আফ্রিকা কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) জন্ম কলকাতার জোড়াসীকোর ঠাকুরবাড়িতে। অল্পবয়স থেকেই ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ভারতী ও বালক পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। দীর্ঘ জীবনে অজন্্ কবিতা, গান, ছোটোগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক লিখেছেন, ছবি এঁকেছেন। এশিয়ার মধ্যে তিনিই প্রথম নোবেল পুরস্কার পান ১৯১৩ সালে।
দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত আর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তার রচনা। কবির প্রথম জীবনে লেখা কাব্য্রন্থগুলি হলো – “সন্ধ্যাসঙ্গীত”, “প্রভাতসঙ্গীত” “ছবি ও গান’, “ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী” এবং “কড়ি ও কোমল’। ১৮৮৮ থেকে ১৮৯৬ – মাত্র আট বছরে কবি প্রতিভার যে অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটেছে তারই চিহ্ন সুমুদ্রিত এই পর্বের চারখানি কাব্যগ্রন্থে “মানসী” “সোনারতরী”, “চিত্রা” ও চৈতালি’তে।
আফ্রিকা কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর
এই পর্বের কাব্যগুলিতে কবির আত্মোপলব্খিই শুধু নয়, তার কাব্যে নির্মাণ কৌশলেরও যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। আবেগ, গভীর আত্মপ্রত্যয়, জীবন জিজ্ঞাসা, কল্পনার পক্ষ বিস্তার, শিল্পরূপ নির্মাণে দক্ষতা, ভাষা ও ছন্দের ওপর আধিপত্য প্রভৃতি কবির যাবতীয় গুণাবলির প্রকাশ ঘটেছে এই পর্বের কবিতাবলিতে।
এরপর কবি রচনা করেন কণিকা, কথা ও কাহিনী, কল্পনা, ক্ষণিকা ও নৈবেদ্য। গীতাঞ্জলি পর্বের প্রধান তিনখানি কাব্যগ্রন্থ গীতাগ্রুলি, গীতিমাল্য ও গীতালি, ১৯১৬ তে বলাকা, ১৯২৫ এ পুরবী এবং ১৯২৯-এ মহুয়া রচনা করেন কৰি রবীন্দ্রনাথ । “পুনশ্চ” থেকে রবীন্দ্রকাব্যের শেষ পর্বের শুরু। এ পর্বের উল্লেখযোগ্য কাব্যপ্রন্থগুলি হলো “শেষ সপ্তক”, প্রান্তিক” “নবজাতক’, “সানাই” “রোগশয্যায়”, “আরোগ্য” ইত্যাদি।
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
১. কবি আদিম যুগের যে বিশেষণ ব্যবহার করেছেন তা হল-
ক. অপমানিত
খ. দৃষ্টি অতীত
গ. চেতনাতীত
ঘ.উদ্ভ্রান্ত
২. স্রষ্টা নিজের সৃষ্টিকে বারবার বিধ্বস্ত করছিলেন, কারণ—
ক. আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাত
খ. নিজের প্রতি অসন্তোষ
গ. বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমা
ঘ. সত্যের বর্বর লোভ
৩. “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে”-কে ছিনিয়ে নিয়ে গেল?
ক. প্রাচী ধরিত্রী
খ. ছায়াবৃত্ত
গ. কৃপণ আলো
ঘ. রুদ্র সমুদ্রের বাহু
৪. আফ্রিকা বিদ্রুপ করছিল—
ক. ভীষণকে
খ. ভয়ংকরকে
গ. নতুন সৃষ্টিকে
ঘ. শঙ্কাকে
৫. ‘রুদ্র সমুদ্রের বাহু’ আফ্রিকাকে ছিনিয়ে গিয়েছিল যেখান থেকে-
ক. পশ্চিম দিগন্ত থেকে
খ. দেবস্থান থেকে
গ. প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে
ঘ. সূর্যহারা বনানী থেকে
৬. ‘নিনাদ’ শব্দটির অর্থ কী?
