ইঞ্জিনিয়ারিং একটি স্বপ্নের ক্যারিয়ারের নাম। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ থাকে। তুমি যদি মেধা ও মননের দিক থেকে সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারি হয়ে থাকো, তবে ইঞ্জিনিয়ারিং হতে পারে তোমার জন্য দারুণ একটি পছন্দ।
ইঞ্জিনিয়ারিং একটি বৃহৎ ধারণা। এর রয়েছে অনেকগুলো শাখা। তাই তুমি কোন ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং বেছে নেবে, এ সিদ্ধান্ত নেয়া তোমার জন্য অনেক কঠিন হতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা জানার আগে তোমাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে জানতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বহুল পরিচিত শাখাগুলো হচ্ছে
- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট এবং রুয়েট উল্লেখযোগ্য। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে তোমাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা সংশ্লিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এই শর্তগুলো পূরণ না হলে তুমি ভর্তি পরীক্ষার ফরম তুলতে পারবে না।
প্রথমত তোমাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বাংলাদেশের যেকোন মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড বা কারিগরি বোর্ড থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ পেতে হবে অথবা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেতে হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক, আলীম বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের প্রত্যেকটিতে আলাদাভাবে জিপিএ ৫.০০ পেতে হবে। তবে ইংরেজি ভার্সন বা বিদেশী শিক্ষা বোর্ড থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সমমানের পরীক্ষায় উক্ত বিষয়সমূহে কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেতে হবে।
উল্লেখ্য, তুমি যদি বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হতে চাও, তাহলে তোমাকে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ পেতে হবে।
GCE ‘O’ এবং GCE ‘A’ লেভেলে পাশ করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য GCE ‘O’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ে আলাদাভাবে ‘A’ গ্রেড পেতে হবে। এছাড়াও GCE ‘A’ লেভেল পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ‘A’ গ্রেড পেতে হবে।
তবে এক্ষেত্রে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হতে চাইলে তোমাকে GCE ‘A’ লেভেল পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে কমপক্ষে ‘B’ গ্রেড পেতে হবে।
প্রতি বছরই দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ যারা ফরম পূরণ করবে, তারা সবাই কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। মোট আবেদনকারীর মধ্যে হতে এইচএসসি বা সমামান পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজি বিষয়ের মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম ৩০,০০০ প্রার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।
ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন
‘ক’ এবং ‘খ’ মোট দুটি গ্রুপে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ‘ক’ গ্রুপের জন্য মোট ৫০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা এবং ‘খ’ গ্রুপের জন্য মোট ৫০০ নম্বরের MCQ অনুষ্ঠিত হবে। তবে শুধু ‘খ’ গ্রুপের জন্য অতিরিক্ত ২০০ নম্বরের মুক্তহস্ত অংকন পরীক্ষা নেয়া হবে।
এক্ষেত্রে ‘ক’ গ্রুপে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নে ২৫ টি MCQ থাকবে, যার মান হবে যথাক্রমে ১৫০। ইংরেজীতে ২৫ টি MCQ থাকবে, যার মান হবে ৫০। এভাবে ‘ক’ গ্রুপে মোট ৫০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
‘খ’ গ্রুপের ক্ষেত্রে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে ২৫ টি করে MCQ থাকবে, যার মান হবে যথাক্রমে ১৫০। রসায়নে ৪২৫ টি MCQ থাকবে, যার মান হবে ১৫০। ইংরেজীতে ২৫ টি MCQ থাকবে, যার মান হবে ৫০। এবং সবশেষে মুক্তহস্ত অংকন বিষয়ক ৪ টি MCQ থাকবে যার মান হবে ২০০। এভাবে ‘খ’ গ্রুপে মোট ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা
ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর প্রাপ্ত সর্বমোট নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তিযোগ্য প্রার্থীর মেধাস্থান নির্ধারণ করা হবে। প্রার্থীদের মেধাস্থান অনুসারে ভর্তিযোগ্য প্রার্থীদের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য একটি মেধাতালিকা এবং স্থাপত্য বিভাগের জন্য পৃথক একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।
একাধিক প্রার্থী ভর্তি পরীক্ষায় একই মোট নম্বর পেলে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় ক্রমানুসারে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজীতে প্রাপ্ত নম্বরের এবং স্থাপত্য বিভাগের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় ক্রমানুসারে মুক্তহস্ত অংকন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজীতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাস্থান নির্ধারণ করা হবে।
শেষ কথা
আমরা তোমাকে এতক্ষণ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু ধারণা দেয়াার চেষ্টা করেছি। তবে জেনে রাখো, ইঞ্জিনিয়ারিং অনেক চাহিদা সম্পন্ন ক্যারিয়ার। তাই এ সেক্টরে সফল হতে হলে তোমাকে অনেক অধ্যয়ন করতে হবে।
কোর্সটিকায় রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং সকল শাখার সবগুলো বই। এই লিংকে ক্লিক করে তোমরা সেই বইগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করে নিতে পারো। এতে করে তোমরা এ বইগুলো স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে যেকোন স্থানে বসে এক ঝলক পড়ে নিতে পারবে।
Discussion about this post