বর্তমান অনলাইন পণ্য বিপণন ব্যবস্থায় ই-কমার্স একটি বিপ্লবের নাম। প্রচলিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ধারণাকে বদলে দিয়ে নতুন একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এই ই-কমার্স পদ্ধতি। তাই ডিজিটাল ব্যবসা বাণিজ্যে ই-কমার্সের ভূমিকা উল্লেখ না করলেই নয়।
কোর্সটিকায় আজ আমরা একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটকে পরিপূর্ণ সাজানো এবং তার মার্কেটিং কৌশলগুলো সম্পর্কে জানবো। পাশাপাশি কি কি নীতিমালা মেনে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করলে ভালো সেল পাবেন, তার সবকিছু জানার চেষ্টা করবো।
ওয়েবসাইট ডিজাইন
ওয়েবসাইট ডিজাইনই-কমার্স ওয়েবসাইট শুরুর প্রথমেই আলোচনা করতে হয় ওয়েবসাইট ডিজাইন নিয়ে। কারণ একটি ই-কমার্সে ক্ষেত্রে ডিজাইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইনটি এমন হতে হবে, যেন একজন ক্রেতা যেকোন প্রোডাক্ট সহজেই খুঁজে পায়।
ই-কমার্স ওয়েবসাইট শুরুর প্রথমেই আলোচনা করতে হয় ওয়েবসাইট ডিজাইন নিয়ে। কারণ একটি ই-কমার্সে ক্ষেত্রে ডিজাইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইনটি এমন হতে হবে, যেন একজন ক্রেতা যেকোন প্রোডাক্ট সহজেই খুঁজে পায়।
আপনার ওয়েবসাইটটি ডিজাইন করার সময় অবশ্যই কয়েকটি পেজ বাধ্যতামূলক রাখতে হবে। সেগুলো হচ্ছে: এবাউট পেজ, F.A.Q. পেজ, ব্লগ আর্টিকেল, কন্টাক পেজ, টার্মস এন্ড কন্ডিশন পেজ এবং প্রাইভেসি পলিসি পেজ।
গুরুত্বপূর্ণ এই পেজগুলোর কাজগুলো জেনে নেই
► এবাউট পেজ: ওয়েবসাইটের এবাউট পেজে সাধারণ ওই কোম্পানীর পরিচয় বর্ণনা করা থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এবাউট পেজটি গুরুত্ব ঠিক কতখানি। আপনার ওয়েবসাইটটি যদি ই-কমার্স হয় এবং সেখানে যদি একটি এবাউট পেজ না থাকে, তাহলে একজন ক্রেতার কখনো আপনার বিজনেসের প্রতি আস্থা জন্মাবে না।
তাই, আপনার উচিত হবে একটি এবাউট পেজ তৈরি করা এবং সেখানে আপনার ওয়েবসাইটের এবং ব্যবসার নানাবিধ পরিচয় বিস্তারিত তুলে ধরা। সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে, এবাউট পেজটি চমৎকারভাবে উপস্থাপনা করার। যাতে করে একজন কাস্টমারকে খুব সহজেই আকৃষ্ট করা যায়।
► ব্লগ বা আর্টিকেল পেজ: ই-কমার্স ওয়েবসাইে অবশ্যই একটি ব্লগ পেজ থাকা উচিত, যেখানে বিভিন্ন সময়ে আপনি আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে লেখালেখি করবেন। এখানে আপনি আপনার টপ সেল হওয়া প্রোডাক্টগুলো নিয়ে এক একটি রিভিউ লিখতে পারেন। এছাড়াও আপনার পণ্যের গুণগত মান নিয়ে বিভিন্ন রিভিউ পোস্ট করতে পারেন।
একজন কাষ্টমারকে খুব সহজে আকৃষ্ট করার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে এই ব্লগ পোস্ট। কারণ আপন প্রোডাক্টের সেল অপশনে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে অতবেশি তথ্য তুলে ধরতে পারবেন না, যতটা আপনি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে করতে পারবেন। পাশাপাশি একটি গবেষণায় দেখা গেছে ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটকে আরো বেশি র্যাঙ্ক করা সম্ভব।
