ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। কারণ সঠিক গাইডলাইন বা দিকনির্দেশনার অভাবে অনেকেই কাঙ্খিত সাফল্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। বর্তমান অনলাইন পণ্য বিপণন ব্যবস্থায় ই-কমার্স একটি বিপ্লবের নাম। প্রচলিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ধারণাকে বদলে দিয়ে নতুন একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এই ই-কমার্স পদ্ধতি। তাই ডিজিটাল ব্যবসা বাণিজ্যে ই-কমার্সের ভূমিকা উল্লেখ না করলেই নয়।
কিভাবে একটি ইকর্মাস সাইট তৈরি করবেন, তার পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা আমরা ইতোমধ্যেই তিন পর্বের ধারাবাহিকে লিখেছি। আপনি সেই লেখাটি পড়ে নিতে পারেন নিচে দেয়া লিংক থেকে।
►► আরো দেখুন: আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাজাবেন যেভাবে – পর্ব ১
►► আরো দেখুন: আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাজাবেন যেভাবে – পর্ব ২
►► আরো দেখুন: আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাজাবেন যেভাবে – পর্ব ৩
ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন
আপনি যদি একটি ইকর্মাস ওয়েবসাইট তৈরির জন্য মনস্থির করেন, তাহলে আজকের এই লেখায় আমরা আপনার জন্য শেয়ার করছি ১০ টি কুইক টিপস। যা আপনাকে আপনার ইকমার্স ওয়েবসাইট সাজিয়ে তুলতে আরো বেশি ভূমিকা পালন করবে।
ব্যবসা যেহেতু একটি প্রফেশনাল কর্মক্ষেত্র, ইকমার্স ব্যবস্থা তার অনলাইন অস্তিত্ব। আর এই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা রাখতে হবে। চলুন জেনে নেই বিষয়গুলো।
১. ব্যবসা সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা
আপনার ব্যবসার ধরন ও পরিধি, পণ্য হলে কি ধরনের পণ্য অথবা সেবা হলে কি ধরনের সেবা আপনি দিচ্ছেন, তা সম্পর্কে পরিস্কার একটি ধারণা রাখুন। আর সেই অনুযায়ী আপনার ওয়েবসাইটকে সজ্জিত করুন। একজন ব্যক্তি আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে যেন সহজেই বুঝতে পারে, সে সঠিক জায়গাতেই এসেছে। আপনার সঠিক তথ্যগুলো ভিজিটরকে আপনার ওয়েবসাইটে থাকতে আগ্রহী করে তুলবে।
২. সহজ ওয়েব এড্রেস তৈরি করুন
আপনার ওয়েবসাইট বা ব্রান্ডের জন্য এমন একটি সহজ ও সিম্পল ডোমেইন নির্বাচন করুন, যেন সহজেই মানুষ টাইপ করতে পারে এবং মনে রাখতে পারে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন ডট কম কিনে নিতে। কারণ, বেশীরভাগ মানুষেরই ডোমেইন নেম টাইপ করার সময় ডটকম লেখার প্রবণতা বেশী।
ডোমেইন নাম পছন্দ করার সময়ে অবশ্যই আপনার ব্যবসা বা সেবার প্রতি লক্ষ্য রাখুন। অর্থাৎ এমন ডোমেইন নির্বাচন করুন যা আপনার ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত।
৩. ওয়েবসাইটের মেনু ইউজার ফ্রেন্ডলি করুন
আপনার ইকমার্স সাইটের নেভিগেশন বা ইউজার মেনু যেন ভিজিটরের জন্য সহজবোধ্য হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। নেভিগেশন মেনুতে ড্রপ ডাউন ব্যবহার করলে ভিজিটর প্রতিটি হেডিং এর ভিতরে যে কন্টেন্টগুলো আছে সেগুলো সহজে দেখতে পাবে। এভাবে আপনি যা দেখাতে চান ভিজিটরকে তা দেখাতে পারবেন। আবার ভিজিটর যা খুঁজছে তা সহজে খুঁজে নিতে পারবে।
৪. যোগাযোগ ব্যবস্থাকে তথ্যবহুল রাখুন
আপনার মূল্যবান ভিজিটরের সবাই যেন সহজেই আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে, তার ব্যবস্থা যথা সম্ভব সহজ করে রাখুন। যোগাযোগের ঠিকানা রাখার সবচেয়ে ভালো স্থান হলো আপনার হোমপেজের উপরের দিকের ডান অথবা বামদিকে।
একই সাথে প্রতিটি পেজের ফুটার অথবা সাইড বারে যদি আপনার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা দিয়ে রাখেন, তাহলে ভিজিটরের জন্য সহজ হবে আপনার সাথে যোগাযোগ করা। সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন আপনার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমকে বিস্তৃত করা। অর্থাৎ একাধিক মাধ্যম যেমন: ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল কিংবা ফেসবুক পেজ ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
