দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণ ও তার প্রতিকার প্রতিবেদন : নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখো।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণ ও তার প্রতিকার প্রতিবেদন
প্রশ্ন : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ ও তার প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।
অথবা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখো।
দফায় দফায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি : জনগণের নাভিশ্বাস
স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীসহ সমগ্র দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর প্রতিনিয়ত মূল্যবৃদ্ধি ঘটেই চলছে। এ যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সরকার, প্রশাসন কারোরই এদিকে খেয়াল নেই। সাধারণ জনগণ নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রেণির হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য কেজিতে পাঁচ থেকে পনেরো টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঁচাবাজারে সবজির পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বেও দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীত শেষে সবজির দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। করলা ৪৫-৫৫ টাকা, ঢেড়শ ৬০-৭০, লাউ ৩০-৪০, আলু ২৫-৩০, বরবটি ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
উৎপাদক পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি দ্রব্যই কৃষকের বিক্রীত মূল্যের ৪/৫ গুণ অধিক মূল্যে ভোক্তাসাধারণ ক্রয় করছে। এ ব্যাপারে খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, তাঁদের চড়া দামে পাইকারদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে। পাইকাররা দাম বৃদ্ধির জন্য সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিজনিত পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়, যানজটের কারণে দ্রুত পচনশীল সবজি নষ্ট হওয়া ইত্যাদিকে দায়ী করেন।
মুদি-মনোহারি দ্রব্যের দোকানে গিয়ে দেখা যায় তেল, আটা, ময়দা ইত্যাদির দাম প্রতি কেজিতে এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে পনেরো হতে বিশ টাকা পর্যন্ত। সয়াবিন তেল ১১০-১২০ টাকা, চিনি ৫০-৬০, মসুর ডাল ১২০-১৩০, আটা ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে চিকন চালের দাম। গুড়, গুঁড়োদুধ ও শিশুখাদ্যের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে গড়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে।
ডিম, মুরগি, মাছের দামও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। মুদি-মনোহারি দ্রব্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা সরকারের যথাযথ তদারকির অভাব, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বগতি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণ উল্লেখ করেন।
কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে দেখা যায়, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েছে। একজন ভ্যানচালক ক্ষোভের সঙ্গে জানান তার সারা দিনের আয়ে পরিবারের জন্য দুবেলা দু’মুঠো ভাতের জোগাড় হচ্ছে না। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে টিসিবি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে সরাসরি দায়ী করেন।
টিসিবির পরিচালক জানান, দ্রুত টিসিবির মাধ্যমে তেল, চিনি, ডাল প্রভৃতি ভোগ্যপণ্য আমদানি করে রাজধানীসহ সকল বিভাগীয় শহরে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয়ের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে সরকার। এছাড়া আসন্ন ধান-চাল সংগ্রহের মৌসুমে স্থানীয় কৃষকদের নিকট হতে ধান সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য মজুদ বৃদ্ধিতে সরকার চেষ্টা করছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, সরকার শীঘ্রই বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা পুনরায় চালু করবে।
এ অবস্থায় সরকারকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধ, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু, জেলা শহরগুলোতে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানো, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজারে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সরকার জনগণকে বর্তমান অবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে সরকার, ব্যবসায়ী, জনগণসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন ও আন্তরিক হতে হবে।
প্রতিবেদক
কামরুল ইসলাম
মগবাজার, ঢাকা
০৭/০৫/২০২২।
[এখানে পত্রিকার ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে]
►► আরো দেখো: SSC এবং HSC সকল প্রতিবেদন রচনা একসাথে (PDF)
শিক্ষার্থীরা উপরের দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণ ও তার প্রতিকার প্রতিবেদন রচনা তোমরা একটি পিডিএফ ফাইলে সংগ্রহ করতে পারবে। এজন্য উপরে দেওয়া “ডাউনলোড প্রতিবেদন” লেখা বাটনে ক্লিক করো। এছাড়াও উপরে আরো একটি লিংকে ক্লিক করে তোমার ক্লাসের গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য প্রতিবেদন রচনা সংগ্রহ করে নাও।
প্রতিবেদন রচনাটি ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post