ঋতু বর্ণন কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : কবি আলাওল গ্রীষ্মের তাপদাহের কথা বলেছেন। এ সময় সূর্যের প্রচণ্ড তাপ থাকে। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের আগমনে চারদিক প্রচন্ড উত্তাপে ফেটে পড়ে। সূর্য তার সমস্ত রাগ নিয়ে যেন হাজির হয়। রৌদ্রের এই প্রখরতার জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে পড়ে। সূর্য্যরে কিরণ থাকে মাথার উপর। ফলে দুপুরে ছায়াও মানুষের সোজা পায়ের নিচ বরাবর যেন আশ্রয় নেয়। আর এ বিষয়টি বোঝাতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
বসন্ত ঋতুতে চারদিক নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। পূর্বের রূঢ়তা, রুক্ষতা মুছে ফেলে প্রকৃতি নতুন রূপ ধারণ করে। তখন গাছে গাছে নতুন নতুন পাতা দেখা যায়। প্রকৃতি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। ‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় বসন্তের নানা দিক উঠে এসেছে। বসন্ত মানেই প্রকৃতিতে নানা রং নানা ফুল ও পাখির ছড়াছড়ি। এ সময় ভ্রমরের গুঞ্জন এবং কোকিলের কলরবে চারদিকে মুখরিত হয়ে ওঠে। পলাশ ফুলে ফুলে ঘন বন যেন লাল হয়ে ওঠে। প্রশ্নোক্ত চরণটিতে কবি এ বিষয়টিই বুঝিয়েছেন।
ঋতু বর্ণন কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. ‘রৌদ্র ত্রাসে রহে ছায়া চরণে সরণ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘রৌদ্র ত্রাসে রহে ছায়া চরণে সরণ’ বলতে গ্রীষ্মে সূর্য্যরে প্রখরতায় মানুষের ছায়াও চরণতলে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।
‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় কবি আলাওল গ্রীষ্মের তাপদাহের কথা বলেছেন। এ সময় সূর্য্যরে প্রচণ্ড তাপ থাকে। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের আগমনে চারদিক প্রচন্ড উত্তাপে ফেটে পড়ে। সূর্য তার সমস্ত রাগ নিয়ে যেন হাজির হয়। রৌদ্রের এই প্রখরতার জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে পড়ে। সূর্য্যরে কিরণ থাকে মাথার উপর। ফলে দুপুরে ছায়াও মানুষের সোজা পায়ের নিচ বরাবর যেন আশ্রয় নেয়। আর এ বিষয়টি বোঝাতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
২. পাবন সময়ে চারপাশ জলে ভরে যায় কেন?
উত্তর: পাবন সময়ে বর্ষার অবিরাম বৃষ্টির ধারায় চারপাশ পানিতে ভরে ওঠে।
বর্ষাকালে প্রতিনিয়তই ঝরতে থাকে অবিরল বৃষ্টির ধারা। বৃষ্টির পূর্বমুহূর্তে ঘন ঘন মেঘের গর্জনে মুখরিত হয় প্রকৃতি। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা না করে বৃষ্টির জল অবিরাম বর্ষিত হয়। ফলে চারদিকে পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। এভাবে থই থই পানিতে বর্ষাকালে এক মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়।
