জলপরী ও কাঠুরের গল্প প্রশ্ন উত্তর : এক বনে এক কাঠুরিয়া রোজ কাঠ কাটতে যেত। ভারি গরিব সে। কাঠ বিক্রি করে যা রোজগার করত তাই দিয়ে কোনোরকমে খেয়ে-পরে দিন চলত তার। একদিন এক নদীর ধারে সে গেল কাঠ কাটতে। সেখানে গিয়ে একটা গাছে যেই কুড়াল দিয়ে ঘা মেরেছে, অমনি তার হাত ফসকে কুড়ালটা
গভীর পানির মধ্যে পড়ে গেল। খরস্রোতা নদী। তা ছাড়া তাতে কুমিরের ভয় ছিল ভয়ানক। নিরুপায় হয়ে কাঠুরিয়া সেই গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে লাগল। সে এতই গরিব যে, তার আবার একটা কুড়াল কেনার মতো সামর্থ্য ছিল না। তাই গাছের গোড়ায় বসে সে ভাবতে লাগল। যত ভাবে ততই তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে।
জলপরী ও কাঠুরের গল্প প্রশ্ন উত্তর
১. জেনে নিই।
সৎ মানুষকে সবাই ভালোবাসে। সততার পুরস্কার পাওয়া যায়। লোভ মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। লোভী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। কথায় বলে-লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।
২. নিচের শব্দগুলোর অর্থ জেনে নিই।
কুড়াল—কুঠার, কাঠ কাটার অস্ত্র।
কাঠুরিয়া—কুঠার দিয়ে গাছ বা কাঠ কাটা যার পেশা।
জলপরী—পানিতে বসবাসকারী পাখাযুক্ত কাল্পনিক সুন্দরী নারী। –
সামর্থ্য—সংস্থান, সংগতি।
৩. প্রশ্নের উত্তর বলি ও লিখি।
ক. কাঠুরিয়া কেন কাঁদতে লাগল?
উত্তর: কাঠুরিয়ার কুড়ালটি নদীর গভীর পানিতে পড়ে গিয়েছিল, এবং সে এতই গরিব ছিল যে, আরেকটি কুড়াল কেনার সামর্থ্য তার ছিল না। তাই অসহায় হয়ে সে গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে লাগল।
খ. জলপরী কাঠুরিয়াকে কী বলল?
উত্তর: জলপরী কাঠুরিয়াকে বলল, ‘তোমার কুড়াল আমি এনে দিচ্ছি, তুমি কেঁদো না।’ এরপর সে নদীতে ডুব দিয়ে কাঠুরিয়ার কুড়াল খুঁজে আনার চেষ্টা করল।
গ. কাঠুরিয়ার সততা দেখে জলপরী কী করল?
উত্তর: কাঠুরিয়ার সততা দেখে জলপরী মুগ্ধ হলো। সে কাঠুরিয়ার নিজের লোহার কুড়ালটি ফিরিয়ে দিল এবং তাকে সোনার কুড়াল ও রুপার কুড়াল উপহার হিসেবে দিল।
ঘ. কীভাবে কাঠুরিয়ার অবস্থার পরিবর্তন হল?
উত্তর: সোনা ও রুপার কুড়াল বিক্রি করে কাঠুরিয়া অনেক টাকা পেল। এতে তার দারিদ্র্যের অবসান হলো এবং সে সুখে ও স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটাতে লাগল।
ঙ. লোভী কাঠুরিয়া কী করল?
উত্তর: লোভী কাঠুরিয়া ইচ্ছা করে তার কুড়ালটি নদীতে ফেলে দিল এবং অভিনয় করে কান্না শুরু করল।
চ. লোভী কাঠুরিয়া কেন হায় হায় করতে লাগল?
উত্তর: লোভী কাঠুরিয়া মিথ্যা বলে সোনার কুড়াল পেতে চেয়েছিল। কিন্তু তার মিথ্যাচার দেখে জলপরী রেগে গিয়ে নদীতে ডুব দিয়ে চলে যায় এবং তাকে কোনো কুড়ালই দেয়নি। তার নিজের লোহার কুড়ালটিও হারিয়ে যায়। এজন্য সে হায় হায় করতে লাগল।
৪. বিপরীত শব্দ লিখি।
গরিব, বিক্রি, কাঁদা, নিজ, সুখ, লোভ, শান্তি, মুগ্ধ।
গরিব—ধনী
বিক্রি—কেনা
কাঁদা—হাসা
নিজ—পর
সুখ—দুঃখ
লোভ—নির্লোভ
শান্তি—অশান্তি
মুগ্ধ—হতাশ
৫. সততা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখি।
উত্তর: নিচে সততা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখা হলো—
১. সততা মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান গুণ, যা বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা অর্জন করে।
২. সততার মাধ্যমে মানুষ জীবনে প্রকৃত সুখ ও শান্তি পায়।
৩. সততা শুধু নিজের উপকারেই আসে না, সমাজ ও জাতিকেও উন্নতির পথে নিয়ে যায়।
৪. মিথ্যার বিপরীতে সততা মানুষের চরিত্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
৫. সততার পথে চলা কখনো সহজ নয়, তবে এর ফল সর্বদাই মঙ্গলজনক।
লেখক-পরিচিতি: আজ থেকে দুই হাজার দুই শত বছর পূর্বে ঈশপ গ্রিস দেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন সামান্য ক্রীতদাস। তখনকার দিনে রোম ও গ্রিসে ক্রীতদাস প্রথা প্রচলিত ছিল। ক্রীতদাস হয়েও তিনি যে সাহিত্য রচনা করে গেছেন, তা চিরসুন্দর ও চিরস্থায়ী। তার ভাব যেমন গভীর, ভাষা তেমনি সহজ ও সরল। তাঁর প্রত্যেকটি গল্পের মধ্যে কিছু না কিছু মূল্যবান উপদেশ আছে। তাঁর নীতিমূলক গল্পগুলো বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
আরও দেখো—পঞ্চম শ্রেণির বাংলা সকল গল্প-কবিতার প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা বই থেকে জলপরী ও কাঠুরের গল্প প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও বাংলা বইয়ের বহুনির্বাচনি, শূন্যস্থান, মিলকরণ ইত্যাদি প্রশ্নোত্তরের জন্য উপরের লিংকটি অনুসরণ করো।
Discussion about this post