ত্বকের যত্নে শশা ব্যবহার
১. তৈলাক্তভাব দূর করে
আপনার ত্বক কি তৈলাক্ত? তাহলে আপনার ত্বকের জন্য শশা বেশ ভালো এবং প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করবে। মুখ ধোয়ার পর শশার রস মুখে লাগিয়ে নিন। অথবা চাইলে শশার রসের সাথে আপেল সাইডার ভিনেগার, টমেটোর রস এবং এলভেরা জেল মিশিয়ে নিতে পারেন।
এছাড়াও অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ, লেবুর রস এবং শশা পেস্ট একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে মুখ ভালো মত ধুয়ে ফেলুন। এগুলো সবই প্রাকৃতিক উপাদান। যার ফলে আপনার ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর হবে। পাশাাশি কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ারও সৃষ্টি করবে না।
২. ত্বক উজ্জ্বল এবং রুক্ষভাব দূর করে
শশাতে রয়েছে বিচিং প্রপার্টিজ, যা ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে ত্বক আরো উজ্জ্বল করে তোলে। রোদে কোথাও বের হলে ঘরে ফিরে মুখ ধুয়ে শশার রস লাগান। এটি আপনার মুখমণ্ডলের পোড়া দাগ উধাও করে দেবে।
অন্যদিকে আপনার ত্বক যদি রুক্ষ বা শুষ্ক হয়, তবে শশা থেকে এর প্রতিকার পেতে পারেন। একটি পাত্রে শশার পেস্ট তৈরি করুন এবং ২ চামচ লেবুর রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে এবং ঘাড়ে লাগান। এরপর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। চমৎকার এই প্যাকটি ত্বকের রুক্ষভাব দূর করে চেহারা উজ্জ্বল করে তোলে।
৩. ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ দূর করে
শশার ৯৫% উপাদানই হচ্ছে পানি। এর ফলে শশা খাওয়ার মাধ্যমে ত্বক হাইড্রেটেড এবং ময়েশ্চারাইজড থাকে। শশার বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং পটাশিয়াম, যা ফাইন লাইস, ব্রণসহ বার্ধক্যের বিভিন্ন ছাপ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল এবং যৌবনদ্বীপ্ত রাখে।
শশাতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট এবং সিলিকা চোখের নিচের কালো দাগ কমিয়ে চোখের চারপাশের চামড়া ভালো রাখে। শশা টুকরো করে কেটে অথবা তুলায় শশার রস লাগিয়ে তুলা চোখের উপর ২০ মিনিট রাখুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল চলে যাবে।
৪. ব্রণ সমস্যার সমাধান
ব্রণ প্রতিরোধে শশার ভূমিকা অপরিসীম। মুখমণ্ডল থেকে ব্রণ দূর করতে ২ চা চামচ শশার রসের সাথে গোলাপ জল এবং মুলতানি মাটি মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন। এটি মুখে ভালো মতো লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণ কমে যাবে।
বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন প্রোডিক্ট ব্যবহারের ফলে মুখমণ্ডলে নেতিবাচক প্রভাব পরার আশঙ্কা থাকে। অপরদিকে প্রাকৃতিকভাবে এটি ব্রণ প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে।
৫. চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে
চুলের বৃদ্ধিতে শশার ভুমিকা অতুলনীয়। শশাতে রয়েছে সালফার সোডিয়াম, সিলিকন, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম। যা চুলের বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক উপাদান। একটি শশার খোসা ছাড়িয়ে শুধু খোসার মিশ্রণ করে নিন। এবার একটি ডিমের মধ্যে ৩ চা চামচ অলিভ অয়েল ভালোমত মিশিয়ে এর সাথে শশার খোসা পেস্ট মিশিয়ে নিন।
মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এরপর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল স্বাস্থ্যজ্জল করে তোলে। এছাড়াও এটি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। শশা এবং টমেটো ব্লেন্ডারে মিক্স করে জুস বানিয়েও খেতে পারেন।
►► আরো দেখো: ৫ মিনিটে খুশকি দূর করার উপায়
►► আরো দেখো: ত্বকের যত্নে শশার ফেসপ্যাক ব্যবহার
►► আরো দেখো: তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে লেবুর ৩ টি ফেইসপ্যাক
শেষ কথা
শশা মহান সৃষ্টিকর্তার এমনই একটি সৃষ্টি যা আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয় ক্ষেত্রেই ভাল লাগতে সাহায্য করতে পারে। তাই এটি কেবল চমৎকার এক ধরনের, স্বল্প-ক্যালোরির নাশতা নয়। এটি আপনার ত্বককে প্রশান্ত করতে পারে, প্রসারণ এবং লালভাব হ্রাস করতে পারে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলাের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে।
Discussion about this post