প্রাথমিকভাবে এ্যাডসেন্সের ডিফল্ট অটো এ্যাড বসালেও আরো ভালো ফিচার পাওয়ার জন্য আপনাকে কাস্টম এ্যাড ইউনিট বা এ্যাডসেন্স এড ইউনিট ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু একটি ওয়েবসাইটে বা একটি ওয়েব পেজে আপনি সর্বোচ্চ কয়টি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন? কোর্সটিকায় আজ মূলত সেই বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা হবে।
আপনি যেহেতু এ্যাড ইউনিট নিয়ে এই পোস্টটি পড়ছেন, সেহেতু আমরা ধরে নিচ্ছি আপনি সম্প্রতি একটি এ্যাডসেন্স একাউন্ট পেয়েছেন। আপনাকে অভিনন্দন। কোর্সটিকায় এর আগের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি এ্যাডসেন্সে এ্যাড লিমিট কেন হয়? এই বিষয়টি নিয়ে। ভবিষ্যতে আপনার প্রিয় ওয়েবসাইটে এ্যাড লিমিট এড়াতে এই আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়ে নিবেন।
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কেন এ্যাপ্রুভ হয় না? কারণটা কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্সে এ্যাড লিমিট কেন হয়? জানা আছে কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্স এ্যাড ইউনিট: সর্বোচ্চ কয়টি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে কমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
►► আরো দেখুন: Adsense Ad Placements: কোথায় Ad বসাবেন, কোথায় বসাবেন না?
►► আরো দেখুন: সেরা ১০ টি এ্যাড নেটওয়ার্ক : এ্যাডসেন্সসহ আরো অনেক
এ্যাডসেন্সে এ্যাড ইউনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একটি ওয়েবসাইট যখন এ্যাডসেন্স এ্যাপ্রুভড হয়ে যায়, তখন গুগল থেকে ডিফল্টভাবে যে বিজ্ঞাপনগুলো প্রদর্শন করানো হয় তা মূলত অটো এ্যাড। কিন্তু এ্যাডের পরিমাণ বাড়াতে এবং ওয়েবসাইটের পছন্দমত জায়গায় পছন্দের বিজ্ঞাপন বসাতে এ্যাড ইউনিট ব্যবহারের প্রয়োজন পরে। এ্যাড ইউনিট নিয়ে আলোচনার আগে চলুন জেনে নেই এটি সম্পর্কে বিস্তারিত।
এ্যাডসেন্স এ্যাড ইউনিট কি?
এ্যাড ইউনিট হচ্ছে গুগলের এ্যাড প্লেসমেন্ট পদ্ধতি। ডিফল্টভাবে গুগল আপনাকে এ্যাডসেন্স এ্যাপ্লাইয়ের সময়ে যে কোডটি ওয়েবসাইটে বসাতে বলে তা ব্যবহার করলেই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করানো যায়। এটাকে বলা হয় অটো এ্যাড। কিন্তু অটো এ্যাডে আপাতদৃষ্টিতে কোন সমস্যা না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যা রয়েছে।
অটো এ্যাড মেথড অনুযায়ী গুগল তার ইচ্ছেমত আপনার ওয়েবসাইটে এ্যাড প্রদর্শন করাবে। এর ফলে আপনি চান না আপনার ওয়েবসাইটের এমন জায়গাতেও এ্যাড প্রদর্শন করানো হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রফেশনাল যে সমাধান, তা হচ্ছে এ্যাড ইউনিটের ব্যবহার। একটি ওয়েবসাইটের কোথায় কোথায় বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে, কোন সাইজের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে এবং সেগুলো রেসপনসিভ হবে কি না এ্যাড ইউনিটের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এ্যাড ইউনিটের সুবিধা কি?
