কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায় ব্যবহারিক : ব্যবহারিক লেখার সময় যা মনে রাখতে হবে
১. ধারণাতত্ত্ব : কী পরীক্ষা করা হবে এবং কোন তত্ত্বের ভিত্তিতে করা হবে।
২. প্রয়োজনীয় সমাগ্রী : কী কী সামগ্রী/যন্ত্রপাতি এ পরীক্ষার জন্য দরকার হবে।
৩. কাজের ধাপ : পরীক্ষা করার জন্য কীভাবে অগ্রসর হতে হবে।
২টি খাতা প্রস্তুত রাখো
১. কাঁচা খাতা : পরীক্ষাগারে পর্যবেক্ষণকৃত তথ্যাদি দ্রুত লিপিবদ্ধ করার জন্য।
২. পাকা খাতা : শিক্ষকের নিকট এবং চূড়ান্ত ব্যবহারিক পরীক্ষায় (এমএসসি) উপস্থাপনার জন্য প্রতিটি পরীক্ষণ পাকা খাতায় পরিষ্কারভাবে নিয়ম মোতাবেক লিখতে হবে। প্রয়োজনীয় চিত্রও খাতায় সুন্দর করে আঁকতে হবে।
পরীক্ষণের সময় অবশ্যই-১. কাঁচা খাতা, ২. পেন্সিল, ৩. ইরেজার এবং ৪. স্কেল হাতের কাছে রাখবে।
পরীক্ষণের সময় গভীর মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রয়োজন অনুসারে তথ্যগুলো লিখবে।
পরীক্ষণের ফলাফল লিখবে এবং প্রয়োজনীয় চিত্র আঁকবে। পাকা খাতায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উপস্থাপন করতে হবে :
১. পরীক্ষণ নং
২. পরীক্ষণের শিরোনাম
৩. পরীক্ষণের স্থান ও তারিখ
৪. ধারণাতত্ত্ব/মূলতত্ত্ব
৫. সূত্র (যদি থাকে)
৬. প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও উপকরণ
৭. কাজের ধাপ বা পরীক্ষা পদ্ধতি
৮. হিসাব (যদি থাকে)
৯. ফলাফল
১০. সাবধানতা এবং
১১. মন্তব্য, উপসংহার ও আলোচনা
কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায় ব্যবহারিক
পরীক্ষণ নং- ৪
পরীক্ষণের নাম : উদ্ভিদতাত্ত্বিক বীজ ও কৃষিতাত্ত্বিক বীজ শনাক্তকরণ (ধান, গম, মুলা, মরিচ, আলু, আদা ফসলের এবং গাঁদাফুল ও মেহেদির কান্ড)
তারিখ : ……………………….
মূলতত্ত্ব : সকল উদ্ভিদতাত্ত্বিক বীজই কৃষিতাত্ত্বিক বীজের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সকল কৃষিতাত্ত্বিক বীজ উদ্ভিদতাত্ত্বিক বীজের অন্তর্ভুক্ত নয়।
উদ্দেশ্য : বিভিন্ন ধরনের বীজের সাথে পরিচিত হওয়া ও বীজের প্রকারভেদ জানা।
উদ্ভিদতাত্ত্বিক বীজ : উদ্ভিদের নিষিক্ত ও পরিপক্ব ডিম্বক।
কৃষিতাত্ত্বিক বীজ : উদ্ভিদের যেকোন অংশ (যেমন : মূল, পাতা, কাণ্ড ইত্যাদি) যা উপযুক্ত পরিবেশে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দিতে পারে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
১. বীজ
২. খাতা
৩. খলম
কাজের ধারা:
১. বিদ্যালয়ের নিকটস্থ বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে উপরিউক্ত বীজগুলো সংগ্রহ করলাম।
২. বীজগুলো বিদ্যালয়ের গবেষণাগারে নিয়ে বিভিন্ন পাত্রে রাখলাম।
৩. পরপর দানাদার বীজগুলো সাদা কাগজের উপর ও অন্যান্য বীজ হাতে নিয়ে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম।
৪. শনাক্তকৃত বীজগুলোর বৈশিষ্ট্য, নাম ও ছবি নিচের ছক অনুযায়ী অঙ্কন ও লিপিবদ্ধ করলাম।
পরীক্ষার সতর্কতা:
১. সতর্কতার সাথে বীজ ও কাণ্ড সংগ্রহ করেছি। যেন বীজ ও কাণ্ডের আকার ও আকৃতি নষ্ট না হয়।
২. মনোযোগ সহকারে বীজ ও কাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছি।
পরীক্ষণ নং- ৫
পরীক্ষণের নাম : পুকুরে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্যের উপস্থিতি নির্ণয়
তারিখ : ……………………….
