আবোল তাবোল সুকুমার রায় : “ছুটলে কথা, থামায় কে?” কবিতাটি সুকুমার ভট্টাচার্যের রচনা। এটি বাংলা শিশুসাহিত্যের এক অনন্য উদাহরণ। কবিতাটিতে শিশুমনের চঞ্চলতা ও আনন্দময়তার প্রতিফলন ঘটেছে। ছন্দোময় বাক্যে শিশিরকুমার জীবনের সরলতাকে তুলে ধরেছেন।
তবলার তালে তালে কথার প্যাঁচ, ঘুমের ঘোরে গানের সমাপ্তি—এমন চিত্রকল্প পাঠকদের মুগ্ধ করে। ভাষার সরলতা ও ছন্দের খেলায় কবিতাটি ছোটদের পাশাপাশি বড়দেরও আনন্দ দেয়। শিশুদের মনস্তত্ত্বকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করে, যা বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
আবোল তাবোল সুকুমার রায়
শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় ৩০শে অক্টোবর ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটোদের জন্য হাসির গল্প ও কবিতা লিখে বিখ্যাত হয়ে আছেন। ‘আবোল-তাবোল’, ‘হ-য-ব-র-ল’, ‘পাগলা দাশু’, ‘বহুরূপী’, ‘খাইখাই’, ‘অবাক জলপান’ তাঁর অমর সৃষ্টি।
তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীও শিশুসাহিত্যিক ছিলেন। পুত্র সত্যজিৎ রায় বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক হলেও শিশু-কিশোরদের জন্য প্রচুর লিখেছেন। ১০ই সেপ্টেম্বর ১৯২৩ সালে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন।
আবোল তাবোল কবিতার শুরু এখানে
ছুটলে কথা, থামায় কে?
আজকে ঠেকায় আমায় কে?
আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ তবলা বাজে-
রাম-খটাখট ঘ্যাচাং ঘ্যাচ
কথায় কাটে কথার প্যাঁচ।
ঘনিয়ে এলো ঘুমের ঘোর,
গানের পালা সাঙ্গ মোর।
এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজ
১. জেনে নিই।
আবোল-তাবোল কথা বলার মানে মনের খেয়ালে কথা বলতে থাকা। আমরা কথা বলি যাতে অন্যে সে-কথা শোনে এবং শুনে কিছু একটা করে। যেমন, যদি বলি মা, ভাত খাব। মা তখন আমায় ভাত দিতে ছুটবেন!
কিন্তু যদি ভূতের মতো নাকি সুরে বলি ‘আঁউ মাঁউ খাঁউ ভাঁতের গন্ধ পাউ’ তখন মা ভাববেন, আমি খেলা করছি। সেটা তখন আবোল-তাবোল কথা হয়ে গেল, যে কথার অর্থ নেই, যে কথা দিয়ে কিছু বোঝাতে চাইছি না।
এটি সে-রকমই একটি ছড়া, যা জোরে জোরে পড়লেই শুনতে মজা লাগে। একটা লোক মনের আনন্দে কেবলই বকবক করে কথা বলে চলেছে, ইচ্ছে হলে গানও গাইছে। যতক্ষণ না দুচোখে ঘুম নামল, ততক্ষণ সে এমনটাই করে গেল।
২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
ঠেকায়, তবলা, ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ, প্যাঁচ, ঘুম, ঘনিয়ে এলো. সাঙ্গ, রাম-খটাখট
৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ঘনিয়ে এলো, সাঙ্গ, ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ, ঠেকায়, মনের মাঝে, প্যাঁচ
ক. তুহিন লেখাপড়ায় এত ভালো যে ওকে _______ কে?
খ. লোকটি _______ করে গাছের ডালটি কেটে ফেলল।
গ. বসে থাকতে থাকতে তার ঘুম _______ ।
ঘ. _______ দেওয়া কথা বোঝা যায় না।
ঙ. তাড়াতাড়ি খেলাধুলা করো _______, পড়তে বসতে হবে।
চ. পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করায় তার _______ আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়।
৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।
ক. কী ছুটছে যাকে থামানো যাচ্ছে না?
খ. ধাঁই ধপাধপ আওয়াজে কোথায় তবলা বাজছে?
গ. কখন গানের পালা সাঙ্গ হলো?
ঘ. কথায় কী কাটে?
৫. ছড়াটিতে যা বলা হয়েছে তা বর্ণনা করি।
৬. ছড়াটি মুখস্থ করি ও বলি।
৭. বই না দেখে ছড়াটি লিখি।
৮. কর্ম-অনুশীলন।
ছড়ার মতো করে দুইটি লাইন লিখি।
◉ আরও দেখুন: চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বইয়ের সকল গল্প-কবিতার সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা মূল বই থেকে আবোল তাবোল সুকুমার রায় কবিতাটি আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজগুলোর সমাধান পেতে উপরের উত্তরমালা অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত বেশকিছু প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে।
Discussion about this post