যদি প্রশ্ন করা হয় এ্যাড ইউনিট কেন ব্যবহার করবো? তাহলে উল্টো প্রশ্নে বলা যায়, এ্যাড ইউনিট কেন ব্যবহার করবেন না? কারণ একটি ওয়েবসাইটে এ্যাড ইউনিটের সুবিধা অনেক। আমরা সবাই জানি কন্টেক্সচুয়াল এবং রেসপন্সিভ বিজ্ঞাপন সার্ভিং এর জন্য এ্যাডসেন্সের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। আপনি যদি ভালো মানের পাবলিশার হতে চান, তাহলে এ্যাড লিমিটের যথাযথ ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটকে আরো বেশি প্রফেশনাল লুক দেবে। চলুন জেনে নেই এ্যাড লিমিটের সুবিধাগুলো।
- পছন্দমত বিজ্ঞাপন বসাতে পারবেন: ওয়েবসাইটে এ্যাডের ক্ষেত্রে গুগল এ্যাডসেন্স বিভিন্ন ফরমেটের বিজ্ঞাপন বসিয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে শুধু টেক্সট, টেক্সট এবং ইমেজ, শুধু ইমেজ, ভিডিও ইত্যাদি। এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করলে আপনি নিজের পছন্দ অনুযায়ী এগুলোর যেকোন একটি অথবা চাইলে সবগুলো ফরমেটই ব্যবহার করতে পারবেন।
- পছন্দের জায়গায় বিজ্ঞাপন বসাতে পারবেন: আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন বা লেআউট যেমনই হোক না কেন আপনি আপনার ওয়েবসাইটের পছন্দমত জায়গায় বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন। বিভিন্ন প্রকার এ্যাড ইউনিট ব্যবহারের ফলে আপনার ওয়েবসাইটের হেডার, ফুটার, কনটেন্ট এবং সাইডবারসহ যেকোন জায়গায় জের পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করানো যায়।
- পছন্দের আকৃতিতে বিজ্ঞাপন বসাতে পারবেন: এ্যাডসেন্সের common sizes for responsive display ads অনুযায়ী গুগল আপনাকে আপনার পছন্দমতো বিভিন্ন সাইজের বিজ্ঞাপন ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করার সুযোগ দেবে। সেই অনুযায়ী আপনি হরাইজোন্টাল, ভার্টিকাল বা স্কয়ার আকৃতির বিজ্ঞাপন আপনার ওয়েবসাইটে বসাতে পারবেন।
এ্যাডসেন্সে সর্বোচ্চ কয়টি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন?
এ্যাডসেন্স চালুর প্রথম দিকে গুগল একটি ওয়েবপেজে সর্বোচ্চ ৩ টি এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করার অনুমতি দিত। এ সময় কেউ চাইলেও ৩ টির বেশি এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করতে পারতো না। তবে উল্লেখ্য যে, একমাত্র এ্যাডসেন্সের প্রিমিয়াম পাবলিশাররাই ৬ টি ইউনিট ব্যবহার করার সুযোগ পেতেন।
তবে বর্তমানে এই নিয়মের প্রয়োগ নেই। গুগল ২০১৬ সালে সব ওয়েবসাইটের জন্য এ্যাড ইউনিট ব্যবহারের সীমা বাদ দেয় । যার ফলে তখন থেকে বর্তমান পর্যন্ত একজন পাবলিশার যতখুশি এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছেন। এখন আপনি আপনার ওয়েবসাইটের যেকোন পেজে যত খুশি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন।
কিন্তু তাই বলে আপনি কি মাত্রাতিরিক্ত এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করবেন? অবশ্যই না। যদি আপনার ওয়েবপেজের কনটেন্টের তুলনায় বিজ্ঞাপন বেশি হয়ে থেকে, তাহলে সেটি অবশ্যই একটি আপত্তিকর বিষয়। তাই আপনার উচিত হবে কনটেন্ট এবং প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।
এ্যাডসিভের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমরা যেটি লক্ষ্য করেছি, তা হলো একটি ওয়েবপেজে ৫ থেকে ৬ এ্যাড ইউনিট যথেষ্ট। অতিরিক্ত এ্যাড ইউনিট যে আপনাকে বেশি ইনকাম এনে দেবে, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। এটি প্রমাণিত যে, অনেক ক্ষেত্রেই বেশির চেয়ে কম এ্যাড ইউনিটের ব্যবহার বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
তাই আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট অনুযায়ী ওয়েবসাইটে কতটি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাবেন সেই সিদ্ধান্ত নিন। অতিরিক্ত এ্যাড ইউনিট ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই আপনার আর্টিকেলের Length বা দৈর্ঘ্যের বিষয়টি মাথায় রাখুন।
আপনি যদি ছোট একটি কনটেন্ট পেজে ৮-১০ টি ইউনিট ব্যবহার করেন, তাহলে এটা আপনার ওয়েবসাইটের কোয়ালিটি নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। ছোট আর্টিকেলে আপনি বেশি বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছেন; এর অর্থ আপনি স্প্যামিং করছেন৷ সুতরাং বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইটের কোয়ালিটিও ধরে রাখতে হবে।
মাত্রাতিরিক্ত এ্যাড কেন ব্যবহার করবেন না?
