কাঞ্চনমালা আর কাঁকনমালা প্রশ্ন উত্তর : অচেনা মানুষের কথায় কাঁকনমালা ও কাঞ্চনমালা পিটকুড়–লির ব্রত পালন করে। বোঝে কে আসল রানি, আর কে দাসী। নিজের পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় কাঁকনমালা ভীষণ রেগে যায়। জল্লাদকে হুকুম দেয় অচেনা মানুষ আর কাঞ্চনমালার গর্দান নিতে। কিন্তু অচেনা মানুষটা মন্ত্রের মাধ্যমে জল্লাদকে বেঁধে ফেলে।
কাঞ্চনমালা আর কাঁকনমালা প্রশ্ন উত্তর
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
আষ্টেপৃষ্ঠে – সর্বাঙ্গে, সারা শরীরে।
গর্দান – ঘাড়ের ওপর থেকে মাথা।
গর্জে ওঠা – হুংকার দিয়ে ওঠা।
স্বাদ – খেতে ভালো লাগে এমন।
বিস্বাদ – খেতে মজা নয় এমন।
পুঁটলি – বোঁচকা।
ফরমাস – হুকুম, আদেশ।
ঘোর – অত্যন্ত, অনেক বেশি, গভীর।
আঁস্তাকুড় – ময়লা, আবর্জনা ফেলার জায়গা।
ফুরসত – অবসর, অবকাশ, ছুটি।
টনটন – যন্ত্রণা বোঝায় এমন অনুভূতি।
চিনচিন – অল্প অল্প ব্যথা বা জ্বালা বোঝায় এমন শব্দ।
মায়াবতী – দয়া, মমতা আছে যে নারীর।
কাঁকন – হাতে পরার গহনা।
রক্ষী – প্রহরী, সেনা।
রাজপ্রাসাদ – রাজপুরী বা রাজবাড়ি।
পরস্পর – একের সঙ্গে অন্যের।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ক. তার হাতের রান্না এমন — যে মুখেই তোলা যায় না।
খ. বৃদ্ধ লোকটি তার — সযত্নে একপাশে রেখে দিল।
গ. লোকটির কাজের চাপ এত বেশি যে দম ফেলার — নেই।
ঘ. তার সমস্ত শরীর ব্যথায় — করছে।
ঙ. তারা দুজন — বন্ধু।
চ. গ্রামের মায়া ছেলেটিকে — বেঁধে রেখেছে।
উত্তর : ক. বিস্বাদ; খ. পুঁটলিটি; গ. ফুরসত; ঘ. টনটন; ঙ. পরস্পরের; চ. আষ্টেপৃষ্ঠে।
অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর
০১। রাজপুত্র কোথায় বসে রাখালবন্ধুর বাঁশি শুনত?
উত্তর : রাজপুত্র গাছতলায় বসে রাখালবন্ধুর বাঁশি শুনত।
০২। রাজপুত্র রাখালবন্ধুর কথা ভুলে যায় কেন?
উত্তর : রাজপুত্র একসময় রাজা হয়। লোকলস্কর আর সৈন্য সামন্তে তার রাজপুরী গমগম করে। রাজপুরী আলো করে থাকে রানি কাঞ্চনমালা। চারদিকে সুখ আর সুখ। এমন সুখের মাঝে, রাখালবন্ধুর কথা আর মনে থাকে না রাজার।
০৩। রাজা কেন মনে করলেন প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের কারণেই তাঁর এই দশা?
উত্তর : ছোটবেলায় রাখালবন্ধুর কাছে রাজা একটি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তা হলো, রাজা হলে তিনি রাখালবন্ধুকে তাঁর মন্ত্রী বানাবেন। কিন্তু রাজা হওয়ার পর তিনি বন্ধুকে ভুলে যান। হঠাৎ একদিন রাজা ঘুম ভেঙে দেখেন তাঁর সারা শরীরে সুচ বেঁধা। রাজা বোঝেন প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেছেন বলেই তাঁর এই দশা। কথা দিয়ে কথা না রাখলে এভাবেই কষ্ট পেতে হয়।
০৪। তোমার মা বাড়িতে কী ধরনের পিঠা বানায় লেখ।
উত্তর : আমার মা বাড়িতে নানা রকম মজার পিঠা বানায়। যেমন: পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, চিতই পিঠা, সেমাই পিঠা ইত্যাদি।
০৫। অচেনা লোকটি রাজার প্রাণ রক্ষার জন্য এগিয়ে না এলে কী হতো?
