জীবন ও জীবিকা ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান : মানুষ মাত্রই জীবনসংগ্রামী। আর এ সংগ্রামকে কীভাবে জয়লাভ করবে এটা তার ব্যক্তিগত কৌশলের ওপর নির্ভর করবে। প্রতিটি মানুষেরই একটি ভবিষ্যৎ লক্ষ্য থাকে। আর এ লক্ষ্য সে তার মেধা, দক্ষতা ও যোগাতার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করে। মেধা ও দক্ষতা সবার একরকম থাকে না।
একেক জন মানুষ একেক দিক নিয়ে দক্ষ হয়। আর লক্ষ্যটাও ঠিক সেভাবেই নির্ধারণ করা হয় যাতে সে চেষ্টা করলে ওই লক্ষ্যে পৌছাতে পারে। পেশা নির্ধারণ লক্ষ্যেরই একটা বড় অংশ। কে কোন পেশায় যাবে সেটা আগে থেকে নির্ধারণ করা থাকলে অনেকটা সহজ হয়ে যায়। যেমন- কেউ ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে প্রথম থেকেই তাকে বিজ্ঞানের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
জীবন ও জীবিকা ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান
শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে তাকে আগে থেকেই দক্ষ ও মেধার স্বাক্ষরও রাখতে হবে। পেশার লক্ষ্য নির্ধারণে প্রয়োজনে অন্যের সহায়তা ও পরামর্শ নিতে হবে। সেই সাথে নিতে হবে বিভিন্ন মেয়াদি গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা । উত্তম পরিকল্পনায় সামর্থ্য দুর্বলতা, সুযোগ ও চ্যালেঞ্জগুলোও ভালোভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে; যাকে SWOT বিশ্লেষণ বলে।
আবার জীবনের প্রয়োজনে যেকোনো মুহূর্তে লক্ষ্য পরিবর্তন করারও প্রয়োজন হতে পারে। এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সবগুলো উপাদানকে গুরুত্ব দিয়ে সঠিক পরিকল্পনা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে যদি কোনো লক্ষ্য স্থির করা হয় তবে যেকোনো ব্যক্তির জীবনে সফলতা অর্জন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই বলতেই পারি “যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে; হবেই হবেই জয়, দেখা হবে বিজয়ে”।
‘নিজেকে জানি ঈশানের বদলে যাওয়া’ গল্পে শ্রেণিশিক্ষক ‘আমার পথ’ ছকে যা যা উল্লেখ করেছেন এবং ঈশান যেভাবে উত্তর দিয়েছেন তা লেখ। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৭৯)
উত্তর : শিক্ষক কর্তৃক
১. অবসর সময়ে আমার পছন্দ
২. আমি যেসব বই পড়তে পছন্দ করি
৩. টেলিভিশনে যেসব অনুষ্ঠান আমার ভালো লাগে
৪. আমি যাদের সাথে খেলতে পছন্দ করি
৫. আমি ভবিষ্যতে কী হতে চাই
ঈশান কর্তৃক
১. আমি অবসর সময়ে ঘুরতে পছন্দ করি। বিশেষ করে চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রাণী দেখতে যেতে আমার খুব ভালো লাগে।
২. যেসব বইয়ে পাখি, ফুল, নদী, প্রকৃতি এবং বিভিন্ন প্রাণীর ছবিসহ ছড়া ও গল্প থাকে সেসব বই পড়তে আমি খুব পছন্দ করি।
৩. টেলিভিশনে আগে টম এন্ড জেরি দেখতে খুব ভালো লাগত। এখন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল দেখতে আমার ভালো লাগে।
৪. আমার যেসব বন্ধু খুব শান্ত এবং বিনয় স্বভাবের তাদের সাথে আমি খেলতে পছন্দ করি। এছাড়া রবিন নামের আমার এক বন্ধুর বাসায় পাখি আছে। আমি ওর পাখির সাথে সময় কাটানোর জন্য রবিনের বাসায় প্রায়ই যাওয়া-আসা করি।
৫. পশুপাখি, ফুল, পুকুর, নদী এসব আমার বেশি পছন্দ। তাই ভবিষ্যতে আমি এসব নিয়ে কাজ করতে চাই।
নিজেকে জানি ঈশানের বদলে যাওয়া গল্পটি ভালোভাবে পড় এবং ঈশানের আচরণে কেন পরিবর্তন এল, তা দলগতভাবে আলোচনা করে ক্লাসে নিজেদের মতামত ব্যাখ্যা কর। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৭৯)
উত্তর : আমার নাম হিমেল। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমরা সবাই মিলে ঈশানের বদলে যাওয়া গল্পটি পড়েছি এবং ঈশানের বদলে যাওয়ায় কারণ পর্যাবেক্ষণ করেছি। সবার সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরা হলো- ঈশান খুব চঞ্চল প্রকৃতির একজন ছেলে। হঠাৎ তার মন খারাপ দেখে শিক্ষকরা খুব অবাক হলেন।
