নবান্ন কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের “নবান্ন” কবিতাটি তার “মরুমায়া” গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে। একদিকে বাংলার কৃষকের স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের বেদনাময় বাস্তবতা এই কবিতায় শিল্প-অবয়ব লাভ করেছে; অপরদিকে, ‘কৃষক’ আর “পাকা ধান’-এর প্রতীকে কবির আপন সৃষ্টির ধ্বংস হওয়ার বেদনা দ্যোতিত হয়েছে।
জনৈক বন্ধুর সঙ্গে কবি তার মনের দুঃখকথা বলে চলেছেন _ এমন ভঙ্গি ব্যবহার করে কবিতাটির সূচনা । কবির সেই বেদনা-কাহনে উঠে এসেছে তার ক্ষেতভরা পাকা ধান কীভাবে এক রাতে ধ্বংস হয়ে গেছে সেই কথা । করে ধান সংগ্রহের সকল আয়োজন হয়েছিল সম্পন্ন ।
একদিকে বাড়িতে এতসব আয়োজন আর অন্যদিকে মাঠে ফসল কাটার প্রতীক্ষা । এ যেন বাংলার কৃষক-জীবনের অকৃত্রিম রূপায়ণ। কৃষকেরা মাসের পর মাস ধরে রক্ত জল করা শ্রমে চারাগাছ থেকে তিল তিল করে বড় করে তোলে পাকা ধান। এই সময় জুড়ে বিভিন্ন প্রকৃতিসৃষ্ট ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের আশঙ্কায় দুলে ওঠে তাদের হৃদয়। তবু তারা স্বপ্ন দেখে, বিভোর হয় আসন্ন সুখময় দিনের কল্পনায় ।
কবিও একইভাবে ধান কাটার অপেক্ষায় দিন গুনেছেন। অগ্রহায়ণ মাসে দুর্বিপাক ঘটার শঙ্কা না থাকায় ভেবেছেন ফসলগুলো আরেকটু পরিপকৃ হলে তবে কাটবেন। কিন্তু তার আগেই তীর পাকা ধানে মই পড়ে গেছে। কিন্তু মই দেওয়া তো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয় । তবে কি কবি কারও শক্রতার শিকার?
এই প্রশ্নের উত্তর কবিতায় নেই। এর কারণ অনুসন্ধানের তাগিদ তিনি অনুভব করেননি । কিন্তু তা সন্টেও কবির দুঃখ শেষ হয় না। কবির এই কষ্টের কথা শোনার ধৈর্যও কারও হয় না। কবির বন্ধুর অসহিষ্কুতা থামিয়ে দেয় কবিকে । ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার এই অমোঘ বাস্তবতা শেষ পর্যন্ত পরিণত হয় এক অসমাপ্ত গল্পে । এভাবেই বেদনার রেশ টেনে নবান্নের আনন্দ মুছে দিয়ে সমাপ্ত হয় কবিতাটি ।
কবিতাটির একটি প্রতীকী তাৎপর্যও লক্ষণীয় । “পাকা ধান”-এর প্রতীকে, কৃষকের রূপকল্পে যতীন্দ্রনাথ আপন সৃষ্টিকে আরও নিজের করে পেতে চান। কিন্তু সেই সৃষ্টিকর্ম যখন সমালোচিত হয়, সঠিকভাবে মূল্যায়িত হয় না তখন কবি বেদনাহত হন। পাকা ধান নষ্ট হওয়া হৃতসম্বল কৃষকের সঙ্গে নিজের সাদৃশ্য খুঁজে পান তিনি। এভাবে এক স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যতীন্দ্রনাথ তার অনুভবকে শিল্পায়িত করেছেন আলোচ্য “নবান্ন” কবিতায়।
নবান্ন কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : এক নিমেষেই চুরমার হলো ধনঞ্জয়ের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন । চিকিৎসার অভাবে স্ত্রীর মৃত্যুর পর একমাত্র সন্তান মৃত্যু্ঞ্জয়কে অনেক বড় ডাক্তার বানানোর প্রত্যয় গ্রহণ করেন তিনি । উদ্দেশ্য, তার স্ত্রীর মতো আর কেউ যেন অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়। অন্যের জমিতে কাজ করে কখনোবা এলাকার ছোট ছোট ছেলে-মেয়েকে পড়িয়ে ছেলের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন ধনগ্রয়। গতকাল তিনি জানতে পেরেছেন যে, ছেলে তার ডাক্তারি পাস করেছে। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন এবার পূরণ হবে। কিন্তু স্বপ্ন তার চুরমার হয়ে গেল। সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল মৃত্যুঞ্জয়ের প্রাণ ।
ক. “নবান্ন” কবিতায় কোথায় আলপনা আঁকার কথা বলা হয়েছে?
খ. “মই পড়ে গেছে ক্ষেতভরা পাকা ধানে” ।_ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে মৃত্যু্ঞ্জয়ের মধ্যে “নবান্ন” কবিতার যে দিকটির আভাস পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “ভাবগত সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপক ও “নবান্ন” কবিতার মূল বক্তব্যের পার্থক্য অনেক’_ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
বাংলা প্রথম পত্রের অন্যান্য গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো নিচে দেয়া লাল লিংকে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নাও।
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : বায়ান্নর দিনগুলো
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : তাহারেই পড়ে মনে
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : অপরিচিতা
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : সাম্যবাদী
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : মাসি-পিসি
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : ঐকতান
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : আহ্বান
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : আঠারো বছর বয়স
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : সোনার তরী
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : মহাজাগতিক কিউরিটের
এইচএসসি শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে এখানে ক্লিক করো। নতুন সাজেশন পেতে জয়েন করো HSC Candidates, Bangladesh ফেসবুক গ্রুপে। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post