বা আনন্দের প্রকাশ ঘটে।
অষ্টম শ্রেণি অনুধাবন শক্তি
৫. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
দিনদিন চাষের জমি-জমা কমছে। বন-টন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। মাঠে-মাঠে ফসল নেই। বনে-বনে জীবজন্তু নেই। বছর-বছর লোকজন বাড়ছে, বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, কল-কারখানা হচ্ছে। খাল-বিল, পুকুর-টুকুর দখল ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যতের জন্যে এটি মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
i. ‘দিনদিন’-দ্বিরুক্ত শব্দটির প্রতিশব্দ কী?
ii. ‘পুকুর-টুকুর’ দ্বিরুক্ত শব্দটি কীভাবে গঠিত হয়েছে?
iii. এ অনুচ্ছেদে কতটি বিভিনড়ব রকমের দ্বিরুক্ত শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে?
iv. অনুচ্ছেদে যে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি কেন?
উত্তর :
i. ‘দিনদিন’ দ্বিরুক্ত শব্দটির প্রতিশব্দ হচ্ছে প্রতিদিন।
ii. ‘পুকুর-টুকুর’ দ্বিরুক্ত শব্দ-জোড়ায় দ্বিতীয় শব্দটির আংশিক পরিবর্তনের মাধ্যমে দ্বিুরুক্ত শব্দ গঠিত হয়েছে।
iii. এ অনুচ্ছেদে ১১টি বিভিন্ন রকমের দ্বিরুক্ত শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।
iv. অনুচ্ছেদে যে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অশনিসংকেত। আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রতিনিয়তই মানুষের হাতে ধ্বংস হচ্ছে। গাছপালা, নদীনালা, সবুজ ফসলের মাঠের স্থানে হচ্ছে বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, কল-কারখানা। ফলে পরিবেশের দূষণ বাড়ছে। সেই সাথে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ব এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে।
৬. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এক দল লোক মনে করতেন ওই সংস্কৃত ভাষাই বাংলার জননী। বাংলা সংস্কৃতের মেয়ে। তবে দুষ্টু মেয়ে, যে মায়ের কথা মতো চলেনি। না চলে চলে অন্যরকম হয়ে গেছে। তবে ঊনিশ শতকেই আরেক দল লোক ছিলেন, যাঁরা মনে করতেন বাংলার সাথে সংস্কৃতের সম্পর্ক বেশ দূরের। তাঁদের মতে, বাংলা ঠিক সংস্কৃতের কন্যা নয়। অর্থাৎ সরাসরি সংস্কৃত ভাষা থেকে উৎপত্তি ঘটেনি বাংলার। ঘটেছে অন্য কোনো ভাষা থেকে। সংস্কৃত ছিল সমাজের উঁচুশ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা।
ক. ‘জননী’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
খ. বাংলা ভাষাকে দুষ্টু মেয়ে বলা হয়েছে কেন?
গ. ‘মেয়ে’- শব্দের দুটি প্রতিশব্দ লেখ।
ঘ. ‘বাংলা সংস্কৃতের মেয়ে’- এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দেখাও।
উত্তর :
ক. ‘জননী’ শব্দের বিপরীত হলো- ‘জনক’।
খ. সংস্কৃত ভাষা থেকে বিচ্যুতি লাভ করেছে বলে বাংলাকে দুষ্টু মেয়ে বলা হয়েছে।
এক দল লোকের ধারণা ছিল বাংলাভাষার জন্ম হয়েছে সংস্কৃত থেকে। সে হিসেবে সংস্কৃত হলো বাংলা ভাষার জননী। তাদের মতে সংস্কৃত থেকে খানিকটা বিচ্যুত হয়ে পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে বাংলার আজকের রূপ তৈরি হয়েছে। সংস্কৃত ভাষা অর্থাৎ মায়ের কথামতো চলে নি বলেই বাংলাকে দুষ্টু মেয়ে বলা হয়েছে।
গ. ‘মেয়ে’ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ হলো- কন্যা ও জায়া।
ঘ. আমরা জানি, মানুষের মুখের কথায় বদল ঘটে ভাষার ধ্বনির। শব্দ ও শব্দের অর্থেরও বদল ঘটে। এভাবে এক ভাষা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে রূপ লাভ করে অন্য একটি ভাষা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, সংস্কৃতি থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হওয়াটা সম্ভব নয়। কেননা সংস্কৃত ছিল তৎকালীন সমাজের কেবলমাত্র লেখার ভাষা। কথা বলায় এ ভাষার ব্যবহার ছিল না।
৭. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বাংলা সনের প্রথম মাসের নাম বৈশাখ। পয়লা বৈশাখ বাঙালির নববর্ষ। নববর্ষ সকল দেশের, সকল জাতিরই আনন্দ উৎসবের দিন। শুধু আনন্দ উচ্ছ্বাসই না, সকল মানুষের জন্য কল্যাণ কামনারও দিন। আমরাও সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও কল্যাণের প্রত্যাশা নিয়েই মহাধুমধামের সঙ্গে আমাদের নববর্ষ উদ্যাপন করি। একে অন্যকে বলি শুভ নববর্ষ।
i. ‘আনন্দ’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
ii. ‘উচ্ছ্বাস’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করো।
iii. বাংলা সনের প্রবর্তক কে?
