নিরীহ বাঙালি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর : “নিরীহ বাঙালি” প্রবন্ধটিতে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাঙালি নারী পুরুষের প্রাত্যহিক জীবনাচরণের বিভিন্ন দিক হাস্য-রসাত্মকভাবে বর্ণনা করেছেন। বাঙালি পুরুষগণের অলসপ্রিয়তা, শারীরিক পরিশ্রমে অনীহা, বাগাড়ম্বর আচরণ সম্পর্কে আলোচনা
যেমন রয়েছে, তেমনি নারীদের অহেতুক রূপচর্চা, পরচর্চা এবং নিজেদের অবলা প্রমাণ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টার প্রতি আলোচনাও রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যাঙ্গাত্মক এ প্রবন্ধের মাধ্যমে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাঙালি পুরুষ ও নারীকে সত্যিকার সামাজিক, পারিবারিক ও জাতীয় কাজে প্রণোদিত করতে চেয়েছেন। প্রবন্ধটি আমাদের ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রতি মনোযোগী হবার শিক্ষা দেয়।
নিরীহ বাঙালি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
১. নন্দ বাড়ির হত না বাহির, কোথা কী ঘটে কি জানি,
চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি।
নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে কলিশন হয়,
হাঁটিলে সর্প, কুক্কুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়।
তাই শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়া রহিল নন্দলাল।
সকলে বলিল, ‘ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক চিরকাল।’
ক. কোন জাতীয় পোশাককে ইংরেজ ললনাদের নির্লজ্জ পরিচ্ছদ বলা হয়েছে?
খ. বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাঙালিকে মূর্তিমান কাব্য বলেছেন কেন?
গ. নন্দলালের বৈশিষ্ট্য ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে যাদের কার্যμমকে ইঙ্গিত করে তাদের স্বরূপ তুলে ধরো।
ঘ. উদ্দীপকে ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের উপেক্ষিত দিকটি বিশ্লেষণ করো।
২. স্তবক – ১ : পদে পদে ছোট ছোট নিষেধের ডোরে
বেঁধে বেঁধে রাখিওনা ভালো ছেলে করে।
স্তবক – ২ : শাবাশ বাংলাদেশ, এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়;
জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।
ক. ধনবৃদ্ধির কয়টি উপায়?
খ. ‘পাস বিক্রয়’ বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের স্তবক – ১ ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ – ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বেগম রোকেয়ার প্রত্যাশাই স্তবক-২-এ প্রতিফলিত হয়েছে – বিশ্লেষণ করো।
৩. দেখা হলে মিষ্ট অতি
মুখের ভাব শিষ্ট অতি
অলস দেহ ক্লিষ্ট গতি
গৃহের প্রতি টান
মাথায় ছোট বহরে বড় বাঙালি সন্তান।
ক. কৃষিকাজে পারদর্শিতা অপেক্ষা কী পাস করা সহজ?
খ. পাস বিক্রয় করা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে?- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের উক্ত দিক পরিবর্তনে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন করো।
৪. পুরুষগণ আমাদিগকে সুশিক্ষা হইতে পশ্চাদ্পদ রাখিয়াছেন বলিয়া আমরা অকর্মণ্য হইয়া গিয়াছি। ভারতে ভিক্ষুক ও ধনবান এই দুই দল লোক অলস এবং ভদ্রমহিলার দল কর্তব্য অপেক্ষা অল্প কাজ করে। আমাদের আরামপ্রিয়তা খুব বাড়িয়াছে। আমাদের হস্ত, মন, পদ, চক্ষু ইত্যাদির সদ্ব্যবহার করা হয় না। দশজন রমণীরত্ন একত্র হইলে ইহার উহার-বিশেষত আপন আপন অর্ধাঙ্গের নিন্দা কিংবা প্রশংসা করিয়া বাকপটুতা দেখায়। আবশ্যক হইলে কোন্দলও চলে।
ক. রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. আমাদের কাব্যে বীর রস অপেক্ষা করুণ রস বেশি কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘নিরীহ বাঙালি’ রচনার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘সমালোচনার আড়ালেই রয়েছে সমাধান’ – উক্তিটি আলোচ্য উদ্দীপক এবং ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কী? তোমার মতামত দাও।
৫. গাহি তাহাদের গান
ধরণীর হাতে দিল যারা আনি ফসলের ফরমান।
শ্রম-কিণাঙ্ক-কঠিন যাদের নির্দয় মুঠি-তলে
ত্রস্তা ধরণী নজরানা দেয় ডালি ভরে ফুলে ফলে।
বন্য-শ্বাপদ-সঙ্কুল জরা-মৃত্যু-ভীষণা ধরা
যাদের শাসনে হল সুন্দর কুসুমিতা মনোহরা।
ক. রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?