৫. টেস্টিমোনিয়াল বা রিভিউ সংগ্রহ করুন
আপনার সেবা প্রচারণায় ক্রেতাদের থেকে পাওয়া টেস্টিমোনিয়াল বা রিভিউ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনি যে সকল ক্রেতাদের ইতোমধ্যে সেবা দিয়েছেন, তাদের থেকে আপনার কাজের প্রশংসা বা ইতিবাচক রিভিউ সংগ্রহ করুন এবং সেগুলো আপনার সাইটে দেখানোর ব্যবস্থা রাখুন। এতে আপনার কাজে স্বচ্ছতা যেমন থাকবে, তেমনি নতুন ক্রেতাদের আস্থা পাবেন। কারণ, মানুষ সত্যিকারের অভিজ্ঞতা দিয়ে যাচাই করতে পছন্দ করে।
৬. বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে ডিসকাউন্ট দিন
সর্বদাই যে আপনি একই দামে প্রোডাক্ট সেল করবেন, তা নয়। বিশেষ দিন বা উৎসব উপলক্ষে বিশেষ ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা রাখুন। আর সেই সকল ডিসকাউন্টের জন্য কূপন তৈরি করুন। এর ফলে একবার যদি কোন কাস্টমার আপনার থেকে সার্ভিস নেয়, আর আপনি যদি তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনার সেবার প্রতি তার মনে একটি সফট কর্ণার তৈরি হবে।
৭. এসইও সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিন
সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে যেন সহজেই আপনার টার্গেট করা ক্রেতারা আপনাকে খুঁজে পেতে পারে, তার জন্য এসইও প্রয়োজন। এর অর্থ হলো সঠিক কীওয়ার্ডগুলো আপনার সাইটের টেক্সট, বিভিন্ন লিংকের মাধ্যমে আরও বেশী সামনের সারিতে নিয়ে আসা। সেক্ষেত্রে কোন কীওয়ার্ডগুলো আপনার জন্য বেশী জোরালো হবে তা ঠিক করুন।
আপনার যদি বাজেট ভালো থাকে, তাহলে প্রয়োজনবোধে এসইওর এর জন্য এতজন এক্সপার্ট ডেভেলপারকে হায়ার করুন। এক্ষেত্রে আমরা আপনাকে সহায়তা করতে পারি। আপনার ইকমার্স সাইটের যেকোন প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
৮. ভালো কনটেন্ট তৈরি করুন
আপনার সাইটের কনটেন্ট যেন গ্রাহককে আগ্রহী করতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। কনটেন্টগুলো দীর্ঘ সময় নিয়ে তৈরি করুন, যেন তা তথ্যবহুল হয় এবং একজন ক্রেতা যেন এই কনটেন্টগুলোর কারণেই আবার আপনার সাইটে ফেরত আসতে চায়।
৯. ওয়েবসাইটের জন্য সঠিক রঙ পছন্দ করুন
আপনার ওয়েবসাইটের কালার যেন ভিজিটরদের কাছে দৃষ্টিকটু মনে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। একাধিক বেশি বেশি কালার ব্যবহার না করে বরং আপনার ব্রান্ডের সাথে মিল রেখে ওয়েবসাইটের ডিজাইন করুন। একটি সুন্দর ওয়েবসাইট একজন ভিজিটরকে দীর্ঘক্ষণ আপনার ওয়েবসাইটে ধরে রাখতে সক্ষম।
আপনার যদি সুন্দর একটি ইকমার্স সাইটের প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমরা সাধ্যের মধ্যে আপনার জন্য সব থেকে সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরির চেষ্টা করবো।
১০. নিরাপদ হোস্টিং ব্যবহার করুন
সবশেষে ভালো মানের ডোমেইন ও হোস্টিং ব্যবহারে সচেষ্ট হোন। কমদামে হোস্টিং না কিনে বরং যেখান থেকে কিনলে আপনার তথ্যগুলো অধিক নিরাপদ থাকবে, তেমন হোস্টিংকে প্রাধান্য দিন। কারণ, নিরাপদ হোস্টিং ব্যবহার না করলে আপনার সাইটের তথ্যগুলো নিরাপত্তার অভাবে পরবে এবং কোনভাবে সাইট হ্যাকিং হলে, আপনার কাস্টমারদের তথ্য লিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি আপনার ব্যবসায়িক সুনাম তো নষ্ট হবেই।
►► আরো দেখুন: আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাজাবেন যেভাবে – পর্ব ১
►► আরো দেখুন: আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাজাবেন যেভাবে – পর্ব ২
►► আরো দেখুন: আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাজাবেন যেভাবে – পর্ব ৩
প্রিয় পাঠক, কোর্সটিকায় আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান, তা জানিয়ে নিচে কমেন্ট করুন। ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করতে পারেন এই লিংক থেকে।
Discussion about this post