নদীর বিদ্রোহ প্রশ্ন উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮–১৯৫৬) : জন্ম সাঁওতাল পরগনার দুমকায়। আদিনিবাস বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্গত ঢাকা জেলার বিকুমপুরে। প্রকৃত নাম প্রবোধ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিত্যরচনা করেছেন “মানিক” নামে। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে অঙ্কে অনার্স নিয়ে পড়ার সময় তার প্রথম গল্প “অতসী মামী”, “বিচিত্রা” পত্রিকায় প্রকাশিত হয় (১৯২৮)।
একুশ বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস “দিবারাত্রির কাব্য” রচনা করেন। যদিও তীর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস “জননী” (১৯৩৫)। তার লেখা গল্পপ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে- “অতসী মামী ও অন্যান্য গল্প’, “প্রাগৈতিহাসিক”, “মিহি ও মোটা কাহিনি” “সরীসৃপ”, “বৌ” “সমুদ্রের স্বাদ” “ভেজাল”, হলুদ পোড়া” “আজকাল পরশুর গল্প”, “পরিস্থিতি, ছোটোবড়ো” মাঝি” হলো তার রচিত উপন্যাসগুলির মধ্যে সবচেয়ে সমাদূত। “লেখকের কথা” তাঁর লেখা প্রবন্ধের একটি উল্লেখযোগ্য সংকলন।
নদীর বিদ্রোহ প্রশ্ন উত্তর
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
১. স্ত্রীকে লেখা নদের চাদের চিঠির পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল-
ক. দু পৃষ্ঠা
খ. তিন পৃষ্ঠা
গ. চার পৃষ্ঠা
ঘ. পাঁচ পৃষ্ঠা
২. নদের চাঁদ প্রতিদিন কোথায় বসে নদীকে দেখে?
ক. নৌকোতে বসে
খ. ব্রিজের ওপর বসে
গ. ধারক স্তম্ভের শেষ প্রান্তে বসে
ঘ. নদীর তীরে বসে।
৩. নদের চাদের মৃত্যু হয়েছিল—
ক. বাসের ধাক্কায়
খ. লরির ধাক্কায়
গ. ট্রামের ধাক্কায
ঘ. ট্রেনের ধাক্কায়
৪. নদের চাঁদ স্টেশন মাস্টারি করেছিল—
ক. চার বছর
খ. তিন বছর
গ. দশ বছর
ঘ. পাঁচ বছর
৫. কোন্ আকস্মিক আঘাত নদের চাদের চেতনাকে দিশাহারা করে দিয়েছিল?
ক. প্রবল বৃষ্টির ঝাপটা
খ. ব্রিজ ভাঙার শব্দ
গ. ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দ
ঘ. বাতাসের প্রবল শব্দ
৬. “কিন্তু শৈশবে, কৈশােরে আর প্রথম যৌবনে বড়াে ছােটোর হিসেব আর কে করে?”—উক্তিটি যার সম্বন্ধে করা হয়েছে
ক. নদের চাঁদের দেশের নদীটির সম্বন্ধে
খ. নদের চাঁদ সম্বন্ধে
গ. নদের চাঁদের সহকারীর সম্বন্ধে
ঘ. যেখানে নদের চাঁদ কাজ করত সেখানকার নদীটির সম্বন্ধে
৭. নদের চাদের বয়স
ক. ত্রিশ বছর
খ. পঁচিশ বছর
গ. পঁয়ত্রিশ বছর
ঘ. কুড়ি বছর
৮. “…এতকাল নদের চাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে”—কীসের জন্য এই গর্ব অনুভব?
ক. নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য
খ. নিজের পেশার জন্য
গ. শৈশবের ক্ষীণস্রোতা নদীটির জন্য
ঘ. নদীর প্রতি তার ভালােবাসার জন্য
৯. “নদের চাঁদ – ডাকিয়া বলিল।” (শূন্যস্থান পূরণ করাে)
ক. বন্ধুকে
খ. নতুন সহকারীকে
গ. পুরাতন ভৃত্যকে
ঘ. পুরাতন সহকারীকে
১০. দেশের সেই ক্ষীণ স্রোতা নির্জীব নদীটি—
ক. আত্মীয়ার মতােই তার মমতা পেয়েছিল
খ. অনাত্মীয়ার মতােই তার দুর্ব্যবহার পেয়েছিল
গ. সকলের আদর পেয়েছিল
ঘ. সকলের অনাদর পেয়েছিল
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. ‘আমি চললাম হে!’ – নদেরচাঁদ কখন একথা বলেছিল?
উত্তর– চারটা পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে রওনা করিয়ে দিয়ে নদেরচাঁদ একথা বলেছিল।
২. নদেরচাঁদ লাইন ধরে কত মাইল হেঁটেছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদের লাইন ধরে এক মাইল হেঁটেছিল।
৩. কী না করলে নদেরচাঁদ আর বাঁচবে না?
