ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি শিখন অভিজ্ঞতা ৮ সেশন ৪ : আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের প্রচলিত মাধ্যম হচ্ছে দরখাস্ত অথবা চিঠি। আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কোনো বিষয়ে আবেদন জানানোর জন্য সাধারণত দরখাস্ত লিখে থাকি।
তবে এখন যেহেতু আমাদের ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে যাচ্ছে, তাই আমরা একই যোগাযোগটি করতে পারি ইমেইলের মাধ্যমে। আজ ইমেইল লেখার জন্য যে খুটিনাটি বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন, তা আমরা একটু দেখে নেব। আমাদের কি মনে আছে আমরা আমাদের আশপাশের একটি সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন জানাবো? হ্যাঁ, এ জন্যই আমাদের ইমেইল লেখার প্রস্তুতি আজকে সম্পন্ন করব।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি শিখন অভিজ্ঞতা ৮ সেশন ৪
ইমেইলের সুবিধা হচ্ছে:
১. আমরা খুব দ্রুত সময়ে যোগাযোগ করতে পারি।
২। একই সঙ্গে একের অধিক ব্যক্তিকে একই ইমেইল পাঠাতে পারি। (কয়েকটি সুবিধা নিজে খুঁজে বের করে লিখবো)
৩। অনেক কম খরচে যোগাযোগ করতে পারি,
৪। আমার ইমেইলটি যে ব্যক্তিকে পাঠাচ্ছি, সে ব্যক্তি ছাড়া আমি না চাইলে অন্য ব্যক্তি আমার ইমেইলটি দেখে ফেলার ঝুঁকি কম। যেটি চিঠির ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা বেশি থাকত।
৫। ইমেইলে আমি বড় কোনো ফাইল বা ছবি যুক্ত করতে পারি।
৬। আমি চাইলে একই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তিকে ইমেইল পাঠাতে পারি; কিন্তু এটিও ঠিক করে দিতে পারি, আমার প্রাপকরা জানবে না আমি কাকে কাকে এই একই ইমেল পাঠাচ্ছি।
আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছি –
- “To’ ঘরে আমার প্রাপকের ইমেইল ঠিকানা লিখতে হবে।
- ‘Subject’ ঘরে আমি যে বিষয়ে ইমেইল লিখতে চাই সেই বিষয় লিখব। অনেকটা দরখাস্ত বা আবেদনপত্রে যেভাবে বিষয় লিখি –
- ‘Body’ ঘরে আমার পুরো ইমেইলটি লিখব।
- ‘Attachment’ এ ক্লিক করে আমরা ইমেইলের সঙ্গে কোনো ফাইল বা ছবি পাঠাতে হলে তা যুক্ত করব।
আমরা ইমেইলের আরও কিছু ফিচার জানব। বিশ্বে অনেকগুলো ইন্টারনেট সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানের ইমেইল সেবা রয়েছে। যেমন জিমেইল, ইয়াহু, আউটলুক ইত্যাদি। আবার আমরা যখন নিজেদের জন্য নিজেস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করব তখন ওই ওয়েবসাইটেও আলাদা করে ইমেইল সেবা যোগ করতে পারব। সব ইমেইলেই কিছু সাধারণ বা প্রচলিত ফিচার থাকে যেগুলো বিভিন্ন ইমেইলের ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম। এ রকম কিছু ফিচার একটু দেখে নিই।
1. “New/Compose’ এ ক্লিক করে আমার ইমেইল লেখা শুরু করতে পারি। অর্থাৎ এখানে ক্লিক করলে ইমেইল লেখার জন্য একটি বক্স আসবে। এটিকে এই ধরনের কলমের মতো সাংকেতিক চিহ্ন দিয়েও বোঝানো হয়।
2. “Inbox” এ আমার ইমেইলে অন্য কেউ যদি ইমেইল পাঠায়, সেগুলো জমা হয়ে থাকে৷
3. ‘Sent’ বক্সে আমি যা যা ইমেইল পাঠাব সেগুলো জমা থাকবে৷
4. ‘Junk/spam’ ভিন্ন ভিন্ন ইমেইলে এই বক্স বা ফোল্ডারটি ভিন্ন নামে থাকে। এই বক্সটি থেকে একটু সাবধানে থাকা প্রয়োজন | প্রতারণা করার জন্য অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিছু ইমেইল পাঠিয়ে থাকে, যেখানে অর্থ, লটারি বা লোভনীয় কোনো পণ্যের লোভ দেখায় । এই ধরনের ইমেইল এখানে এসে জমা হয়।
তাই এই ইমেইলগুলোর কোনো উত্তর বা প্রপ্তিক্রিয়া দিতে হয় না, কোনো লিংক থাকলে সে লিংককেও ক্লিক করা যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি নিশ্চিত না হব যে ইমেইল পাঠিয়েছে, তাকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে এবং তার উদ্দেশ্য কী তা বোঝা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি ‘ইমেইলটি ক্লিক বা ‘Reply দেব না।