ঈশান খুব প্রকৃতিপ্রেমি। পশু-পাখির প্রতি তার গভীর মমতা। একদিন এক কুকুরকে পানি খাওয়ানোর সময় পাড়ার পরিচিত একজন লোক ঈশানকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে আর বলে এসব নিয়ে থাকলে তাকে দিয়ে নাকি কিছু হবে না। এ কথা শোনার পর সে হতাশ হয়ে পড়ে এবং আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। আর এভাবেই ঈশান বদলে যায়। এক সময় সে পড়াশুনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। পরে আবার শিক্ষকের অনুপ্রেরণায় তার মনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। ঈশান আবারও পড়াশোনায় আগ্রহী হয়।
আমরা নিজেকে আবিষ্কারের জন্য অর্থাৎ নিজের আগ্রহ ও যোগ্যতা সম্পর্কে আরও সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য নিচের ছকটি পূরণ করব। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৮০)
উত্তর : আমার নাম ইমন। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমি বাসায় যখন পড়ার ফাঁকে সুযোগ পাই তখন বসে না থেকে আমার পছন্দের কিছু কাজ আছে তা ঘরে বসে করি। কাজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা ও অন্যদের মতামত দেওয়া হলো-
ছক ৫.১ পূরণ করার পর ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর। তোমার পাশের সহপাঠীকে তোমার ছকটি দাও এবং তুমি তার ছকটি পর্যবেক্ষণ কর। বুঝতে অসুবিধা হলে একজন অন্যজনকে প্রশ্ন করে অথবা আলোচনা করে জেনে নাও। এরপর তোমার সহপাঠীর কোন কাজটিতে আগ্রহ ও যোগ্যতা দুটিই আছে তা খুঁজে বের কর এবং তা ছকের সর্বশেষ ঘরে মতামতসহ লেখ। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৮১)
উত্তর : আমি ইমন। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আমার পাশের সহপাঠীর নাম আরাফ। উপরের ছকটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর আমরা দুজন দুজনের ছক বিনিময় করলাম এবং একজন আরেক জনের ছক ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম। পর্যবেক্ষণের পরে সহপাঠীর কাজে আগ্রহ ও যোগ্যতা যাচাই করে মতামতসহ ছকের শেষ অংশে লিখি-
আরাফের অনেক কাজের মাঝে তার ছবি আঁকার এবং অ্যানিমেশন মুভি তৈরি করার দক্ষতা আমার খুব ভালো লেগেছে। তার কয়েকটি কাজ আমি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। তার গ্রামের প্রকৃতিনির্ভর একটি ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আবার কয়েকটি অ্যানিমেশন মুভিও দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এ দুটি কাজেই তার খুব আগ্রহ ও দক্ষতা রয়েছে। অনুশীলন করলে এ দুটি কাজ দিয়েই সে অনেক উন্নতি করবে বলে আমার মনে হয়।
আমাদের আগ্রহ, পছন্দ, ইচ্ছা ইত্যাদি সময়ের সঙ্গে বদলে যেতে পারে। নিজেদের বয়স, পরিবেশ ও সময়ের সঙ্গে এগুলো বদলে গেলে আমাদের লক্ষ্যও বদলে যেতে পারে। একই সঙ্গে বদলে যেতে পারে আমাদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনাও আমাদের আগ্রহের ক্ষেত্র বদলেছে কি না তা এবার অতীত ও বর্তমান পছন্দের সঙ্গে তুলনা করে দেখি। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৮১)
উত্তর : আমি সিয়াম। ৭ম শ্রেণিতে পড়ি। মানুষের রুচি, পছন্দ, আচরণ সময়ের সাথে সাথে পাল্টায়। আমারও পাল্টেছে। এমন অনেক কাজ আছে যা আমি আগে করতাম কিন্তু এখন করি না। এখন কিছু পরিবর্তনশীল পছন্দের কাজ নিচে বর্ণনা করা হলো-
ক্রম
আগে আমি যা যা করতে পছন্দ করতাম/ভালোবাসতাম
এখন আমি যা যা করতে পছন্দ করি/ভালোবাসি
আমার পছন্দের ধরন বদলে যাওয়ার কারণ
পারিবারিক সহায়তা বা সমর্থন কোনটাতে আছে
লেনদেনের বিবরণ
- আগে আমি আইসক্রিম খেতে পছন্দ করতাম।
