নামাজ কয়েক ধরনের রয়েছে। নামাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে নামাজের নিয়ম ভিন্ন হয়ে থাকে। দুই সিজদার মাঝের দোয়া নামাজের তেমনই একটি নিয়মের মধ্যে অন্তুর্ভূক্ত। দুই সিজদার মধ্যে দোয়া নিয়ে বিভিন্ন মাজহাব ও বিভিন্ন আলেম ভেদে ভিন্ন রয়েছে।
কিছু আলেমের মতে এই দোয়াটি সুন্নত। হাম্বলি মাজহাব অনুযায়ী নামাজের মধ্যে এই দোয়াটি পড়া ওয়াজিব। অধিকাংশ, ওলামায়ে কেরামের মতে দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া পড়া নামাজের ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব।
এই দোয়াটি ওয়াজিব হওয়ার কোন সুস্পষ্ট দলিল পাওয়া যায় না। তাই হাম্বলি মাজহাবের অনেকেই এটিকে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অধিকাংশ আলেম ও ধর্মীয় ব্যক্তিরা মনে করেন যে এই দোয়াটি একবার বলা ওয়াজিব এবং একাধিকবার পাঠ করা মুস্তাহাব।
দুই সিজদার মাঝের দোয়া
এই দোয়াটি সুন্নত নাকি ওয়াজিব এটি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও মুহাম্মদ (সা:) দুই সিজদার মাঝে এই দোয়াটি পাঠ করতেন এটি নিয়ে কোন মতবিরোধ নেই। মুহাম্মদ (সা.) দুই সিজদার মাঝে এই দোয়াটি পড়তেন তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত সত্য।
দুই সিজদার মাঝে পড়ার জন্য হাদিসে কয়েক ধরনের দোয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আজকে আমরা সবগুলো দোয়া আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
দুই সিজদার মাঝখানে পড়ার জন্য ১ম দোয়া
আরবি: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ، وَارْحَمْنِي ، وَاجْبُرْنِي ، وَاهْدِنِي ، وَارْزُقْنِي ، وَعَافِنِي ، وَارْفَعْنِي
বাংলা উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মাগ ফিরলি, ওয়ার হামনি, ওয়াজবুরনি, ওয়াহদিনি, ওয়ারজুকনি, ওয়া আ’ফিনি ওয়ারফা’নি।”
বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন; আমার ওপর দয়া করুন, আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দিন। আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং রিজিক দান করুন।” (আবু দাউদ, হাদিস: ৮৫০)
দুই সিজদার মাঝখানের ২য় দোয়া
আরবি: وَاجْبُرْنِيْ وَارْفَعْنِيْ
বাংলা উচ্চারণ: “ওয়াঝবুরনি, ওয়ারফানি।”
বাংলা অর্থ: “অর্থাৎ, আমাকে পূর্ণতা দান করুন, আমাকে সহায়তা করুন এবং আমাকে সুউচ্চ (মর্যাদা) দান করুন।”
দুই সিজদার মাঝখানে পড়ার জন্য ৩য় দোয়া
আরবি: رَبِّ اغْفِرْ لِي، رَبِّ اغْفِرْ لِي
বাংলা উচ্চারণ: “রব্বিগফিরলি, রব্বিগফিরলি।”
বাংলা অর্থ: “রব আমার! আমাকে ক্ষমা করে দিন। রব আমার! আমাকে ক্ষমা করে দিন।”
সবশেষে যা জানা দরকার
হাদিসে উল্লেখ রয়েছে দুই সিজদার মাঝের দোয়া হিসেবে মুহাম্মদ (সা:) উক্ত দোয়াগুলো পাঠ করতেন। আমাদের সকলেরও উচিত প্রথম সিজদাহ দেওয়ার পরে স্থির হয়ে বসে উক্ত দোয়া পাঠ শেষে দ্বিতীয় সিজদাহ দেওয়া। মুহাম্মদ (সা:) প্রথম সিজদাহ দেওয়ার পরে উক্ত দেওয়া পড়তেন এটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। তাই আমাদের সকলের উচিত দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত দোয়া পড়া।
Discussion about this post