5. Draft বক্স আমি কোনো ইমেইল লিখে সেইভ বা জমা করে রাখতে পারি। আমি একটিই ইমেইল লেখার মাঝপথে মনে হলো আমি ইমেইলটি পরে পাঠালে ভালো হয়, তখন আমি এটিকে ড্রাফট বক্সে রেখে দিতে পারি।
১. To তে আমি যার কাছে ইমেইল করছি তার ঠিকানা লিখতে হবে, তা আমরা ইতোমধ্যে জানি।
২. CC অর্থ হচ্ছে কার্বন কপি। আমি একজনকে ইমেইল করছি সেটি যদি অন্যজনকে অবহিত করে রাখতে চাই, তাহলে যাকে অবহিত করে রাখতে চাই তার ঠিকানা CC তে দিব।
যেমন — আমি আমার প্রধান শিক্ষকের কাছে ছুটির আবেদন করব, আমি যে আবেদন করছি সেটি আমার শ্রেণি শিক্ষকের জানা প্রয়োজন, তাই আমি তাকে “CC” তে রাখতে পারি, যেন তিনিও অবহিত থাকেন আমি ছুটির আবেদন করছি। আনুষ্ঠানিক বা ফরমাল যোগাযোগে CC ব্যবহার করা ভালো। একই সঙ্গে অনেকজনকে CC করা যায়।
৩. “BCC সাধারণত একসঙ্গে অনেক মানুষকে পাঠালে তখন ব্যবহার করা হয়। এর মুল উদ্দেশ্য আমার একজন প্রাপক অন্য প্রাপকের ইমেইল ঠিকানা জানবে না। ইমেইল ঠিকানাও একটি ব্যক্তিগত তথ্য। ধরি, আমি আমার বিদ্যালয়ের ১০০ জন শিক্ষার্থীকে একটি ইমেইল করব। ১০০ জনের ইমেইল ঠিকানা To তে দিলে সবাই সবার ঠিকানা জেনে যাবে, যেটি ঠিক হবেনা, এমন পরিস্থিতিতে আমি ১০০ জনকে BCC তে রাখতে পারি।
8, ‘সাবজেক্ট/বিষয় এর কাজ কী আমি লিখি ….।
৫. ‘আ্যাটাচমেন্ট’-এর কাজ কী আমি লিখি ….।
৬. আমি যদি আমার ইমেইলে কোনো ওয়েবসাইটের ঠিকানা দিতে চাই তাহলে আমার মুল ইমেইলের যে অংশে বা যে শবদটির মধ্যে লিংকটি রাখতে চাই, সে শব্দটি ক্লিক করে উপরের ছবিতে দেখানো ৬ নম্বর প্রতীকটির উপর ক্লিক করব, ক্লিক করলে একটি বক্স আসবে, বক্সে আমি আমার ওয়েবসাইটের লিংকটি যোগ (paste) করব।
৭. আমরা সাধারণত বেশি কথা বা অনুভূতি অল্পকথায় প্রকাশ করতে ইমোজি ব্যবহার করি। এখানে ক্লিক করলে ইমোজি পাওয়া যাবে৷ তবে দাপ্তরিক যোগাযোগ বা অফিসিয়াল যোগাযোগে ইমোজি ব্যবহার করা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
বাড়ির কাজ নিয়ে আলোচনা: আমরা বাড়ির কাজ হিসেবে আমার চিহ্নিত সমস্যাটি সমাধানের জন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন আমাদের সহায়তা করতে পারে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আজকে আমরা আমাদের সমস্যা এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত সমাধানের জন্য ব্যক্তি/সংগঠন/প্রতিষ্ঠানের নাম শিক্ষককে জানাব। চাই। সবার মতামতো নিয়ে আমরা যে কোনো একটি সমস্যা নির্ধারণ করব।
আগামী সেশনের প্রস্তুতি
আমরা আমাদের সমস্যা ও আবেদন জানিয়ে আমাদের ইমেইলে কী লিখতে চাই তার একটা খসড়া এখানে লিখব। এখানে যে বিষয়গুলো থাকবে
১. আমার পরিচয় ও ইমেইল লেখার উদ্দেশ্য
২. আমাদের সমস্যার বিস্তারিত
৩. কীভাবে আমার প্রাপক আমাদের এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে পারেন।
8, ধন্যবাদ
এ ছাড়া চিত্র – ক থেকে শেখা (প্রাপকের দক্ষতা, জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক রীতিনীতি, সংস্কৃতি) বিষয়গুলো আমরা আমাদের লেখা ইমেইলে কীভাবে কাজে লাগিয়েছি সেটিও লিখব। প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাগজ ব্যবহার করব। কাগজটি আঠা দিয়ে খালি পৃষ্ঠার সঙ্গে জোড়া লাগাব।
আরো দেখো: ডিজিটাল প্রযুক্তি সবগুলো অধ্যায়ের উত্তর
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ডিজিটাল প্রযুক্তি ৭ম শ্রেণি শিখন অভিজ্ঞতা ৮ সেশন ৪ উত্তর সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post