► FAQ পেজ: এটি মূলত একটি ওয়েবসাইটের প্রশ্নোত্তর পর্ব। FAQ – Frequently Ask Questions পেজে আপনি ক্রেতাদের বেশ কিছু সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর দিয়ে রাখতে পারেন। যেমন, প্রোডাক্টে কোন সমস্যা হলে আপনি রিফান্ড করেন কিনা, শিপিং এর জন্য কত সময় লাগতে পারে ইত্যাদি। একজন ক্রেতা পণ্য কেনার পূর্বে এই FAQ পেজটি দেখে আপনার সার্ভিস সম্পর্কে আরো বেশি আশ্বস্ত হতে পারে। FAQ পেজের গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন এখান থেকে।
► কনটাক্ট পেজ: একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পেজ হচ্ছে কনটাক্ট পেজ। আপনার ওয়েবসাইটে যদি কনটাক্ট পেজ না থাকে, তাহলে একজন ক্রেতা তার বিশেষ প্রয়োজনে আপনার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে না।
► ► এখানে দেখুন: ওয়েবসাইট গুগলে র্যাঙ্ক করার ১০ নিঞ্জা টেকনিক
তাই অবশ্যই আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি সম্পূর্ণ ফাংশনাল কনটাক্ট পেজ তৈরি করতে হবে। যেখানে আপনার সাথে কাস্টমারের যোগাযোগ করার সকল উপায় বর্ণনা করা থাকবে। পাশাপাশি আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সোশ্যাল প্রোফাইলের লিংক এখানে যুক্ত করতে পারেন।
► টার্মস এন্ড কন্ডিশন: আপনার ওয়েবসাইট থেকে সেবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একজন ক্রেতার কি কি শর্ত মেনে চলতে হবে, তা মূলত এই টার্মস এন্ড কন্ডিশন বা নীতিমালা পেজে বর্ণনা করা হয়। টার্মস এন্ড কন্ডিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ, এটি না থাকলে কোন কাস্টমার পণ্য কিনলে পরবর্তীতে আপনি বিভিন্ন ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন।
এখান থেকে দেখুন একটি ওয়েবসাইটের টার্মস এন্ড কন্ডিশনের গুরুত্ব। আর এখান থেকে দেখুন কিভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য চমৎকার একটি টার্মস এন্ড কন্ডিশন লিখতে পারেন।
► প্রাইভেসি পলিসি: আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর এবং ক্রেতাদের থেকে আপনি কি কি তথ্য গ্রহণ করেন এবং সেই তথ্যগুলো কি কি কাজে ব্যবহার করেন, তার কৈফিয়তমূলক পেজ হচ্ছে প্রাইভেসি পলিসি পেজে। তাই এই পেজটি খুব নিখুঁতভাবে সাজান, যাতে করে একজন কাস্টমার আপনার ব্যবার পলিসির ওপর সন্দেহ প্রকাশ করতে না পারে।
সবশেষে আপনার ওয়েবসাইটকে এমনভাবে সাজাবেন না, যেন ভিজিটর একটার পর একটা ক্লিক করে তারপর তথ্য খুঁজে পেতে হয়। ওয়েবসাইটকে সাবলিল ও সহজ করে কাস্টমারের সামনে উপস্থিত করুন। যাতে করে সহজেই যে কেউ যেকোন পেজে ভিজিট করতে পারে।
তার পাশাপাশি একজন কাস্টমার যেন ব্যাক ও ফ্রন্ট পেজে সহজেই ভিজিট করতে পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে, ওয়েবসাইটে লাইভ চ্যাট যুক্ত রাখুন। এর ফলে ভিজিটর ওয়েবসাইট থেকে যেকোন প্রয়োজনীয় বিষয়ের তথ্য লাইভ চ্যাট থেকে জেনে নিতে পারে।
ই-কর্মাস ব্যবস্থাপনার পরবর্তী বিষয়গুলো এই লেখাটির দ্বিতীয় পর্বে শেয়ার করা হয়েছে।
►► ই-কমার্সের সবগুলো পর্ব দেখুন এখানে: প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব এবং তৃতীয় পর্ব।
প্রিয় পাঠক, কোর্সটিকায় আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান, তা জানিয়ে নিচে কমেন্ট করুন। ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্টে এবং ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন।
Discussion about this post