নবম দশম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ৩য় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর : আমরা ইতোমধ্যে শিখেছি যে ইন্টারনেট হলো বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত একটি নেটওয়ার্ক যা সারা বিশ্বের কম্পিউটার এবং ডিভাইসসমূহকে সংযুক্ত করে। তার বা বেতার মাধ্যমে এটি মানুষ কিংবা ডিভাইসকে তথ্য শেয়ার করতে এবং একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে, ইমেল পাঠাতে বা বন্ধুদের সাথে চ্যাট করতেও এটি ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। এতে ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহৃত হয়।
নবম দশম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ৩য় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
১. ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য অবশ্যই কোনটির প্রয়োজন?
ক. ডেস্কটপ পিসি
খ. ট্যাবলেট পিসি
গ. স্মার্টফোন
● ইন্টারনেট সংযোগ
২. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান উপকরণ কোনটি?
ক. কম্পিউটার
খ. টেলিভিশন
● ইন্টারনেট
ঘ. স্মার্টফোন
৩. ডিজিটাল কনটেন্ট হলো-
i. ই-বুক, ব্লগপোস্ট ও ই নিবন্ধ
ii. ইনফো গ্রাফিকস ও অ্যানিমেটেড ছবি
iii. অডিয়ো ও ভিডিয়ো স্ট্রিমিং
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
● i, ii ও iii
নিচের লেখাটি পড়ে ৪ ও ৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
রিনি ও রনির বাবা তাদের জন্য একটি ট্যাবলেট পিসি কিনে দিলেন। রিনি নবম শ্রেণিতে ও রনি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে।
৪. রিনি ও রনির ট্যাবলেট পিসিটির সর্বোত্তম ব্যবহার হবে-
ক. গেমস খেলায়
খ. গান শোনায়
গ. হিসাব নিকাশে
● লেখাপড়ার কাজে
৫. রিনি ও রনির জন্য ট্যাবলেট পিসিটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে-
i. দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন
ii. কমখরচে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে
iii. ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বাড়াতে হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
● i, ii ও iii
ইন্টারনেট ও ওয়েব পরিচিতি
৬. আইসিটি কীভাবে আমাদের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক হতে পারে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) বর্তমান যুগে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু আমাদের দক্ষতা বাড়ায় না, বরং চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন পেশায় সফল হতে সাহায্য করে। নিচে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো—
১. ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি: বর্তমানে কম্পিউটার চালানো, ই-মেইল ব্যবহারে দক্ষতা, মাইক্রোসফট অফিস, প্রোগ্রামিং ও গ্রাফিক ডিজাইন শেখা চাকরির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ICT-এর মাধ্যমে এসব দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব, যা চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে সহায়তা করে।
২. অনলাইন কর্মসংস্থান ও আউটসোর্সিং: ICT আমাদের ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং, ই-কমার্স ও ডিজিটাল মার্কেটিং-এর সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন Upwork, Fiverr, Freelancer-এর মাধ্যমে ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব, যা ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
৩. সহজ যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিং: ICT-এর মাধ্যমে চাকরি খোঁজা, পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং ক্যারিয়ারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া সহজ হয়েছে। যেমন, LinkedIn, Bdjobs, Glassdoor-এর মতো ওয়েবসাইট থেকে চাকরির বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায় এবং সরাসরি আবেদন করা যায়।
৪. শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন: অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ICT শিক্ষার্থীদের নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দিয়েছে। Udemy, Coursera, edX, Khan Academy-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে কোর্স করা যায়, যা ক্যারিয়ার উন্নয়নে সহায়ক।
৫. উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ: ICT ব্যবহার করে নিজস্ব ব্যবসা, স্টার্টআপ বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা সম্ভব। ই-কমার্স, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট ক্রিয়েশন বা ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মাধ্যমে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে সফল ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন।
৬. অফিস ও প্রশাসনিক কাজে সহায়তা: বর্তমানে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার, ই-মেইল, ভিডিও কনফারেন্সিং এবং ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট প্রয়োজন হয়। ICT-তে দক্ষ হলে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে সহজে কাজ পাওয়া যায় এবং ক্যারিয়ারে দ্রুত উন্নতি করা সম্ভব।
ICT আমাদের ক্যারিয়ার গঠনে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, দক্ষতা উন্নত করছে এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করছে। তাই, যারা ICT-তে দক্ষতা অর্জন করবে, তারা ভবিষ্যতে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারবে এবং কর্মসংস্থানে এগিয়ে থাকবে।
৭. ‘বর্তমানে ইন্টারনেটের ব্যবহার ছাড়া লেখাপড়া করা কঠিন’—যুক্তিসহ উপস্থাপন কর।
উত্তর: বর্তমান যুগে শিক্ষা এবং ইন্টারনেট একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে ইন্টারনেট এখন জ্ঞান অর্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইন ক্লাস, ভিডিও লেকচার এবং ডিজিটাল পাঠ্যবই সরবরাহ করছে, যা শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের সাহায্যে সহজে গ্রহণযোগ্য করে তুলছে। গবেষণা এবং দ্রুত তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রেও ইন্টারনেটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা Wikipedia, Google Scholar, Khan Academy, YouTube-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও লেকচার পেতে পারে, যা তাদের পড়াশোনাকে আরও সমৃদ্ধ করে।
এছাড়া, অনলাইন লাইব্রেরি ও ই-বুকের সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছে বইপত্র সংগ্রহের প্রক্রিয়া। National Digital Library ও Project Gutenberg-এর মতো ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষামূলক বই পড়া যায়, যা ইন্টারনেট ছাড়া সম্ভব নয়। পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন অনলাইন মডেল টেস্ট, পুরোনো প্রশ্নপত্র ও মক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে সহায়তা করে। এমনকি শিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শিক্ষার্থীরা ই-মেইল, মেসেঞ্জার বা অনলাইন ফোরামের মাধ্যমে শিক্ষকদের কাছ থেকে দ্রুত উত্তর পেতে পারে, যা শেখার গতি বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্বব্যাপী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক বেড়ে গেছে। Coursera, Udemy, edX-এর মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে বিশ্বমানের কোর্স করার সুযোগ পাওয়া যায়, যা শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণে সাহায্য করে।
ফলে বলা যায়, ইন্টারনেট ছাড়া বর্তমান সময়ে লেখাপড়া করা সত্যিই কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ এটি আমাদের জ্ঞান অর্জন, গবেষণা, পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
আরও দেখো— নবম দশম শ্রেণির ICT সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের আইসিটি মূল বই থেকে নবম দশম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ৩য় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post