আমার দেশ কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : কবিতাটিতে কবি এদেশের সহনীয় রৌদ্রতাপ এবং নমনীয় জল-বৃষ্টির সমন্বয়ে সৃষ্ট চমৎকার জলবায়ুর কথা বলেছেন। এছাড়াও এদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর। ফলে এদেশের মাঠ সোনার ফসলে পরিপূর্ণ থাকে। বিভিন্ন ঋতুতেও এদেশে নানারকম ফুলের সমারোহ দেখা যায়। সবমিলিয়ে এদেশের প্রকৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও মনোলোভা।
আমার দেশ কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. ‘শান্তি-কপোত বারতা লইয়া আসে’—এ কথা দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: ‘শান্তি-কপোত বারতা লইয়া আসে’—এই বাক্যটি কবির দৃষ্টিতে শান্তি ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে কপোত বা পায়রাকে তুলে ধরেছে।
এখানে কপোত বা পায়রা (কবুতর) একটি ঐতিহ্যবাহী পাখি, যা শান্তির বার্তা নিয়ে আসে। কবি এ বাক্যের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন যে, দেশ এবং মানুষের মধ্যে শান্তি, বন্ধুত্ব, ও সহযোগিতার বার্তা এসে পৌঁছায়, যেমন কপোত শান্তির দূত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় শান্তির বার্তা নিয়ে আসে। কবি দেশের মাটি ও মানুষের মাঝে শান্তি ও প্রেমের বার্তা পৌঁছানোর গুরুত্বকে তুলে ধরেছেন, যেখানে সকলেই একে অপরকে সহযোগিতা ও সম্মান দেয়, এবং এই শান্তির বার্তা মানুষের হৃদয়ে অঙ্গীকার হয়ে থাকে। এটি একটি অন্তর্নিহিত আশাবাদ ও ভালোবাসার প্রতীক, যেখানে মানুষ একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে শান্তিপূর্ণ জীবন কাটাতে চায়।
২. ‘স্নিগ্ধ শরৎ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘স্লিগ্ধ শরৎ’ বলতে কবি শরৎকালের পরিষ্কার ও স্বচ্ছ আকাশকে বুঝিয়েছেন।
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। প্রত্যেক ঋতুই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যম-িত। সংগত কারণেই এদেশের প্রকৃতিতে এই ছয়টি ঋতু ভিন্নরকম সৌন্দর্যের দ্যোতনা দেয়। এর মধ্যে শরৎকালের আকাশ থাকে পরিষ্কার ও সুন্দর। শুধু মাঝে মাঝে সাদা মেঘ ঘুরে বেড়ায়। আলোচ্য কবিতায় শরৎকালের আকাশের এমন মোহনীয় দৃশ্য উপস্থাপনকল্পে কবি ‘স্নিগ্ধ শরৎ’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন।
৩. ‘জীবনের ডাক আসে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: জীবনের ডাক আসে বলতে কবি লক্ষ প্রাণের মিলিত ধারার সাথে মিলিত হবার ডাককে বুঝিয়েছেন।
আমার দেশ কবিতায় কবি তাঁর মাতৃভূমি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আর তা করতে গিয়ে তিনি এদেশের মানুষের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সম্পর্ককে তুলে ধরেছেন। যেখানে সবাই মুক্ত-উদার মনে ব্যথিত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। যাপিত জীবনের প্রয়োজনে সবাই একসাথে মিলেমিশে থাকে। এভাবে বহু প্রাণের সম্মিলনে এদেশের মানুষ শান্তির আবাসভূমি তৈরি করে। আলোচ্য কবিতায় জীবনের ডাক আসে বলতে এ বিষয়কেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
৪. ‘নিতি নবরূপে ভরে ওঠে মন জীবনের আশ্বাসে’—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহমর্মীতার মাঝেই যে এদেশের মানুষ জীবনের সার্থকতা ও নতুন করে বাঁচার মানে খুঁজে পায়—প্রশ্নোক্ত চরণটির মাধ্যমে এ বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে।
