ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি শিখন অভিজ্ঞতা ৭ সেশন ১ : নাগরিকের সেবা নিশ্চিত করতে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাজগুলো আর সহজে কী করে পাওয়া যায় তার জন্য এখন ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ নাগরিকেরাই এখন নাগরিক সেবা নিচ্ছেন। তা ছাড়া নিজেদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও আমরা ডিজটাল মাধ্যম ব্যবহার করে হাতের নাগালে পাচ্ছি। আগামী কয়েকটা সেশনে প্রয়োজনীয় কাজগুলো কত সহজে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে সম্পন্ন করা যায়, আমরা তার কিছু অভিজ্ঞতা নেব।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি শিখন অভিজ্ঞতা ৭ সেশন ১
প্রিয় শিক্ষার্থী, এই সেশনে স্বাগত। আগের শ্রেণিতে আমরা জরুরি সেবা প্রাপ্তির জন্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করেছিলাম, ঠিক একইভাবে এই শ্রেণিতেও নাগরিক সেবা ও ই-কমার্সের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমের কি ব্যবহার হতে পারে তার জন্য কিছু কাজ করব। এসো, নিচের উদাহরণটি আমরা সবাই নীরবে পাঠ করি।
জয়িতার বাবাকে প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল ব্যাংকে গিয়ে পরিশোধ করতে হয়। কখনো কখনো লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বিল দিতে গিয়ে অফিসেরও দেরি হয়ে যায়। আর বাড়ি থেকে ব্যাংকে যাওয়া আসাতেও বেশ কিছু টাকা যাতায়াত ভাড়ায় খরচ হয়ে যায়। প্রায়ই সে তার বাবাকে বলতে শোনে “আজও অফিসে দেরি হয়ে গেছে” তাই সে এই মাসের বিলের জন্য আগেই তার বাবার মোবাইলে একটা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অ্যাপ ইনস্টল ও আ্যাকাউন্ট খুলে তাতে টাকা রিচার্জ করে নিয়েছে।
বিল আসামাত্র জয়িতা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ওই সব তথ্য পূরণ করে কয়েক মিনিটে বিল পরিশোধ করে দেয়। অল্প কিছু টাকা সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে এত সহজে সময় আর পরিশ্রম ছাড়াই বিল পরিশোধ করায় জয়িতার বাবাও খুব আনন্দিত। তিনি নিজেই পরের মাস থেকে এভাবেই বিল পরিশোধ করবেন বলে জানালেন। উপরের কেস স্টাডির ভিত্তিতে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করি।
মূল বইয়ের অনুশীলনীর সমাধান
উপরে কেস স্টাডির ভিত্তিতে (মূল বইয়ের ১০৮ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত গল্প) নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করি: (মূল বইয়ের ১০৯ নম্বর পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন-১: এখানে মূলত কোন মাধ্যম ব্যবহার করা হয়েছে?
উত্তর: এখানে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্ন-২: জয়িতার বাবা যে সেবাটি গ্রহণ করলেন, সেটাকে এক কথায় কী বলা যায়?
উত্তর: মোবাইল ব্যাংকিং।
প্রশ্ন-৩: মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক বিনিময়ের প্রক্রিয়াটাকে কী বলে?
উত্তর: মোবাইল ব্যাংকিং বলে।
প্রশ্ন-৪: এমন আর কী কী সেবা রয়েছে যেগুলো আমরা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পাই?
উত্তর: বেশকিছু সেবা রয়েছে, যেগুলো আমরা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পাই। এগুলো হচ্ছে-
১. দেশের যেকোনো জায়গায় টাকা আদান-প্রদান।
২. মোবাইল রিচার্জ করতে পারি।
৩. শপিং করে বিল পরিশোধ করতে পারি।
৪. স্কুল-কলেজের ফি পরিশোধ করতে পারি।
৫. বাস-ট্রেন-লঞ্চ-বিমানের টিকেট ক্রয় করতে পারি।
৬. সিনোমার টিকেট ক্রয় করতে পারি।
৭. রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে পারি।
৮. অনুদান প্রদান করতে পারি।
প্রশ্ন-৫: কেনাকাটা বা আর্থিক লেনদেনের জন্য আমাদের পরিচিতদের মধ্যে কেউ কি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করেছি?
