আপনার অনেক দিনের ইচ্ছে আর প্রচেষ্টার প্রতিফলন হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। অবশেষে আপনি অপনার শখের ওয়েবসাইটটি পাবলিশ করতে যাচ্ছেন। তাই আপনি যেহেতু একেবারেই নতুন, একটি ওয়েবসাইটের সামগ্রিক বিষয়ে আপনার সম্পূর্ণ ধারণা না থাকাই স্বাভাবিক।
তাই, আপনি যদি এ বিষয়ে নতুন হয়ে থাকেন, আপনার জন্য কোর্সটিকার পক্ষ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করবো। যেগুলো অনুসরণ করলে আপনার ওয়েবসাইট তৈরির উদ্দেশ্য সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক।
১. ওয়ার্ডপ্রেস শিখুন:
প্রথমেই অন্য কোন এডভান্সড সিএমএস এ না গিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস চেষ্টা করুন। এখানে মনে রাখুন, ওয়ার্ডপ্রসও কিন্তু কম এডভান্সড নয়। আবার এটা খুব বেশি কঠিনও নয়। একটি ওয়েবসাইট শুরু করার জন্য আপনার যা যা দরকার পরবে, তার সবটাই আপনি ইউটিউবে ভিডিও দেখেই শিখতে পারবেন। তাই সবার প্রথমে ওয়ার্ডপ্রেস শিখুন।
২. আর্টিকেল লিখুন:
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অন্তত ৫ টি তথ্যবহুল আর্টিকেল লিখুন। ভুলেও অন্য কোন ওয়েবসাইট থেকে কপি করার চেষ্টা করবেন না। চেষ্টা করুন প্রতিটি আর্টিকেল যেন অন্তত ৬০০ ওয়ার্ডের হয়। তার বেশি ওয়ার্ডের আর্টিকেল লিখতে পারলে সেটা আপনার জন্যই ভালো।
৩. গুরুত্বপূর্ণ প্লাগিনগুলো ইনস্টল করুন:
ওয়ার্ডপ্রেসের সবথেকে ভালো একটি সুবিধা হচ্ছে প্লাগিন ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটকে আরো বেশি প্রফেশনাল লুক দিতে পারবেন। তাই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয় সব প্লাগিনগুলো ইনস্টল করুন এবং সেগুলোর সফল ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
৪. অন পেজ এসইও করুন
আপনার আর্টিকেলগুলোকে গুগল র্যাঙ্কে ভালো অবস্থান দিতে আপনার প্রয়োজন হবে অন পেজ এসইওর। আর একটি ফ্রি প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি খুব ভালোভাবে অন পেজ এসইওর কাজটি করতে পারবেন। এই প্লাগিনটির নাম হচ্ছে Yoast SEO প্লাগিন। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার লেখা আর্টিকেলগুলো আরো বেশি এসইও ফ্রেন্ডলি হবে। আপনি ইচ্ছে করলে এই প্লাগিনটির প্রিমিয়াম ভার্সনও ব্যবহার করতে পারেন।
৫. গুগল প্লাটফরমে সাইট সাবমিট করা:
গুগলের বিভিন্ন প্লাটফরম যেমন: Google Search Console ও Google Analytics এ আপনার ওয়েবসাইটটি সাবমিট করুন। এর ফলে গুগল আপনার ওয়েবসাইট এবং আপনার ওয়েবসাইটে থাক কনটেন্টগুলো প্রতিদিন ইনডেক্স করতে থাকবে। এখানে থেকে আপনি নিজেই আপনার ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স দেখতে পারবেন। গুগল সার্চ র্যাঙ্কিং এ এগিয়ে থাকার জন্য গুগলের এসব প্লাটফরমে ওয়েবসাইট সাবমিট করা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
৬. প্রচুর ব্যাকলিংক তৈরি করুন:
গুগল র্যাঙ্কে আরো বেশি উন্নত হওয়ার জন্য ব্যাকলিংকের বিকল্প কিছু নেই। তাই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রচুর ব্যাকলিংক তৈরির চেষ্টা করুন। প্রথম অবস্থায় কোরা বা বিভিন্ন ফোরাম বা ফ্রি সাইটে ব্যাকলিংক তৈরি করুন। প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন ব্লগে গেস্ট ব্লগিন শুরু করে ব্যাকলিংক সংগ্রহ করুন।
৭. আর্টিকেলের পরিমাণ বাড়ান:
একটা সময়ে সবকিছু ভালোভাবে বুঝে গেলে আস্তে আস্তে আর্টিকেলের পরিমান বাড়ানোর চেষ্টা করুন। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখুন বেশি আর্টিকেল লিখার চেয়ে মানসম্মত আর্টিকেল লেখা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং শুধু আর্টিকেল লিখলেই হবে না, আপনার লেখা আর্টিকেলটি মানসম্মত কি না, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
৮. নিয়ম মেনে চলুন:
প্রতিটি আর্টিকেল লেখার সময়ে গুগলের রিকোমেন্ডশনগুলো মেনে চলুন। কিভাবে লিখলে আর্টিকেল গুগলে ভালো র্যাঙ্ক করবে, সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে প্রকিটি আর্টিকেল লিখুন। আর এ বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করে আমাদের পূর্বে উল্লেখিত Yoast SEO প্লাগিনটি।
৯. আর্টিকেল শেয়ার করুন:
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার আর্টিকেলগুলোর লিংক শেয়ার করুন। শুধুমাত্র ফেসবুক শেয়ার নির্ভর না থেকে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্লাটফরম যেমন: টুইটার, লিংকডইন অথবা পিন্টারেস্টে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রফাইল তৈরি করুন এবং সেখানে আপনার লেখা শেয়ার করুন। এর ফলে আপনার আর্টিকেলের এনগেজমেন্ট বাড়বে।
১০. নিজেকে আপডেট রাখুন:
সবশেষে আমাদের পরামর্শ হচ্ছে নিজেকে নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে। হতে পারে আপনি এসইও সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই জানেন। তবে আপনি যদি সেই ২০১২ কিংবা ২০১৪ সালের এসইও পদ্ধতিগুলো জেনে বসে থাকেন এবং সেগুলোই এখনও প্রয়োগ করেন, তাহলে এখন আপনি কোনভাবেই সেই আগের পদ্ধতিগুলো দিয়ে ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করাতে পারবেন না।
সার্চ ইঞ্জিনের অপটিমাইজেশন পদ্ধতি প্রতিনিয়তই আপডেট হচ্ছে। আর তার সাথে সাথে ক্রমাগত বদলে যাচ্ছে এসইও করার পূর্বের টেকনিকগুলো। তাই ভালো ফলাফল পেতে বর্তমান সময় ও প্রযুক্তির সাথে নিজেকে আপডেট করে নিতে হবে। বর্তমান সময়ে পুরোনো ধ্যান-ধারণা কখনোই আপনাকে একটি ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করাতে সফল করবে না।
প্রিয় পাঠক, কোর্সটিকায় আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান, তা জানিয়ে নিচে কমেন্ট করুন। ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্টে এবং ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন।
Discussion about this post