ইতিহাস ১ম পত্র ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বহির্বিশ্বের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। বিশেষ করে দুই পরাশক্তি- যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং রাইজিং পাওয়ার হিসেবে বিবেচিত ভারত ও চীনের ভূমিকা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিশেষভাবে আলোচিত হয়ে থাকে।
উল্লেখিত শক্তিসমূহের মধ্যে ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল সরাসরি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সহায়ক শক্তি। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিবেচনায় বিপক্ষ শক্তি। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি মার্কিন কংগ্রেস, মার্কিন সিনেট ও সর্বস্তরের মার্কিন জনগণ এবং চীনা জনগনের সমর্থন ও সহযোগিতা ছিল অপরিসীম।
ইতিহাস ১ম পত্র ৮ম অধ্যায়
১. রাহুলের প্রতিবেশী একটি দেশের নিরীহ জনগণের ওপর বিদেশি সামরিক জান্তারা নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে দেশটি থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণের ভয়ে রাহুলের দেশে আশ্রয় নেয়। রাহুলের দেশের সরকার এসব আশ্রয় প্রার্থী মানুষকে আন্তরিকভাবে খাদ্য, বস্তু, বাসস্থান দিয়ে সাহায্য করে।
ক. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে ছিলেন?
খ. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত রবিশংকরের অবদান সম্পর্কে যা জান লেখ।
গ. মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাহুলের দেশের সাথে কোন দেশের তুলনা করা যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১-এর পর মুক্তিযুদ্ধে উক্ত দেশের অবদান উল্লেখ কর।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
খ. ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত রবিশংকর বাংলাদেশের জন্য অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি আমেরিকার লস এঞ্জেলসে ‘বাংলাদেশ’ কনসার্টের আয়োজন করে এবং এর থেকে প্রাপ্ত অর্থ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন শরণার্থীদের, শিশুদের খাদ্য ও চিকিৎসার জন্য দান করেন তার এ দানের কথা আজও বাঙালিরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।
গ. মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাহুলের দেশের সাথে ভারতের তুলনা করা যায়। বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যখন লাখ লাখ বাঙালি ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল তখন তারা খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রদান করে সার্বিক সহযোগিতা করেছিল শরণার্থীদের প্রতি ভারতের আচরণ ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর পাকিস্তানি বর্বরতার হাত থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন গড়ে ২০-৪৫ হাজার মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয়।
ফলে কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারীরা সংখ্যা কোটিতে গিয়ে পৌঁছে। এ প্রেক্ষিতে ভারত সরকারের নির্দেশে এর সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় শিবির নির্মাণ করে। তারা লঙ্গরখানা স্থাপন করে অনাহারি মানুষদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করে। তাছাড়া সরকারের পাশাপাশি ভারতের জনগণও খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা সেবা প্রভৃতির মাধ্যমে শরণার্থীদেরকে সহায়তা করে। উদ্দীপকে রাহুলের দেশও পার্শ্ববর্তী দেশের দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে ভারতের ন্যায় উপরিউক্ত ভূমিকা পালন করে। অতএব, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাহুলের দেশের সাথে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের তুলনা করা যায়।
ঘ. ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে উক্ত দেশ তথা ভারতের অবদান ছিল অন্যান্য মিত্র দেশের তুলনায় সর্বাধিক। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময় ভারতীয় শাসকশ্রেণি বাংলাদেশের সমস্যার সমাধানে সামরিক হস্তক্ষেপের পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্মতি নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয়। নভেম্বরের শেষে ভারতের জন্য সামরিক ও কূটনৈতিক উভয় দিক থেকে মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত ছিল। ৩০ নভেম্বর ভারতীয় সংসদে ইন্দিরা গান্ধী ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য প্রত্যাহার করা না হলে সীমান্ত এলাকা থেকে ভারত সেনা সরিয়ে নেবে না। ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে, জাতিসংঘ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন নিয়ে ভারতীয় বাহিনী মুক্তিবাহিনীর সহায়তায় অত্যন্ত দ্রুত বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
