কিডনি আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়ই কিডনি ভালো রাখার উপায় কী লিখে গুগলে সার্চ করেন। কিন্তু কেমন হয়, যদি কিডনিতে কোন সমস্যা হওয়ার আগেই আমরা সতর্ক হয়ে যাই? কিডনি মানবদেহের ছোট তবে শক্তিশালী একটি অঙ্গ যা অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করে।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন মানুষেরই কিডনি সংক্রান্ত রোগ রয়েছে, যা তাদের প্রতিদিনের জীবনকে প্রভাবিত করে। তাই কিডনি ভালো রাখার উপায় জেনে অবশ্যই সেগুলো দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করা উচিত। এতে করে ভবিষ্যতে কিডনি সংক্রান্ত জটিল সব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার যাবে।
আপনার যদি কিডনি রোগ হয়ে থাকে, তাহলে আপনি কী খাচ্ছেন বা কী পান করছেন তা পর্যবেক্ষণ করা জরুরী। কিডনি শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলোকে ফিল্টার করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এমন হরমোনকে রিলিজ দেয়। এটি শরীরে তরলের সামঞ্জস্য করে প্রস্রাব তৈরি করে।
অপরদিকে রোগাক্রান্ত কিডনি নিজ থেকে শরীরের বজ্র বা দূষিত পদার্থগুলোকে অপসারণ করতে পারে না। তাই কিডনি-বান্ধব ডায়েট আপনাকে আরও সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের জন্য সবচেয়ে সাধারণ ঝুঁকির কারণ। তবে স্থূলতা, ধূমপান, জেনেটিক্স, লিঙ্গ এবং বয়সও কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড সুগার এবং উচ্চ রক্তচাপ কিডনিতে রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করে। এর ফলে কিডনির কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। কিডনি যখন ঠিকমতো কাজ করে না, তখন রক্ত থেকে বর্জ্য (দূষিত) রক্ত থেকে তৈরি হয়, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ভূমিকা পালন করে।
ডায়েট এবং কিডনি রোগ
কিডনি রোগের স্তরের উপর নির্ভর করে এ ধরনের রোগীর খাবারগুলো নির্ধারিত হয়ে থাকে। আপনার যদি কিডনির রোগ হয় তবে আপনার চিকিৎসক আপনার প্রয়োজনের জন্য সেরা খাবারগুলো নির্ধারণ করবেন।
অ্যাডভান্সড কিডনি রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে কিডনি-বান্ধব ডায়েট অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি রক্তে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, এটি ভবিষ্যতে আরও ক্ষতির প্রতিরোধের সময় কিডনি কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।
অধিকাংশ কিডনি রোগে আক্রান্তদেরই বিশেষজ্ঞরা নিচে বর্ণিত খাদ্য উপকরণগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন:
- সোডিয়াম: অনেক খাবারেই সোডিয়াম পাওয়া যায়। সোডিয়াম table salt এর একটি প্রধান উপাদান। ক্ষতিগ্রস্থ কিডনি অতিরিক্ত রক্তের সোডিয়াম ফিল্টার করতে পারে না, যার ফলে রক্তের স্তর বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রামেরও কম সোডিয়াম গ্রহণেরপরামর্শ দেওয়া হয়। সোডিয়াম থাকে এমন কিছু খাবার হচ্ছে চিপস, চিনাবাদাম, কাবাব, পেস্ট্রি, তাল, ডাল, কর্ন, আচার, মাশরুম এবং জলপাই ইত্যাদি।
- পটাসিয়াম: পটাশিয়াম শরীরে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পটাসিয়াম সীমাবদ্ধ করা উচিত। সাধারণত পটাসিয়ামকে প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রামেরও কম সীমাবদ্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পটাসিয়াম থাকে এমন কিছু খাবার হচ্ছে পালং শাক, ডাবের জল তরমুজ, আলু, ডালিম এবং কমলালেবুর রস।
কিডনি ভালো রাখার উপায় কি?