iv. বাংলা নববর্ষের মতো সার্বজনীন আরো একটি উৎসবের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর :
i. ‘আনন্দ’ শব্দের বিপরীত শব্দ হলো ‘কষ্ট’।
ii. ‘উচ্ছ্বাস’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ হলো- উৎ + শ্বাস।
iii. বাংলা নববর্ষের ইতিহাস এখনো সুস্পষ্টভাবে জানা সম্ভব হয় নি। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও পণ্ডিতের মতে মুঘল সম্রাট বাদশাহ আকবর বাংলা সন চালু করেন।
iv. বাংলা নববর্ষের মতো আরও একটি সার্বজনীন উৎসব হলো বিজয় উৎসব।
আমাদের মহান বিজয় দিবস অর্থাৎ ১৬ই ডিসেম্বর আমরা এই উৎসব করে থাকি। এদিন সারা দেশ লাল সবুজে সেজে ওঠে। সর্বস্তরের বাঙালি এই উৎসবে আনন্দের সাথে অংশ নেয়।
৮. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের দেশের উন্নতির প্রধান অন্তরায় আমাদের জনসংখ্যা সমস্যা। এই জনসংখ্যা সমস্যাকে জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে দেশের উন্নতি সম্ভব। তাদেরকে প্রয়োজনীয় কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। জনগণ কায়িক পরিশ্রমের মর্যাদা পেলে তারা কায়িক পরিশ্রমের দিকে আগ্রহী হবে। পরিশ্রমী জনগণ দ্বারা দেশের ও জাতির উনড়বয়ন সম্ভব।
i. ‘উন্নতি’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
ii. কারিগরি শিক্ষা বলতে কী বোঝ?
iii. ‘জাতি’-এর দুটি প্রতিশব্দ লেখো।
iv. ‘জনসংখ্যা সমস্যা’ আমাদের দেশের উন্নতির প্রধান অন্তরায়-বিশ্লেষণ করো।
উত্তর :
i. ‘উন্নতি’ শব্দের বিপরীত শব্দ হলো অবনতি।
ii. কারিগরি শিক্ষা বলতে বোঝায় হাতে-কলমে লাভ করা বিশেষ শিক্ষা।
একজন ব্যক্তি তার আত্মপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যখন বিশেষ কোনো কর্মে প্রশিক্ষিত হন তখন সেই শিক্ষাকে কারিগরি শিক্ষা বলে। এই শিক্ষা হাতে-কলমে গ্রহণ করা হয় এবং শিক্ষা শেষেই জীবিকা অর্জনের যোগ্যতা অর্জিত হয়।
iii. ‘জাতি’ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ হলো- বর্ণ এবং শ্রেণী।
iv. জনসংখ্যা সমস্যা থেকে তৈরি হচ্ছে আরও নানা ধরনের সমস্যা যা জাতির উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীতে অন্যতম। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণের জন্য দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ মোটেই যথেষ্ট নয়। ফলে দেশে বাড়ছে বেকার সমস্যা, অপরাধ প্রবণতা ইত্যাদি। আর এগুলো আমাদের উনড়বতির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেছে।
৯. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আজ থেকে প্রায় দুইশ বৎসর আগে পৃথিবীতে শিল্পবিপ্লব হয়েছিল। যারা সেই শিল্পবিপ্লবে অংশ নিয়েছিল তারা পৃথিবীটাকে শাসন করেছে। আমরা শিল্পবিপ্লবে অংশ নিতে পারিনি বলে বাইরের দেশ আমাদের শাসন-শোষণ করেছে। আমরা আবার সেটা হতে দিতে পারি না।
এই মুহূর্তে শিল্পবিপ্লবের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিপ্লব হচ্ছে-তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব। এ বিপ্লবে আমাদের অংশ নিতেই হবে। তাই দায়িত্বটা পালন করতে হবে নতুন প্রজন্মকে, যারা নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে এবং প্রযুক্তিতে। তারা ঠিকভাবে লেখাপড়া করবে, অন্য সব বিষয়ের সাথে সাথে গণিত ও ইংরেজিতে সমান দক্ষ হয়ে উঠবে, কম্পিউটারের সাথে পরিচিত হবে।
যখন কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পাবে তখন সেটাকে বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে শেখার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে। নিজেদের সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ হিসেবে গড়ে উঠে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে তুলতে সাহায্য করবে।
i. ‘প্রজন্ম’ শব্দটি কী সাধিত শব্দ?
ii. পৃথিবী’ শব্দটির দুটি সমার্থক শব্দ লেখো।
iii. সৃজনশীল মানুষ কারা?
iv. তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে হবে কেন?
v. কম্পিউটারকে শেখার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে হবে কেন?
উত্তর :
i. ‘প্রজন্ম’ শব্দটি উপসর্গ সাধিত শব্দ।
ii. ‘পৃথিবী’ শব্দটির দু’টি সমার্থক শব্দ হলো- ধরণী ও বসুন্ধরা।
iii. যারা নিজেদের জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারে তারাই সৃজনশীল মানুষ।
iv. বর্তমান পৃথিবীর সবকিছুই তথ্য-প্রযুক্তির অধীন। এর যথাযথ ব্যবহার ছাড়া জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে হবে।
v. তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল হাতিয়ার হলো কম্পিউটার। তাই কম্পিউটার ব্যবহারে সবাইকে দক্ষ হতে হবে। কেবল বিনোদনের মাধ্যমে হিসেবে নয়, শেখার মাধ্যম হিসেবে এটিকে গ্রহণ করতে হবে।
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে অষ্টম শ্রেণি অনুধাবন শক্তি PDF ডাউনলোড করে নাও। এছাড়াও জেএসসি অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post