তৈলচিত্রের ভূত গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর (PDF)

তৈলচিত্রের ভূত গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : নগেন তার মামার বাড়িতে থেকে কলেজে পড়ত। তার মামা ছিল বড্ড কৃপণ। এ জন্য মামাকে বাইরে থেকে শ্রদ্ধা-ভক্তি দেখালেও ভিতরে প্রায়ই নগেন যমের বাড়ি পাঠাত। কিন্তু মামার মৃত্যুর পর যখন দেখল মামা তার জন্যও মোটা অঙ্কের টাকা উইল করে গেছেন তখন মামার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তিতে মন ভরে গেল। এমন মানুষকে সে ভক্তি ভালোবাসার ভান করে ঠকিয়েছে বলে অনুতপ্ত হতে লাগল। এই আত্মগ্লানি কমানোর জন্য মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করতে গেল নগেন।

তৈলচিত্রের ভূত গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর

১. পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভর্ৎসনা করলেন কেন?
উত্তর: মামাকে সারাজীবন মিথ্যে ভক্তি ও ভালোবাসার ভান করে ঠকানোর জন্য নগেনের মনে দারুণ লজ্জা আর অনুতাপ জেগেছিল।
মামার বাড়িতে থেকে নগেন পড়ালেখা করত। মামা নগেনকে খুব বেশি আদর করতেন না। তবে মৃত্যুর পূর্বে নিজের ছেলেদের সমান সম্পত্তি নগেনকেও দিয়ে যায় তার মামা। নগেন মামার এ উদারতা কখনো কল্পনা করতে পারেনি। এ কারণে মামার প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধায় তার মন ভরে ওঠে। নিজের আচরণের কথা ভেবে নগেন অনুতপ্ত হয়।

২. মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করার কথা নগেনের মনে হলো কেন?
উত্তর: ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন মামাকে সারাজীবন মিথ্যে শ্রদ্ধা-ভক্তির ভান করে ঠকিয়েছে বলে লজ্জায় অনুতপ্ত হয়ে মনকে সান্ত¡না দেয়ার জন্য নগেন তৈলচিত্রে প্রণাম করার কথা ভেবেছে।
নগেনের কৃপণ মামার আচরণ তার ভক্তি-শ্রদ্ধা লাভ করতে পারেনি। নগেন বাইরে থেকে মামার প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা দেখালেও অন্তরের টান অনুভব করত না। কিন্তু তার এই কৃপণ মামা মৃত্যুর পূর্বে তার পুত্রদের সমান টাকা নগেনের নামে উইল করে গেছেন। মামার এমন উদারতার কারণে তার মধ্যে অনুশোচনা জাগ্রত হলো। আত্মগ্লানি ও অনুশোচনা কমানোর জন্য তাই নগেন মামার তৈলচিত্রকে প্রণাম করার কথা ভাবে।

৩. নগেন তার মামার প্রতি মিথ্যে ভক্তি দেখাত কেন?
উত্তর: নিজের থাকা খাওয়ার অর্থ যথাযথভাবে পাওয়ার জন্য নগেন তার মামার প্রতি মিথ্যে ভক্তি দেখাত।
নগেন মামার বাড়িতে থেকে কলেজে পড়ে। ছোটবেলা থেকেই সে মামার বাড়িতে থেকে মানুষ হয়েছে। কিন্তু তার মামা টাকা-পয়সা খরচ করতে চাইত না। এ কারণে নগেনের চলাফেরার খুব সমস্যা হতো। ফলে নগেনও তার মামার প্রতি কৃত্রিম ভালোবাসার ভাব বজায় রাখলেও মনে মনে সে তার মামাকে ভালোবাসত না।

৪. নগেন তার মামাকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধাভক্তি করেনি কেন?
উত্তর: নগেনের প্রতি মামার আচার-আচরণ এবং অত্যন্ত কৃপণতার জন্যই নগেন তার মামাকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা-ভক্তি করেনি।
নগেন তার মামার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করেছে এবং মানুষ হয়েছে। তার মামার সম্পদের অভাব ছিল না। তবু তিনি ছিলেন কৃপণ। তাছাড়া সারাক্ষণ তিনি নগেনকে বকাঝকার মধ্যেই রাখতেন। তাই সে সর্বদা মামার মৃত্যু কামনা করত এবং মন থেকে তার মামাকে শ্রদ্ধা-ভক্তি করত না।

৫. নগেন মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করতে গেল কেন?
উত্তর: নগেন আত্মগ্লানি কমানোর জন্য মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করতে গেল।
নগেন তার মামার বাড়িতে থেকে কলেজে পড়ত। তার মামা ছিল বড্ড কৃপণ। এ জন্য মামাকে বাইরে থেকে শ্রদ্ধা-ভক্তি দেখালেও ভিতরে প্রায়ই নগেন যমের বাড়ি পাঠাত। কিন্তু মামার মৃত্যুর পর যখন দেখল মামা তার জন্যও মোটা অঙ্কের টাকা উইল করে গেছেন তখন মামার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তিতে মন ভরে গেল। এমন মানুষকে সে ভক্তি ভালোবাসার ভান করে ঠকিয়েছে বলে অনুতপ্ত হতে লাগল। এই আত্মগ্লানি কমানোর জন্য মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করতে গেল নগেন।

