দশম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা ৩য় অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর স্বাস্থ্য বলতে শারীরিক সুস্থতা বা শরীরের নীরোগ অবস্থাকে বোঝায়। ব্যাপক অর্থে, শারীরিক সুস্থতার সাথে মানসিক সুস্থতাও প্রয়োজন। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিবেশের সাথে সংগতি বিধানের মাধ্যমে মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। অতএব, যে ব্যক্তি নিজের চাহিদা ও পরিবেশের মধ্যে সাফল্যের সাথে সংগতি বিধান করতে পারে, সে-ই মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ।
একজন মানুষের ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ সামঞ্জস্যমূলক শারীরিক ও মানসিক ক্রিয়াকলাপকে ঐ ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য হিসেবে অভিহিত করা যায়। দীর্ঘক্ষণ একই কাজ করলে সেই কাজের প্রতি মানুষের দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। ফলে ব্যক্তির কর্মক্ষমতার অবনতি হয়। ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক অবস্থার এই পরিবর্তনকেই ক্লান্তি বা অবসাদ বলা হয়।
দশম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা ৩য় অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ক ॥ মানসিক স্বাস্থ্য কী?
উত্তর : ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ সামঞ্জস্যমূলক শারীরিক ও মানসিক ক্রিয়াকলাপকে মানসিক স্বাস্থ্য বলা হয়।
প্রশ্ন ॥ খ ॥ মানসিক আচরণ কাকে বলে?
উত্তর : মানুষের পূর্ণতা প্রাপ্তির প্রেক্ষিতে জীবতাত্ত্বিকভাবে বিভিন্ন ধাপ যেমন : শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও প্রৌঢ়ত্ব প্রভৃতি প্রতিটি পর্যায়ে যে সুনির্দিষ্ট আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয় তাই মানসিক আচরণ।
প্রশ্ন ॥ গ ॥ দৈহিক অবসাদ কী?
উত্তর : খুব বেশি সময় ধরে দৈহিক পরিশ্রম করলে যে অবসাদ আসে তাকে দৈহিক অবসাদ বলে।
প্রশ্ন ॥ ঘ ॥ প্রেষণা কাকে বলে?
উত্তর : কাজের ক্ষেত্রে মনোযোগী করানোর জন্য উৎসাহমূলক যে পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাই প্রেষণা।
রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ক ॥ মানসিক আচরণ কয় প্রকার ও কী কী? বর্ণনা কর।
উত্তর : মনুষ্য আকৃতি লাভের পর পূর্ণতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মানুষের অতিক্রান্ত ধাপসমূহে বিভিন্ন ধরনের যেসব আচরণ বা বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় তাই মানসিক আচরণ। মানসিক আচরণের ক্ষেত্রেও মানুষে মানুষে ভিন্নতা রয়েছে।
মানসিক আচরণ প্রধানত চার প্রকার। এগুলো হলো : ১. প্রকৃতিগত, ২. সরল, অনাড়ম্বর, ৩. প্রতিক্রিয়াপ্রবণ, ৪. মনঃস্নায়বিক পীড়াপ্রবণ।
১. প্রকৃতিগত : জন্মসূত্র বা উত্তরাধিকার সূত্রে করা আচরণগুলো হলো মানুষের প্রকৃতিগত আচরণ। যেমন- জন্মের পর থেকে সদা হাস্যময় ব্যক্তি এবং সব অবস্থায় যারা হাসিখুশি থাকেন তারাই প্রকৃতিগত আচরণের আওতাভুক্ত।
২. সরল ও অনাড়ম্বর : আমাদের সমাজে অনেক ব্যক্তি আছেন যারা সব সময় সহজ সরলভাবে চলাফেরা করেন, যে কোনো ধরনের ঝামেলা সব সময় এড়িয়ে চলেন। পোশাক-আশাকেও খুবই সহজ সরল। এটিই সরল ও অনাড়ম্বর মানসিক আচরণ। এসব আচরণকারী ব্যক্তি নিজেকে সবসময় একজন সাধারণ মানুষ ভাবতে পছন্দ করেন।
৩. প্রতিক্রিয়াপ্রবণ : অনেক মানুষ আছেন যারা সব সময় যে কোনো কথায় কোনো না কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাদের আচরণই হলো প্রতিক্রিয়াপ্রবণ আচরণ। এ ধরনের আচরণের দ্বারা ভালো বা মন্দ সব ক্ষেত্রেই ব্যক্তি তার নিজস্ব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