উত্তর : অচেনা লোকটি রাজার প্রাণ রক্ষার জন্য এগিয়ে না এলে রাজার মহাবিপদ হতো। রাজাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হতো। যন্ত্রণায় ছটফটিয়ে একসময় মারা যেতেন। নকল রানি কাঁকনমালার অত্যাচার আরও বাড়ত। কাঞ্চনমালার দুঃখের সীমা থাকত না।
০৬। তুমি কি মনে কর অচেনা লোকটির কারণেই রাজার প্রাণ রক্ষা পেল?
উত্তর : অচেনা লোকটিই মন্ত্র বলে রাজার শরীর থেকে সব সুচ খুলে নেয়। শুধু তাই নয়, নকল রানিকেও মন্ত্রের মাধ্যমে কঠিন সাজা দেয়। সে সাহায্য না করলে রাজা যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে প্রাণ হারাত। তাই আমি মনে করি, অচেনা লোকটির কারণেই রাজার প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।
০৭। গল্পটা তোমার কেমন লেগেছে? কেন এমন লেগেছে?
উত্তর : গল্পটা আমার খুব ভালো লেগেছে। রূপকথার গল্প পড়তে বা শুনতে আমার সবসময়ই ভালো লাগে। পাশাপাশি গল্পটি থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা, কথা দিয়ে কথা না রাখার পরিণাম, প্রতারণা ও অহংকার করার পরিণাম ইত্যাদি সম্পর্কে বুঝতে পেরেছি। তাই সব মিলিয়ে গল্পটি আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।
০৮। কীভাবে লোকেরা নকল রানিকে বুঝে ফেলল?
উত্তর : নকল রানি আর আসল রানির গুণের পার্থক্য দেখেই লোকেরা নকল রানিকে চিনে ফেলল।
নকল রানি যে পিঠা বানিয়েছিল তা মুখেই দেওয়া যায় না। আসল রানির পিঠা মুখে দেওয়ামাত্রই সবার মন ভরে যায়। নকল রানির আঁকা আল্পনা দেখতে হয় খুবই অসুন্দর। অন্যদিকে আসল রানি আল্পনায় আঁকেন সুন্দর সুন্দর নকশা। এসব দেখেই সবাই বুঝে গেল কে আসল রানি, আর কে দাসী।
০৯। রাজা কীভাবে তাঁর প্রতিজ্ঞা পালন করলেন?
উত্তর : রাজা রাখালবন্ধুকে মন্ত্রী বানিয়ে তাঁর প্রতিজ্ঞা পালন করলেন।
১০। কী শুনে রাজপুত্রের মন খুশিতে ঝলমলিয়ে ওঠে?
উত্তর : রাখালবন্ধুর বাঁশি শুনে রাজপুত্রের মন খুশিতে ঝলমলিয়ে ওঠে।
১১। ‘চারদিকে তার সুখ’- কথাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : রাজপুত্র একসময় রাজা হয়। লোকলস্কর আর সৈন্যসামন্তে রাজপুরী গমগম করে। রাজপুরী আলো করে থাকেন রানি কাঞ্চনমালা। রাজার সুখের শেষ থাকে না।
১২। রানি নদীতে ডুব দিতে গেলে চোখের পলকে কী হয়ে গেল?
উত্তর : রানি নদীতে ডুব দিতে গেলে চোখের পলকে কাঁকনমালা রানির সব গয়না আর শাড়ি পরে নিজেই রানি সেজে যায়।
১৩। আসল রানি ও নকল রানির আচরণে কী তফাৎ ছিল?
উত্তর : আসল রানি কাঞ্চনমালা ছিলেন দয়ালু, মায়াবতী। অন্যদিকে নকল রানি কাঁকনমালা ছিল দাম্ভিক ও নির্দয়। তার অত্যাচারে রাজপুরীর সবাই অতিষ্ঠ হয়ে যায়।
১৪। সুচরাজার কষ্টের সীমা থাকে না কেন?
উত্তর : সুচরাজার সারা শরীরে সুচ বিঁধে যাওয়ায় তাঁর খুব কষ্ট। তাঁর সারা শরীর ব্যথায় টনটন করে, চিনচিন করে জ্বলে, গায়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি এসে বসে। তাঁর সেবা করার জন্য কেউ থাকে না। তাই রাজার কষ্টের সীমা থাকে না।
১৫। কাঁকনমালার বানানো পিঠা কেমন ছিল?