ক. গর্জন
খ. চিৎকার
গ. ভয়ংকর শব্দ
ঘ. শব্দ
৭, “তোমার ভাষাহীন ক্রন্দনে বাষ্পকুল অরণ্যপথে পঙ্কিল হল ধূলি তোমার – মিশে।” (শূন্যস্থান পূরণ করো)
ক. আফ্রিকার দুর্গম জঙ্গলে
খ. রক্তে অশ্রুতে
গ. অপমানিত ইতিহাসে
ঘ. অবরুদ্ধ ইতিহাসে
৮. “শিশুরা খেলছিল —”। (শূন্যস্থান পূরণ করো)
ক. মাঠে মাঠে
খ. বাষ্পকুল অরণ্যপথে
গ. গুপ্ত গহ্বরে
ঘ. মায়ের কোলে
৯. মানুষ ধরার দলের নখ ছিল—
ক. শেয়ালের চেয়ে তীক্ষ্ণ
খ. নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ
গ. হায়নার চেয়ে তীক্ষ্ণ
ঘ. সিংহের চেয়ে ধারালো
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে” – ইতিহাস’ কীভাবে অপমানিত হল ?
উত্তর: পরাধীনতার গ্লানিতে, মানুষের সম্মানহীনতায় আফ্রিকার ইতিহাস হল অপমানিত। সেই অপমানের চিহ্ন চিরস্থায়ী করে দিয়ে গেছে বর্বর, লোলুপ, হিংস্র ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি।
২. “নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত’ – কে, কেন বিধ্বস্ত করছিলেন?
উত্তর: নতুন সৃষ্টি তথা পৃথিবীর প্রতি প্রবল অসন্তোষে স্বয়ং স্রষ্টা বিধাতা তাকে বারবার বিধ্বস্ত, অর্থাৎ ভেঙে-গড়ে দেখছিলেন।
৩. “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে, আফ্রিকা’ – আফ্রিকাকে কে কোথায় ছিনিয়ে নিয়ে গেল?
উত্তর: ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবি কল্পনা করেছেন, সৃষ্টির যুগে স্রষ্টা যখন বারবার নিজের সৃষ্টি ভেঙে-চুরে নিখুঁত করে গড়ার চেষ্টায় রত, তখন উত্তাল সমুদ্র প্রাচ্যদেশ থেকে আফ্রিকা মহাদেশের ভূখ-কে আলাদা করে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
৪. “গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে” তারা কী করল?
উত্তর: বিপুল বিশ্বের গর্বান্ধ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি লোহার হাতকড়ি দিয়ে আফ্রিকার মানুষদের সুকৌশলে শৃঙ্খলিত করল।
৫. “অপরিচিত ছিল তোমার মানবরূপকার মানবরূপ অপরিচিত ছিল ?
উত্তর: সভ্যতার উগ্রতা আফ্রিকাকে তেমনভাবে স্পর্শ করেনি বলে তার মানবিকতা বোধের চিরস্নিগ্ধ রূপটি অবশিষ্ট পৃথিবীর কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিল। রহস্যময় জগতের অচেনা সৌন্দর্যের ছায়া যেন সর্বদা ঘিরে থাকে আফ্রিকাকে।
৬. “তোমার ভাষাহীন ক্রন্দনে” ভাষাহীন ক্রন্দন কার ছিল?
উত্তর: নিজস্ব সত্তার রহস্য উন্মচোনে মগ্ন ‘আফ্রিকা’ অকস্মাৎ সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে, সে উগত ‘ভাষাহীন ক্রন্দনে’ ভেসে গিয়েছিল।
৭. অপরিচিত ছিল তোমার মানবরূপ/উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।’ – কার মানবরূপ, কাদের কাছে উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে উপেক্ষিত ছিল?
উত্তর: প্রশ্নোক্ত পঙক্তিটিতে আফ্রিকা মহাদেশের মানবরূপ যেন তার অরণ্য- আচ্ছাদিত ‘কালো ঘোমটার নীচে’ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির কাছে ‘উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে অপরিচিত ছিল।
৮. “পঙ্কিল হল ধূলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশেৃ’ – কীভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?
উত্তর: পৃথিবীর বহু সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নিজেদের শক্তি ও উপনিবেশ গড়ার লক্ষে স্বাধীন আফ্রিকা মহাদেশের মানুষকে শৃঙ্খলিত করল। বর্বর, অমানুষিক অত্যাচার চালালো। এভাবেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হল।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. ‘কৃপন আলোর অন্তঃপুরে’-কবিতা অনুসারে বক্তব্যটি লেখ।
উত্তর: বক্তব্য : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকার ভৌসোলিক, রাজনৈতিক সম্পর্কে মরমি বিশ্লেষণ রয়েছে। বনস্পতির নিবিড় আলিঙ্গনে, অরণ্যের দুর্ভেদ্য আলো ছায়ায় আবৃত থাকে আফ্রিকা। নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ার জন্য বৃহৎ পাতা বিশিষ্ট গাছের সৃষ্টি হয় এখানে। অসংখ্য বৃক্ষ ঘন সন্নিবিষ্ট হওয়ায় অতি সামান্য আলোটুকু প্রবেশের অধিকার পায় না। অন্ধকারে আবৃত থাকে আফ্রিকার অধিকাংশ প্রান্তর।
২. বিদ্রপ করেছিল ভীষণকে অথবা, বিরূপের ছদ্মবেশে কে কিভাবে ভীষণকে বিদ্রুপ করেছিল?
