গর্ভবতী মায়ের মাথা ব্যাথা একটি সাধারণ ও পরিচিত সমস্যা। হরমোন পরিবর্তন থেকে ভাল ঘুম না হওয়াসহ আরো অনেক কারণে গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যাথা হতে পারে। মাথা ব্যথা থেকে একটি পর্যায়ে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে; তবে এগুলো সাধারণত মা এবং নবজাতকের জন্য বিপজ্জনক নয়। আজ আমরা রেমিডিস্টেগর্ভবতী মায়ের মাথা ব্যাথা হওয়ার কারণ, প্রতিরোধ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করবো।
গর্ভবতী মায়ের মাথা ব্যাথার কারণ
গর্ভবতীয় মায়েদের মাথাব্যাথায় খুব আতঙ্ক বা আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কারণ আপনি গর্ভবতী হওয়ার সময় অনেক কিছুই মাথা ব্যাথার কারণ হতে পারে। এর মধ্যে কিছু সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে:
- হরমোনের পরিবর্তন
- ক্ষুধা
- রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়া
- পানি শূন্যতা
- ঘুমের অভাব
- দীর্ঘক্ষণ ফোন বা কম্পিউটারের স্ক্রিণের দিকে তাকিয়ে থাকা
- মানসিক বা শারীরিক চাপ
- পেটের ভেতের বাচ্চা বড় হওয়ার আপনার ওজন বৃদ্ধি
- শরীরের বৃদ্ধির ফলে পেশী বা চামড়ার টান
- উচ্চ রক্তচাপ
চিকিৎসা
গর্ভবতী হওয়ার পরে মাথা ব্যাথা কমানোর জন্য বিভিন্ন ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে আপনি চাইলে প্রাকৃতিক উপায়ে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেও এই ব্যথাটি মোকাবেলার চেষ্টা করতে পারেন। ঔষধের বিকল্প বেশকিছু উপায় রয়েছে, যা কার্যকর ভূমিকা পালন করে। চলুন জেনে নেই।
১. অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম করুন: মাথা ব্যাথা হলে কিছুক্ষণের জন্য (অন্তত আধা ঘণ্টা) কম আলোময় একটি কক্ষে বিশ্রাম নিন। টিভির ভলিউম কম রাখন বা এটি বন্ধ করুন। চেষ্টা করুন এমন একটি কক্ষে থাকার, যা তুলনামূলক কম কোলাহলপূর্ণ।
২. গোসল করুন: যদি আপনি গর্ভাবস্থার কোন সমস্যায় না ভোগেন এবং আপনার ডাক্তার গোসল করতে নিষেধ না করে, তবে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল সেরে নিতে পারেন।
৩. প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করুন: বিকল্প সব যত্ন যেমন মালিশ (ম্যাসেজ) বা আকুপাংচার মাথাব্যথা উপশম করতে সহায়তা করতে পারে।
৪. চোখের পরীক্ষা করুন: গর্ভাবস্থায় নারীদের চোখ শুষ্ক হয়ে যায় এবং দৃষ্টিশক্তি পরিবর্তন করে প্রভাবিত করে। তাই অভিজ্ঞ কোন চক্ষু চিকিত্সক চোখের সমস্যাগুলি থেকে মাথাব্যথা উপশম করতে বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারেন।
৫. নারীরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন: আপনার মাথা ব্যথা যদি অতিরিক্ত হয়ে থাকে, তাহলে কোন অভিজ্ঞ গাইনী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন এবং তার পরামর্শ গ্রহণ করুন।
স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত যেকোন পরামর্শের জন্য ভিজিট করুন: DoctLab
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
বেশিরভাগ সময়, মাথাব্যথা হলে খানিকটা সময় বিশ্রাম নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। তবে কিছু কিছু সময়ে গভীর মাথাব্যথা যা কয়েক ঘন্টার মধ্যে চলে যায় না এবং অবস্থা আরো খারাপ হয়। এমতাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ না নিলে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই নিচের সমস্যাগুলো অনুভব করলে আপনার উচিত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া।
- যদি আপনার প্রাকৃতিক চিকিত্সা কাজ না করে এবং ঔষধ গ্রহণ করতে হয়।
- কোন ঔষধ গ্রহণের পূর্বে এটি আপনার জন্য নিরাপদ কিনা, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন।
- আপনার যদি জ্বর হয়, নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
- যদি উচ্চ রক্তচাপ থেকে আপনার মাথা ব্যাথার সূত্রপাত হয়।
- মাথা ব্যথার পাশাপাশি অতিরিক্ত বমি বমি ভাব, ঝাপসা দেখা, পেটে ব্যথা বা শরীরে ফোলাভাব হয়।
►► আরো দেখো: জন্মের প্রথম ঘণ্টা থেকেই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো
►► আরো দেখো: সিজারের পরে সহবাস কিভাবে করবেন? ভুল করছেন না তো?
শেষ কথা
মাথা ব্যথা বেদনাদায়ক এবং বিরক্তিকর হতে পারে। আপনি গর্ভবতী হলে এগুলি আরও খারাপ অনুভূত হয়।তবে মাথা ব্যাথা উপশমের জন্য ওষুধ সেবন সম্পর্কে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে মাথাব্যথার কারণ কী হতে পারে তা বোঝার মাধ্যমে আপনি এটি প্রতিরোধের চেষ্টা করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মাথা ব্যথা কেবল একটি সাধারণ ব্যথা এবং এটি আপনার বা আপনার সন্তানের পক্ষে বিপজ্জনক নয়। এগুলি সাধারণত কিছুটা বিরক্তি দিয়ে নিজেরাই চলে যায়। তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়, ডাক্তারকে জানাতে ভুল করবেন না।
ছবি: Women Fitness
Discussion about this post