কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ২য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : রাণীক্ষেত রোগে মুরগি সাদা চুনের মত মলত্যাগ করে, মুরগি হা করে শ্বাস নেয়ার সময় ঘড় ঘড় শব্দ হয়, নাক ও মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হয়, চোখ ফুলে ওঠে, কানের লতি ও মাথার ঝুঁটি কালচে বর্ণ ধারণ করে। বার্ড ফ্লু রোগে মুরগি ঝিমায়, চোখের চারদিকে ফুলে গিয়ে চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
গামবোরো রোগে মুরগি ঝিমায়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও দেহে কাঁপুনি ওঠে। প্রচ- দুর্গন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা হয় ও মলের সাথে রক্ত ও পিচ্ছিল পদার্থ পড়ে। বসন্ত রোগে মাথার ঝুঁটি, গলকম্বল, কানের লতি ও পায়ের কাছে ছোট ছোট গুটি হয়। মুখে সাদা পাতলা পর্দার মতো দেখা যায় ও শ্বাসকষ্ট হয়। চোখ ও নাক দিয়ে তরল লালা নিংসৃত হয়।
কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ২য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. ব্রয়লার মুরগির ব্রুডার ব্যবস্থাপনা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : যে হাউজে ১-২১ দিন বয়সের বাচ্চাকে তাপ দেওয়া হয় তাকে ব্রুডার বলে।
ব্রুডার টিন/কাঠ/হার্ডবোর্ড দিয়ে তৈরি করা যায়। এক মিটার ব্যাসের ব্রুডারের নিচে ২০০-২৫০টি বাচ্চা রাখা যায়। ব্রুডার ঘর ছনের চালা বা চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে নির্মাণ করা যায়। চিকগার্ড বা বেষ্টনি ব্রুডার থেকে ৭৫ সে মি দূরে ৪৫ সেমি উচু চাটাই বা হার্ডবোর্ড দিয়ে বেষ্টনি তৈরি করতে হয় যেন বাচ্চা ঘর থেকে দূরে যেতে না পারে।
বাচ্চার বয়স বাড়ার সাথে সাথে জায়গার পরিমাণ বাড়াতে হবে। প্রতি ২০০টি বাচ্চার জন্য মোট জায়গা লাগবে ১৮ বর্গমিটার, খাবার পাত্র ০-২ সপ্তাহ বয়সে ৪৫৪ বর্গ সেমি ও ২-৬ সপ্তাহ বয়সে ৭০০ বর্গ সেমি। পানির পাত্র প্রথম ১০ দিন বয়সে ২ লিটারের ৮টি ও ১০ দিন থেকে ৬ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ২ লিটারের ১৬টি লাগবে৷
২. ব্রয়লার খামার করার সুবিধাগুলো লেখো।
উত্তর : মাংস উৎপাদনের জন্য যে পোল্ট্রি খামার করা হয় তাকে ব্রয়লার খামার বলে।
ব্রয়লার খামার করার সুবিধাগুলো হলো-
কম পুঁজিতে খামার স্থাপন করা যায়। দেড়-দুই মাসের মধ্যেই লাভসহ মূলধন ফেরত পাওয়া যায়। অধিক শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলকভাবে ঝুঁকি কম। কম খরচে এ খামার স্থাপন করে প্রাণিজ আমিষ জাতীয় মাংসের সরবরাহ বৃদ্ধি করা যায়।
৩. রাজহাঁস পালন করা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : রাজহাঁস পালনে কিছু বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। এরা ঠাণ্ডা-গরম সব আবহাওয়াতেই খাপ খাওয়াতে পারে। রাজহাঁস সবুজ ঘাস ও শাক-সবজি খায় বলে সম্পূরক খাদ্য কম লাগে। তৃণময় এলাকায় পালন করলে খাদ্য খরচ কম হয়। রাজহাঁস হতে অধিক মাংস পাওয়া যায়। ১০ সপ্তাহে ৫ কেজির বেশি ওজন হয়।
এরা বছরে ২০-৩০টি ডিম দেয়। প্রাপ্ত বয়সী হাঁসের ওজন ১০-১৫ কেজি হয়। রাজহাঁস ফসলের জমির আগাছা খেয়ে পা দিয়ে মাটি নিড়ানির কাজ করে। কম মূলধনে ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রাজহাঁস পালন করা যায়। বিছানা ও পোশাক তৈরিতে এর নরম পালক ব্যবহৃত হয়। এসকল সুবিধার কারণে রাজহাঁস পালন করা হয়।
৪. পিজিয়ন মিল্ক বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার কমপক্ষে ৪-৫ দিন পর কবুতরের বাচ্চার চোখ ফুটে। এ সময় বাচ্চাগুলো কোনো দানাদার খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। পুরুষ ও স্ত্রী কবুতরের পাকস্থলিতে ঘন ক্রিম বা দধির মতো দুধ জাতীয় পদার্থ তৈরি হয়। একেই পিজিওন মিল্ক বলে। এই খাদ্যে ৭০% পানি, ১৭.৫% আমিষ, ১০% চর্বি এবং বাকি ২.৫% থাকে বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ।