৪. মনঃস্নায়বিক পীড়াপ্রবণ : এ ধরনের আচরণের অন্যতম উদাহরণ হলো মানসিক স্বাস্থ্য। অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মানুষের আচরণ ভালো অন্যদিকে মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ থাকলে ব্যক্তি খারাপ আচরণ করেন।
পরিশেষে বলা যায়, মানসিক আচরণের এসব ভিন্নতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যক্তির মানসিক অবস্থা বা বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলে।
প্রশ্ন ॥ খ ॥ মানসিক অবসাদ দূরীকরণের উপায়গুলো বর্ণনা কর।
উত্তর : দৈহিক ও মানসিক শক্তি ক্ষয়ের ফলেই যেহেতু অবসাদের উদ্ভব হয়, তাই দেহ ও মনের সুস্থতা ও সক্রিয়তা আনয়নের মাধ্যমে অবসাদ দূর করা সম্ভব। মানসিক অবসাদ দূরীকরণের উপায়গুলো নিচে বর্ণনা করা হলো :
১. কর্মসূচির প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি : শিক্ষার্থীর যদি কর্মসূচীর প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়, তাহলে তাড়াতাড়ি অবসাদ আসে না।
২. কর্মসূচির একঘেয়েমিতা পরিহার : বিরক্তিকর কর্মসূচির একঘেয়েমিতা শিক্ষার্থীকে অবসাদগ্রস্ত করে তোলে। অন্যদিকে কর্মসূচিকে আনন্দপূর্ণ ও বৈচিত্র্যময় করলে অবসাদ দূর করা যায়।
৩. প্রেষণা : কর্মসূচিতে প্রেষণা থাকলে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে তা পালন করবে এবং শীঘ্র অবসাদ আসবে না।
৪. অতিরিক্ত চাপযুক্ত কর্মসূচি পরিহার : সাধ্যের অতিরিক্ত কোনো কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে চাপ দেওয়া যাবে না।
৫. বিশ্রাম ও ঘুম : দেহের ক্ষয়পূরণের জন্য পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন। তেমনি অবসাদ দূর করার জন্য প্রয়োজন পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুম। বিশ্রাম ও ঘুমের ফলে দেহ ও মস্তিষ্কের অবসাদ দূরীভূত হয় এবং পুনরায় নতুন উদ্যোগে কাজ করার স্পৃহা জন্মে।
৬. পরিবেশগত কারণ : অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ অর্থাৎ স্যাঁতসেঁতে, আলো-বাতাসের অভাব এমন পরিবেশ পরিহার করে খোলামেলা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করবে এবং মানসিক অবসাদের কোনো প্রভাব পড়বে না। পরিশেষে উপরিউক্ত বিষয়সমূহ যথাযথ অনুসরণ করলে সহজেই মানসিক অবসাদ দূর করা যাবে।
প্রশ্ন ॥ গ ॥ শিক্ষার্থীর উপর মানসিক প্রভাবগুলো আলোচনা কর।
উত্তর : শিক্ষার্থীরা যখন দীর্ঘক্ষণ একই কাজ করে তখন তাদের মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দেয়। এর ফলে তাদের মধ্যে দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। তাই সব সময় লক্ষ রাখা প্রয়োজন মানসিক অবসাদ ঘটে এমন কাজ বা বিষয় থেকে শিক্ষার্থীরা যাতে দূরে থাকে। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হলে শিক্ষার্থীর ওপর যেসব প্রভাব পড়ে তা নিচে তুলে ধরা হলো :
১. মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হলে তারা তাদের কর্মসূচি পালনকালে যে কোনো সময় ভুল করতে পারে।
২. মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত থাকলে শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে যায়। ফলে তারা নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।
৩. মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত থাকলে শিক্ষার্থীরা কোনো কাজের সমন্বয় করতে পারে না।
৪. মানসিক অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের কাজের ছন্দ হারিয়ে ফেলায় ভুল সিদ্ধান্ত নেয়।
৫. মানসিক অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় কাজের প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়ায় তাদের কর্মসূচি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে না।
৬. শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা খারাপ থাকায় কাজের প্রতি একাগ্রতা কমে যায়।