উত্তর– ব্রিজের একপাশে চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ নদীকে না দেখলে সে আর বাঁচবে না।
৪. ‘নদীর জন্য এমনভাবে পাগল হওয়া কি তার সাজে?’- এই প্রশ্ন কেন?
উত্তর– কারণ তার বয়স ত্রিশ বছর এবং সে একটা স্টেশনের স্টেশনমাস্টার।।
৫. নদীকে ভালােবাসার কী কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিয়েছিল?
উত্তর– নদীকে ভালােবাসার জন্য নদেরচাঁদের কৈফিয়ত ছিল এটাই যে, সে নদীর ধারে জন্মেছে, বড়ো হয়েছে এবং চিরকাল নদীকে সে ভালোবেসেছে।
৬. ‘সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল;’ – কী দেখে সে কেঁদেছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদের দেশের বাড়িতে ক্ষীণস্রোতা নদীটি একবছর অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে গিয়েছিল বলে সে কেঁদেছিল।
৭. ‘নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল।’ – কেন সে স্তম্ভিত হয়েছিল?
উত্তর– ব্রিজের কাছে এসে প্রথমবার নদীর দিকে তাকাতেই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়েছিল।
৮. ‘আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে।’– নদীর এমন অবস্থার কারণ কী?
উত্তর– নদীর জলধারাকে বেঁধে রাখার উদ্দেশ্যে যে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল, তারই প্রতিবাদে নদী খেপে উঠেছিল।
৯. চেনা নদীকে নদেরচাঁদের আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হয়েছিল কেন?
উত্তর– নদীর পঙ্কিল জল ফুলে ফেঁপে উঠেছিল বলেই চেনা নদীকে নদেরচাঁদের অপরিচিত ও ভয়ংকর মনে হচ্ছিল।
১০. ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল।– কোন্ স্থানে সে গিয়ে বসেছিল?
উত্তর– সে অর্থাৎ নদেরচাঁদ ব্রিজের মাঝামাঝি ইট-সুরকি আর সিমেন্টের গাঁথা ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে গিয়ে বসেছিল।
১১. ‘নদেরচাঁদের ভারী আমােদ বােধ হইতে লাগিল। – কী দেখে তার আমােদ হয়েছিল?
উত্তর– নদীর জল এতোটা উপরে উঠে এসেছিল যে হাত বাড়ালেই নাগাল পাওয়া যেত। সেটা দেখেই নদেরচাঁদের আমোদ হয়েছিল।
১২. ‘নদীর সঙ্গে খেলা করার লােভটা সে সামলাইতে পারিল না’ – কীভাবে সে নদীর সঙ্গে খেলা করেছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা চিঠির এক-একটি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে-মুচড়ে জলে ফেলছিল। এইভাবে সে নদীর সঙ্গে খেলা করছিল।
১৩. ‘এই ভীষণ মধুর শব্দ শুনিতে শুনিতে সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হইয়া আসিতেছে।’ – কোন্ শব্দ শুনে শরীর অবশ ও অবসন্ন হয়েছিল?
উত্তর– নদীর জলের অশ্রুতপূর্ব শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ মিশে যে সংগত তৈরি হয়েছিল সেই শব্দ শুনে নদেরচাঁদের শরীর অবশ ও অবসন্ন হয়েছিল।
১৪. ‘কিছুক্ষণের জন্য নদেরচাঁদকে দিশেহারা করিয়া রাখিল’- কিছুক্ষণের জন্য কী তাকে দিশেহারা করে রেখেছিল?
উত্তর– ব্রিজের উপর দিয়ে একটা ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দে হঠাৎ নিদ্রাভঙ্গ হওয়ার মতো একটা বেদনাদায়ক চেতনা তাকে দিশেহারা করে রেখেছিল।
১৫. ‘নদী এমনভাবে খেপিয়া যাইতে পারে…’ – নদী খেপে গিয়েছিল কেন?
উত্তর– মানুষ নদীর উপর ব্রিজ তৈরি করে নদীর জলস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিল। তাই নদী খেপে গিয়েছিল।
১৬. ‘কিন্তু পারিবে কি?’ – কী পারার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর– ব্রিজটা ভাসিয়ে এবং দুপাশে মানুষের তৈরি বাঁধ ভেঙে ফেলে নদীর নিজের গতিপথ করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১৭. “মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে?”- কেন এই উক্তি?
উত্তর– নদী যদি একবার মানুষের তৈরি ব্রিজ এবং বাঁধ ভেঙে ফেলে, তারপরও মানুষ আবার সেইসব নতুন করে গড়ে ফেলবে। তাই একথা বলা হয়েছে।১৭. ‘আজ তার মনে হইল কী প্রয়ােজন ছিল ব্রিজের?’ – কেন এমন মনে হয়েছিল?
