এ্যাড নেটওয়ার্কিং সার্ভিসে গুগল এ্যাডসেন্স যেভাবে জনপ্রিয় হচ্ছে, তাতে করে গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার এবং এর সম্পর্কে আরো গভীরভাবে আমাদের জানার প্রয়োজনীয়তা গভীরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র গুগল এ্যাডসেন্স ব্যবহারই নয়, বরং এর প্রতিটি অংশ সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিলে গুগল থেকে সবথেকে বেশি রেভিনিউ নেয়া সম্ভব। আর কোর্সটিকায় আমরা মূলত সেই অনুযায়ী আপনাদের ধারণা দেয়ার চেষ্টা করি।
এ্যাডসেন্স হচ্ছে গুগলের একটি এ্যাড নেটওয়ার্ক। যার মাধ্যমে গুগল ইউটিউব, এ্যাপ, কিংবা ওয়েবসাইটে এ্যাড প্রদর্শন করে থাকে। বাংলা কনটেন্ট এ্যাডসেন্সের আওতাভুক্ত হওয়ায় বর্তমানে গুগল এ্যাডসেন্স বাংলাদেশের পাবলিশারদের কাছে খুবই জনপ্রিয় এবং সম্ভাবনার একটি নাম। আপনি যদি গুগল এ্যাডসেন্সের সবগুলো নীতিমালা মেনে একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে এই এ্যাডসেন্স হতে পারে আপনার উপার্জনের দারুণ একটি মাধ্যম।
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কেন এ্যাপ্রুভ হয় না? কারণটা কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্সে এ্যাড লিমিট কেন হয়? জানা আছে কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্স এ্যাড ইউনিট: সর্বোচ্চ কয়টি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে কমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
►► আরো দেখুন: Adsense Ad Placements: কোথায় Ad বসাবেন, কোথায় বসাবেন না?
►► আরো দেখুন: সেরা ১০ টি এ্যাড নেটওয়ার্ক : এ্যাডসেন্সসহ আরো অনেক
গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার?
তৈরির ওপর ভিত্তি করে গুগল এ্যাডসেন্স ২ প্রকারের হয়ে থাকে। আর এই দুই প্রকারের AdSense থেকেই আপনি উপার্জন করতে পারেন। এগুলো হচ্ছে:
১। হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট
২। নন হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট
আপনি যদি পাবলিশার বা কনটেন্ট নির্মাতা হয়ে থাকেন, অর্থাৎ আপনি যদি আপনার কনটেন্টগুলো ইউটিউব, এ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মনিটাইজ করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনি এই ২ প্রকার এ্যাডসেন্সের মধ্যে (Hosted and Non Hosted) যে কোন একটি এ্যডসেন্স এ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। তৈরি এবং পরিচালনার দিক থেকে হোস্টেড AdSense এ্যাকাউন্ট ও নন-হোস্টেড AdSense এ্যাকাউন্টের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। চলুন সেগুলো জানি।
১. হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট
আপনি যদি এমন কোন প্লাটফর্মে গুগল এ্যাড প্রদর্শন করাতে চান, যেখানে আপনার নিজস্ব কোন হোস্টিং স্টোরেজ ব্যবহার করতে হবে না; তাহলে এ ধরনের এ্যাকাউন্টই হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট। যেমন আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি এ্যাডসেন্স দ্বারা মনিটাইজ করতে পারেন। আবার ব্লগস্পট ব্যবহার করে একটি ব্লগার ওয়েবাইট তৈরি করে সেখানেও এ্যাড দেখাতে পারেন। এগুলো সবই গুগলের নিজস্ব হোস্টিং এর অধীনে পরিচালিত, যা ব্যবহার করতে আপনাকে কোন হোস্টিং স্টোরেজ কিনতে হবে না।
মোট কথা, গুগলের নিজস্ব কিছু প্রোডাক্ট যেমন ইউটিউব এবং ব্লগস্পটকে ভিত্তি করে যদি এ্যাডসেন্স একাউন্ট তৈরি করেন, তাহলে সেটি এক কথায় হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট। হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে এ্যাকাউন্টের ওপরে Hosted Account নামে একটি লেবেল থাকে।
তবে একটি বিষয় মনে রাখুন। আপনি যদি গুগল ব্লগস্পট থেকে কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনি blogspot.com এর আন্ডারে একটি সাব-ডোমেইন পাবেন, যা আপনার ওয়েবসাইটের নিজস্ব এ্যাড্রেস হবে। তবে আপনি যদি স্পেশাল টপ লেভেল কোন ডোমেইন (যেমন: .com, .net, .org) ইত্যাদি নিতে চান, তাহলে আপনাকে নিজস্ব ডোমেইন কিনতে হবে এবং রিভিউর জন্য পুনরায় গুগলের কাছে সাবমিট করতে হবে। এক্ষেত্রে গুগল এ্যাডনেন্স যদি আপনার আবেদনটি এ্যাপ্রুভ করে, তাহলে পুনরায় আপনি গুগলের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাতে পারবেন।
