নুন কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর : কবি জয় গোস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় গোলাপ ফুলের চারা পোঁতার কথা বলা হয়েছে। অভাবের সংসারে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটাই সবথেকে বড় পরীক্ষা। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেছিলেন ক্ষুধার্ত মানুষের চোখে “পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি”। কিন্তু মানুষ মাত্রই সৌন্দর্য্যের পূজারী।
হতদরিদ্র মানুষও সুযোগ পেলে সৌন্দর্য্য-বিলাসী হয়ে ওঠে। তেমনটাই দেখা যায় ‘নুন’ কবিতায়। বক্তা একদিন বাজার থেকে একটি গোলাপচারা নিয়ে আসে। কিন্তু গোলাপ চারা আনলেই তো আর গোলাপফুল পাওয়া যাবে না। তখনই তার মনে প্রশ্ন জাগে “কিন্তু পুঁতবো কোথায়?”
এই ছোট্ট একটি প্রশ্নেই পাঠকের কাছে বক্তার মানসিকতা পরিষ্কার হয়ে যায়। বক্তার গোলাপচারা কেনার সামর্থ্য থাকলেও গোলাপ ফুল পরিচর্যা করার মত যথেষ্ট জায়গা নেই। কোনো এক স্বচ্ছল দিনে মাত্রাছাড়া বাজার করার পর তার অতৃপ্ত সৌন্দর্য্য-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য গোলাপ চারা কেনার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, গোলাপ যে ‘ফুলের রানী’, তাকে ধনীর উদ্যানেই শোভা দেয়- বস্তির এক চিলতে ঘরে তার জন্য জায়গা কোথায়? আর এভাবেই বক্তার প্রশ্নটি যথাযথভাবে তার মানসিকতাকে ফুটিয়ে তুলেছে।
নুন কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর
১. “রাত্তিরে দু – ভাই মিলে ” কী করে?
ক. গল্প
খ. অভিনয়
গ. গঞ্ঝিকাতে টান দেয়
ঘ. মেশিন চালায় ।
২. “ খেতে বসে রাগ চড়ে যায় । ” কারণ—
ক. ঠান্ডা ভাতে নুন নেই
খ. তরকারি ঝাল হওয়ায়
গ. মাথায় অনেক চিন্তা
ঘ. কোনোটাই নয়
৩. “ বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি ” –কী কিনে আনে?
ক. নুন
খ. চাল
গ. গোলাপচারা
ঘ. চিনি
৪. “ আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত – কাপড়ে ” এর কারণ—
ক. তারা অল্পে খুশি
খ. তারা উদার
গ. তারা সাধারণ ভাত – কাপড়ই পছন্দ করে
ঘ. তারা স্বচ্ছল
৫. নিম্নোক্ত কোনটি জয় গোস্বামীর বিখ্যাত কাব্য?
ক. অগ্নিবীণা
খ. ছাড়পত্র
গ. যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল
ঘ. যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো
৬. “ আমাদের দিন চলে যায় … ”
ক. হেসে – কেঁদে
খ. কষ্ট করে
গ. বাজার করে
ঘ. সাধারণ ভাত – কাপড়ে
৭. “ রাগ চড়ে মাথায় আমার , আমি তার … ”
ক. মাথায় চড়ি
খ. নিন্দা করি
গ. গোলামি করি
ঘ. কোনোটিই নয় ।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. “আমরা তাে অল্পে খুশি; কী হবে দুঃখ করে?”- দুঃখ করে কিছু হবে না বলে কবি কেন মনে করেছেন?
উত্তর: কবি জয় গােস্বামী তাঁর ‘নুন’ কবিতায় দুঃখ করে কিছু হবে না বলে মনে করেছেন, কারণ বেশি সুখের কোনাে সম্ভাবনাই দরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনে নেই।
২. “আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে”- এর মধ্যে দিয়ে কী প্রকাশিত হয়?
উত্তর: বক্তব্যটির মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয় হতদরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষের প্রতিনিধি কথকের কোনােরকমে দিনযাপনের কথা।
৩. “রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে”- এই গঞ্জিকাতে টান দেওয়ার তাৎপর্য কী?
উত্তর: গঞ্জিকাতে টান দেওয়ার তাৎপর্য হল জীবনের যন্ত্রণাকে, কঠোর বাস্তবকে ভুলে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা।
৪. “সব দিন হয় না বাজার হলে, হয় মাত্রাছাড়া”- এই মাত্রাছাড়া’ কথাটির মাধ্যমে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: জয় গােস্বামী তার ‘নুন’ কবিতায় এই ‘মাত্রাছাড়া কথাটির মাধ্যমে গরিব মানুষের বেহিসেবি এবং অসংযমী জীবনােচ্ছাসকে বােঝাতে চেয়েছেন।
৫. ‘নুন’ কবিতায় কিনে আনা গােলাপচারাটি কীসের প্রতীক?