পাশাপাশি ৬ ডিসেম্বর ভারত স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি প্রদান করে। এরপর ভারতের নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনীকে আত্মসমর্পন করার জন্য চূড়ান্ত বিবৃতি পাঠালে পাকিস্তানি সেনারা ১৬ ডিসেম্বর এ যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এ যুদ্ধে ভারতের নিয়মিত বাহিনীর প্রায় ৪ হাজার সৈন্য এবং আরও অনেক বেসরকারি লোকের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়াও প্রচুর অর্থ ও গোলাবারুদ ব্যয় হয় এবং পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরাসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় আর্থসামাজিক ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি হয়। এককথায় বলা যায়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ভারতের অবদান ছিল অতুলনীয়।
২. ১৯৯০ সালে ইরাক রাতের আঁধারে প্রতিবেশী দেশ কুয়েতে সামরিক অভিযান চালায়। আকস্মিক এ আক্রমণে কুয়েতিরা দিশেহারা হয়ে ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী মিত্র দেশ সৌদি আরবে আশ্রয় নেয়। সৌদি সরকার বাস্তুহারা কুয়েতিদের আশ্রয় ও সেবা দিয়ে কুয়েতিদের মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে।
ক. কত সালে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়?
খ. বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও।
গ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ পাঠ্যবইয়ের বিষয়টি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আশ্রয়হীনদের আশ্রয় দিতে সৌদি আরবের মতো বাংলার মিত্র ও প্রতিবেশী দেশটির মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা ছিল যথার্থ ও মানবিক— পাঠ্যবইয়ের নিরিখে তা বিশ্লেষণ কর।
৩. ১৩ সেপ্টেম্বর কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ১৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি সম্মেলনে ভাষণ দানকালে প্রাক্তন ব্রিটিশ কমনওয়েলথ সচিব মি. অর্থাবটমালি বলেন যে, পূর্ববঙ্গের জনগণের পক্ষে কথা বলতে পারেন একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের অনুমতি নিয়ে পূর্ববঙ্গের পরিদর্শন করে দেখেছেন, সেখানে ফসল কাটা উপদ্রুত এলাকাগুলো হয়নি, ফলে সেখানকার জনগণ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।
৪. মধ্যপ্রাচ্যে আইএস হুমকি ও হত্যাযজ্ঞের কারণে! মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিরিয়াবাসী শরণার্থী হিসেবে প্রতিবেশী দেশ তুরস্কে আশ্রয় নিচ্ছে। তুরস্ক সরকার তাদের জন্য সাধ্যমতো শরণার্থী শিবির স্থাপন করে সহযোগিতা করছে। অধিকন্তু সিরিয়ার বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো সাহায্য ও মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।
ক. ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
খ. মুক্তিযুদ্ধে সাত নং সেক্টরের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের মতো মুক্তিযুদ্ধে কোন দেশ বাংলাদেশকে অনুরূপ সহযোগিতা করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত দেশের সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডই বাংলাদেশের বিজয়কে নিশ্চিত করে পাঠ্যবইয়ের আলোকে মতামত দাও।
৫. আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে ফ্রান্স বিপ্লবীদের রসদ ও অস্ত্র সরবরাহ করে সাহায্য করে। তারা স্থল ও নৌপথে আমেরিকার স্বাধীনতাকামীদের সহায়তা করে। অবশেষে প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকার করে ব্রিটিশরা আমেরিকা ত্যাগ করে।
ক. মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
খ. শহিদ মিনার নির্মাণ প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
গ. উদ্দীপকের অনুরূপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগী দেশটির অবদানের বর্ণনা দাও।
ঘ. “শুধু সামরিক সাহায্য নয়, মানবিক সাহায্যের ক্ষেত্রেও দেশটির ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য”— উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।
◉ আরও দেখ: ইতিহাস ১ম ও ২য় পত্রের সকল CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ১ম পত্র ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। কোর্সটিকায় আমরা এই অধ্যায় থেকে মোট ৫টি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর তৈরি করেছি। সবগুলো CQ প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post