উত্তর: ভীষণকে ব্যঙ্গ : আফ্রিকা নামাঙ্কিত কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃথিবীর অন্য মহাদেশ থেকে বিছিন্ন আফ্রিকাকে ধীরে ধীরে সাবলম্বী হতে দেখেছিলেন। নিভৃত অবকাশে দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করেছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ ভূখ-। চিনেছিল জল, স্থল। আকাশের দুর্বোধ সংকেত। প্রকৃতি তাকে দিয়েছিল অপার রহস্যময়তা। অতীত জাদু মন্ত্র জাগাচ্ছিল আফ্রিকার চেতনাতীত মনে। আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনকে আফ্রিকা নিজেই চিনে নিতে চাইছিল। সেই ভীষণ শক্তিশালী শক্তিকে ব্যঙ্গ করার স্পর্ধা অর্জন করেছিল।
৩. এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে, ওরা বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে। লোহার হাতকড়ি নিয়ে আসার কারণ কী?
উত্তর: সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষ : তথাকথিত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকা কবিতায় ওরা বলে চিহ্নিত করেছেন।
লোহার হাতকড়ি :সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষরা বারবার আফ্রিকার ওপর অত্যাচার করে। কালো রঙের এই মানুষদের তারা উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখে। এই সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষদের নিজের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। তাদের হাতে পরিয়ে দেওয়া হয় দাসত্বের শৃঙ্খল। বিপন্ন হয় আফ্রিকার স্বাধীনতা।
৪. নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে–তোমার বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে, কাদের নখ কেন নেকড়ের থেকে তীক্ষ্ণ?
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশ : তোমার বলতে আফ্রিকা মহাদেশের কথা বলা হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হিংস্রতা : দুর্ভেদ্য জঙ্গলে পরিবৃত আফ্রিকার হিংস্র আরণ্যক প্রাণীদের অন্যতম হল নেকড়ে। নেকড়ের তীক্ষ্ণ নখের থেকেও সূচালো ও ধারালো হল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন।
পশ্চিমী দুনিয়া আফ্রিকার ওপর বর্বর উল্লাসে ঝাপিয়ে পড়ে। এদের আগ্রাসনের কথা বলতে গিয়ে কবি ‘নখ যাদের তীক্ষ্ণ এই বাক্য বন্ধটি প্রয়োগ করে দুনিয়ার লোলুপ হিংস্রতাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন। কবি এখানে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে আলোচ্য উক্তিটি প্রকাশ করেছেন।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. আফ্রিকা কবিতা অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথের কবি মানসিকতার পরিচয় দাও।
উত্তর: ভূমিকা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকা কবিতায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি এক কঠিন মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এক উদার মানবতাবাদকে জীবনের মূলমন্ত্র করে দেখে কবি তাই সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনকে মানবতার অভিশাপ বলে মনে করেছেন। আফ্রিকার মানবতাবাদকে আক্রান্ত হতে দেখে তার কলম সা¤্রাজ্যবাদের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে।
কবি মানসিকতার পরিচয় : রবীন্দ্রনাথ কবিতার প্রথম পর্বে আফ্রিকার জন্ম ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। সম্রান্ত সেই আদিম যুগে স্রষ্টা যখন নিজের প্রতি অসন্তোষ থেকে সবকিছু আবার নতুন করে সৃষ্টি করেছিলেন ঠিক সেই সময় আফ্রিকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সবার থেকে। সেই আফ্রিকার ওপর স্বৈরাচারী শক্তি নানা অত্যাচার শুরু করে। সেই সময়টা হল ইউরোপের সব থেকে বড়ো কলঙ্কের যুগ। কারণ ইউরোপের মানুষ প্রমাণ করতে ব্যস্ত ছিলেন যে আফ্রিকাবাসী কেবলমাত্র জন্তু শ্রেণির জীব।
