পাক-পবিত্র থাকা ঈমানের অঙ্গ। পাক পবিত্র থাকার অন্যতম মাধ্যমে হচ্ছে গোসল ও ওযু। ওযু করার রয়েছে কিছু নিয়ম। সেই নিয়মগুলো মেনেই করতে হবে ওযু। নিয়মের ব্যতিক্রম হলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যায়। বিশেষ করে ওযুর ফরজ পালনে ব্যতিক্রম হলে ওযু হবে না। সেজন্য, ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি তা সকলের জেনে রাখা দরকার।
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মাদ (সা:) বলেছেন, “বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো ওযু।” (মুসনাদে আহমাদ–৩:৩৪০পৃ.)
প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে ওযু করে পাক-পবিত্র হয়ে নিতে হবে। ওযু ব্যতীত নামাজ শুদ্ধ হবে না। শুধু নামাজ নয় বরং প্রতিটি ইবাদতের পূর্বে ওযু করে পাক-পবিত্র হতে হবে। যেমন: কোরআন শরীফ পড়া।
সুরা মায়িদার ৬নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে মুমিনগণ, তোমরা যখন নামাজের জন্য দাঁড়াও; তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত কর, মাথা মাসেহ করে এবং গিটসহ দুই পা পরিষ্কার করো।”
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি
কোরআন ও হাদিসে ওযুর কথা অনেকবার উল্লেখিত হয়েছে। উক্ত আয়াত ও হাদিস হতে জানা যায় ওযুর ফরজ চারটি। ওযুর ফরজগুলো হচ্ছে–
১. সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা
২. কনুইসহ দুই হাতের কব্জি পরিষ্কার করা
৩. চার ভাগের এক ভাগ মাথা মাসেহ করা
৪. টাখনুসহ দুই পা ধৌত করা
মুখমণ্ডল ধৌত করা: আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এর ওযুর বর্ণনা অনুসারে তিনি রাসূল (সা:) কে ওযু করায় সময় সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত কর করতে দেখেছিলেন। সহীহ বুখারীর ১৪২নং হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এর ওযুর বর্ণনা দেওয়া রয়েছে।
কনুইসহ দুই হাতের কব্জি পরিষ্কার করা: রাসূল (সা:) মুখমণ্ডল পরিষ্কার শেষে কনুইসহ দুই হাতের কব্জি ধৌত করতেন। (সহীহ বুখারী, হাদিস: ১৬৪/১৮৫)।
চার ভাগের এক ভাগ মাথা মাসেহ করা: রাসূল (সা:) মাথা মাসেহ করার সময় দুইহাতের আঙ্গুল একত্রে জড়ো করে চুলের উপর দিয়ে সামনে হতে ঘাড় পর্যন্ত নিয়ে যেতেন। আবার মাসেহ করতে করতে ঘাড় হতে সামনের দিকে আসতেন। (সহীহ বুখারী, হাদিস: ১৮৫)
টাখনুসহ দুই পা ধৌত করা: হাদিসে রয়েছে, ডান পায়ের আঙ্গুল ও গোড়ালি হতে টাখনু পর্যন্ত ৩বার ধৌত করতে হবে। (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৪৬)
সবশেষে যা জানা দরকার
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি তা জানলেই ওযু সম্পর্কে সবকিছু জানা হয়ে গেলো এমনটা না। ওযু করার পূর্বে অবশ্যই ওযুর নিয়ত পড়ে নিতে হবে। নিয়ত শেষে ওযুর নিয়ম মেনে ওযু করে নিতে হবে। প্রতিবার নামাজ পড়ার পূর্বে ওযু করতে হবে এমনটা না। একবার ওযু করলে সেই ওযু যতক্ষণ পর্যন্ত ভাঙবে না ততক্ষণ পর্যন্ত একবার ওযু করার মাধ্যমেই একাধিক ইবাদত পালন করা সম্ভব।
Discussion about this post