পরিশেষে উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, কাজের সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আগে থেকেই নির্ধারণ করা উচিত যাতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত না হয়।
প্রশ্ন ॥ ঘ ॥ মানসিক অবসাদের কারণগুলো উল্লেখ কর।
উত্তর : মানসিক অবসাদ ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটায়। এটি ব্যক্তির কর্মক্ষমতাও হ্রাস করে। এর ফলে কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা বা সফলতা অর্জন কঠিন হয়ে পড়ে। মানসিক অবসাদের কারণগুলো নিচে ব্যাখ্যা করা হলো :
১. মানসিক প্রস্তুতির অভাব : কোনো কাজ শুরুর আগে কাজটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কাজ করা উচিত। অন্যথায় মানসিক প্রস্তুতির অভাবে অবসাদ দেখা দেয়।
২. অভ্যাসের অভাব : নতুন কর্মসূচি বা কাজে শিক্ষার্থীদের পূর্ব অভ্যাস না থাকায় সহজেই কাজের ক্ষেত্রে মানসিকভাবে অবসাদ চলে আসে।
৩. প্রেষণার অভাব : কাজের ক্ষেত্রে যদি কোনো প্রেষণা বা উৎসাহ না থাকে তবে কাজ শিক্ষার্থীদের কাছে বোঝাস্বরূপ মনে হয়। এছাড়া চাপিয়ে দেওয়া কাজ শিক্ষার্থীরা সহজে মানতে পারে না বলেও এ ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদ চলে আসে।
৪. মানসিক ইচ্ছার অভাব : শিক্ষার্থীরা যদি প্রদত্ত কর্মসূচি পছন্দ না করে তবে কাজটি করতে তাদের মানসিক ইচ্ছার অভাব দেখা দেয় এবং কাজ করার ক্ষেত্রে মানসিকভাবে তারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
৫. পরিবেশগত কারণ : খুব গরম, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা প্রভৃতি আবহাওয়ায় কাজ করতে শিক্ষার্থীরা অভ্যস্ত না হওয়ায় কাজের ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
পরিশেষে বলা যায়, শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা, প্রয়োজন, মনমানসিকতা বুঝে কর্মসূচি নির্ধারণ করা উচিত যাতে মানসিক অবসাদ সহজে না আসে।
অতিরিক্ত জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ মানসিক স্বাস্থ্য কী?
উত্তর : একজন মানুষের ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ সামঞ্জস্যমূলক শারীরিক ও মানসিক ক্রিয়াকলাপকে ঐ ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য হিসেবে অভিহিত করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ মানসিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না হলে কী সৃষ্টি হয়?
উত্তর : মানসিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না হলে মানসিক অসুস্থতা সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ খেলোয়াড়দের মধ্যে কখন মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়?
উত্তর : খেলার জয়-পরাজয়ের স্বাভাবিক ঘটনাকে সহজভাবে মেনে নিতে না পারলে খেলোয়াড়দের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ মানুষ তার পূর্ব পুরুষদের কী ধারণ কর কাল অতিক্রম করেছে?
উত্তর : মানুষ তার পূর্ব পুরুষদের অনেক বৈশিষ্ট্য ও প্রেষণা ধারণ করে কাল অতিক্রম করেছে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ মানুষ কীভাবে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়?
উত্তর : মানুষ জীবতাত্ত্বিকভাবে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কী পরিদৃশ্যমান?
উত্তর : ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এক বিস্ময়কর বৈসাদৃশ্য পরিদৃশ্যমান।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ মানসিক গঠনের ধারা কী?
উত্তর : মানসিক গঠনের ধারা হলো মানুষের স্বভাব বা মেজাজ যা পারিবারিক বা সামাজিক পরিবেশের উপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ শরীর ও মন একে অপরের কী?
উত্তর : শরীর ও মন একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ মানসিক অসুস্থতা মানুষের জীবনে কী সৃষ্টি করতে পারে?