আফ্রিকার মানুষের ওপর নির্মমভাবে অত্যাচার শুরু হয়েছিল। উপজাতির মানুষদের ওপর দিনের পর দিন অমানসিক অবিচার করা হয়েছিল। এই বিষয়কে মাথায় রেখে রবীন্দ্রনাথ লেখেন আফ্রিকা কবিতাটি। রবীন্দ্রনাথ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে অনেক কবিতা লেখেন। আফ্রিকাবাসীর ওপর নির্লজ্জ অত্যাচার দেখে কবি শঙ্কিত হয়েছেন। এই কৃয়াঙ্গের ওপর যে নারকীয় অত্যাচার করা হয়েছিল তা নিঃসন্দেহে অমানবিক। কিন্তু কবি বিশ্বাস করেন এই নির্যাতিত মানুষ একদিন উঠে দাঁড়াবে। সমস্ত পরাধীনতার নাগপাশ থেকে তারা মুক্ত হবে।
মূল্যায়ন : কবিতার শেষ অংশে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- “ক্ষমা করা।” হিংসার যাবতীয় উল্লাসকে চাপা দিয়ে সততার শেষ পুণ্যবাণী উচ্চারিত হবে। এটা কবির বিশ্বাস।
২. “এসো যুগান্তের কবি’ – কে, কাকে যুগান্তের কবি বলেছেন, এই আহ্বান ধ্বনির মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
অথবা,
“দাঁড়াও এই মানহারা মানবীর দ্বারে’ – মানহারা মানবী কে? কবির এই আহ্বানের কারণ কী?
অথবা,
“বল ক্ষমা কর”-কাকে ক্ষমা করার কথা বলা হয়েছে? এই ক্ষমা করা কীভাবে কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তর: যুগান্তের কবি : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আগামী দিনের ক্রান্তীকারী সেই কবিকে যুগান্তের কবি বলেছেন—যিনি বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।
মানহারা মানবী :মানহারা মানবী হল আফ্রিকা, যে পশ্চিমি সভ্যতার লোভ লালসার শিকার হয়েছে।
কবিতার ভাববস্তু : ছায়াবৃতা আফ্রিকা উপেক্ষিত হয়েছিল ইউরোপীয় সভ্য জাতির দ্বারা। তারা কৃয়কায় আফ্রিকাকে দেখেছিল উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে। তীক্ষ্ণ নখ যাদের নেকড়ের চেয়ে তারা আফ্রিকাকে দেখল খাদকের চোখে। সভ্যের বর্বর লোভ থেকে বাঁচল না সে। সভ্যের নির্লজ্জ অমানসিকতা দেখে হতাশ হল এই মহাদেশের অন্তরআত্মা। এদের ভাষাহীন ক্রন্দনে বাম্পাকুল হল অরণ্যপথ। রক্ত ঝরল কৃয় পৃথিবীর সরল নিস্পাপ বুক থেকে। অশুতে ভিজল পথ। লেখা হল অপমানিত নতুন ইতিহাস।
সভ্যতার বিবর্তন ঘটে সময়ের পট পরিবর্তিত হয়। পশ্চিম দিগন্তে দেখা যায় ঝক্কা বিক্ষুব্ধ মেঘ। পশ্চিমের গুপ্ত গহ্বর থেকে বেরিয়ে আসে পশুরা। অশুভ ধ্বনিতে তারা ঘোষণা করে দিনের অন্তিম কাল। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ মনে করেন অশুভ শক্তির পতন অনিবার্য। কালের রথের চাকার যেমন গমন আছে তেমন প্রত্যাগমনও আছে। তাই যুগান্তের কবির কাছে প্রার্থনা দাঁড়াও ওই মানহারা মানবীর দ্বারে বলো ক্ষমা করো।
হিংস্র প্রলাপের মধ্যে ক্ষমা হয়ে উঠুক বিচারের মানদ-। তাই কবি রবীন্দ্রনাথ যুগান্তের কবির কাছে আহ্বান করেছেন মানহারা মানবীর পাশে দাঁড়াতে। আর হিংস্র প্রলাপের মধ্যে ক্ষমা হয়ে উঠুক বিচারের মানদণ্ড। তাই কবি রবীন্দ্রনাথ যুগান্তের কবির কাছে আহ্বান করেছেন মানহারা মানবীর পাশে দাঁড়াতে। আর অনুরোধ করেছেন হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাকে দাঁড় না করিয়ে ক্ষমার আদর্শকে তুলে ধরতে।
মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর pdf ডাউনলোড করে নাও। এছাড়াও মাধ্যমিক অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post