ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : হায়ারোগ্লিফিক হলো প্রাচীন মিসরীয়দের চিত্রলিপিভিত্তিক লিখন পদ্ধতি। হায়ারোগ্লিফিক অর্থ পবিত্র লিপি। এটি ছিল একটি লিখিত ভাষা। এ লিখিত ভাষায় নানাপ্রকার দ্রব্য, প্রকৃতি ও বিষয় প্রভৃতির ছবি আঁকা থাকত।
হায়ারোগ্লিফিক শিলালিপি প্রথমে তৈজসপত্র, ফলক এবং কবরের গায়ে খোদাই করা হতো। পরে মিসরে প্যাপিরাস নামক কাগজ আবিষ্কৃত হলে এতে এ লিপি উৎকীর্ণ করা হয়। প্রায় ৭৫০টি চিত্র লিপির চিহ্ন দিয়ে এ প্রাচীন মিসরীয় লিপি পদ্ধতি তৈরি হয়েছিল।
ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. মিসরীয়দের চিত্র লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : মিসরীয়রা চিত্রপিপিভিত্তিক লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার করে সভ্যতার বিকাশে বিশেষ অবদান রেখেছে।
মিসরীয়দের লিখন পদ্ধতি ‘হায়ারোগ্লিফিক’ (Hieroglyphic) নামে পরিচিত। হায়ারোগ্লিফিক অর্থ পবিত্র লিপি। এটি ছিল একটি লিখিত ভাষা। এ ভাষায় নানাপ্রকার দ্রব্য, প্রাকৃতিক বিষয় প্রভৃতির ছবি আঁকা থাকত, যার মাধ্যমে জিনিসগুলোর পরিচয় ও নাম জানা সম্ভব হতো হায়ারোগ্লিফিক শিলালিপি প্রথমে তৈজসপত্র, ফলক এবং কবরের গায়ে খোদাই করা হতো। পরে মিসরে কাগজ আবিষ্কৃত হলে এতে এ লিপি উৎকীর্ণ করা হয়। এ লিখন পদ্ধতি তিনটি রূপে বিকাশ লাভ করেছে। যথা: চিত্রভিত্তিক, অক্ষরভিত্তিক এবং বর্ণভিত্তিক প্রায় ৭৫০টি চিত্রলিপির চিহ্ন দিয়ে প্রাচীন মিসরীয় লিপি পদ্ধতি তৈরি হয়েছিল।
২. সাবায়ে মুয়াল্লাকাত বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আরবের উত্তাল মেলায় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাতটি কবিতাকে সাবায়ে মুয়াল্লাকাত বা ‘সপ্ত ঝুলন্ত’ কবিতা বলা হতো।
মক্কার নিকটবর্তী উকাজের বার্ষিক মেলায় আরবের প্রখ্যাত কবিগণ কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন। উকাজের বাৎসরিক সাহিত্য সম্মেলনে সাতটি কবিতাকে পুরস্কৃত করা হতো। সোনালি হরফে লিপিবদ্ধ করে এ কবিতাগুলো মক্কায় কাবার দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হতো। এ কবিতাগুলোর বিষয়বস্তু ছিল প্রেম, যুদ্ধবিগ্রহ, বীরত্বপূর্ণ কাহিনি, বংশ গৌরব, আরব . সমাজের আতিথেয়তা, স্বাধীনচেতা মনোভাব ইত্যাদি। এ কবিতাগুলোই সপ্ত ঝুলন্ত কবিতা বা সাবায়ে মুয়াল্লাকাত নামে পরিচিত ছিল।
৩. জাজিরাতুল আরব বলতে কী বুঝ? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : জাজিরাতুল আরব বলতে আরব ভূখ-কে বোঝায়।
জালিরা’ আরবি শব্দ। এর অর্থ উপদ্বীপ। আর আরব একটি ভূখণ্ডের নাম। সুতরাং জাজিরাতুল আরব অর্থ আরব উপদ্বীপ। এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত আরব দেশ বিশ্বের সর্ববৃহৎ উপদ্বীপ। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে এটি একটি বৈচিত্রময় দেশ। এর তিন দিক বিশাল জলরাপি এবং একদিক বিস্তীর্ণ মরুপ্রান্তর দ্বারা বেষ্টিত। এরূপ ত্রিভুজাকৃতির ভৌগোলিক অবস্থানের জন্যই আরব দেশকে জাজিরাতুল আরব বলা হয়।
৪. আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কী বুঝ? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে ইসলামপূর্ব আরবের অরাজক ও বিশৃঙ্খল সময়কালকে বোঝায়।
আইয়ামে জাহেলিয়া শব্দটি আরবি। এর বাংলা অর্থ অজ্ঞতা বা অন্ধকারের যুগ। মহানবি (স)-এর আবির্ভাবের পূর্বে আরবের প্রায় একশ বছর সময়কালকে আইয়ামে জাহেলিয়া বলা হয়। এ সময় মানুষের মধ্যে কোনো প্রকার নৈতিকতা, সততা, দায়িত্বজ্ঞান ও শালীনতা ছিল না। অন্যায়-অনাচারে সমাজ ভরপুর ছিল। এ জন্য এ সময়কালকে আইয়ামে জাহেলিয়া বা অন্ধকারের যুগ বলা হয়।