উত্তর : মানসিক অসুস্থতা মানুষের জীবনে অনেক ব্যর্থতা ও দুর্গতি সৃষ্টি করতে পারে।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ মানসিক স্বাস্থ্য কোন বিজ্ঞানের বিষয়?
উত্তর : মানসিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের বিষয়।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ দৈহিক অবসাদ কী?
উত্তর : খুব বেশি সময় ধরে দৈহিক পরিশ্রম করলে যে অবসাদ আসে তাকে দৈহিক অবসাদ বলে।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ দৈহিক অবসাদের জন্য মাংসপেশিতে কী সৃষ্টি হয়?
উত্তর : দৈহিক অবসাদের জন্য মাংসপেশিতে ল্যাকটিক এসিড সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ কোনো কাজ করার আগে কী গ্রহণ করা প্রয়োজন?
উত্তর : কোজ কাজ করার আগে সে সম্পর্কে মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ কর্মসূচিকে কী করলে অবসাদ দূর করা যায়?
উত্তর : কর্মসূচিকে আনন্দপূর্ণ ও বৈচিত্র্যময় করলে অবসাদ দূর করা যায়।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ অবসাদ দূর করার জন্য কী প্রয়োজন?
উত্তর : অবসাদ দূর করার জন্য প্রয়োজন পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুম।
অতিরিক্ত অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ মানুষের শরীরে কেন অবসাদ আসে?
উত্তর : অতিরিক্ত কাজ বা পরিশ্রমের চাপে একজন সাধারণ মানুষ বা সাধারণ খেলোয়াড়ের কর্মক্ষমতা সাময়িকভাবে হ্রাস পায়। আবার, দীর্ঘক্ষণ একই কাজ করার ফলে সেই কাজের প্রতি মানুষের দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়, যার ফলে ব্যক্তির কর্মক্ষমতা অবনতি হয় এবং শরীরে অবসাদ আসে।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ খেলাধুলায় জয়ী খেলোয়াড়ের মনোভাব কেমন হয়ে থাকে?
উত্তর : খেলাধুলায় জয়ী খেলোয়াড় নিজের দক্ষতার ওপর অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। তবে অনেক সময় তা নেতিবাচকও হতে পারে। অনেক খেলোয়াড় ধারাবাহিক জয়ের কারণে অতিরিক্ত মাত্রায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। এতে তার মধ্যে নিজেকে বড় করে দেখার পাশাপাশি অপরের দক্ষতাকে ছোট করে দেখার প্রবণতা তৈরি হতে পারে, যা কখনই ভবিষ্যতের জন্য ভালো ফল বয়ে আনে না।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা এতে অপরের পরিপূরক- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা একে অপরের পরিপূরক। কেননা আমাদের শরীর যদি সুস্থ থাকে তাহলে মনও ভালো থাকে। দেহের কোনো অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ না করলে যেমন দৈহিক অসুস্থতা দেখা দেয়, তেমনি মানসিক প্রক্রিয়াও সঠিকভাবে হয় না। তাই বলা হয় শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক সুস্থতা একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ চার্চস ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব (ঞযবড়ৎু ড়ভ ঊাড়ষঁঃরড়হ) অনুযায়ী নিম্ন পর্যায়ের প্রাণী থেকে উন্নত জীব হিসেবে বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হতে মানুষের বহু যুগ অতিক্রম করতে হয়েছে। এতে যুগ পরিক্রমকালে মানুষ ক্রমাগত তার পূর্ব পুরুষদের অনেক বৈশিষ্ট্য ও প্রেষণা ধারণ করে কাল অতিক্রম করেছে। ডারউইনের মতবাদ অনুযায়ী এককোষী জীব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও বিবর্তনের ফলে প্রথমে জলচর প্রাণী, তারপর লাঙ্গুলযুক্ত প্রাণী সর্বশেষে মনুষ্য আকৃতি প্রাপ্তি হচ্ছে বিবর্তনের ফল। মনুষ্য আকৃতি লাভের পর মানুষ জীবতাত্ত্বিকভাবে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। এ ধাপগুলো হচ্ছে শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও প্রৌঢ়ত্ব।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ কীভাবে মানসিক অস্থিরতা দূর করা যায়?