উত্তর: হ্যাঁ, আমার পরিচিত অনেকেই তাদের কেনাকাটা বা আর্থিক লেনদেনের জন্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করেন। যেমন- আমার বাবা আমার স্কুলের ফি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। আমার বড় ভাই বাসার ইন্টারনেট এবং ডিশ বিল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। আমার বড় বোন ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করেন। বাবা তাকে প্রতিমাসে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে খরচ পাঠান। এছাড়াও আমার প্রতিবেশিদের মধ্যে অনেকেই আজকাল আর্থিক লেনদেনের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে থাকেন।
নাগরিক সেবা ও ইকমার্সের ধারণা তালিকা প্রস্তুত
উপরের আলোচনা থেকে আমরা নাগরিক সেবা ও ই-কমার্সের ধারণা জানতে পারলাম। এবার নিচের ছকে কয়েকটি নাগরিক সেবা ও ই-কমার্সের নাম লিখে ফেলি: (মূল বইয়ের ১১০ নম্বর পৃষ্ঠা)
নাগরিক সেবা:
দেশের যেকোন জায়গায় টাকা আদান-প্রদান করা।
মোবাইলে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ইত্যাদি গ্রহণ করা।
মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন বিল যেমন- ইন্টারনেট বিল, ডিশ বিল, পানির বিল, গ্যাসের বিল ইত্যাদি পরিশোধ করা।
ইন্টারনেটে পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারা।
ই-কমার্স:
ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা।
মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা এবং মূল্য গ্রহণ করা।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনোদন প্রচার করা যা, অর্থের পরিশোধের মাধ্যমে উপভোগ করতে হয়।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশ এবং বিদেশে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা।
জরুরি সেবা পাওয়ার ডিজিটাল মাধ্যমসমূহ
নাগরিক সেবা বা ই-কমার্স মূলত সেবা যিনি দেবেন (সেবা দাতা) ও যিনি নেবেন (সেবা গ্রহীতা) উভয়কেই ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে সম্পন্ন করতে হয়। ওয়েবসাইট বা মোবাইল আ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন হয়। এখনকার সময়ে যেকোনো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের সুবিধার্থে ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে সেবা সহজ করে নিচ্ছে।
এমনকি খুব সাধারণ মোবাইল ফোনে মেসেজ করেও আজকাল সেবা পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের বাবা-মায়ের মোবাইল ফোনে যে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম রয়েছে, সেখানেও দেখা যায় প্রাতিষ্ঠানিক বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিভিন্ন সেবা দেওয়ার পেজ বা গ্রুপ থাকে। সেখান থেকেও খুব সহজে যোগাযোগ করে সেবা বা পণ্য পাওয়া যায়। তাহলে এসো নিচের ঘরগুলোতে নাগরিক সেবা ও ই-কমার্সের মাধ্যমগুলোর নাম লিখে ফেলি।
তবে কোনো প্রতিষ্ঠান সেবা নেওয়ার জন্য আর্থিক লেনদেন অবশ্যই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংক ত্যাকাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ ব্যবহার করে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতে হয়। কেসস্টাডিতে আমরা লক্ষ্য করেছি, নিশ্চয়ই যে জয়িতা বিল পরিশোধের আগে বাবার মোবাইলে ব্যাংকিংয়ের একটি অ্যাপ ইনস্টল ও অ্যাকাউন্ট খুলেছিল।
আরো দেখো: ডিজিটাল প্রযুক্তি সবগুলো অধ্যায়ের উত্তর
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি শিখন অভিজ্ঞতা ৭ সেশন ১ উত্তর সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post