৩. ‘রৌদ্র ত্রাসে রহে ছায়া চরণে সরণ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘রৌদ্র ত্রাসে রহে ছায়া চরণে সরণ’ বলতে গ্রীষ্মে সূর্য্যরে প্রখরতায় মানুষের ছায়াও চরণতলে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।
‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় কবি আলাওল গ্রীষ্মের তাপদাহের কথা বলেছেন। এ সময় সূর্যের প্রচণ্ড তাপ থাকে। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের আগমনে চারদিক প্রচন্ড উত্তাপে ফেটে পড়ে। সূর্য তার সমস্ত রাগ নিয়ে যেন হাজির হয়। রৌদ্রের এই প্রখরতার জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে পড়ে। সূর্য্যরে কিরণ থাকে মাথার উপর। ফলে দুপুরে ছায়াও মানুষের সোজা পায়ের নিচ বরাবর যেন আশ্রয় নেয়। আর এ বিষয়টি বোঝাতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
৪. ‘শীতের তরাসে রবি তুরিতে লুকাএ।’ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘শীতের তরাসে বৃবি তুরিতে লুকাএ।’- চরণটি দ্বারা শীতকালে তাড়াতাড়ি সূর্যাস্ত এবং দিনের স্বল্প ব্যাপ্তির দিকটি উপস্থাপন করা হয়েছে।
শীত ঋতুতে প্রচন্ড ঠান্ডা যেন সূরে্যর উপর ত্রাস সৃষ্টি করে। শীতের ভয়ে সূর্য দ্রুত অস্ত যায়। এ সময় রোদে তেমন তেজ থাকে না। শীতের কাছে পরাজয় স্বীকার করে সূর্য দিগন্তে লুকিয়ে যায়। এ বিষয়টি বোঝাতেই ‘শীতের তরাসে রবি তুরিতে লুকাএ’- চরণটির অবতারণা হয়েছে
৫. ‘অতি দীর্ঘ সুখ নিশি পলকে শোধা’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: শীতকালের রাত দীর্ঘ হলেও সুখানুভূতির কারণে তা দ্রুত শেষ হয় বোঝাতে কবি আলোচ্য উক্তিটি করেন।
‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় কবি প্রকৃতির রূপবৈচিতত্র্যের সাথে মানবমনের গভীর সম্পর্কের দিকটি বর্ণনা করেন। প্রকৃতিতে ঋতু পরিবর্তনের পালাক্রমে মানবমনের অনুভবের জগতেও পরিবর্তন ঘটে। প্রকৃতিতে শীতকাল এলে মানবমনে নতুন সুখানুভূতি তৈরি হয়। শীতে দিন হোটো হয় এবং রাত দীর্ঘ হয়। তবে এই দীর্ঘ রাতও কবির মতে সুখানুভূতি তৈরি করে। ফলে খুব দ্রুতই যেন এই রাত শেষ হয়ে যায়। কবি মূলত শীতের আনন্দ ও ঋতু পরিবর্তনের পালাক্রমে মানব মনের পরিবর্তনকে বুঝিয়েছেন।
৬. ‘কুসুমিত কিংশুক সঘন বন লাল’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? .
উত্তর: কবি প্রশ্নোক্ত চরণটিতে পলাশ ফুলে ফুলে বন লাল হওয়ার কথা বুঝিয়েছেন।
বসন্ত ঋতুতে চারদিক নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। পূর্বের রূঢ়তা, রুক্ষতা মুছে ফেলে প্রকৃতি নতুন রূপ ধারণ করে। তখন গাছে গাছে নতুন নতুন পাতা দেখা যায়। প্রকৃতি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। ‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় বসন্তের নানা দিক উঠে এসেছে। বসন্ত মানেই প্রকৃতিতে নানা রং নানা ফুল ও পাখির ছড়াছড়ি। এ সময় ভ্রমরের গুঞ্জন এবং কোকিলের কলরবে চারদিকে মুখরিত হয়ে ওঠে। পলাশ ফুলে ফুলে ঘন বন যেন লাল হয়ে ওঠে। প্রশ্নোক্ত চরণটিতে কবি এ বিষয়টিই বুঝিয়েছেন।
