গণঅভ্যুত্থানের কথা : শাসকশ্রেণি যখন সুশাসন বাদ দিয়ে অত্যাচারী হয়ে ওঠে, তখন নির্যাতিত-নিপীড়িত জনতা বিদ্রোহ করে; শাসক এবং শাসন পদ্ধতির বিরুদ্ধে শুরু করে আন্দোলন-সংগ্রাম। সর্বস্তরের মানুষের আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসক যখন গণদাবি মেনে নেয় বা ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়, তখন আমরা সে আন্দোলনকে বলি গণঅভ্যুত্থান।
বাংলাদেশের নিকট ইতিহাসে তিনটি বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে- ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের, ১৯৯০ সালে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের এবং ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে। ১৯৬৯ ও ১৯৯০ সালের আন্দোলনের নেতৃত্ব ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে, কিন্তু ২০২৪ সালের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সহস্র মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে জনতার বিজয়। কিন্তু স্বৈরশাসকের পতনই শেষ কথা নয়। সুন্দর, সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে আন্তরিক হতে হবে; তাহলেই শহিদ ও আহতদের ত্যাগ সার্থক হবে।
গণঅভ্যুত্থানের কথা
সভ্যতার আদিকাল থেকে মানুষ নানা ধরনের সমাজে বসবাস করে আসছে। যে কোনো সমাজের শাসনকাজ পরিচালনা করে শাসকেরা। অতীতে রাজা-রানি বা সম্রাটেরা শাসনকাজ পরিচালনা করত। তাদের মৃত্যুর পর তাদের সন্তান বা পরিবারের কেউ একজন শাসনের দায়িত্ব পেত।
কিন্তু আধুনিককালে সাধারণত ভোটের মাধ্যমে শাসনক্ষমতা কে পাবে তা নির্ধারিত হয়। তবে এখনো দুনিয়ায় বেশ কিছু দেশ আছে, যেখানে ভোট ছাড়াও শাসক নির্ধারিত হয়। শাসক যেভাবেই নির্ধারিত হোক, তার প্রধান কর্তব্য হলো সকল মানুষের কল্যাণ করা এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে দেশের উন্নতি সাধন করা।
ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, যুগে যুগে শাসকেরা তাদের কর্তব্যের প্রতি অনেকসময় উদাসীন হয়ে পড়ে। তারা দেশের অধিকাংশ মানুষকে বাদ দিয়ে নিজ গোষ্ঠী বা দলের অল্পকিছু মানুষের জন্য কাজ করতে থাকে। অনেকসময় তারা অত্যাচারী হয়ে ওঠে। এমনকি হত্যা আর লুটতরাজেও লিপ্ত হয়।
এ ধরনের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গেলে মানুষ তখন বিদ্রোহ করে। শাসক ও শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করে। সেই আন্দোলনের সাথে যখন সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে শাসককে তাদের দাবি মেনে নিতে বা ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করে, তখন আমরা তাকে বলি গণঅভ্যুত্থান।
দুনিয়াজুড়ে সব কালে, সব দেশেই আমরা এরকম গণঅভ্যুত্থান ঘটতে দেখেছি। বাংলাদেশের নিকট-ইতিহাসেও এরকম তিনটি বড়ো বড়ো গণঅভ্যুথান হয়েছে। প্রথমটি হয়েছিল ১৯৬৯ সালে, যা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। দ্বিতীয়টি ১৯৯০ সালে, যাকে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান বলা হয়, আ তৃতীয়টি হয়েছে একেবারে সম্প্রতি ২০২৪-এর জুলাই মাসে অনেকেই একে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নামে অভিহিত করছেন।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের প্রধান দাবি ছিল তিনটি জেনারেল আইয়ুব খানের পদত্যাগ, শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামীদের মুক্তি এবং আওয়ামী লীগের ছয় দফা ও ছাত্রসমাজের এগারো দফা বাস্তবায়ন। জেনারেল আইয়ুব খান পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিলেন ১৯৫৮ সালে।
তখন বাংলাদেশের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান এবং এখনকার পাকিন্ধানের নাম ছিল পশ্চিম পাকিল্পন। আইয়ুব খানের সরকার শিল্প-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরিসহ সকল ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি চরম বৈষম্যের নীতি অনুসরণ করত। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণা করেন। তখন আইয়ুব খান মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে কারাবন্দি করে রাখেন।
১৯৬৮ সালের শেষদিকে আইয়ুব খানের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীসহ ছাত্ররা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ছাত্ররা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এগারো দফা দাবি উত্থাপন করেন। এই আন্দোলনে কৃষক-শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের মুক্তির কথা জোরালোভাবে উচ্চারিত হয়।
ফলে আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ছাড়াও বাংলাদেশের সর্বক্করের বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন দমন করতে পুলিশ গুলি চালায়। ছাত্রনেতা আসাদ, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মতিবুর, সায়েন্টি জহুরুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুজ্জোহা, সন্তান কোলে ঘরের মধ্যে বসে থাকা এক মা আনোয়ারা বেগমসহ অসংখ্য মানুষ শহিদ হন।