উত্তর: জয় গােস্বামীর নুন কবিতায় কিনে আনা গােলাপচারাটি নিম্নমধ্যবিত্তের গােপনে লালিত সৌন্দর্যবিলাসের প্রতীক।
৬. “কিন্তু, পুতবাে কোথায়?” – গোলাপচারা সম্পর্কে কথকের এই মন্তব্য স্পষ্ট করাে।
উত্তর: “কিন্তু, পুঁতবাে কোথায়?”- গােলাপচারা সম্পর্কে এই মন্তব্যের কারণ হল দরিদ্র কথকের কোনােভাবে শুধু মাথাগোঁজার স্থানটুকুই আছে।
৭. গােলাপচারায় ফুল হওয়াকে কবি সে অনেক পরের কথা বলেছেন। এর কারণ কী?
উত্তর: কবি গােলাপচারায় ফুল হওয়াকে সে অনেক পরের কথা বলেছেন, কারণ কথক তথা নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষদের তখন সেই ভবিষ্যৎ সুখের বিষয়ে ভাবার ধৈর্য ছিল না।
৮. নুন কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর: নুন কবিতাটি লেখক জয় গোস্বামী এর লেখা ।
৯. “চলে যায় দিন আমাদের”- দিন কীভাবে চলে যায়?
উত্তর: নুন কবিতা টিতে বক্তার দিন চলে যায় অসুখে এবং ধারদেনাতে, আর রাত্তিরে গঞ্জিকা সেবনের মধ্য দিয়ে।
১০. “বাপব্যাটা দু’ভাই মিলে সারা পাড়া মাথায় করি”- কেন তাদের এমন ব্যবহার?
উত্তর: গভীর রাতে বাড়ি ফিরে যখন ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও পাওয়া যায় না তখন রাগ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে বাপব্যাটা সারা পাড়া মাথায় করে।
১১. কবি এই কবিতায় কেন গরিব মানুষের কেবল নুনের চাহিদাকেই তুলে ধরেছেন কেন?
উত্তর: জয় গােস্বামী তার নুন কবিতায় গরিব মানুষের কেবল নুনের চাহিদাকেই তুলে ধরেছেন, কারণ ভাতের সঙ্গে শুধুমাত্র নুনের সংস্থান হলেই গরিবের সুখে দিন চলে যায়।
১২. “করি তাে কার তাতে কী”—একথা বলার কারণ কী?
উত্তর: গরিব মানুষের অনিয়মিত অশান্তিময় অভাবী জীবন থেকে জন্ম নেওয়া অসংযম এবং অশালীন ঔদ্ধত্যের প্রকাশ ফুটে উঠেছে আলােচ্য উদ্ধৃতিটিতে।
১৩. খেতে বসে বক্তার রাগের কারণ কী ছিল?
উত্তর: খেতে বসে বক্তার নুন না জুটলে রেগে যেত ।
১৪. ‘নুন’ কবিতায় বক্তা গােলাপচারা কিনে এনে কী ভাবেন?
উত্তর: নুন কবিতায় বক্তা গােলাপচারা কিনে এনে ভাবেন যে, সেটি কোথায় পুঁতবেন বা তাতে আদৌ ফুল হবে কি না।
১৫. ‘নুন’ কবিতাটি কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উত্তর: নুন কবিতাটি ‘ভুতুমভগবান’ কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে ।
১৬. ‘নুন নেই ঠাণ্ডা ভাতে’ জীবনের কোন সত্যকে স্পষ্ট করে?
উত্তর: নুন নেই ঠাণ্ডা ভাতে কথাটির দ্বারা নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবনের দারিদ্র্য আর অসহায়তার কথা বলা হয়েছে।
১৭. নুন কবিতায় মাঝে মাঝে এদের দিন চলে না কেন?
উত্তর: জয় গােস্বামীর নুন’ কবিতায় দেখা যায়, মাঝে মাঝে নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষদের অর্থের অভাবে দিন চলে না।
১৮. এখানে শুকনাে ভাতের কথা বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় শুকনাে ভাতের কথা বলা হয়েছে কারণ পব্যঞ্জনে সজ্জিত অন্ন গরিবের কাছে স্বপ্নের অতীত।
১৯. “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”- এই উক্তির মধ্য দিয়ে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: “মাঝে মাঝে চলেও না দিন”- এই উক্তির মধ্য দিয়ে কবি নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা বােঝাতে চেয়েছেন।
২০. কথকের দুপুররাতে বাড়ি ফেরা কী প্রমাণ করে?
উত্তর: কথকের দুপুররাতে বাড়ি ফেরা প্রমাণ করে, কথককে জীবনধারণের জন্য উদয়াস্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।
২১. “আমরা তাে সামান্য লোক”- সামান্য শব্দটি এখানে কীসের প্রতীক?
উত্তর: ‘নুন’ কবিতায় ‘সামান্য’ শব্দটি নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষের সামান্য অধিকার রক্ষিত না হওয়ার ক্রোধ ও অভিমানের প্রতীক।
২৩. ‘নুন’ কবিতায় কবি কাদের কথা তুলে ধরেছেন?