খ. ‘আমাদের এখানে লেখক অপেক্ষা লেখিকার সংখ্যা বেশি’ কেন?
গ. উদ্দীপক কবিতাংশের সাথে ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের অমিল তুলে ধরো।
ঘ. উদ্দীপক কবিতাংশের কবি যাদের বন্দনায় মুখর হয়েছেন ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের রচয়িতা তেমন মানুষদেরই প্রত্যাশা করেছেন কি? মতামত দাও।
জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বামীর নাম কী?
উত্তর : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বামীর নাম সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন।
২. কার প্রেরণায় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সাহিত্যচর্চা শুরু করেন?
উত্তর : স্বামীর প্রেরণায় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সাহিত্যচর্চা শুরু করেন।
৩. কার তত্ত্বাবধানে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ইংরেজি শেখেন?
উত্তর : বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের তত্ত্বাবধানে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ইংরেজি শেখেন।
৪. কাদেরকে দুর্বল ও নিরীহ বলা হয়েছে?
উত্তর : দুর্বল ও নিরীহ বলা হয়েছে বাঙালিকে।
৫. ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে আমাদের খাদ্যদ্রব্যের গুণ কয়টি?
উত্তর : ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে আমাদের খাদ্যদ্রব্যের গুণ তিনটি।
৬. বাঙালিরা কাদের নিকট ভিক্ষা করে?
উত্তর : বাঙালিরা আমেরিকানদের নিকট ভিক্ষা করে।
৭. রাজ্য স্থাপন করা অপেক্ষা কী উপাধি লাভ সহজ?
উত্তর : রাজ্য স্থাপন করা অপেক্ষা রাজা উপাধি লাভ সহজ।
৮. নিরীহ বাঙালি প্রবন্ধে ধন বৃদ্ধির উপায় কী কী?
উত্তর : নিরীহ বাঙালি প্রবন্ধে ধনবৃদ্ধির উপায় বাণিজ্য ও কৃষি।
৯. আমাদের কাব্যে কোন রস বেশি?
উত্তর : আমাদের কাব্যে করুণ রস বেশি।
১১. ‘কুন্তলীন’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘কুন্তলীন’ অর্থ একসময় চুলে দেওয়া জনপ্রিয় তেল।
১২. আমাদের প্রধান ব্যবসায় কী?
উত্তর : আমাদের প্রধান ব্যবসায় বাণিজ্য।
১৩. ভারতবর্ষ অট্টালিকা হলে বঙ্গদেশ তার কী?
উত্তর : ভারতবর্ষ অট্টালিকা হলে বঙ্গদেশ তার নায়িকা।
১৪. আমরা ধান্য তণ্ডুলের ব্যবসায় করি না কী আবশ্যক বলে?
উত্তর : আমরা ধান্য তণ্ডুলের ব্যবসায় করি না পরিশ্রম আবশ্যক বলে।
১৫. কবিতার স্রোরাতে বিনা কারণে কী বেশি হয়?
উত্তর : কবিতার স্রোতে বিনা কারণে বেশি অশ্রুপ্রবাহ হয়।
১৬. বাঙালি ললনারা কোন শাড়ি পরে?