৫. উটকে কেন মরুভূমির জাহাজ বলা হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মরূজীবনের প্রধান সহায়ক বাহন হওয়ায় উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়।
আরবের অধিকাংশ অঞ্চলই মরুময়। আর উত্তপ্ত মরু অঞ্চলে উটই চলাচলের একমাত্র উপযোগী প্রাণী। তাই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় মরুময় আরবে এটি সর্বাধিক গৃহপালিত প্রাণী। মরুবাসীরা খাদ্য ও পানীয় সংগ্রহ, যোগাযোগ এবং ক্রয়-বিক্রয়ের প্রধান বাহন হিসেবে উঠকে ব্যবহার করে। তাই একে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়।
৬. রাজা মেনেস ফেরাউনের মর্যাদা লাভ করেন কীভাবে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : উত্তর ও দক্ষিণ মিসরকে একত্রিত করার মাধ্যমে রাজা মেনেস ফেরাউনের মর্যাদা লাভ করেন। প্রাক-ডাইনেস্টি যুগাবসানের পর মিসর উত্তর মিসর এবং দক্ষিণ মিসর এ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দে এ দু’অংশকে একত্র করে মেনেস তার শাসক নিযুক্ত হন। তাঁর রাজধানী স্থাপিত হয়। । মেমফিস শহরে। এভাবে রাজা মেনেস ফেরাউনের মর্যাদা লাভ করেন।
৭. কিউনিফর্ম বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : কিউনিফর্ম হলো সুমেরীয়দের আবিষ্কৃত লিখন পদ্ধতি। সভ্যতার প্রথম দিকে সুমেরীয় লিপি ছিল মিসরীয়দের মতো চিত্রলিপিডিত্তিক।
পরবর্তীকালে নিজেদের লেখাকে গতিশীল করতে তারা নতুন লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবন করে, যা ‘কিউনিফর্ম’ (Cuneiform script) বা কীলকাকর নামে পরিচিত। সুমেরীয়রা কাদামাটির প্লেটে খাগের কলম (জববফ চবহ) দিয়ে কৌপিক কিছু রেখা ফুটিয়ে তুলত। খাজকাটা চিহ্নগুলো দেখতে অনেকটা ছিল তীরের মতো। কিউনিফর্মকে বলা হয় অক্ষরভিত্তিক চিত্রলিপি। এ লিপি বামদিক থেকে ডানদিকে লেখা হতো।
৮. হায়ারোগ্লিফিক কী? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : হায়ারোগ্লিফিক হলো প্রাচীন মিসরীয়দের চিত্রলিপিভিত্তিক লিখন পদ্ধতি।
হায়ারোগ্লিফিক অর্থ পবিত্র লিপি। এটি ছিল একটি লিখিত ভাষা। এ লিখিত ভাষায় নানাপ্রকার দ্রব্য, প্রকৃতি ও বিষয় প্রভৃতির ছবি আঁকা থাকত। হায়ারোগ্লিফিক শিলালিপি প্রথমে তৈজসপত্র, ফলক এবং কবরের গায়ে খোদাই করা হতো। পরে মিসরে প্যাপিরাস নামক কাগজ আবিষ্কৃত হলে এতে এ লিপি উৎকীর্ণ করা হয়। প্রায় ৭৫০টি চিত্র লিপির চিহ্ন দিয়ে এ প্রাচীন মিসরীয় লিপি পদ্ধতি তৈরি হয়েছিল।
৯. হযরত মুহাম্মদ (স) কে আল আমিন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বিশ্বাসযোগ্যতা ও সত্যবাদিতার কারণে মহানবি (স)-কে আল আমিন বলা হতো।
হযরত মুহাম্মদ (স) ছোটবেলা থেকেই সত্যবাদী ছিলেন। এ কারণে আরবের বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তিরা তাঁকে আমানতদার হিসেবে গ্রহণ করেন। নম্র ব্যবহার, সততা, সরলতা, বিশ্বস্ততা, সত্যবাদিতা প্রভৃতি কারণে তিনি আরববাসীর শ্রদ্ধা অর্জন করেন। তাঁর কর্তব্যনিষ্ঠা, চরিত্রিক মাধুর্য, সরলতা, পবিত্রতা, সত্যের প্রতি অনুরাগ ইত্যাদি কারণে মক্কাবাসীগণ তাঁকে ‘আল-আমিন’ বা বিশ্বাসী উপাধিতে ভূষিত করেন।
১০. প্রাচীনকাল থেকে মক্কার গুরুত্বের কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : ধর্মীয় কারণে প্রাচীনকাল থেকেই মক্কার গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি। হযরত ইবরাহিম (আ) মক্কায় কাবা ঘর নির্মাণ করার পর থেকে হল পালনের উদ্দেশ্যে লোকেরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মক্কায় গমন করত। আইয়ামে জাহেলিয়াতেও মক্কায় হল পালন হতো। মুহাম্মদ (স) এর আবির্ভাবের পরেও মুসলমাদের হল পালনের উদ্দেশ্যে মক্কার যেতে হয়। তাই ধর্মীয় কারণে মক্কার গুরুত্ব প্রাচীন কাল থেকেই।
আরো দেখো: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post