সেনাবাহিনী নামিয়ে এবং কারফিউ জারি করেও মানুষকে নিবৃত্ত করা যায়নি। ছাত্র-শিক্ষক আর মেহনতি মানুষের ব্যাপক আত্মত্যাগ ও অংশগ্রহণের ফলে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সফল হয়। আইয়ুব খান পদত্যাগ করেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়।
আমাদের ইতিহাসে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এ অভ্যুত্থানেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। তারপর অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কথা ছিল বাংলাদেশ হবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের দেশ।
সকল প্রকার বৈষম্য থেকে মুক্ত হবে এদেশের মানুষ। কিন্তু স্বাধীনতার পর এদেশের মানুষের আবার আশাভঙ্গ শুরু হয়। বৈষম্য কমে না, সুবিচার মেলে না, হত্যা থামে না, দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় এবং মানুষ আবার সর্বক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত হতে থাকে।
দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থান ঘটে ১৯৯০ সালে। ১৯৮২ সালে একটা নির্বাচিত সরকারকে জোর করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দীর্ঘ নয় বছরের শাসনে তিনি এদেশের মানুষের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেন, বিরোধী দলগুলোর প্রতি চরম নির্যাতন পরিচালনা করেন, দেশে কায়েম করেন ভয়াবহ স্বৈরশাসন। দুর্নীতি ও সন্ত্রাস ছিল তখনকার বাংলাদেশের সাধারণ চিত্র।
এ দেশের মানুষ তার শাসনকে শুরু থেকেই মেনে নেয়নি। ক্ষমতা দখলের অল্পদিনের মধ্যেই ১৯৮৩-৮৪ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ সংঘটিত হয়। ছাত্রনেতা সেলিম-দেলোয়ারসহ বহু হতাহতের মধ্য দিয়ে সে আন্দোলন দমন করা হয়।
পরে ১৯৮৭ সালে প্রতিবাদী জনতা আরেকবার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নুর হোসেন বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক” লিখে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন। কিন্তু কিছু দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে সরকার আবারও তার পতন ঠেকাতে সক্ষম হয়।
এরপর ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পর ছাত্রআন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠন করা হয়। তারা দশ দফা দাবিনামা পেশ করেন। সকল দল মিলে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণা করে। পুলিশের গুলিতে ডাক্তার মিলন, জেহাদসহ বহু মানুষ শহিদ হন। এরপর সারাদেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এলে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গদত্যাগ করে বিদায় নেন।
নব্বইয়ের গণঅভ্যুথানে বাংলাদেশের মানুষ একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখতে চেয়েছিল, অধিকারের রাষ্ট্র দেখতে চেয়েছিল; ছাত্রসমাজ মানসম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ চেয়েছিল। কিন্তু তারপর একের পর এক সরকার ক্ষমতায় আসলেও পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। বৈষম্য কমেনি, অধিকার বাড়েনি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ আরো খারাপ হয়েছে। মানুষ আবারও আশাভঙ্গের শিকার হয়েছে।
চরম বৈষম্য, অপমান আর জুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে এদেশের মানুষ তাই আবারও রাস্তায় নামে ২০২৪ সালে। শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। কিন্তু তিনি নানা কায়দাকানুন করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে একের পর এক প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন।
বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেবার অধিকার কেড়ে নেন। পুরো দেশকে একটি পরিবারের শাসনে পরিণত করেন। উন্নয়নের নামে নজিরবিহীন লুটপাট চলতে থাকে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে এক দলীয় এবং পারিবারিক বিষয়ে পরিণত করেন। বিরোধী নেতাকর্মীদের জেলজুলুম ও হয়রানির মধ্য দিয়ে রাজনীতিকে প্রায় অসম্ভব করে তোলেন।
এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে ছাত্রসমাজ সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা ছিল, তার সংস্কার চেয়ে আন্দোলন শুরু করে। ২০১৮ সালে এই আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে সরকার কোটাব্যবস্থার সংস্কার না করে সকল ধরনের কোটাই বাতিল করে দেয়।
কিন্তু ২০২৪ সালে এসে সরকার আবারও কোটাব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনার কৌশল গ্রহণ করলে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামের সংগঠন গড়ে তোলে। তাদের সাথে ক্রমশ সকল ধরনের সংগঠন, দল ও ব্যক্তি যুক্ত হয়ে আন্দোলন শুরু করে।
আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠলে সরকার তা দমন করতে ব্যাপক নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। কিন্তু তাতেও আন্দোলন থামে না। সরকারি-বেসরকারি সকল ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। তাদের সাথে যুক্ত হন রিকশাওয়ালা, খেটেখাওয়া মানুষ, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
সরকার আন্দোলনরত জনতাকে স্তব্ধ করে দিতে সব ধরনের পন্থা অবলম্বন করে। কিন্তু দেশরক্ষার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ মানুষ মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে আন্দোলন চালিয়ে যায়। দুহাত প্রসারিত করে বুকে বুলেট নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন ছাত্রনেতা আবু সাঈদ।
রাজপথে আন্দোলনরত সহযোদ্ধাদের পানি বিভরণ করতে করতে নিহত হন শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধ। মায়ের কোলে থাকা, বাবার হাতে থাকা, ছাদে-বারান্দায় খেলতে থাকা অসংখ্য শিশু নিহত হয়। অসংখ্য মা-বাবা ও খেটে খাওয়া মানুষ শাহাদত বরণ করেন। অবস্থা এমন হয় যে, গুলি করে এবং হত্যা করেও মানুষকে রাস্তা থেকে সরকার সরাতে পারে না।
এমতাবস্থায় সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে ভারত চলে যান। তৈরি হয় বাংলাদেশের গণঅভ্যুথানের এক নতুন ইতিহাস।
আগের দুই অভ্যুত্থানের সাথে এবারের অভ্যুত্থানের একটা বড়ো পার্থক্য হচ্ছে, আগের দুবার শিক্ষার্থীরা প্রধান ভূমিকা রাখলেও আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানে এরকম কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ছিল না। আন্দোলন পরিচালনা করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের সাথে সকল ধরনের সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ যুক্ত হয়।
কিন্তু এতো মানুষ রাস্তায় নেমেছিল কেন? হাজারো মানুষ জীবন দিল কেন? কেনই-বা হাজার হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে আন্দোলন চালিয়ে গেল?
কারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা ছিল এক সুন্দর বাংলাদেশের। এক অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের, যেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি বা আঞ্চলিক কোনো বৈষম্য থাকবে না। রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে কেউ নিপীড়নের শিকার হবেন না। ভিন্নমত থাকবে, এবং পার্থক্যও থাকবে। কিন্তু সবাই সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নেবেন।
মনে রাখতে হবে, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন হলেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়ে যায় না। এজন্য আমাদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে। অনেক কাজ করতে হবে। সবাইকে পড়াশোনা করে মানুষ হতে হবে। দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। সমাজ থেকে সব ধরণের অন্যায় ও বৈষম্য দূর করতে হবে। একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তবেই ২০২৪-এর শহিদ ও আহতদের আত্মদান সার্থক হবে।
(সংকলিত)
গণঅভ্যুত্থানের কথা সৃজনশীল প্রশ্ন
১৭৮৯ সালের ১৪ই জুলাই ফরাসি রাজতন্ত্রের দমননীতির প্রতীক বাস্তিল দুর্গের পতনের মধ্য দিয়ে ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়। রাজপুরুষদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করতো তাদের এই বাস্তিল দুর্গে বন্দি করে নির্যাতন করা হতো। শত শত বছরের সেইসব নির্যাতন, নিপীড়ন, সামাজিক বঞ্চনা, অর্থনৈতিক অনাচারসহ বহুমাত্রিক শোষণের বিরুদ্ধে এই বিপ্লব ছিল ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
দার্শনিক জঁ-জ্যাক রুশো ছিলেন এই আন্দোলনের মূল প্রবক্তা; আর ফরাসি বিপ্লবকে সফল করেছে ব্যবসায়ী, কারিগর, কৃষক-শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার দরিদ্র মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ। অনেক মৃত্যুর বিনিময়ে জনতার জয় হয়, ফ্রান্স মুক্তি পায় রাজতন্ত্রের কবল থেকে।
ক. ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে কোন সংগঠন?
খ. ‘গণঅভ্যুত্থান’ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের ‘ফরাসি বিপ্লব’ কী ধরনের আন্দোলন? তোমার পাঠ্য ‘গণঅভ্যুত্থানের কথা’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ফরাসি বিপ্লবে আন্দোলনকারীদের ভূমিকার সঙ্গে ‘গণঅভ্যুত্থানের কথা’ প্রবন্ধে উল্লেখিত বাংলাদেশের তিনটি গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনকারীদের ভূমিকার তুলনা করো।
◉ আরও দেখুন: অষ্টম শ্রেণির সকল গল্প-কবিতার CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে অষ্টম শ্রেণির বাংলা বই থেকে গণঅভ্যুত্থানের কথা আলোচনা করা হয়েছে। এই বইয়ের যে সৃজনশীল প্রশ্নগুলো রয়েছে, তার উত্তরও তোমরা কোর্সটিকায় পেয়ে যাবে। সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধানের জন্য উপরের ‘সৃজনশীল সমাধান’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post