কিডনি রোগে আক্রান্ত প্রতিটি ব্যক্তি পৃথক পৃথক। তাই আপনার ব্যক্তিগত খাদ্যতালিকার প্রয়োজন সম্পর্কে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। আর পরামর্শক্রমে কিডনি ভালো রাখার উপায় হিসেবে আপনার সর্বদা কিডনি-বান্ধব ডায়েট গ্রহণ করা উচিৎ। তাহলে চলুন, আজ অন্তত ১০ টি খাবার সম্পর্কে জানি, যা আপনার কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
১. ফুলকপি
ফুলকপি একটি পুষ্টিকর সবজি যা ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, এবং বি ভিটামিন ফোলেটসহ অনেক পুষ্টির উপকরণের ভাল উৎস। এটি ইনডোলসের মতো অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগগুলিতেও পূর্ণ এবং এটি ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস।
শীতকাল হল এই ফুলকপির উৎপাদনের মূল সময়কাল। যদিও বর্তমানে ফুলকপি সারা বছর পাওয়া যায়। তবে,স্বাদের কথা বিবেচনা করলে শীতকালের ফুলকপি স্বাদে উৎকৃষ্ট।
ফুলকপিতে বিদ্যমান ভিটামিন বি এবং কোলিন উপাদান মস্তিষ্ক ভালো রাখতে ভীষণ উপকারি। গর্ভবতী মায়েরা নিয়ম করে ফুলকপি খেল নবজাতকের মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ বিকাশ সাধন হয়। এছাড়াও কম পটাসিয়াম সাইড ডিশের জন্য আলুর জায়গায় মশলা ফুলকপি ব্যবহার করা যেতে পারে।
২. ব্লুবেরি
ব্লুবেরি পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং আপনি খেতে পারেন এমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির অন্যতম সেরা উৎস। বিশেষত, এই মিষ্টি বেরিতে অ্যান্টোসায়ানিনস নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগ, নির্দিষ্ট ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে পারে। ব্লুবেরি কিডনি-বান্ধব ডায়েটে একটি চমৎকার সংযোজন। কারণ এগুলিতে সোডিয়াম, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম কম থাকে।Oregon State University প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্লুবেরিতে থাকা পুষ্টিকর উপাদান ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ব্লুবেরিগুলিতে টেরোস্টিলিন রয়েছে যা একটি স্বাস্থ্যকর উপাদান যা মানব প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে।
আপনি যখন নিয়মিত ব্লুবেরি খান, আপনার কাশি এবং সর্দি লাগার সম্ভাবনা কম হবে। এছাড়াও এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলির একটি সমৃদ্ধ উৎস। এর গভীর নীল রঙ অ্যান্থোসায়ানিন দ্বারা সৃষ্ট, যা রক্ত থেকে মুক্ত রেডিক্যালগুলো অপসারণ করে।
৩. লাল আঙ্গুর
লাল আঙ্গুর শুধুমাত্র সুস্বাদুই নয়, বরং এর প্রতিটি ছোট ফল প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি সরবরাহ করে। এগুলোতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এবং এতে ফ্ল্যাভোনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা প্রদাহ (শরীরের চুলকানি বা জ্বালাপোড়া ভাব) হ্রাস করে।
আরো বলা যায়, লাল আঙ্গুরে রেসিভেরট্রোল বেশি থাকে, এক ধরণের ফ্ল্যাভোনয়েড যা হৃদরোগের সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ডায়াবেটিস থেকে পরিত্রাণ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি লাল আঙ্গুরে ভিটামিন এ, সি, বি৬, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ফসফরাস, ফলিত, ম্যাগনেসিয়াম এবং সেলেনিয়াম রয়েছে। যা স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারি।
৪. ডিমের সাদা অংশ
ডিমের কুসুম খুব পুষ্টিকর হলেও এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে। তাই কিডনি ভালো রাখার জন্য ডিমের সাদা অংশ গ্রহণ করা যেতে পারে। ডিমের সাদা অংশ একটি উচ্চ মানের কিডনি-বান্ধব প্রোটিনের উৎস সরবরাহ করে।
এছাড়াও ডায়ালাইসিস চিকিৎসা করা লোকদের জন্য ডিমের সাদা অংশ দারুণ পছন্দের একটি খাবার হতে পারে। যাদের প্রোটিনের উচ্চতর চাহিদা রয়েছে তাদের জন্য এটি অতি গ্রহণীয় একটি খাবার। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে পটাসিয়াম, যা হৃৎযন্ত্রের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়াও পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
তবে শরীরে ফসফরাসকে সীমাবদ্ধ করতে অবশ্যই ডিমের কুসুম পরিহার করতে হবে। কারণ ডিমের কুসুম রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। যা পরবর্তীতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
৫. রসুন
কিডনিজনিত সমস্যাযুক্ত লোকেদের ডায়েটে লবণসহ সোডিয়ামের পরিমাণ সীমিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। রসুন পুষ্টির সুবিধা প্রদানের সময় খাবারের স্বাদ যোগ করে লবণের একটি সুস্বাদু বিকল্প তৈরি করে।
রসুন ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি৬ এর একটি ভাল উৎস এবং এতে সালফার যৌগ রয়েছে যা প্রদাহবিরোধক বৈশিষ্ট্যযুক্ত। শরীরের সালফারের ঘাটতি দেখা দিলে রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। আর রসুনের মধ্যে থাকা বায়োঅ্যাকটিভ সালফার রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
প্রতিদিন এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে দুটি রসুনের কোয়া খেলে রক্তে থাকা নানা বিষাক্ত উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। যার ইতিবাচক প্রভাব কিডনিতেও পরে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ রক্ত ত্বক সুন্দর করে এবং শরীরকে চাঙ্গা করে।
৬. জলপাই তেল (Olive oil)
