আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব৷। আমরা এখানে আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করার চেষ্টা করব ৷ ইনশাআল্লাহ ৷ আপনারা আমাদের সাথেই থাকুন এবং আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন ৷ ইনশাআল্লাহ, আশা করছি নতুন কিছু বিষয় আপনাদের সামনে স্পষ্ট হবে ৷
আস্তাগফিরুল্লাহ বা তওয়ার দোয়া সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকের থাকে। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে, আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি বা আস্তাগফিরুল্লাহ আরবি না বাংলা? আবার আস্তাগফিরুল্লাহ কখন বলা হয় এ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। আস্তাগফিরুল্লাহ কেন পাঠ করা হয় বা আস্তাগফিরুল্লাহ এর ফজিলত কি এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান।
আস্তাগফিরুল্লাহ বা তওয়ার দোয়া সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকের থাকে। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে, আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি বা আস্তাগফিরুল্লাহ আরবি না বাংলা? আবার আস্তাগফিরুল্লাহ কখন বলা হয় এ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। আস্তাগফিরুল্লাহ কেন পাঠ করা হয় বা আস্তাগফিরুল্লাহ এর ফজিলত কি এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান।
তাহলে আস্তাগফিরুল্লাহ সম্পর্কে যে প্রশ্নগুলো আসে:
১. আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি?
২. আস্তাগফিরুল্লাহ আরবি না বাংলা?
৩. আস্তাগফিরুল্লাহ কখন বলা হয়?
৪. আস্তাগফিরুল্লাহ কেন পাঠ করা হয়?
৫. আস্তাগফিরুল্লাহ এর ফজিলত কি?
আজ ইনশাআল্লাহ, আমরা ওপরে উল্লেখিত ৫টি প্রশ্নের ওপরই আলোকপাত করবো। প্রতিটি প্রশ্ন আমরা যথাযাথ ব্যাখ্যা ও আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো।
আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি?
আস্তাগফিরুল্লাহ একটি আরবি শব্দ। দুটি শব্দ মিলে বাক্যটি তৈরি হয়েছে ৷ আস্তাগফিরুল্লাহ এর অর্থ হচ্ছে, ‘আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি’। কোন খারাপ কাজ করে পরবর্তীতে অনুতপ্ত হলে এ দোয়াটি পাঠ করা হয়।
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজে আমরা অনেক সময় আস্তাগফিরুল্লাহ বলে থাকি। আস্তাগফিরুল্লাহ সচরাচর ব্যবহৃত একটি বাক্য। যদিও বাক্যটির অর্থ অনেক গভীর, তবে আমরা অর্থ না জানার কারণে এর ভাব গাম্ভীর্য বজায় রাখতে পারি না। আর আজকের এই আলোচনায় আপনি আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি তা জানলেন।
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আস্তাগফিরুল্লাহ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি দোয়া আছে। আপনি নির্দিষ্ট একটি অথবা চাইলে প্রতিটি পাঠ করেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন।
দোয়া ১: আস্তাগফিরুল্লাহ
অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি
দোয়া ২: আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়াতুবু ইলাইহি ৷
অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার দিকে প্রত্যাবর্তন করছি ৷
দোয়া ৩: রব্বিগফিরলি ওয়াতুবু ইলাইহি ইন্নাকা আন্তাত তাওয়াবুর রাহিম ৷
অর্থ: হে আমার প্রভু, আমাকে ক্ষমা করুন ৷ আমার তওবা কবুল করুন ৷ নিশ্চয় আপনি তওবা কবুলকারী রহমশীল৷
দোয়া ৪: আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই।
আস্তাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয়?
মিশকাত শরীফের হাদীসে জানা যায়, নবীজি হযরত মোহাম্মদ (সা:) প্রতিদিন প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সালাম ফিরানোর পরে এ দোয়াটি তিনবার পাঠ করতেন ৷ তবে শুধু নামাজের পরই না, যেকোন সময়েই দোয়াটি পাঠ করা যায়। এই ইস্তেগফারটি কমপক্ষে ৭০ থেকে ১০০ বার পাঠ করা উচিত ৷ বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৈনিক কমপক্ষে ৭০ থেকে ১০ পর্যন্ত পাঠ করতেন ৷ (বুখারী শরিফ)
আস্তাগফিরুল্লাহ এর ফজিলত
আস্তাগফিরুল্লাহ এর প্রধন ফজিলত হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার ক্ষমা পাওয়া। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা:) তাদের জন্য সুসংবাদ দিয়েছেন, যাদের আমলনামায় অধিক ইস্তেগফার পাওয়া যাবে। প্রতিদিন আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করা নবীজি (সা:) এর সুন্নতের অনুসরণ। কারণ নবীজি (সা:) দৈনিক কমপক্ষে ৭০ বার ইস্তেগফার পাঠ করতেন।
আস্তাগফিরুল্লাহ’র রয়েছে বহুমুখী ফজিলত:
- ইস্তেগফার নির্ভেজাল একটি ইবাদত।
- গুণা থেকে ক্ষমা প্রাপ্তির মাধ্যম।
- বৃষ্টি বর্ষণের কারণ।
- সার্বিক শক্তি অর্জনের মাধ্যম।
- সম্পদ ও সন্তান অর্জনে সহায়ক।
- জান্নাতে প্রবেশের সিঁড়ি।
সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনের সূরা হুদ, আয়াত ৫২ তে বলা হয়েছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো। অতঃপর তার কাছে তওবা করো, তাহলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সঙ্গে আরও শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না।’
সূরা আনফাল এর ৩৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, যারা ইস্তেগফার করছেন, আল্লাহ তাদের ওপর আজাব নাজিল করেন না। সূরা হুদ এর ৩ নম্বরে আয়াতে বলা হয়েছে, “তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো। এরপর তার কাছে ফিরে যাও, তাহলে অধিক আনুগত্যশীলকে তাঁর আনুগত্য মোতাবেক দান করবেন।”
►► আরো দেখুন: সঠিকভাবে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম (PDF)
►► আরো দেখুন: বাংলা অর্থসহ আয়াতুল কুরসি (PDF)
শেষ কথা
কোর্সটিকার ধর্মকথা আলোচনা বিভাগে আজ আমরা আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণ এবং এর ফজিলত সম্পর্কে জানলাম। আমরা প্রতিদিনই কতই গুণাহ করি। জেনে না জেনে অসংখ্য পাপে আমরা লিপ্ত হই। তাই এসব পাপ থেকে মুক্তির জন্য আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবো।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন এবং সর্বদা সৎ ও ন্যায়ের পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Discussion about this post