জন্মভূমি কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : এদেশের অপরূপ রূপে কবি মুগ্ধ ও অভিভূত। এমন একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন। বাংলার আকাশ, বাতাস, মাঠ, পাহাড়, পর্বত, ফুলের গন্ধ, চাঁদের আলো সবই কবিকে আকৃষ্ট করে। কবির দৃষ্টিতে জন্মভূমি মাতৃসম, তাই মা এবং দেশ উভয়ের প্রতি তিনি একই ভালোবাসা পোষণ করেন। জন্মভূমিতে কবির অঙ্গ জুড়ায় কারণ দেশ তথা দেশের সব কিছুই কবির কাছে আদরণীয়, জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়িয়ে যায়।
জন্মভূমি কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. কবির শেষ ইচ্ছা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জন্মভূমির মাটিতে চিরনিদ্রায় যাওয়ার সুযোগ পাওয়াটাই কবির শেষ ইচ্ছা।
‘জন্মভূমি’ কবিতার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই দেশে জন্মগ্রহণ করেন, জন্মভূমিকে ভালোবাসতে পেরেই নিজের জীবনের সার্থকতা অনুভব করেন। জন্মভূমির অপরূপ সৌন্দর্যের ঐশ্বর্যে কবি মুগ্ধ। এর সূর্যালোক কবির চোখ পরিপূর্ণভাবে জুড়িয়েছে।
তাই কবির একান্ত ইচ্ছা এই সূর্যালোক দেখতে দেখতেই তিনি জন্মভূমির মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন।
২. কী দেখে প্রথমেই কবির চোখ জুড়ালো?
উত্তর: এদেশের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে কবি মুগ্ধ। তাই এদেশের সূর্যের উজ্জ্বল আলো প্রথম দেখায় তার চোখ জুড়িয়ে গেল।
কবি জন্মগ্রহণ করে যখন প্রথম চোখ খুলে দেখেছেন জন্মভূমির সূর্য আলোর পসরা সাজিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে। কবির কাছে জন্মভূমি মায়ের মতো, মায়ের পানে তাকালে সন্তানের হৃদয় যেমন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়, চোখ জুড়িয়ে যায়। ঠিক তেমনি জন্মের পর চোখ মেলে যখন দেশমাতার আলো দেখেছেন তখন কবির চোখও একইভাবে জুড়িয়ে গেছে।
৩. কবির জনম সার্থক মনে করেন কেন?
উত্তর: এদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন।
এদেশের শীতল হাওয়া কবির শরীর শীতল করে। জন্মভূমির বনের ফুল, সূর্যের আলো, চাঁদের হাসি সব কিছুই কবিকে আবেগাপ্লুত করে। যা মূলত দেশের প্রতি তার ভালোবাসারই প্রকাশ। তাই এমন একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন।
৫. ‘জানি নে তোর ধন রতন/আছে কি না রানির মতন।’—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘জানি নে তোর ধনরতন/আছে কি না রানির মতন।’—পঙ্ক্তি দুটি দ্বারা কবি মাতৃভূমির সম্পদের প্রতি তার অবহেলা এবং প্রকৃতি ও জন্মভূমির প্রতি তার অপরিসীম ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন।
মাতৃভূমিতে অনেক ধনসম্পদ লুকানো আছে কি না, এটা নিয়ে কবির মনে আগ্রহ নেই। মাতৃভূমিতে সম্পদ থাক বা না থাক, এর প্রতি কবির কোনো প্রশ্ন নেই। মাতৃভূমিই কবির কাছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। আলোচ্য পঙ্ক্তি দুটি দ্বারা মাতৃভূমির প্রতি কবির প্রবল বিশ্বস্ততা আর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
৬. ‘শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে’—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
এদেশের অপরূপ রূপে কবি মুগ্ধ ও অভিভূত। এমন একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন। বাংলার আকাশ, বাতাস, মাঠ, পাহাড়, পর্বত, ফুলের গন্ধ, চাঁদের আলো সবই কবিকে আকৃষ্ট করে। কবির দৃষ্টিতে জন্মভূমি মাতৃসম, তাই মা এবং দেশ উভয়ের প্রতি তিনি একই ভালোবাসা পোষণ করেন। জন্মভূমিতে কবির অঙ্গ জুড়ায় কারণ দেশ তথা দেশের সব কিছুই কবির কাছে আদরণীয়, জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়িয়ে যায়।
৭. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’—বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’ বলতে কবির মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত স্বদেশের আলো-বাতাসে নিজের শরীর জড়িয়ে রাখার ইচ্ছাকে বোঝানো হয়েছে।
জš§ভূমির বিচিত্র সৌন্দর্যের অফুরন্ত উৎস হচ্ছে বাগানের ফুল, চাঁদের জ্যোৎস্না, সূর্যের আলো। এসব কবির মনকে আকুল করে। এদেশের মাটিতে কবির জš§। এর সূর্যালোকে কবির চোখ জুড়িয়েছে। তাই তিনি এই আলোতেই, এই দেশের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান। কবির মৃত্যুপূর্ব ইচ্ছা ব্যক্ত হয়েছে আলোচ্য উক্তিটিতে।
৮. কবি তার জন্মভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান কেন?
উত্তর: এদেশে জন্মগ্রহণ করে কবি জীবনের সার্থকতা অনুভব করেন। বলে কবি তার জন্মভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান।
‘জন্মভূমি’ কবিতায় জন্মভূমির প্রতি কবির মমত্ববোধ ও গভীর দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে। মাতৃভূমির স্নেহছায়ায় কবি যে সুখ ও শান্তি লাভ করেছেন তা অতুলনীয়। জন্মভূমির অপার সৌন্দর্যে কবি মুগ্ধ। এই দেশের মাটিতে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্য মনে করেন। মৃত্যুর পরও দেশের মাটিতে মিশে থাকতে চান তিনি। তাই কবি তাঁর প্রিয় জন্মভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান।
৯. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’—পঙক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: প্রশ্নের পঙ্ক্তির মাধ্যমে কবি জন্মভূমির সূর্যালোকেই চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার বাসনা প্রকাশ করেছেন। এই দেশে জন্মগ্রহণ করে এবং জন্মভূমিকে ভালোবাসতে পেরে কবি জীবনের সার্থকতা অনুভব করেছেন। এই দেশের সৌন্দর্যে কবির চোখ পরিপূর্ণভাবে জুড়িয়েছে। তাই এই দেশের সূর্যালোকে, এই দেশের মাটিতেই তিনি যেন চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার সুযোগ পান সেই আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেছেন।
১০. “ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’’—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’’—উক্তিটিতে জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
কবি তার জন্মভূমিতে জন্মে নিজেকে সার্থক মনে করেছেন। এই দেশের ধন-রতন রানির মতো না থাকলেও কবি এই দেশের ছায়ায় বসে অঙ্গ জুড়িয়েছেন। কবি তার জন্মভূমির যা কিছু আছে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছেন। এ কারণেই কবি বলেছেন, যে আলো দেখে তার চোখ জুড়ায়, ঐ আলোতে চোখ রেখে শেষ পর্যন্ত তিনি চোখ বন্ধ করতে চান। অর্থাৎ কবি এই দেশের প্রকৃতিতেই মৃত্যুবরণ করতে চান।
আরও দেখো—ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের চারুপাঠ বাংলা বই থেকে জন্মভূমি কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য মোট ১০টি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ দেওয়া হয়েছে। Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তরগুলো সংগ্রহ করে নাও। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক, সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সমাধান পেতে উপরে দেওয়া লিংকে ভিজিট করো।
Discussion about this post