উত্তর : কাঁকনমালার বানানো পিঠা ছিল খুবই বিস্বাদ। সে পিঠা কেউ মুখেই তুলতে পারেনি।
১৬। নকল রানি কীভাবে মারা যায়?
উত্তর : অচেনা লোকটা মন্ত্রবলে নকল রানিকে উচিত শিক্ষা দেয়। তার মন্ত্রের জোরে রাজার শরীর থেকে সব সুচ বেরিয়ে নকল রানির চোখে মুখে গিয়ে বিঁধে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে নকল রানির মৃত্যু হয়।
১৭। রাজা তাঁর বন্ধুর কাছে ক্ষমা চান কেন?
উত্তর : রাজা তাঁর বন্ধুকে কথা দিয়ে কথা রাখেননি। প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের অপরাধের জন্য রাজা বন্ধুর কাছে কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চান।
১৮। রাজপুত্র তার বন্ধুর কাছে কী প্রতিজ্ঞা করেছিল?
উত্তর : রাজপুত্র তার বন্ধুর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে, সে বড় হয়ে যখন রাজা হবে তখন রাখালবন্ধুকে তার মন্ত্রী বানাবে।
১৯। রক্ষীরা রাখালকে প্রাসাদে ঢুকতে দিল না কেন?
উত্তর : রাখাল ছিল অনেক গরিব। এ কারণে রক্ষীরা তাকে প্রাসাদে ঢুকতে দিল না।
২০। রাজার শরীর কখন সুচবেঁধা হয়ে যায়?
উত্তর : রাখালবন্ধুর সাথে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের পর এক রাতে রাজা ঘুমাতে যান। আর ঘুমের ভেতরেই তাঁর সমস্ত শরীর সুচবেঁধা হয়ে যায়।
২১। কাঁকনমালা কে? কেন তার এমন নাম?
উত্তর : কাঁকনমালা হলো কাঞ্চনমালার কেনা দাসী। কাঞ্চনমালা তাকে কাঁকনের বিনিময়ে কিনেছিলেন বলেই তার নাম কাঁকনমালা।
২২। কাঁকনমালা কাঞ্চনমালার সাথে কেমন আচরণ করে? কেন করে?
উত্তর : কাঁকনমালা কাঞ্চনমালার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। রানি কাঞ্চনমালা নিজের গায়ের গয়নাগুলো তার কাছে রেখে নদীতে ডুব দিতে যান। এই ফাঁকে কাঁকনমালা রানির গয়না নিজের শরীরে পরে রানি হয়ে যায়, আর কাঞ্চনমালা হন দাসী। তারপর সে কাঞ্চনমালাকে দিয়ে রাজবাড়ির সব কাজকর্ম করিয়ে তাঁকে অনেক কষ্ট দেয়। কাঁকনমালা লোভী ও অহংকারী হওয়ার কারণেই কাঞ্চনমালার সাথে এ ধরনের আচরণ করে।
২৩। কাঞ্চনমালা কোথায় অচেনা মানুষের দেখা পায়?
উত্তর : একদিন কাঞ্চনমালা কাপড় ধুতে নদীর ঘাটে যাচ্ছিলেন। তখন বনের পাশে এক গাছের তলায় তিনি অচেনা মানুষের দেখা পান।
২৪। অচেনা মানুষ কীভাবে সুচরাজা ও কাঞ্চনমালাকে উদ্ধার করে?
উত্তর : অচেনা মানুষটি তার বুদ্ধি ও মন্ত্রের জোরে সুচরাজা ও কাঞ্চনমালাকে উদ্ধার করে। সে পিটকুড়লির ব্রতের কথা বলে কাঁকনমালা ও কাঞ্চনমালাকে দিয়ে পিঠা বানানো, আল্পনা দেওয়া ইত্যাদি কাজ করায়। দুজনের কাজের পার্থক্য থেকে সবাই বুঝে যায় কে আসল রানি আর কে নকল রানি। এরপর অচেনা মানুষটার মন্ত্রবলে রাজার শরীরের সব সুচ নকল রানির চোখে মুখে গিয়ে বিঁধে এবং তার মৃত্যু হয়। এভাবেই অচেনা মানুষটা নানা কৌশলে কাঞ্চনমালা আর সুচরাজার কষ্ট দূর করে।
২৫। কাঞ্চনমালা কী কী পিঠা বানায়?