‘আমার দেশ’ কবিতায় কবি দেশবাসীর মানবিক মেলবন্ধনের এক অপূর্ব চিত্র এঁকেছেন। সুখে-দুঃখে, এমনকি যে-কোনো দুর্যোগ ও দুর্বিপাকেও সব সময় এদেশের মানুষ মিলেমিশে থাকে। জীবনের নানান সংকটে তারা একে অপরের পাশে দাঁড়ায়। এভাবে মানুষে মানুষে প্রাণের মিলন ঘটিয়ে তারা সাম্য ও প্রীতির এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মানুষের মধ্যকার এই সম্প্রীতি ও মানবিকবোধ যেন এদেশের মানুষকে ‘নতুনভাবে বাঁচার আশ্বাস দেয়। প্রশ্নোক্ত চরণের মাধ্যমে এ বিষয়কেই বোঝানো হয়েছে।
৫. ‘আমার দেশের মানুষেরা সবে মুক্ত-উদার মনে আর্ত-ব্যথিত সুধী গুণীজন পাশে’—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রশ্নোক্ত চরণটির মাধ্যমে এদেশের মানুষের সহানুভূতিশীল ও মানবিক পরিচয়ের দিকটিকে তুলে ধরা হয়েছে।
কবিতাটিতে কবি এদেশের মানুষের মানবিক মেলবন্ধনের এক অপূর্ব দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন। যেখানে দেশের সকল মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। ফলে তারা একে অপরের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। এ কারণে বিপদে-আপদে তারা একে অন্যের পাশে এসে দাঁড়ায়। অন্যের অসুখ-অসুবিধা ও ব্যথার ভাগীদার হয়ে তারা সহানুভূতির অপূর্ব নজির স্থাপন করে। আলোচ্য চরণটির মাধ্যমে এদেশের মানুষের এই সহানুভূতিশীল ও মানবিক পরিচয়ের দিকটিকেই বোঝানো হয়েছে।
৬. ‘আমার দেশ’ কবিতায় কবি এদেশের প্রকৃতির যে চিত্র এঁকেছেন তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘আমার দেশ’ কবিতায় কবি এদেশের প্রকৃতির সমৃদ্ধ রূপটিকে তুলে ধরেছেন।
কবিতাটিতে কবি এদেশের সহনীয় রৌদ্রতাপ এবং নমনীয় জল-বৃষ্টির সমন্বয়ে সৃষ্ট চমৎকার জলবায়ুর কথা বলেছেন। এছাড়াও এদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর। ফলে এদেশের মাঠ সোনার ফসলে পরিপূর্ণ থাকে। বিভিন্ন ঋতুতেও এদেশে নানারকম ফুলের সমারোহ দেখা যায়। সবমিলিয়ে এদেশের প্রকৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও মনোলোভা।
৭. ‘আমার দেশ’ কবিতায় সম্প্রীতির যে দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘আমার দেশ’ কবিতায় এদেশের মানুষের মধ্যকার সৌহার্দ্যময় ও শান্তিপূর্ণ সহবস্থানের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে।
‘আমার দেশ’ কবিতায় কবি এদেশের মানুষের শান্তিকামী মনোভাব এবং সম্প্রীতির নিদর্শন তুলে ধরেছেন। এরই অংশ হিসেবে নতুন জেগে ওঠা চরে গ্রামের মানুষদের পাশাপাশি ঘর বেঁধে থাকা, সুখ-দুঃখে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মতো সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সহমর্মিতার চিত্র এঁকেছেন তিনি। এসবকিছু তাদের মধ্যকার সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহবস্থানকেই নির্দেশ করে।
৮. ‘আমার দেশ’ কবিতায় দেশপ্রেমই মূল সুর’—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘আমার দেশ’ কবিতায় কবি দেশের অনিন্দ্যসুন্দর প্রকৃতি এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের অনুপম বর্ণনার মধ্য দিয়ে মূলত দেশাত্ববোধের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।
‘আমার দেশ’ কবিতায় কবি দেশপ্রেমকেই মুখ্যরূপে উপস্থাপন করেছেন। কবির প্রাণের ঘর এদেশের মাটিতেই মেশানো। কবির কাছে এদেশের জল, হাওয়া, প্রকৃতি তাই অসাধারণ সুন্দর। শুধু তাই নয়, এদেশের মাটি, মানুষ এমনকি এদেশের ভাষাও তাঁর কাছে অত্যন্ত মধুর। কবির এমন অনুভব মূলত তাঁর দেশাত্ববোধেরই নামান্তর। এ দিক বিচারে দেশপ্রেমই যে, ‘আমার দেশ’ কবিতার মূল সুর—এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
আরও দেখো— নবম দশম শ্রেণির বাংলা সকল গল্প-কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা মূল বই থেকে আমার দেশ কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post