৬. মামার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল কেন?
উত্তর: মামা নিজের ছেলেদের মতোই নগেনকেও ভালোবাসতেন- এ কথা জানতে পেরে মামার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল।
নগেনের মামা মারা যাওয়ার আগে নিজের ছেলেদের সমপরিমাণ টাকা তার জন্যও উইল করে গেছেন। মামার এ রকম উদারতা নগেনের কাছে কল্পনাতীত ছিল। তাই নগেন সে যখন বুঝতে পারল মামা তাকে নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসতেন, তখন তার মন শ্রদ্ধা-ভক্তিতে ভরে উঠল।

৭. সমস্ত সকালটা নগেন মড়ার মতো পড়ে রইল কেন?
উত্তর: তৈলচিত্রে প্রণাম করার সময় ধাক্কার রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় নগেন সমস্ত সকালটা মড়ার মতো পড়ে রইল।
রাতের অন্ধকারে নগেন যখন তার মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করার জন্য হাত রাখে তখন কে যেন তাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে ফেলে দেয়। নগেন তার মামাকে মন থেকে ঘৃণা করত কিন্তু মামা মারা যাওয়ার পর সে বুঝতে পারে তার মামা তাকে ছেলের মতো ভালোবাসতেন। তাই সে তার ভুল বুঝতে পেরে রাতের অন্ধকারে মৃত মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করতে গেলে কে যেন তাকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। এ রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পেরে সমস্ত সকালটা নগেন মড়ার মতো পড়ে রইল।

৮. নগেন পরাশর ডাক্তারের সাথে দেখা করেছিল কেন?
উত্তর: ভুতুড়ে কাণ্ডের ঘটনাটি জানানোর জন্য নগেন পরাশর ডাক্তারের সাথে দেখা করেছিল।
মামার উদারতার পরিচয় পেয়ে মৃত মামার প্রতি নগেনের শ্রদ্ধা-ভক্তি বেড়ে যায়। সে অনুতপ্ত হয়ে মামার তৈলচিত্রে প্রণাম করতে গেলে মামার প্রেতাত্মা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরদিনও একই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাটি জানানোর জন্যই নগেন পরাশর ডাক্তারের সাথে দেখা করেছিল।

৯. নগেন কেন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে?
উত্তর: ভূতের ভয়ে তথা মামার প্রেতাত্মার ভয়ে নগেন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চিন্তা করে।
মৃত্যুর পর নগেন তার মামার উদারতার পরিচয় পায়। সে মামার প্রতি মিথ্যা ভক্তি-শ্রদ্ধা দেখিয়ে তাকে ঠকিয়েছে ভেবে অনুতপ্ত হয়। তাই মামার তৈলচিত্রের কাছে ক্ষমা চেয়ে আত্মগ্লানি কমাতে চায়। কিন্তু ছবি স্পর্শ করা মাত্র সে ধাক্কা খেয়ে জ্ঞান হারায়। দিনরাত সে শুধু এ কথাই ভাবে। এ ভয়ের কারণে নগেন বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা চিন্তা করে।

১০. ‘লাইব্রেরি সম্পর্কে নগেনের মামার বিশেষ কোনো মাথাব্যথা ছিল না’—এ কথা কেন বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের লাইব্রেরিটি ছিল নগেনের দাদা মশায়ের আমলের। নগেনের মামার আমলে বিগত ৩০ বছরের মধ্যে লাইব্রেরির পেছনে কোনো পয়সা খরচ করা হয়নি। লাইব্রেরি কক্ষের আলমারি কয়েকটি অল্প দামের আর অনেক দিনের পুরনো ছিল। তার ভেতরেও ছিল বেদরকারি বাজে বইয়ে ভর্তি। আলমারির ওপরেও বহুকালের ছেঁড়া মাসিকপত্র আর নানা রকম ভাঙাচোরা ঘরোয়া জিনিস গাদা করা ছিল।
টেবিল আর চেয়ার কয়েকটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে লাইব্রেরিতে স্থান পেয়েছে। দেয়ালে তিনটি বড় তৈলচিত্র ছাড়া সস্তা ফ্রেমে বাঁধানো কয়েকটি সাধারণ রঙিন ছবি এবং ফটো ছাড়া পুরনো ক্যালেন্ডার ঝোলানো ছিল। লাইব্রেরির এরূপ অযত্নের কারণে বোঝা যায় ওটি নিয়ে নগেনের মামার কোনো মাথাব্যথা ছিল না।

Answer Sheet

আরও দেখো—অষ্টম শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা বই থেকে তৈলচিত্রের ভূত গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখানে দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও বাংলা বইয়ের গল্প-কবিতার সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, বর্ণনামূলক এবং বহুনির্বাচনি সমাধানের জন্য উপরের লিংকটি অনুসরণ করো।