৭. ‘দাদুরী শিখীনি রব অতি মন ভাএ।’- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রশ্নোক্ত চরণটি দ্বারা বর্ষাকালে ব্যাঙ ও ময়ূরীর ডাক এবং এর মাধ্যমে মানবমনে সৃষ্ট পুলকের প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
আলোচ্য কবিতায় কবি আলাওল বর্ষায় প্রকৃতি চিত্রিত করতে মাদি ব্যাঙ ও ময়ূরীর প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। বর্ষাকালে প্রায়শই এদের ডাক শোনা যায়। প্রকৃতিতে ব্যাঙ ও ময়ূরীর এই কলধ্বনি মানুষের চিত্তকেও আন্দোলিত করে। প্রকৃতির রূপ পরিবর্তন যেন মানবমনেও ভাবের সঞ্চার ঘটায়।
ঋতু বর্ণন কবিতার অনুধাবন প্রশ্নের উত্তর
৮. ‘পাবন সময় ঘন ঘন গরজিত/ নির্ভয়ে বরিষে জল চৌদিকে পূরিত।’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: বর্ষাকালে মেঘের গর্জন ও অবিরল বৃষ্টির জলে প্রকৃতিতে যে সৌন্দর্য ফুটে ওঠে তা বোঝাতে কবি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন। ‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় ঋতুর রূপবৈচিতত্র্যের কথা বলা হয়েছে। বর্ষাকালের আগমনে প্রকৃতি সতেজ হয়ে ওঠে। বৃষ্টির সময় আকাশে যে মেঘ হয় তার রূপে সেজে ওঠে প্রকৃতি। বৃষ্টির পূর্বমূর্ষুতে ঘন ঘন মেঘের গর্জনে মুখরিত হয় প্রকৃতি। ঝরতে থাকে অবিরল বৃষ্টি ধারা। বৃষ্টির পানিতে পরিপূর্ণ হয় জলাশয়গুলো। থই থই পানিতে মনোরম এক পরিবেশ তৈরি হয় বর্ষাকালে। বৃষ্টি আপন মনে ঝরতে থাকে। সে যেন কোনো কিছুকেই ভয় পায় না, আপন বর্ষণের ধারায় প্রকৃতিকে ভরপুর করে দেয়। তাই কবি বর্ষাকালে সৌন্দর্য প্রকাশ করতে আলোচ্য উক্তিটি করেন।
৯. ‘ঘোর শব্দে কৈলাসে মল্লার রাগ গাএ’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘ঘোর শব্দে কৈলাসে মল্লার রাগ গাএ’- বলতে কবি বর্ষাকালে প্রকৃতির আপন মনে গান গেয়ে যাওয়াকে বুঝিয়েছেন।
‘ঋতু বর্ণন’ কবিতায় প্রকৃতির বিচিত্র রূপ অভিব্যক্ত হয় আবহাওয়া ও ষড়ঋতুর প্রভাবে। বর্ষার বৃষ্টিতে থই থই করে চারদিক। রাতে বৃষ্টির শব্দ যেন আরও বেড়ে যায়। চারদিকে সুনসান নীরবতার কারণে বৃষ্টির প্রচ- শব্দকে মনে হয় যেন হিমালয় পর্বতে গাওয়া মালহার। মূলত চারদিকে নীরবতার কারণে বৃষ্টির যে নিজস্ব ছন্দ রয়েছে তা কবির কাছে গান হয়ে ধরা দেয়। আর এ বিষয় বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
১০. “নবীন খঞ্জন দেখি বড়হি কৌতুক” চরণটিÑব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণে শরৎ ঋতুর আনন্দময় পরিবেশের কথা বলা হয়েছে। “নবীন খঞ্জন” বলতে খঞ্জন পাখির চঞ্চল নৃত্য বোঝানো হয়েছে। শরতের নির্মল আকাশে খঞ্জন পাখির নাচ দেখে মানুষের মনে আনন্দের সৃষ্টি হয়। এটি প্রকৃতির সেই স্বচ্ছ, নির্মল রূপের ইঙ্গিত দেয়, যা শরৎ ঋতুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