উত্তর : মানসিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে মানসিক ব্যাধি, বুদ্ধিবৃত্তির স্বল্পতা, স্নায়ুবিক মনোবিকার, অপরাধ প্রবণতা ইত্যাদি প্রধান। মানসিক অস্থিরতা দূরীকরণের তথা প্রতিরোধের জন্য সুশিক্ষা, শিশুর স্বাস্থ্যসম্মত লালনপালন, পরিচর্যা, উন্নত পারিবারিক পরিবেশ, মাতাপিতা ও অভিভাবকের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ শিশুদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ কেন প্রয়োজন?
উত্তর : শিশুদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ প্রয়োজন। কারণ শিশুবান্ধব পরিবেশ থাকলে শিশুরা তাদের মনের ইচ্ছামতো প্রয়োজনীয় সবকিছু যেমন : খেলাধুলা ও আনন্দ করতে পারবে। এতে তাদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধিও স্বাভাবিক থাকবে, যা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এজন্যই শিশুদের জন্যে শিশুবান্ধব পরিবেশ প্রয়োজন।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ দৈহিক অবসাদ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : খুব বেশি সময় ধরে দৈহিক পরিশ্রম করলে যে দৈহিক পেশিঘটিত ও ইন্দ্রিয়গত অবসাদ আসে তাকে দৈহিক অবসাদ বলে। প্রত্যেক ব্যক্তির দৈহিক শ্রমের একটি সীমা আছে, শ্রম এ সীমা অতিক্রম করলে অবসাদ দেখা দেয়। কাজ যদি বেশি শ্রমসাধ্য হয়, ব্যক্তির সহনশীলতা কম হয়, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরমে ব্যক্তির শারীরিক ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে অবসাদ দেয়া যায়।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ মানসিক অবসাদ কেন আসে?
উত্তর : মানসিক কাজ অনেকক্ষণ ধরে করতে থাকলে মানসিক কর্মদক্ষতা হ্রাস পায় এবং অবসাদ দেখা দেয়। তাছাড়া ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ, মানসিক অবস্থার তারতম্য, পরিবেশগত কারণেও মানসিক অবসাদ আসতে পারে। অনেকক্ষণ দৈহিক পরিশ্রম করলেও মানসিক অবসাদ আসে।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ মানসিক অবসাদের কারণগুলো উল্লেখ কর।
উত্তর : মানসিক অবসাদের কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. মানসিক প্রস্তুতির অভাব।
২. কাজে অভ্যস্ত না হয়ে ওঠা।
৩. কর্মক্ষেত্রে প্রেষণা এবং কাজের প্রতি অনুরাগের অভাব।
৪. মানসিক ইচ্ছার অভাব।
৫. পরিবেশগত কারণ।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ পরিবেশগত অবসাদের কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরিবেশগত কারণে অবসাদ আসতে পারে। খুব গরম, খুব ঠাণ্ডা বা গুমোট আবহাওয়া কোনো কাজের অনুকূল পরিবেশ নয়। এরূপ পরিবেশে সহজেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। অনুরূপভাবে পরিমিত আলো, বাতাস ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ না থাকলে অল্পতেই অবসাদ এসে ভর করে।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ বিশ্রাম ও ঘুম কীভাবে মানসিক অবসাদ দূর করে?
উত্তর : মানসিক অবসাদ দূর করার জন্য পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন। বিশ্রাম ও ঘুমের ফলে দেহ ও মস্তিষ্কের অবসাদ দূরীভূত হয় এবং পুনরায় নতুন উদ্যমে কাজ করার স্পৃহা জন্মে।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ মানসিক অবসাদ দূরীকরণে পরিবেশের প্রভাব লেখ।
উত্তর : অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ অর্থাৎ স্যাঁতসেঁতে ভাব, পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব থাকলে মস্তিষ্কের অবসাদ আসে। এমন পরিবেশ পরিহার করে খোলামেলা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করবে এবং মানসিক অবসাদের কোনো প্রভাব পড়বে না।
►► আরো দেখো: নবম-দশম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা (সবগুলো অধ্যায়)
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে দশম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা ৩য় অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর PDF ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post