জলপাই তেল চর্বি এবং ফসফরাসমুক্ত স্বাস্থ্যকর খাদ্যের উৎস। এটি কিডনি রোগে আক্রান্তদের জন্য এটি দুর্দান্ত বিকল্প খাবার। অ্যাডভান্স কিডনি রোগে আক্রান্তদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রচুর সমস্যা হয়। জলপাইয়ের তেলের মতো স্বাস্থ্যকর ও উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারগুলো এ সমস্যা সমাধানের উপায়।
জলপাই তেলের বেশিরভাগ ফ্যাট হল অ্যালিক অ্যাসিড নামক এক মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট উচ্চ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে, যা জলপাইয়ের তেলকে রান্নার জন্য স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
৭. বাঁধাকপি
কিডনি সমস্যা প্রতিরোধে বাধাকপি একটি অপরিহার্য সবজি। বাঁধাকপি ক্রুসিফেরাস উদ্ভিজ্জ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ। এটি ভিটামিন কে, ভিটামিন সি এবং অনেক বি ভিটামিনের দুর্দান্ত উৎস।
এই আঁশজাতীয় খাবারটি নিয়মিত অন্ত্রের গতিবিধি ঠিক করে আপনার পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। যারা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে ডায়ালাইসিস করিয়ে থাকেন, তাদের জন্য কাঁচা বাঁধাকপি খাওয়া উত্তম।
বাঁধাকপি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে। বাঁধাকপিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীর থেকে ফ্রি রেডিকেল দূর করে শরীরকে ক্যান্সার মুক্ত রাখে। এছাড়াও বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। খাদ্য তালিকায় পরিমাণমত আয়রন না থাকলে শরীরে রক্তস্বল্পতা, ক্লান্তি ও মস্তিষ্কের সমস্যা হয়।
৮. পেঁয়াজ
রেনাল-ডায়েট ডিশগুলিতে সোডিয়াম-মুক্ত গন্ধ দেওয়ার জন্য পেঁয়াজ দুর্দান্ত একটি উপকরণ হিসেবে কাজ করে। খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে আনা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তাই স্বাদযুক্ত লবণের বিকল্পগু খোঁজা আবশ্যক।
পেঁয়াজের মধ্যে ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ এবং বি ভিটামিন রয়েছে। এতে প্রাইবায়োটিক ফাইবার রয়েছে যা উপকারী অন্ত্র ব্যাকটিরিয়াকে খাওয়ানোর মাধ্যমে আপনার হজম সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ১৬২ মিলিগ্রাম পেঁয়াজ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যায় প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে কাজ করে পেঁয়াজ। ক্যানসারের মতো মরণ রোগকে দূরে রাখতে পেঁয়াজ উপকারী। কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা কমাতে বিশেষজ্ঞরা পেঁয়াজ খাওয়ার পরামর্শ দেন ।
৯. মূলা
মূলা শীতকালীন একটি কাঁচা সবজি যা রেনাল ডায়েটের জন্য স্বাস্থ্যকর। এটিতে পটাশিয়াম এবং ফসফরাস খুব কম তবে অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির পরিমাণ বেশি। মূলা ভিটামিন সি এর একটি দুর্দান্ত উৎস। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা হৃদরোগ এবং ছানি ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।
মূলা কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং কিডনির যেকোনো সমস্যা রোধ করে। মূলায় প্রচুর ফাইবার রয়েছে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা এটি গ্রহণ করতে পারেন।
মূলা খুব কম ক্যালোরিযুক্ত এবং এতে কোনও কোলেস্টেরল নেই। মুলা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় এবং এটি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে। মূলায় পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো খনিজ থাকে তবে ফোলেটও প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত থাকে।
১০. শালগম
শালগম কিডনি-বান্ধব ডায়েটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আঁশযুক্ত এই শীতকালীন সবজিটিতে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ এবং ম্যাঙ্গানিজ। প্রতি ১০০ গ্রাম শালগমে ০.৫ গ্রাম আমিষ, ৬.২ গ্রাম শর্করা, ০.৯ গ্রাম আঁশ, ০.২ গ্রাম চর্বি, ২৯ কিলোক্যালরি শক্তি, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৪৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন `সি` থাকে।
শালগম ভিটামিন কে এর চমৎকার উৎস যা সঠিকভাবে রক্তজমাট বাঁধার জন্য আবশ্যক। এই ভিটামিন ক্যালসিয়ামকে প্রকিয়াজাত করে এবং ধমনীর স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। শালগমের লিউটিন নামক উপাদান হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। শালগমে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক ভাবে কাজ করা এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন এ প্রয়োজনীয়। শালগম ভিটামিন এ তে ভরপুর থাকে বলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে।
►► আরো দেখো: সিজারের পরে সহবাস কিভাবে করবেন? ভুল করছেন না তো?
►► আরো দেখো: বুকের দুধ সংরক্ষণ: নিয়ম ও শিশুকে খাওয়ানো
শেষ কথা
উপরে আলোচ্য কিডনি-বান্ধব খাবারগুলি রেনাল ডায়েট অনুসরণকারী ব্যক্তিদের জন্য দুর্দান্ত পছন্দ হতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজনের জন্য আপনি সর্বোত্তম ডায়েট অনুসরণ করছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। কিডনি সুস্থ্য ও স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর সব খাবার গ্রহণ করুন এবং মাসে অন্তত একবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
Discussion about this post