১১. আলাওল বসন্ত ঋতুকে কীভাবে বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: আলাওল বসন্ত ঋতুর রূপ বর্ণনা করেছেন এক মুগ্ধকর আবহে। তিনি বসন্তের আগমনে প্রকৃতির নবজীবন লাভের চিত্র এঁকেছেন। বসন্তে চারদিক সেজে ওঠে নবীন পল্লবে, আর মলয়া সমীর দখিনা বাতাস হয়ে প্রেমের বার্তা বয়ে আনে। এই সময় গাছে গাছে ফুল ফোটে। ভ্রমরের গুঞ্জন, কোকিলের মিষ্টি ডাক মনে প্রেমের স্পন্দন জাগে। বসন্ত যেন প্রকৃতি এবং প্রেমের এক অনন্য সম্মিলন।
১২. “মলয়া সমীর হৈলা কামের পদাতি” চরণটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণে কবি আলাওল বসন্ত ঋতুর দখিনা বাতাসের সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন। “মলয়া সমীর” মানে হলো স্নিগ্ধ দখিনা বাতাস, যা বসন্তে প্রবাহিত হয়। আর “কামের পদাতি” বলতে কামদেবের দূত বা সহচরকে বোঝানো হয়েছে। এই বাতাস প্রেমের বার্তা বহন করে প্রেমিক-প্রেমিকার মনে আবেগের সঞ্চার ঘটায়। বসন্তের এই বাতাস যেন প্রকৃতিকে প্রেমময় এবং সজীব করে তোলে।
১৩. কবি কীভাবে গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলেছেন ?
উত্তর: গ্রীষ্ম ঋতুকে আলাওল চিত্রিত করেছেন প্রচ- তাপ এবং তার প্রভাবে সৃষ্ট ক্লান্তির মাধ্যমে। সূর্যের তীব্র রৌদ্রের কারণে মানুষ ছায়ার আশ্রয় খোঁজে। চারদিকে এক রকমের রুক্ষতা বিরাজ করে। তবে এই কঠিন সময়েও প্রকৃতিতে কিছুটা প্রশান্তি এনে দেয় মলয়া বাতাস আর চন্দনের শীতল সুবাস। গ্রীষ্মের রুক্ষতা প্রকৃতিকে যেমন প্রভাবিত করে, তেমনই মানুষের মনের গভীরেও ছোঁয়া লাগে।
১৪. আলাওল কীভাবে বর্ষাকালের বর্ণনা দিয়েছেন ?
উত্তর: বর্ষাকালকে আলাওল বর্ণনা করেছেন মেঘের গর্জন, প্রবল বৃষ্টি এবং জলমগ্ন প্রকৃতির মধ্য দিয়ে। আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা পড়ে, আর বজ্রের শব্দ কৈলাস পাহাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে তোলে। অবিরাম বৃষ্টির ধারা প্রকৃতিকে সজীব করে তোলে। দাদুরী (মাদি ব্যাঙ) আর শিখিনী (ময়ূরী) যেন আনন্দে ডাকতে থাকে। বর্ষার জলে স্নাত প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পায়।
১৫. “মুকুলিত কৈল তবে বৃক্ষ বনস্পতি”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণে কবি বসন্ত ঋতুতে বনস্পতি গাছের ফুল ফোটার দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। “মুকুলিত” মানে কুঁড়ি ধরা, আর “বনস্পতি” বলতে বোঝানো হয়েছে সেইসব বৃক্ষকে যেগুলোতে সাধারণত ফুল ধরে না, কিন্তু বসন্তে তাদের নতুন কুঁড়ি ও পাতা নিয়ে সেজে ওঠে। বসন্তের ছোঁয়ায় এই গাছগুলো নতুন প্রাণ পায়। প্রকৃতির এই নবজাগরণ বসন্তের মাধুর্যকে ফুটিয়ে তোলে।
◉ আরও দেখ: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল গল্প-কবিতার CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বই থেকে ঋতু বর্ণন কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। সবগুলো অনুধাবন প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post