৫. বাড়ন্ত ও পূর্ণবয়স্ক হাঁস একত্রে পালনের পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বাড়ন্ত ও পূর্ণবয়স্ক হাঁস একত্রে পালন করা হয় হার্ডিং পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে হাঁসের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ঘর বা আবাসস্থল থাকে না। প্রতিটি দলে সাধারণত ১০০-৫০০টি হাঁস থাকে এবং হাঁসগুলো সারাদিন ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যা বেলায় এদেরকে একটি উঁচু জায়গায় খঙ বা বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে আটকে রাখা হয়। সকালে ডিম সংগ্রহের পর এদেরকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। যে সকল এলাকায় প্রাকৃতিক উৎস থেকে বেশি খাবার পাওয়া যায় (যেমন ফসল কাটা ধান ক্ষেত), সে সকল এলাকায় হাঁসগুলোকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঐ এলাকায় কিছুদিন পালন করার পর খাদ্যাভাব দেখা দিলে আবার নতুন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
৬. ভাইরাস সংক্রমিত মুরগির রোগশনাক্তকারী লক্ষণগুলো ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মুরগির ভাইরাসজনিত রোগের মধ্যে রয়েছে বার্ড ফ্লু, রাণীক্ষেত, বসন্ত, গামবোরো, ম্যারেকস ইত্যাদি।
রাণীক্ষেত রোগে মুরগি সাদা চুনের মত মলত্যাগ করে, মুরগি হা করে শ্বাস নেয়ার সময় ঘড় ঘড় শব্দ হয়, নাক ও মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হয়, চোখ ফুলে ওঠে, কানের লতি ও মাথার ঝুঁটি কালচে বর্ণ ধারণ করে। বার্ড ফ্লু রোগে মুরগি ঝিমায়, চোখের চারদিকে ফুলে গিয়ে চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
গামবোরো রোগে মুরগি ঝিমায়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও দেহে কাঁপুনি ওঠে। প্রচ- দুর্গন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা হয় ও মলের সাথে রক্ত ও পিচ্ছিল পদার্থ পড়ে। বসন্ত রোগে মাথার ঝুঁটি, গলকম্বল, কানের লতি ও পায়ের কাছে ছোট ছোট গুটি হয়। মুখে সাদা পাতলা পর্দার মতো দেখা যায় ও শ্বাসকষ্ট হয়। চোখ ও নাক দিয়ে তরল লালা নিংসৃত হয়।
৭. হাঁস পালনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : হাঁস অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন এক প্রকারের পাখি।
হাঁস মাংস ও ডিম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হাঁসের ডিম আকারে বড় ও অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। বছরে একটি হাঁস ২০০-২৫০টি ডিম দেয়। হাঁসের খাদ্য খরচ কম এবং এদের রোগবালাইও কম হয়। হাঁস পালন করে বেকারত্ব দূর ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। এর ফলে দারিদ্র্যতা দূর হয়।
৮. কবুতর পালনে খরচ কম কেন ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : কবুতর একটি জনপ্রিয় পোল্ট্রি যার পালন ব্যয় খুব কম।
অল্প সময়ে অল্প জায়গায় অধিক সংখ্যক কবুতর পালন করা যায়। কবুতরের বাসস্থান নির্মাণ খরচ কম। কবুতর সাধারণত মুক্ত আকাশে বিচরণ করে এবং বাইরের শস্যদানা খেয়ে থাকে বিধায় খাদ্য খরচও কম হয়। কাজের অবসরে পালন করা যায়। অতিরিক্ত শ্রমিক লাগে না। রোগবালাই কম হয়। তাই চিকিৎসা খরচও কম লাগে। অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে দ্রুত উৎপাদন পাওয়া যায়।
৯. ডিম উৎপাদনকারী দুটি খামারের নাম লেখো।
উত্তর : ডিম উৎপাদনকারী দুটি খামারের নাম হলো-
১. সরকারি হাঁস-মুরগি খামার, কুমিল্লা।
২. সরকারি হাঁস-মুরগি খামার, কিশোরগঞ্জ।
১০. অস্বাভাবিক ডিমের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : অস্বাভাবিক ডিমের ২টি বৈশিষ্ট্য হলো-
১. ডিমের খোসা পাতলা ও নরম হওয়া;
২. ডিমের আকৃতি গোলাকার, আঁকাবাঁকা, বেশি লম্বা অর্থাৎ, বিকৃত হওয়া।
আরো দেখো: কৃষিশিক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ২য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post