উত্তর : বাঙালি ললনারা হাওয়ার শাড়ি পরে।
১৭. রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৯৩২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. আমাদের স্বভাবে ভীরুতা অধিক? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : লেখিকা রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মতে, আমাদের খাদ্যে রয়েছে কোমলতা, স্বভাবেও তাই অধিক ভীরুতা।
‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে লেখিকা বাঙালির স্বভাবের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি বাঙালির খাদ্যাভ্যাসের সাথে তাদের আচরণের যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলো রসাল, কোমল ও মধুর হওয়ায় তা আমাদের স্বভাবকেই কোমল ও ভীরু করেছে। প্রকৃতপক্ষে বাঙালির অকারণ ভীরুতারকে ব্যাঙ্গার্থে তুলে ধরার জন্যই লেখিকা এই যুক্তি দিয়েছেন।
২. ‘আমরা মূর্তিমান আলস্য’ কথাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তার ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে বাঙালিকে মূর্তিমান আলস্য বলেছেন। কারণ অলসতা বাঙালির অভ্যাসগত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জগতে উন্নতি করতে হলে কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন। সেদিক থেকে বাঙালি অন্যান্য জাতির তুলনায় পিছিয়ে। বাঙালি সব সময় অল্প আয়ে বেশি লাভ করতে ইচ্ছুক।
প্রাবন্ধিক তাই কটাক্ষ করে বলেছেন, সশরীরে পরিশ্রম করে মুদ্রালাভ করা অপেক্ষা শ্বশুরের যথাসাধ্য লুণ্ঠন করা সহজ। বাঙালি সহজলভ্য কাজের দিকেই বেশি আগ্রহী। বাঙালির এই কর্মবিমুখতার কারণেই বলা হয়েছে, ‘আমরা মূর্তিমান আলস্য’।
৩. ‘আমাদের অন্যতম ব্যবসায় ‘পাস বিক্রয়’। উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : শিক্ষাগত সনদপত্রের জোরে আমরা বিনা পরিশ্রমে সম্পদ লাভ করতে চাই- এ ভাবনাই প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য উক্তিতে। শিক্ষাগত সনদপত্রের প্রতি বাঙালির দুর্বলতা রয়েছে। কর্মঠ স্বল্পশিক্ষিত লোকের তুলনায় আমরা অকর্মণ্য ডিগ্রিধারী লোককে শ্রেয় মনি করি।
এ কারণে এ দেশের যুবকরা পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জনের পরিবর্তে মুখস্থবিদ্যার জোরে পাসের সনদলাভের প্রতি মনোযোগ দেয়। সেই সনদের মহিমায় তারা শ্বশুরের সম্পত্তি ও কন্যাকে হাত কার চেষ্টায় রত থাকে। এভাবেই বাঙালি বিনা পরিশ্রমে অর্থবৃদ্ধির উপায় খোঁজে।
৪. কৃষিকাজে আমাদের অনীহার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : কৃষিকাজে পরিশ্রম বেশি বলে এর প্রতি আমাদের তীব্র অনীহা। কর্কশ উর্বর জমি কর্ষণ করে ফসল উৎপাদন করা অত্যন্ত কষ্টের কাজ। বাঙালি শারীরিক পরিশ্রমে বরাবরই অনাগ্রহী। তারা সুযোগ খোঁজে কীভাবে অল্প পরিশ্রমে অর্থ উপার্জন করা যায়। দেশের উন্নতির তুলনায় আমরা নিজেরদের অর্থবৃদ্ধির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিই। ভাবি, হাতে টাকা থাকলে বুঝি অন্নকষ্টেও ভুগতে হবে না। তাই মুখস্থবিদ্যাকে সম্বল করে সহজে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করি। কৃষিকাজে শারীরিক পরিশ্রম বিনিয়োগ করে অর্থ উপার্জনে তাই আমাদের আগ্রহ নেই।
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে নিরীহ বাঙালি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর pdf ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post