কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ৪র্থ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : শস্য উৎপাদনের নতুন কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হলে তা দেশের সম্পৃক্ত বিজ্ঞানী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট উপস্থাপন করার জন্য যে মেলার আয়োজন করা হয় তাই কৃষিমেলা।
কৃষি মেলার জন্য অধিক উৎপাদনশীল, নির্দিষ্ট এলাকা ও মৌসুমের জন্য উপযোগী, সব জায়গায় পাওয়া যায় না এমন ফসল প্রজাতি নির্বাচন করা হয়। এখানে সর্বশেষ আবিষ্কৃত এবং উচ্চ ফলনশীল মাঠ ফসলের বীজ প্রদর্শন ও সরবরাহ করা হয়। যেমন- বিনাধান-৭, বারি গম-২৫ ইত্যাদি।
কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ৪র্থ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. চিংড়িকে কেন সাদা সোনা বলা হয়?
উত্তর : বাংলাদেশে চিংড়িকে সাদা সোনা বা হোয়াইট গোল্ড বলা হয়। চিংড়ি বর্তমানে বাংলাদেশে শিল্পে পরিণত হয়েছে। এ শিল্পের সাথে সরাসরি জড়িত আছে প্রায় ১২ লক্ষ নারী-পুরুষ। দেশের রপ্তানিজাত মৎস্য পণ্যের প্রায় ৬৫% চিংড়ি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি করে দেশ আয় করেছে ৪,৬৬০.৬০ কোটি টাকা। এ কারণে চিংড়িকে সাদা সোনা বলা হয়।
২. কোনো এলাকায় বনাঞ্চলের বিস্তৃতি ঘটালে সে এলাকায় বৃষ্টিপাত বাড়ে কেন?
উত্তর : বন হলো প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট উদ্ভিদ প্রজাতির দ্বারা আচ্ছাদিত স্থান।
বনভূমি উদ্ভিদের প্রস্বেদন হার বৃদ্ধির মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বাড়ায়। যা মেঘের সৃষ্টি করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। তাই, কোনো এলাকায় বনাঞ্চলের বিস্তৃতি ঘটালে সে এলাকায় বৃষ্টিপাত বাড়ে।
৩. পারিবারিক চাহিদা পূরণে বসত বনের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : পারিবারিক প্রয়োজন মেটানোর উদ্দেশ্যে বসতবাড়ির আশপাশে স্বল্প পরিসরে যে গাছ লাগানো হয় তাকে বসত বন বলে।
বসত বনে সাধারণত ফলদ বৃক্ষ ও সবজি রোপণ করা হয়। এতে পরিবারের সদস্যদের ফল ও সবজির চাহিদা পূরণ হয়। জ্বালানি কাঠের ৮৫ ভাগ আসে বসত বন হতে। এই বনের বৃক্ষের পাতা পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় এবং বৃক্ষের কাঠ পারিবারিক আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তাই পারিবারিক চাহিদা পূরণে বসত বন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. শস্য পর্যায়ের নীতিমালাগুলো কী কী?
উত্তর : একটি নির্দিষ্ট জমিতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচিত কিছু শস্য ধারাবাহিকভাবে জন্মানোকে শস্য পর্যায় বলা হয়।
শসা পর্যায় বা শস্যচক্রের নীতিমালাগুলো হলো-
i. স্থানীয় জলবায়ু, ভূমির বন্ধুরতা, মৃত্তিকার প্রকৃতি, পানি সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা, আর্থ-সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনা করে ফসল নির্বাচন করা।
ii. স্থানীয় চাহিদা বিবেচনা করে ফসল নির্বাচন করা এবং অধিক খাদ্যোপাদান শোষণকারী ফসল চাষের পূর্বে সবুজ সার জাতীয় ফসল চাষ করা।
৫. বাংলাদেশ জীববৈচিত্রের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত কেন?
উত্তর : আমাদের চারিপার্শ্বস্থ পরিবেশে বর্তমান বিভিন্ন ধরনের জীবের উপস্থিতি ও সহাবস্থানই হচ্ছে জীববৈচিত্র।
বাংলাদেশকে জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডার বলা হয় কারণ এ দেশে প্রায় ৫০০০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী এবং প্রায় ৫,০০০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
৬. সামাজিক বনায়নের চারটি উদ্দেশ্য লেখো।
উত্তর : জনগণের সম্পৃক্ততায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে যে বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয় তাই সামাজিক বনায়ন।
সামাজিক বনায়নের চারটি উদ্দেশ্যে হলো-
i. উডলট তৈরি
ii. সার্বিক কৃষি উন্নয়ন বৃদ্ধি করা
iii. জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি করা
iv. কুটির শিল্পে কাঁচামালের যোগান দেওয়া।
৭. বনজ সম্পদ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : বনভূমি হতে উৎপাদিত মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য, ফলমূল, কাঠ, ভেষজ বা ঔষধি দ্রব্য ও কাঁচামালকে বনজ সম্পদ বলে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সাথে সাথে বনজ সম্পদের চাহিদা বেড়েছে। বনায়নের মাধ্যমে বনভূমি হতে সর্বাধিক বনজ সম্পদ/ দ্রব্য উৎপাদনের মাধ্যমে সে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
৮. কৃষি মেলার জন্য নির্বাচিত কোন ধরনের ফসল প্রজাতি নির্বাচন করা হয়?
উত্তর : শস্য উৎপাদনের নতুন কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হলে তা দেশের সম্পৃক্ত বিজ্ঞানী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট উপস্থাপন করার জন্য যে মেলার আয়োজন করা হয় তাই কৃষিমেলা।
কৃষি মেলার জন্য অধিক উৎপাদনশীল, নির্দিষ্ট এলাকা ও মৌসুমের জন্য উপযোগী, সব জায়গায় পাওয়া যায় না এমন ফসল প্রজাতি নির্বাচন করা হয়। এখানে সর্বশেষ আবিষ্কৃত এবং উচ্চ ফলনশীল মাঠ ফসলের বীজ প্রদর্শন ও সরবরাহ করা হয়। যেমন- বিনাধান-৭, বারি গম-২৫ ইত্যাদি।
৯. ফসল কৃষি বনের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : ফসল কৃষি বনে একই সাথে একই জমিতে পর্যায়ক্রমিকভাবে বৃক্ষ, খাদ্য ও পশুখাদ্যের চাষাবাদ করা হয়। ফসল কৃষি বনের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
i. প্রধান উদ্দেশ্য খাদ্য উৎপাদন করা।
ii. স্বল্প খরচে বন সৃষ্টি করা যায়।
iii. স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন গাছ ও আন্তঃফসলের সমন্বয়ে গঠন করা যায়।
iv. বসত বনে চাষ করা যায়।
১০. কৃষি মেলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : কৃষি মেলায় কৃষকের উৎপাদিত ও বাছাইকৃত কৃষিপণ্য এবং ফসল উৎপাদন, সংরক্ষণ, মাড়াই, ঝাড়াই ইত্যাদির উন্নত প্রযুক্তি প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হয়।
এ মেলার মাধ্যমে কৃষকেরা পরিবশেসম্মত উপায়ে কৃষি উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ হয়। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রস্তুতকৃত কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি বাজারজাতকরণের সুযোগ পায়। এতে সার্বিকভাবে দেশের কৃষির তথা কৃষি অর্থনীতির উন্নয়ন সাধিত হয়। তাই বলা যায়, কৃষি মেলার গুরুত্ব অপরিসীম।
আরো দেখো: কৃষিশিক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে কৃষিশিক্ষা ২য় পত্র ৪র্থ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post