পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : জোনাকিদের দরবার’ দ্বারা জোনাকিদের সম্মিলিত ওড়াকে বোঝানো হয়েছে। রাতের বেলা অনেক জোনাকি একত্রে ওড়াউড়ি করে। কবি নিস্তব্ধ রাতে ঘর থেকে বেরিয়ে লালদিঘির পাড়ে এসে দেখলেন যে অনেক জোনাকিপোকা একত্রে আলোর খেলা খেলছে। ‘জোনাকিদের দরবার’ দ্বারা কবি এটাই বুঝিয়েছেন।
পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. মিনারটিকে দেখছি যেন দাঁড়িয়ে আছেন কেউ? চরণটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: চরণটিতে বোঝানো হয়েছে অন্ধকারে স্তব্ধ হয়ে থাকা মিনারকে কবি মানুষ ভেবে ভুল করেছেন।
প্রকৃতির অফুরন্ত সৌন্দর্য কবি আল মাহমুদকে আকর্ষণ করে অবিরাম।
সৌন্দর্যময় সেই প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে কবি ঘর থেকে বের হয়ে পড়েন। চাঁদনি রাতে নিস্তব্ধ শহরের পথে হাঁটতে গিয়ে পরিচিত অনেক জিনিসকে অন্যরকম মনে হয়। মিনারটিকে কবির কাছে মানুষ বলে মনে হয়।
২. ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবি প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্যের কাছে যেতে চেয়েছেন কেন?
উত্তর: প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসার কারণে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবি প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্যের কাছে যেতে চেয়েছেন।
বাংলাদেশের লোকজন জীবন ও পল্লিপ্রকৃতি আল মাহমুদের কবিতার প্রাণ। পল্লিপ্রকৃতি ব্যাপকভাবে ফুটে ওঠে তাঁর কবিতায়। প্রকৃতির প্রতি প্রচণ্ড টান থাকায় কবি প্রকৃতির সৌন্দর্যে বিমোহিত হন। তাই কবিতায় কবি যেতে চান সেই প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্যের কাছে।
৩. আল মাহমুদ তাঁর ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় ‘থরথর’ শব্দটি দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: আল মাহমুদ তার ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার থরথর শব্দটি দ্বারা সৌন্দর্য ও আবেগে কেঁপে ওঠার কথা বোঝাতে চেয়েছেন।
‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় আল মাহমুদের বিশুদ্ধ প্রকৃতিপ্রেমের পরিচয় ফুটে উঠেছে। প্রকৃতির প্রতি আল মাহমুদের ছিল প্রবল ভালোবাসা। প্রকৃতির সৌন্দর্য আহরণে এবং উপভোগ করতে কবি ছুটে যেতেন প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্যের কাছে। সৌন্দর্য ও আবেগ ফুটিয়ে তুলতে কবি ‘থরথর’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
৪. কবিকে দেখে দিঘির জল কলকলিয়ে ওঠে কেন?
উত্তর: কবিকে দেখে কবির কাছে কবিতা শোনার জন্য দিঘির জল কলকলিয়ে ওঠে।
প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি আল মাহমুদ প্রকৃতিকে দু’চোখ ভরে পর্যবেক্ষণ করতেন। প্রকৃতির কাছে যাওয়ায় প্রকৃতি ও কবি মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতেন। দিঘির কালো জল কলকলিয়ে কবির কাছে কাব্য শুনতে চায়। কবির সঙ্গে প্রকৃতির সেই সম্পর্ক বোঝানো হয়েছে উদ্ধৃত বাক্যে।
৫. ফুল পাখিদের কলরব করার কারণ কী?
