জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য মহিলারা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করলেও ইমার্জেন্সি পিল খুবই কম ব্যবহার করে থাকেন। তাই মহিলাদের ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম ও ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়, এই ধরনের বিষয়গুলোতে খুবই কম ধারণা থাকে। যদি আপনারও এই বিষয়ে কম ধারণা থাকে, আপনি এখান থেকে এই বিষয়গুলো জেনে নিতে পারবেন।
অনেক মহিলা এমন আছেন যারা জানেন যে, ইমার্জেন্সি পিল এক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল। তাই তারা নিজের ইচ্ছেমতো এই পিল ব্যবহার করেন। এই পিল নিয়ম অনুযায়ী খেলে কোন সমস্যা নেই। তবে, যারা নিয়মের ব্যতিক্রম করেন তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় গর্ভধারণে সমস্যা হওয়া থেকে ইস্ট্রোজেন হরমোনের তারতম্য হওয়া লক্ষ্য করা যায়। অনেকে ইস্ট্রোজেন হরমোন যুক্ত খাবার খেয়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেলেও অধিকাংশ মহিলা এই সমস্যা থেকে উত্তরণ হতে পারেন না।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম
কয়েক ধরনের ইমার্জেন্সি পিল রয়েছে। সবগুলো ইমার্জেন্সি পিলের কাজ করার ধরন একই এবং এদের খাওয়ার নিয়মও প্রায়ই একই। তাই একটি জানলে অপরগুলোও জানা হয়ে যাবে। ইমার্জেন্সি পিল দুই ধরনের পাওয়া যায়। এক ধরনের ইমার্জেন্সি পিল ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করতে হয়। অন্য ধরনের ইমার্জেন্সি পিল ৫ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
৭২ ঘণ্টার মধ্যে যে পিল ব্যবহার করতে হয় সেই পিলটি যে কোন মুহূর্তে খাওয়া যায়। এই পিলটি খাওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে পারে না। এই পিলটি খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে সহবাসের আগে বা সহবাসের পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়া। এই সময়ে এই পিলের কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশী থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিস হলে ৭২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে খাওয়া যায়। তবে ধীরে ধীরে এর কার্যকারিতা হৃাস পেতে শুরু করে।
এই পিল ব্যবহার করার পরে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অন্য কোন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে না। এই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে একাধিকবার সহবাস করলেও প্রেগন্যান্সি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আরও একটি পিল রয়েছে সেটি হচ্ছে সবোর্চ্চ ৫ দিন পর্যন্ত কার্যকারিতা দেয়। এই পিল খাওয়ার পরে ৫ দিন পর্যন্ত ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে পারে না। সহবাস করার পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই পিল খাওয়া উত্তম। ৫ দিন পর্যন্ত এই পিলের কার্যকারিতা থাকে।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম | ইমার্জেন্সি পিল সেবনের উপকারিতা
ইমার্জেন্সি পিল ডিম্বাণু বের হতে বাধা দেয় কিংবা ইতিমধ্যে ডিম্বাণু বের হয়ে গেলে তা নিষিক্ত হতে বাধা দেয়। তাই দুর্ঘটনাবশত কনডম নষ্ট হয়ে গেলে বা কয়েকদিন পিল খেতে ভুলে গেলে এই উপায় অবলম্বন করে গর্ভধারণ রোধ করা সম্ভব। অনেক সময় এমন হয়ে থাকে যে জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্য কোন উপায় কাজে লাগে না তখন এই ইমার্জেন্সি পিলই একমাত্র উপায় হিসেবে কাজ করে।
ইমার্জেন্সি পিল সেবনের অপকারিতা
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী পিলগুলো খেলে কোন সমস্যা হবে না। তবে এক ঋতুস্রাবে একাধিকবার এই ট্যাবলেট ব্যবহার করা কখনোই উচিত হবে না। এই পিল বেশী ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এই পিল ব্যবহার করার পরপরই যেসব সমস্যা হয়ে থাকে তা হচ্ছে- বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা বা স্তনে ব্যথা এবং পরবর্তী মাসিক সঠিক সময়ে না হওয়া।
এগুলো ছিলো খাওয়ার সাথে সাথে সমস্যা। এক ঋতুস্রাবে একবারের চেয়ে বেশী এই পিল ব্যবহার করলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিও হয়ে থাকে। বিশেষ করে গর্ভধারণে সমস্যা হয়। তাই ডাক্তাররা বলে থাকেন এই পিল এই ঋতুস্রাবে একবারের বেশী ব্যবহার করা কখনোই উচিত নয় এবং প্রথম সন্তান হওয়ার আগে পিল ব্যবহার উচিত নয়।
ইমার্জেন্সি পিল কতটুকু কার্যকর
যে কোন ধরনেই পিলই শতভাগ কার্যকর নয়। ইমার্জেন্সি পিল সঠিক সময়ে ও সঠিক উপায়ে ব্যবহার করলে এটা অনেকটাই কাজে দেয়। রিসার্চে দেখা গেছে ইমার্জেন্সি পিল সঠিক উপায়ে ব্যবহার করলে ৯৯% পর্যন্ত কাজ করে। সঠিক উপায়ে এই পিল ব্যবহার না করলে কনসিভ করার সম্ভাবনা অনেকখানি বেড়ে যায়।
শেষ কথা
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী এই পিল খেলে এটা যতটা কার্যকর। এই পিল নিয়ম অনুযায়ী না খেলে এই পিল ঠিক ততটাই ক্ষতিকর। অনেক নারীরা এক মাসের মধ্যে কয়েকটি ইমার্জেন্সি পিল খেয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে ডাক্তারের কাছে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। এই পিল নিয়ম অনুযায়ী খেলে সমসাময়িক কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। তার মধ্যে মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা ও বমি হওয়া অন্যতম। তবে এই সমস্যাগুলো পিলের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার সাথে সাথে কমে যায়।
Discussion about this post