উত্তর: জয় গােস্বামী তার ‘নুন’ কবিতায় দীনদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের কথা তুলে ধরেছেন।
২৪. অসুখ করলে তারা কীভাবে দিন কাটায়?
উত্তর: জয় গােস্বামীর নুন কবিতায় দেখা যায়, অসুখ করলে তারা ধারদেনা করে এবং যন্ত্রণা ভুলতে নেশা করে দিন কাটায়।
২৫. সবদিন বাজার হয় না কেন তাদের?
উত্তর: জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতায় দেখা যায়, নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষদের সবদিন বাজার হয় না কারণ সবদিন ঠিকমতাে কাজ করে উপযুক্ত পারিশ্রমিক মেলে না বা কাজও মেলে না।
২৬. গােলাপচারা কিনে আনার অর্থ কী?
উত্তর: গােলাপচারা কিনে আনার অর্থ হল দীনদরিদ্র গরিব মানুষেরও সৌন্দর্যবােধ ও বিলাসিতার শখ আছে, যা তারা সুযােগ পেলেই পূরণ করার চেষ্টা করে।
২৭. গােলাপচারা নিয়ে শেষে কী সমস্যার উদ্ভব হয়?
উত্তর: জয় গােস্বামীর নুন কবিতায় দেখা যায়, গরিব মানুষের বসবাসের সামান্য সংস্থানে গােলাপচারা পোঁতবার জন্য উপযুক্ত স্থান পাওয়া যায় না।
২৮. গােলাপচারায় ফুল ফুটবে কি না তা নিয়ে সংশয়ের কারণ কী?
উত্তর: গােলাপচারায় ফুল ফুটবে কি না তা নিয়ে সংশয়ের কারণ উপযুক্ত পরিচর্যা করে গােলাপচারা থেকে ফুল ফোটানাের জন্য প্রচুর অবসর সময় চাই, যা গরিব মানুষের নেই।
২৯. “সে অনেক পরের কথা”—এখানে কোন্ কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: আলােচ্য অংশে গােলাপচারায় ফুল ফোটবার কথা বলা হয়েছে।
৩০. ‘নুন’ কবিতায় ‘আমরা’ কারা?
উত্তর: জয় গােস্বামীর নুন কবিতায় আমরা বলতে দীনদরিদ্র, গরিব-দুঃখী, যারা অল্পেই খুশি তাদের কথা বলা হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. “আমি তার মাথায় চড়ি ” —কে , কার মাথায় চড়ে ? এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ।
২. “আমরা তো অল্পে খুশি , কী হবে দুঃখ করে? আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে । ” “আমরা” বলতে যারা তাদের পরিচয়সহ তাদের বোধ ও ভাবনাচিন্তা বিশ্লেষণ করো।
৩. “ কী হবে দুঃখ করে ? ”কীসের দুঃখ? কবির কাছে দুঃখ অর্থহীন কেন ?
৪. আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত- কাপড়ে ।‘সাধারণ ভাত-কাপড়’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে? এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বা কী বােঝাতে চেয়েছেন?
৫. “কিন্তু পুঁতবো কোথায়”- কী পোঁতার কথা বলা হয়েছে? এই কথাটিতে বক্তার কোন মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে নিজের ভাষায় লেখো।
রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
১. আমরা তো অল্পে খুশি ” — ‘ অল্পে খুশি ‘ মানুষদের জীবনযন্ত্রণার যে ছবি ‘ নুন ‘ কবিতায় ফুটে উঠেছে , তার পরিচয় দাও ।
২. ‘নুন‘ কবিতার নামকরণ কতখানি সার্থক ও যথাযথ হয়েছে তা আলোচনা করো।
৩. আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক।”—কে বলেছে? এ দাবি কার কাছে? কেন?
৪. কবি জয় গােস্বামী ‘নুন’ কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি এঁকেছেন, তা বর্ণনা করাে।
৫. আমরা তাে সামান্য লােক/আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক।-কবি জয় গােস্বামীর নুন’ কবিতার বিষয়বস্তু আলােচনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতাংশেৱ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।
৬. কবি জয় গােস্বামীৱনুন’কবিতার আত্মকথক শ্রমজীবী হতদরিদ্র মানুষের স্বভাবচরিত্রের পরিচয় দাও। এবং ওই প্রসঙ্গে কবির দরদি চিত্তের যে পরিচয় মেলে তা সংক্ষেপে লেখাে।
৭.“আমি তার মাথায় চড়ি”-কে, কার মাথায় চড়ে? পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর: ক্ষুধার্ত হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষটি তার রাগের মাথায় চড়ে।
৮. নুন কবিতায় নিম্নবিত্ত সমাজের যে দুঃখ যন্ত্রণা ধরা পড়েছে তা নিজের ভাষায় লেখ। || নুন কবিতায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার পরিচয় দাও।
►► উচ্চ মাধ্যমিক: বাংলা সাজেশন সকল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বাড়ির কাছে নুন কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর pdf ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post