উত্তর : কাঞ্চনমালা চন্দ্রপুরী, মোহনবাঁশি, ক্ষীরমুরলী ইত্যাদি পিঠা বানায়।
২৬। কার আল্পনা দেওয়া ভালো হয়েছিল? কেন?
উত্তর : কাঞ্চনমালার আল্পনা দেওয়া ভালো হয়েছিল।
কাঞ্চনমালা ও কাঁকনমালা দুজনেই উঠানে আল্পনা দিয়েছিল। নকল রানি কাঁকনমালা কেবল এখানে ওখানে খাবলা খাবলা রং দিয়ে আল্পনা করে। তাতে ছিল না কোনো সৌন্দর্য। অন্যদিকে কাঞ্চনমালা পদ্মলতা, সোনার সাত কলস, ধানের ছড়া, ময়ূর-পুতুল ইত্যাদি নানা রকম চোখ জুড়ানো নকশা আঁকেন।
২৭। অচেনা মানুষ যে ব্রতটার কথা বলে তার নাম কী? এই ব্রতের দিন রানিদের কী করতে হয়?
উত্তর : অচেনা মানুষ যে ব্রতটার কথা বলে তার নাম হলো পিটকুড়–লির ব্রত। এই ব্রতের দিন রানিদের পিঠা বিলাতে হয়।
২৮। রাজপুত্র তার বন্ধুর কাছে কী প্রতিজ্ঞা করেছিল?
উত্তর : রাজপুত্র তার বন্ধুর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে, সে বড় হয়ে যখন রাজা হবে তখন রাখালবন্ধুকে তার মন্ত্রী বানাবে।
২৯। রাজা কীভাবে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন?
উত্তর : রাজা হলে রাখালবন্ধুকে তাঁর মন্ত্রী বানাবেন-এই ছিল রাজার প্রতিজ্ঞা। কিন্তু রাজা হওয়ার পর অনেক সুখের মাঝে তিনি বন্ধুর কথা ভুলে যান। এভাবেই তিনি বন্ধুকে দেওয়া প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন।
৩০। কী কারণে রাজা দুর্দশায় পড়েন? শরীরে সুচ গেঁথে যাওয়ায় রাজার কী অবস্থা হলো?
উত্তর : প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের কারণে রাজা দুর্দশায় পড়েন। শরীরে সুচ গেঁথে যাওয়ায় রাজা চোখ মেলতে পারেন না, কথা বলতে পারেন না, শুতে পারেন না, খেতেও পারেন না। এককথায় রাজার কষ্টের সীমা থাকে না।
৩১। পিটকুড়–লির ব্রতের দিন রানিদের কী বিলানোর নিয়ম?
উত্তর : পিটকুড়–লির ব্রতের দিন রানিদের পিঠা বিলানোর নিয়ম।
৩২। কাঞ্চনমালা আল্পনায় কী আঁকেন?
উত্তর : কাঞ্চনমালা আল্পনায় আঁকেন পদ্মলতা। আর তার পাশে আঁকেন সোনার সাত কলস, ধানের ছড়া, ময়ূর পুতুল।
৩৩। কাঁকনমালা অচেনা মানুষ আর কাঞ্চনমালার গর্দান নেওয়ার হুকুম দেয় কেন?
উত্তর : অচেনা লোকটির বুদ্ধিতে নকল রানি কাঁকনমালার কুকীর্তি সবার কাছে প্রকাশ হয়ে যায়। সবাই বুঝতে পারে কে আসল রানি, আর কে দাসী। কাঁকনমালা তাই রেগে গিয়ে অচেনা মানুষ আর কাঞ্চনলামার গর্দান নেওয়ার হুকুম দেয়।
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কোর্সটিকায় তোমরা পঞ্চম শ্রেণির বাংলা সবগুলো গল্প ও কবিতার উত্তর ডাউনলোড করতে পারবে। এই পোস্টে আলোচিত কাঞ্চনমালা আর কাঁকনমালা প্রশ্ন উত্তর pdf সংগ্রহ করার জন্য ওপরে দেওয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করো।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। সকল বিষয়ের ওপর অনলাইন ক্লাস পেতে আজই আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করে নাও।
Discussion about this post