- ছবি আঁকতে পছন্দ করতাম।
- গান গাইতে পছন্দ করতাম।
- এখন আমি বার্গার, পিজ্জা, কোল্ড কপি খেতে পছন্দ করি।
- অ্যানিমেটেড মুভি দেখতে পছন্দ করি।
- কবিতা, গান, গল্প লিখতে পছন্দ করি।
- সময়ের সাথে বয়স বৃদ্ধি পাওয়া।
- সাংস্কৃতিক পরিবর্তন।
- সময়ের সাথে প্রযুক্তির পরিবর্তন।
- ছবি আঁকাকে সমর্থন করে।
- পান গাওয়াকে সমর্থন করে।
- গান, কবিতা, গল্প লেখাকে সমর্থন করে।
বিতর্কের বিষয় : জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে যোগ্যতাই হলো একমাত্র বিবেচ্য বিষয়। বিতর্ক প্রতিযোগিতার জন্য পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত বিতর্কের নিয়ম, সময় বণ্টন, সময় সতর্ককারী এবং বিচারক নিতে হবে। নির্ধারিত প্রত্যেক বিচারকের হাতে নম্বর প্রদানের জন্য একটি ছক সরবরাহ কর। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৮৩ ও ৮৪)
উত্তর : আমার নাম মুসান্না। আমি হাফিজ মাহমুদ আলী ইনস্টিটিউশন (স্কুল এন্ড কলেজ) করটিয়া-এর ৭ম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের শিক্ষক মহোদয় ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। এজন্য শিক্ষকগণ আমাদের ৭ম শ্রেণির ৬জন প্রতিযোগীর নাম ঘোষণা করেছেন। এরা হলো- মাসুদ, দিপন, শাওন, রাজিব, সায়ীদ এবং আমি (মুসান্না)। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো দল গোছানোর। আমি সবার সাথে আলোচনা করে ৬জন বন্ধুকে দুটি দলে ভাগ করেছি। ১ম দলের নাম দিয়েছি ‘ক’ দল এবং ২য় দলের নাম দিয়েছি ‘খ’ দল।
নিজেকে আবু ও শিলা ভেবে নাও। দলগত আলোচনার মাধ্যমে গল্পের হেডস্যারের স্বপ্ন পূরণের একটি পরিকল্পনা সাজাও। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৮৭)
উত্তর : আমরা দলগতভাবে আলোচনা করে স্কুলের হেড স্যারের স্বপ্ন পূরণের একটি পরিকল্পনা করে নিজেকে আমরা আবু ও শিলার চরিত্রে ভেবে এ পরিকল্পনাটি সাজিয়েছি। পরিকল্পনাটি নিচে লেখা হলো-
প্রথমে আমরা ১০ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করে নিলাম। এর থেকে ২ জন খুব ভালো পাছে উঠতে পারে। এ দুজনকে দিয়ে গাছের সমস্ত আম গাছ থেকে ছিঁড়ে নিলাম। তারপর আমরা বাকি ৮ জন সমস্ত আম ঝুড়িতে সাজালাম। আম পাড়া থেকে শুরু করে ঝুড়িতে আম সাজানো পর্যন্ত আমাদের সকল কাজে স্কুলের দপ্তরি মামা সাহায্য করেছেন। কিন্তু অন্য কোনো শিক্ষার্থীকে আম ধরতে নিষেধ করা হয়েছে শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে।
সব আম ঝুড়িতে সাজানো হলো। আমরা কমিটির সবাই মিলে ঝুড়িগুলোকে একটা সুন্দর ও নিরাপদ জায়গায় রাখি। কেউ যেন ওখান থেকে আম না নিতে পারে সেজন্য ২ জনকে পাহারায় রাখা হলো। তারপর শ্রেণিশিক্ষক সব শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে শ্রেণিভিত্তিক লাইনে ঘাড় করলেন । ৬ষ্ঠ-দশম শ্রেণি আলাদা আলাদা সারিতে সুন্দরভাবে লাইনে দাঁড়াল। প্রতি ১ টা শ্রেণির জন্য ২ টা সারি হলো। অর্থাৎ ৬ষ্ঠ শ্রেণির জন্য। ২টা, ৭ম শ্রেণির জন্য ২টা এভাবে ৫টা শ্রেণির জন্য ১০টা সারির লাইন হলো।
৫ জন শিক্ষার্থীকে জনপ্রতি ২ টা সারির দায়িত্ব দেওয়া হলো। এভাবে একে একে সবগুলো আম সুন্দরভাবে বিতরণ করা হলো। প্রত্যেককেই দুইটি করে আম দেওয়া হলো। আমাদের হেডস্যারের উপস্থিতিতে আমরা খুব সুন্দরভাবে আমগুলো বিতরণ করলাম। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, দপ্তরি সবাই আম পেয়েছে। এভাবে সবার সম্মিলিত প্রয়াসে আমগুলো সুন্দরভাবে বিতরণ করা হলো এবং হেড স্যারের স্বপ্ন পূরণ হলো।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা সব অধ্যায়ের সমাধান
উপরে দেওয়া ‘উত্তরমালা’ অপশনে ক্লিক করে জীবন ও জীবিকা ৭ম শ্রেণি ৫ম অধ্যায় সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post