উত্তর: কবির কবিতা শোনার আসর বসবে বলে, আনন্দে ফুল-পাখিরা কলরব জুড়ে দেয়।
প্রকৃতির সঙ্গে আল মাহমুদের আত্মিক সম্পর্ক। প্রকৃতিকে তিনি ভালোবেসেছেন অন্তর দিয়ে। প্রকৃতিও তাঁর সঙ্গে মিশে যেত সহজেই। কবিও প্রকৃতির সেই সৌন্দর্যকে কবিতায় ফুটিয়ে তুলে ধরেছেন। প্রকৃতির অনুরোধে কবি কবিতার আসর জমাতে চাইলে ফুল-পাখিরা আনন্দে কলরব জুড়ে দেয়।
৬. ‘জোনাকিদের দরবার’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘জোনাকিদের দরবার’ দ্বারা জোনাকিদের সম্মিলিত ওড়াকে বোঝানো হয়েছে।
রাতের বেলা অনেক জোনাকি একত্রে ওড়াউড়ি করে। কবি নিস্তব্ধ রাতে ঘর থেকে বেরিয়ে লালদিঘির পাড়ে এসে দেখলেন যে অনেক জোনাকিপোকা একত্রে আলোর খেলা খেলছে। ‘জোনাকিদের দরবার’ দ্বারা কবি এটাই বুঝিয়েছেন।
৭. কখন উটকো পাহাড় কবিকে ডাক দিল?
উত্তর: কবি যখন দরগাতলা পেরিয়ে বাম দিকে মোড় ফিরেছেন তখনই উটকো পাহাড় তাঁকে ডাকল।
‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবি রাতের প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসেন। সেখানে তিনি শহরের বিভিন্ন স্থান পার হয়ে যখন দরগাতলা আসেন তখন বামে মোড় ঘুরেই দেখতে পান একটি পাহাড়কে। যাকে কবি কিছুটা ঝামেলা মনে করেছিলেন। কারণ কবির মনে হচ্ছিল পাহাড়টি যেন তাকে কাছে ডাকছে।
৮. ‘দিঘির কথায় উঠল হেসে ফুল পাখিরা সব’।—চরণটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘দিঘির কথায় উঠল হেসে ফুল পাখিরা সব।’—এ লাইন দ্বারা কবি প্রকৃতির আনন্দ-অনুভূতির কথা ফুটিয়ে তুলেছেন।
কবিকে দেখে দিঘির কালো জল কবিতা বের করতে অনুরোধ করল। ঝোপের কাছে কাব্যচর্চা হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছে। এ কথা শুনে ফুল পাখিরা সব হেসে উঠল। এখানে প্রকৃতির নিসর্গপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
৯. কবি চাঁদকে ডাবের মতো বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ডাব যেমন গোলগাল, চাঁদও তেমনি গোলগাল। চাঁদের আলো যেমন ঠাণ্ডা, ডাবের পানিও তেমন ঠাণ্ডা। এ কারণে কবি চাঁদকে ডাবের মতো বলেছেন।
কবি রাতে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখলেন, নারকেল গাছের মাথায় চাঁদ উঠেছে। কবির কাছে পূর্ণিমার রাতের চাঁদ দেখে ডাবের মতো মনে হয়েছে। উপমাটি অত্যন্ত চমৎকার।
১০. কবি কিভাবে মনের কথা ব্যক্ত করেন?
উত্তর: কবি মূলত তাঁর ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় সর্বত্রই প্রকৃতি নিয়ে নানা কথা ব্যক্ত করেছেন।
কবিতার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কবি প্রকৃতির বৈচিত্র্য আর প্রকৃতির প্রতি তাঁর যে টান তা তুলে ধরেছেন। কখনো চাঁদকে ডাবের মতো বলেছেন। আবার গির্জাকে লাল পাথরের ঢেউ বলেছেন। প্রকৃতিকে যেন তাঁর কল্পনার চোখ দিয়ে দেখছেন। আবার প্রকৃতির সাথে যেন তিনি কথা বলে যাচ্ছেন। দিঘির জলের সাথে কিংবা ফুল-পাখিদের সাথে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক। তাইতো প্রকৃতি তাঁকে আপন করে নিয়েছে।
আরও দেখো—ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের চারুপাঠ বাংলা বই থেকে পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য মোট ১০টি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ দেওয়া হয়েছে। Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তরগুলো সংগ্রহ করে নাও। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক, সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সমাধান পেতে উপরে দেওয়া লিংকে ভিজিট করো।
Discussion about this post