কোন ব্যক্তির একবার চুল পড়া শুরু হলে তা পড়তেই থাকে। শেষমেষ দেখা যায় চুলের পরিমাণ অনেক কমে যায় কিংবা মাথায় টাক পড়তে শুরু করে। তাই চুল পড়া শুরু হলে, নতুন চুল গজানোর জন্য চুল পড়া বন্ধ করার উপায় গুলো জেনে সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
চুল পড়া সমস্যার জন্য অনেক কারণ থাকতে পারে। তেমনই সমাধানও রয়েছে। সেসব সমস্যার সমাধানের জন্য যেতে হবে সেই বিষয়ক বিশেষজ্ঞের কাছে। তার জন্য অনেক অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন তা সবার হয়ে উঠে না। তারা ঘরোয়া উপায়ে চুল পড়া বন্ধ করুন কিংবা ঔষধের মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ করতে পারেন।
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আগে চুলের খুশকি, উকুন ও এলার্জি স্কিন দূর করতে হবে। নাহলে আপনি চুল পড়া যতই বন্ধ করুন না কেন উক্ত কারণগুলোর জন্য আপনার চুল পড়া আবার শুরু হবে।
চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আগে আমাদের চুল পড়ার কারণ এবং নতুন চুল গজানোর উপায় জানতে হবে। নয়তো সাময়িক সময়ের জন্য চুল পড়া বন্ধ হলেও তা আবার একসময় শুরু হবে।
আমাদের রাত জাগা, অতিরিক্ত ঘুমানো বা অলস জীবন-যাপন পরিহার করতে হবে। লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে। চুলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং চুলের স্কিনে কোন প্রবলেম থাকলে স্কিন সল্যুশন করতে হবে।
উক্ত উপায়গুলো অনুসরণ করার পরে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আরও যে সকল উপায়গুলো আছে সেগুলো অনুসরণ করতে হবে।
১. মাথার ত্বকে বিভিন্ন ধরনের তেল ম্যাসাজ করা
মাথার ত্বক তথা স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে হবে। তার ফলে ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। নতুন চুল গজাতে এই পদ্ধতি খুবই সাহায্য করে। সেই সাথে ত্বকের মৃত কোষগুলোকে দূরে করে চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করা চুল পড়া বন্ধ করার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপায়।
ম্যাসাজ করার জন্য অ্যালোভেরা, আমলকী, অলিভ অয়েল বা লেবু ভালো উপাদান হতে পারে। এই উপাদানগুলো চুলের সাথে মাথার ত্বকেও অনেক কার্যকরী।
২. নারকেল তেল দেওয়া
মাথার স্ক্যাল্প ও চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে নারকেল তেল ভালো কাজ করে। নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে চুল পড়া রোধ করে। সপ্তাহে অন্তত দু থেকে তিনদিন মাথায় নারকেল তেল ব্যবহার করা। মাথায় ব্যবহার করার পাশাপাশি স্ক্যাল্পে তেলটি ম্যাসাজ করে দেওয়া।
৩. চুল পড়া বন্ধ করার উপায় মেথি ব্যবহার করুন
মেথিতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন সি, আয়রন ও পটাসিয়াম। এই উপাদানগুলো চুলের স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, চুলের গোঁড়া শক্ত করে, চুল করে ঘন ও মসৃণ। মেথির মাধ্যমে চুলের গোঁড়া শক্ত হওয়ার কারণে চুল পড়া অনেকাংশে কমে যায়।
মেথি ব্যবহার করার জন্য প্রথমে ২ চামচ মেথি নিয়ে সারারাত পানিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সকালে সেই মেথিগুলো তুলে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিতে হবে। পেস্টের কাজ শেষ হয়ে গেলে সেই পেস্টের সাথে দই, মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।
সেই পেস্ট মাথার চুলে লাগাতে হবে ও ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এভাবে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে করতে হবে। দু’মাস করলেই ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
৪. নিমপাতার নির্যাস
চুলের যত্নে নিমপাতার ব্যবহার নতুন নয়। আয়ুর্বেদেরও নিমপাতাকে অনেক গুরুত্বের সহিত দেখা হয়েছে। নিমপাতার রস চুলের স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেল উৎপাদন বন্ধ করে। স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেল চুলের গোঁড়া নরম করে দেয়। নিমপাতা এই তেল উৎপাদন কমিয়ে চুলের গোঁড়া রাখে শক্ত।
১২/১৫ টি নিমপাতা নিয়ে সেগুলো ভালোভাবে বাটতে হবে। তারপর সেই নিমপাতা বাটা অংশ হতে নির্যাসটুকু আলাদা করে নিতে হবে। এই নির্যাসের সঙ্গে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল মিশিয়ে তা চুলের স্ক্যল্পে ম্যাসাজ করতে হবে।
সবশেষে যা জানা দরকার
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য, চুল পড়া বন্ধ করার উপায় গুলো জেনে সেগুলো অনুসরণ করতে হবে। তবে শুধু সেই মোতাবেক কাজ করলেই হবে না। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য মাথার ত্বক ও চুলকে রাখতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। চুলকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে সঠিক নিয়মে চুল পড়া বন্ধের উপায়গুলো অনুসরণ করতে হবে। তবেই চুল পড়া বন্ধ করা সম্ভব।
Discussion about this post