মূলতত্ত্ব : মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য হচ্ছে ফাইটোপ্ল্যাংকটন ও জুপ্ল্যাংকটন।
উদ্দেশ্য : পুকুরে মাছের উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য ও সম্পূরক খাদ্যের পরিমাণ নির্ণয়।
পরীক্ষার উপকরণ:
১. একটি মাছের পুকুর
২. হাত
৩. সুতা
৪. সেকিডিস্ক
৫. কাচের গ্লাস
৬. সূর্যের আলো
এরূপ পরীক্ষা আমরা তিনটি পদ্ধতিতে করতে পারি:
(ক) গ্লাস ও সূর্যালোক পরীক্ষা
(খ) সেকিডিস্ক পরীক্ষা
(গ) হাত পরীক্ষা।
এখানে আমরা ক ও খ নং পরীক্ষা উপস্থাপন করলাম।
কাজের ধারা
১. পুকুরে সার প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর পুকুরে গেলাম।
২. কাচের গ্লাসে পুকুরের পানি নিয়ে সূর্যের আলোর দিকে ধরি।
ক. সেকিডিক্স
১. ২০ সে.মি. ব্যাসযুক্ত টিনের একটি সাদা কালো থালা সুতা দ্বারা পানিতে ডুবাই।
২. ২৫-৩০ সে.মি. গভীরতায় থালাটি দেখা যায় কিনা পর্যবেক্ষণ করি।
পর্যবেক্ষণ: গ্লাসের পানিতে অসংখ্য সূক্ষ্ম কণা ও ছোট পোকার মতো দেখতে পেলাম।
সিদ্ধান্ত : পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য পরিমাণমতো তৈরি হয়েছে।
সাবধানতা : রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে পরীক্ষাটি করতে হবে।
পরীক্ষণ নং- ৬
পরীক্ষণের নাম : সাইলেজ তৈরি
তারিখ : ……………………….
মূলতত্ত্ব : রসাল অবস্থায় ফুল আসার সময় সবুজ ও সতেজ ঘাসকে কেটে টুকুরা করে সেগুলো বায়ুরোধী অবস্থায় সংরক্ষণ করাকে সাইলেজ বলে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
১. কাঁচা ঘাস (ভুট্টা ঘাস)
২. কোদাল
৩. কাস্তে
৪. চিটাগুড়
৫. চাড়ি
৬. পানি
৭. পলিথিন/খড়
৮. মাটি
কাজের ধারা
১. ফুল আসার সময় রসাল অবস্থায় ঘাস কেটে নিই।
২. কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের জন্য প্রথমেই শুকনা ও উঁচু জায়গা নির্ধারণ করে নিই।
৩. নির্ধারিত স্থানে ৭.৬ সে.মি. গভীর, ৭.৬ সে.মি. প্রস্থ এবং ২৫ সে.মি. দৈর্ঘ্যরে একটি গর্ত তৈরি করি। (১০০ ঘন সে.মি. একটি মাটির গর্তে প্রায় ৩ টন কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ করা যায়।)
৪. কাঁচা ঘাসের শতকরা ৩-৪ ভাগ চিটাগুড় মেপে চাড়িতে নিই।
৫. এরপর চিটাগুড়ের সাথে সমপরিমাণ পানি মিশাই।
৬. গর্তের তলায় পলিথিন বিছাই (পলিথিন না বিছালে পুরু করে খড় বিছাতে হবে এবং চারপাশে ঘাস, সাথে সাথে খড়ের আস্তরণ দিতে হবে)।
৭. এরপর ধাপে ধাপে ৩০০ কেজি কাঁচা ঘাস দিয়ে ১৫ কেজি শুকনো খড় দিই।
৮. প্রতিটি ঘাসের ধাপে ৮ থেকে ১০ কেজি চিটাগুড় পানির মিশ্রণ সমভাবে ছিটাই।
৯. এভাবে ধাপে ধাপে ঘাস ও খড় বিছিয়ে ভালোভাবে পাড়াই, যাতে বাতাস বেরিয়ে যায়।
১০. ঘাস সাজানো শেষ হলে খড়ের আস্তরণ দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিই।
১১. সর্বশেষে পলিথিনের উপর ৭.৫-১০ সে.মি. মাটি পুরু করে দিই।
পর্যবেক্ষণ : কোনো পুষ্টিমান না হারিয়ে ঘাস দীর্ঘদিন সংরক্ষিত থাকল।
পরীক্ষার সাবধানতা
১. ভুট্টা গাছগুলোকে মাটি থেকে ১০-১২ সে.মি. উঁচুতে কেটেছি।
২. সঠিকভাবে বায়ুরোধী করেছি।
►► আরো দেখো: কৃষিশিক্ষা সকল অধ্যায়ের সাজেশন
শিক্ষার্থীরা, উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায় ব্যবহারিক PDF ফাইলে ডাউনলোড করে নাও। কোর্সটিকার সকল আপডেট পেতে আমাদের Facebook Page এ Like দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post