উত্তর– ব্রিজ তৈরি করার ফলে নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল। তাই নদেরচাঁদের এমন মনে হয়েছিল।
১৮. নদেরচাঁদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল?
উত্তর– নদেরচাঁদ রেললাইন ধরে অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিল। এমন সময় পিছন থেকে সাত নম্বর ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি তাকে পিষে দিয়ে চলে যায়।
১৯. ‘এক একখানা পাতা ছিড়িয়া দুমড়াইয়া মােচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল।’ – উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল?
উত্তর– উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা পাঁচপাতার চিঠি থেকে এক-একটা পাতা জলে ফেলতে লাগল।
২০. নদেরচাঁদ কতদিন যাবৎ স্টেশনমাস্টারের চাকরি করছিল?
উত্তর– চার বছর ধরে নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের চাকরি করছিল।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে”—কে কীভাবে নদীর বিদ্রোহের কারণ বুঝতে পারল?
উত্তর : নদের চাদে অনুভব : পাঁচদিন টানা বৃষ্টির পর নদীর কাছে গিয়ে নদের চাঁদ দেখল নদীর পঙ্কিল জলস্রোত ফুলে ফেঁপে উদ্যম গতিতে ছুটে চলেছে। নদী যেন উন্মত্ত। নদীর জলস্রোত ব্রিজ ও বাঁধের কাছাকাছি এসেছে যে কোনাে মুহূর্তে ভেঙে দিতে চায় সব বাধাকে। নদের চাদের মনে হল নদী যেন মুক্তি পেতে চাইছে, ফিরে পেতে চাইছে তার স্বাভাবিক গতি। তাই তার এই ভয়াল বিদ্রোহ।
২. “নদীর ধারে তার জন্ম হইয়াছে”—কার কথা বলা হয়েছে? একথা বলার কারণ কী?
উত্তর : নদের চাঁদ ; মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদের চাদের কথা বলা হয়েছে।
একথা বলা কারণ : নদী কেন্দ্রিক জীবনে যারা অভ্যস্ত তাদের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক বারােমাস। নদের চাদ নদীকে না দেখে থাকতে পারে না। সে নিজেও তা বােঝে, তবু নিজেকে সংযত করতে পারে না। নদীর প্রতি তার ভালােবাসার কারণ আছে। নদীর ধারে তার জন্ম হয়েছে। নদীর ধারেই সে শৈশব, বাল্য, কৈশাের। কাটিয়েছে। তাই নদীর প্রতি ভালােবাসা তার অদম্য।
৩. নদেরচাঁদ নদীর সঙ্গে যে খেলায় মেতে উঠেছিল সেই খেলাটি কেমন ছিল?
উত্তর : নদীর সঙ্গে নদেরর্চাদের খেলা : এক বর্ষার দিনে নদীর কাছে গিয়ে নদেরাদ দেখল নদীর জল সেতুর ধারে স্তম্ভে বাধা পেয়ে এক ফেনিল আবর্ত রচনা করেছে। সে পকেট থেকে অনেকদিন আগের পত্নীকে লেখা একটা চিঠি বার করে নদীর স্রোতে ছুড়ে ফেলল। চোখের পলকে সেই চিঠি অদৃশ্য হয়ে গেল। চিঠির এক একটি পাতা ছিড়ে দুমড়ে মুচড়ে সে নদীর মধ্যে ফেলতে লাগল। এইভাবে নদের চাদ এক অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠেছিল।
৪. “চিঠি পকেটেই ছিল”—কোন চিঠির কথা বলা হয়েছে? সেই চিঠির কী পরিণতি হয়েছিল?