বর্তমানে সাধারণত ইউটিউবের কনটেন্ট মনিটাইজ করার ক্ষেত্রেই হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্টকে বেশি উপযোগী মনে করা হয়। কারণ এখানে হোস্টিং এর কোন ঝামেলা থাকে না। তবে আপনি হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে গুগলের ব্লগস্পট থেকেও ভালো রিভিনিউ ইনকাম করতে পারেন। কারণ, ব্লগস্পট গুগলের একটি প্রোডাক্ট এবং এর ফলে আপনার ব্লগস্পট ওয়েবসাইটটি হোস্টেড একাউন্টের মাধ্যমে এ্যাড প্রদানের উপযুক্ত।
২. নন হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট
নন হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এক্ষেত্রে গুগলের নির্দিষ্ট কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করে এ্যাডসেন্সের সুবিধা ভোগের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। একটি নন হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে একজন পাবলিশার ইউটিউব ও ব্লগস্পটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের পাশাপাশি তার যে কোনো ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের সুযোগ পায়।
আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটি হতে পারে এমন একটি ওয়েবসাইট, যেটি আপনি আলাদাভাবে নিজস্ব খরচে ডেমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করে তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা এই ওয়েবসাইটে আপনি নন-হোস্টেড এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাতে পারবেন। হোস্টেড একাউন্টের মত নন-হোস্টেড এ্যাকাউন্টে বিজ্ঞাপন দেখানোর ক্ষেত্রে তেমন বিধিনিষেধ নেই।
আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন? হোস্টেড? নাকি নন হোস্টেড?
একজন পাবলিশার কোন ধরনের এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করবে, তা মূলত নির্ভর করে কনটেন্ট প্রকাশের প্লাটফর্মের ওপর। আপনি যদি একজন ইউটিউবার হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনি হোস্টেড এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, ইউটিউব গুগলেরই একটি প্রোডাক্ট। আবার ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে ব্লগস্পট ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ফ্রিতে আপনি একটি ডোমেইন পাচ্ছেন। ইউটিউব এবং ব্লগস্পট উভয়েই গুগলের প্রোডাক্ট এবং এগুলো ব্যবহার করতে হলে হোস্টিং বাবদ আপনাকে কোন খরচ বহন করতে হবে না।
আবার যদি এমনটি হয় যে, আপনি বর্তমানে শুধু ইউটিউব বা ব্লগস্পট অথবা দুটোই ব্যবহার করছেন এবং আপনার নিজস্ব কোনো ওয়েবসাইট নেই। তবে ভবিষ্যতে নিজের ওয়েবসাইট বানানোর চিন্তা আছে। তাহলে আপনি একটি হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণের মাধ্যমে আপনি আপনার হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্টটি নন-হোস্টেড এ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্টে আপগ্রেড করতে পারবেন।
অপরদিকে আপনি যদি শুরু থেকেই একটি প্রফেশনাল ওয়েবাসাইট তৈরিতে নজর দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি নন হোস্টেড এ্যাকাউন্টের বিষয়টি ভাবতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর জন্য আলাদাভাবে খরচ করতে হবে। যারা প্রফেশনাল ব্লগার এবং টেক্সটচুয়াল কনটেন্ট মনিটাইজেশনের মাধ্যমে এ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করে থাকেন, তারা অধিকাংশরাই নন হোস্টেড এ্যাকাউন্টকেই পছন্দের তালিকায় প্রথমে রাখেন।
শেষ কথা
এ্যাডসেন্সে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে হোস্টেড কিংবা নন হোস্টেড এ্যাকাউন্ট বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে আপনার কনটেন্ট। আপনার কনটেন্ট যদি আকর্ষণীয় এবং জনপ্রিয় হয়, তাহলে আপনি যেকোন এ্যাকাউন্টেই সফলতা পাবেন। কিন্তু আপনার কনটেন্ট যদি তেমনটি না হয়, সেক্ষেত্রে এ্যাডসেন্স সফল হওয়া সত্যিই খুব কঠিন হয়ে পড়বে।
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স কেন এ্যাপ্রুভ হয় না? কারণটা কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্সে এ্যাড লিমিট কেন হয়? জানা আছে কি?
►► আরো দেখুন: এ্যাডসেন্স এ্যাড ইউনিট: সর্বোচ্চ কয়টি এ্যাড ইউনিট বসাতে পারবেন?
►► আরো দেখুন: গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে কমন কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
►► আরো দেখুন: Adsense Ad Placements: কোথায় Ad বসাবেন, কোথায় বসাবেন না?
►► আরো দেখুন: সেরা ১০ টি এ্যাড নেটওয়ার্ক : এ্যাডসেন্সসহ আরো অনেক
আমরা আছি ইউটিউবেও। গুগল এ্যাডসেন্সের ওপর বাংলায় টিউটোরিয়াল ও আপডেট পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি Subscribe করতে পারেন এই লিংক থেকে।
Discussion about this post