আপনি আগেই জেনেছেন, “You can place an unlimited amount of AdSense ads on a page.” অর্থাৎ একটি পেজে আপনি আনলিমিটেড এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু তবুও একটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত। আর তা হলো কোন কিছুই মাত্রাতিরিক্ত ভালো না। গুগল এ্যাডসেন্সের বক্তব্য এখানে খুবই স্পষ্ট। আর তা হচ্ছে,
“We may limit or disable ad serving on pages with little to no value and/or excessive advertising until changes are made.”
অর্থাৎ, আপনি যতক্ষণ না পর্যন্ত ছোট এবং কম গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেজে অতিরিক্ত এ্যাড ইউনিট বন্ধ না করবেন, গুগল আপনার এ্যাড লিমিট করে দেবে অথবা স্থায়ীভাবে সাসপেন্ড করে দেবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, অতিরিক্ত এ্যাড প্রদর্শনের ফলে সাময়িক সময়ের জন্য হয়তো আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পেলেও পেতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে আপনার অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। চলুন, এক নজরে দেখে নেই মাত্রাতিরিক্ত এ্যাড ইউনিট ব্যবহারের কুফল।
- আপনার ওয়েবসাইট স্লো হয়ে যাবে: স্বাভাবিকভাবেই যেই ওয়েবপেজে কনটেন্ট বেশি থাকে, সেটি তুলনামূলক কম গতিতে লোড হয়। আর আপনি যদি একটি ওয়েবপেজে অতিরিক্ত পরিমাণে এ্যাড ইউনিট ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ওয়েবাইটে প্রচুর পরিমাণে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটটি আগের তুলনায় ধীরগতিতে লোড হবে। যা ইউজার এক্সপেরিন্সকে বাধাগ্রস্থ করবে।
- ব্যবহারকারীদের বিরক্তি সৃষ্টি: বিজ্ঞাপন কেউই পছন্দ করে না। আর তা যদি হয় মাত্রাতিরিক্ত, তাহলে তো অনেক বড় সমস্যা। আপনার ওয়েবসাইটে কনটেন্টের তুলনায় বিজ্ঞাপনের আধিক্য বেশি থাকলে ব্যবহারকারী অর্থাৎ ভিজিটরদের কাছে এটি বিরক্তিকর লাগবে। এর ফলে একজন ভিজিটর পরবর্তীতে আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ নাও করতে পারে। ফলাফল আপনি আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক হারালেন।
- এ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড: মাত্রাতিরিক্ত বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের ফলে আপনার এ্যাডসেন্স একাউন্টটি বাতিল হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থীতি সৃষ্টি হতে পারে। কারণ গুগলের কাছে ভিজিটরদের সুবিধা সবার আগে বিবেচনা করা হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে গুগল অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটে পরবর্তীতে এ্যাড সার্ভিং থেকে বিরত থাকবে। ফলাফল আপনার প্রিয় এ্যাডসেন্স একাউন্টটি সাসপেন্ড।
শেষ কথা
সীমাহীন এ্যাড ইউনিট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে বলেই তার অপব্যবহার না করে বরং আপনার ওয়েবসাইটের কোথায় বিজ্ঞাপন বসালে সেটি বেশি কার্যকরী তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। ওয়েবসাইটের লে-আউট বা ডিজাইন অনুযায়ী সীমিত পরিমাণে বিজ্ঞাপন ব্যবহার করুন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কম এ্যাড ইউনিট বেশি এ্যাড ইউনিটের থেকেও ভালো পারফর্ম করে।
সাধারণত উপরের দিকে থাকা ইউনিটগুলো বেশি ভাল ফলাফল দেয়। পাশাপাশি টেক্সট এবং ইমেজ দুই ধরনের বিজ্ঞপনেই বেশি ক্লিক পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যথাসম্ভব কম ইউনিট ব্যবহার করে সাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি করুন। ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়লে আপনার ইনকাম এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে। আপনার জন্য শুভ কামনা।
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কেন এ্যাপ্রুভ হয় না? কারণটা কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্সে এ্যাড লিমিট কেন হয়? জানা আছে কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্স এ্যাড ইউনিট: সর্বোচ্চ কয়টি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে কমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
►► আরো দেখুন: Adsense Ad Placements: কোথায় Ad বসাবেন, কোথায় বসাবেন না?
►► আরো দেখুন: সেরা ১০ টি এ্যাড নেটওয়ার্ক : এ্যাডসেন্সসহ আরো অনেক
আমরা আছি ইউটিউবেও। গুগল এ্যাডসেন্সের ওপর বাংলায় টিউটোরিয়াল ও আপডেট পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি Subscribe করতে পারেন এই লিংক থেকে।
Discussion about this post