উত্তর : নদেরচাঁদের বিরহপূর্ণ চিঠি : নদের চাঁদ গ্রাম থেকে বহু দূরে কর্মক্ষেত্রে বাস করত গৃহে বসবাসরত পত্নীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ সবসময় হত না। তাই চিঠিই ছিল একমাত্র ভরসা। বিশেষত বর্ষা ঋতুর আবেগপূর্ণ আবহাওয়া নদেরচাঁদকে বিরহে উতলা করে তুলেছিল। তাই পাঁচদিনের বর্ষণের সুরে সুর মিলিয়ে সে একটি বিরহপূর্ণ চিঠি লিখেছিল। এখানে সেই চিঠির কথা বলা হয়েছে। নদের চাদ। আবেগপ্রবণ চিঠিতে লিখেছিল, ভয়ংকরী নদীর সঙ্গে খেলা করার তাগিদে সেই চিঠি ছিড়ে ছিড়ে নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছিল।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. নদীর বিদ্রোহ গল্পে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নদীর যে রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন তা বর্ণনা করাে।
উত্তরঃ ভূমিকা: ‘নদীর বিদ্রোহ’ নামাঙ্কিত গল্পে নদের চাঁদের সঙ্গে নদীর সুগভীর সম্পর্ক রচিত হয়েছে। আলােচ্য গল্পে দুটি নদীর কথা আছে। একটি হল নদের চাঁদের গ্রামের নদী, আর একটি হল তার কর্মস্থানে নদীটি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন ৩০ বছর বয়সেও নদের চাঁদের নদীর প্রতি গভীর হৃদয়ের সমাজ তার কোথাও ঘাটতি পড়েনি। সে নিজেও জানে নদীর জন্য অদ্ভুত এক পাগলামাে। রয়েছে তার।
নদীর রূপ: নদের চাঁদ রেল লাইন ধরে এক মাইল দূরে নদীর ওপরকার সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটতে থাকে। টানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর আজ নদীকে দেখার সুযােগ। হয়েছে। আর সেই জন্য নদের চাঁদের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। পাঁচদিনের আকাশভাটা বৃষ্টির পর নদী যেন এক অপরুপ রুপ ধারণ করেছে। দুদিকে মাঠঘাট জলে ডুবে গিয়েছে। আর নদের চাঁদ নদীর বর্ষণপুঞ্জ মূর্তি কল্পনা করে আনন্দে মাতােয়ারা হয়েছে। পাঁচদিন আগেও বর্ষার জলে পরিপুষ্ট নদীর সেই নদী ক্ষেপে গিয়েছে। কিছুক্ষণ পর মুষলধারায় আরম্ভ হলে নদেরচাদ বসে বসে ভিজতে থাকে।
নদী থেকে একটা ভীষণ মধুর ধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়। নদীর রূপ দেখে নদের চাঁদ ভয় পেয়ে যায়। তার মনে হয় রাগে ক্ষোভে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে এই নদী। তার রাগের কারণ হল তার গতিপথে অসংখ্য বাঁধ ও সেতু বসিয়ে চলার পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। ফলে নদীর ভবিষ্যত দেখতে পায় নদের চাঁদ। তার মনে হয় এই নদী একদিন ক্ষীণস্রোতা নদীতে পরিণত হবে। এভাবে নদী হারিয়ে যাবে।
২. নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে-নদীর বিদ্রোহের কারণ কী ছিল? সে কীভাবে তা বুঝিতে পারিয়াছে?
উত্তরঃ বিদ্রোহের কারণ: ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অনুসারে আজন্ম নদীর ধারে বেড়ে ওঠা নদের চাঁদ নদীর প্রতিটি আচরণের তাৎপর্য জানত। বর্ষার জলে উপচে পড়া নদীকে সে ক্ষিপ্ত, বিক্ষুব্ধ বলে জানত। মানুষের তৈরি বাঁধ ও সেতু নদীকে বন্দি করে ফেলেছিল। বর্ষার আগমনে সেই নদী নিজের রুপ পাল্টে ফেলে।
নদেরর্চাদ তার। সংবেদনশীল অন্তজগৎকে উপলব্ধি করেছিল নদীর বিক্ষোভের ভাষায়। যুগ যুগ ধরে মানুষের প্রযুক্তির কাজে অবদমিত প্রকৃতি নদীর মাধ্যমে প্রতিশােধ নিতে চাইছে। তাই শীর্ণকায়া নদী পরিণত হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচার একদিন মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। এই সমস্ত উপলব্ধি করে। নদের চাঁদ বুঝেছিল নদীর বিদ্রোহের কারণ।
নদের চাঁদের উপলব্ধি: নদের চাঁদ একজন সংবেদনশীল, শিল্পী মনের মানুষ। নদী । সম্পর্কে তার কৌতূহল আকর্ষণ পাগলামির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন নদীর সান্নিধ্য কাটানাের কারণে নদীর প্রতিটি পরিবর্তনের তাৎপর্য তার জানা ছিল। নদী বর্ষার জলে তার রূপ পরিবর্তন করলে সে প্রথম অবাক হলেও পরবর্তীকালে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে উন্নত মানুষ নিজের শক্তির পরিচয় দিতে গিয়ে প্রকৃতির বুকে সৃষ্টি করেছে তার নিজের কৃতিত্ব। নদীকে বাগে আনতে তার বুকে বাঁধ দিয়েছে, সেতু তৈরি করেছে। এ অন্যায়ের প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে। নদীর গর্জনে। কারণ সে সেতু ও বাঁধ ভেঙে ফেলতে চায়। প্রকৃতির এ আচরণ নদের চাঁদ উপলদ্ধি করেছে।
আরো দেখো: মাধ্যমিক বাংলা সম্পূর্ণ সাজেশন উত্তরসহ
মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে নদীর বিদ্রোহ প্রশ্ন উত্তর pdf ডাউনলোড করে নাও। এছাড়াও মাধ্যমিক অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post