কনটেন্ট রাইটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিশেষ একটি অংশ। আধুনিক অনলাইন জগতে কনটেন্ট ছাড়া কোন ওয়েবসাইটেরই মূল্য নেই। কনটেন্ট রাইটিং হল এমন এক ধরনের লেখ্য বিরনণ যা কোন ওয়েবসাইট, ওয়েবপেজ বা কোন পণ্য বা বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করে। কখনো কখনো এটাকে আর্টিকেল রাইটিংও বলা হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, কনটেন্ট রাইটিং সম্পর্কে আপনি যে এই লেখাটি পড়ছেন, এটাও এক ধরনের কনটেন্ট।
আপনি কোন পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে একজন ভালো মানের কনটেন্ট রাইটার হতে পারেন, তা নিয়ে আমরা কনটেন্ট রাইটিং এর আরেকটি পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি কনটেন্ট রাইটিং এর ওপর ক্যারিয়ার গড়তে চান, আপনাকে অনেক ধরনের কনটেন্টের সাথে পরিচিত হতে হবে।
আগেই উল্লেখ করেছি, অনলাইনে নানা ধরনের কনটেন্ট রয়েছে। তো আপনি কোনটা গ্রহণ করবেন? অনেকে আছে যার নির্দিষ্ট এক শ্রেণীর কনটেন্টের ওপর লেখালেখি করেন। আবার অনেকেই একের অধিক শ্রেণীর কনটেন্ট নিয়ে কাজ করেন। আপনার জন্য উচিত হবে সেটাই গ্রহণ করা, যেটা আপনি সবচেয়ে ভালো পারেন।
►► আরো দেখুন: ওয়েব ডিজাইনারদের প্রয়োজনীয় ৭ টি ওয়েবসাইট
কনটেন্ট রাইটিং এ ভাষার প্রয়োগিক বিষয় রয়েছে। অর্থাৎ, কনটেন্ট রাইটিং করতে গেলে আপনাকে কলম চালাতে জানতে হবে। আর আপনি যে বিষয়ে খোলাখুলিভাবে লিখতে জানেন, সেটা নিয়ে কাজ করাই সবথেকে উত্তম।
বিভিন্ন প্রকার কনটেন্ট রাইটিং
আজ আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে বেশি চাহিদা সম্পন্ন অন্তত ৭ টি কনটেন্ট রাইটিং এর ক্যাটাগরি সম্পর্কে জানবো। এই প্রফেশনে আপনার ক্লায়েন্টের হয়ে এ ধরনের কনটেন্টই আপনাকে বেশি লিখতে হবে। আপনি এখান থেকেই বেছে নিতে পারেন আপনার জন্য উপযুক্ত ক্যাটাগরি।
এসইও কনটেন্ট রাইটিং
অনলাইনে যত ধরনের কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে কাজ আছে, তার মধ্যে এসইও কনটেন্ট রাইটিং সবথেকে বেশি চাহিদা সম্পন্ন। এ ধরনের প্রজেক্টে আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে নির্দিস্ট একটি টপিক দেবে, যার ওপরে আপনাকে বিস্তর আর্টিকেল লিখে দিতে হবে। আপনার প্রতি নির্দেশনা থাকবে, উক্ত লেখাগুলো যেন এসইও ফ্রেন্ডলি হয়, অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনে সেগুলো যেন র্যাঙ্ক করে।
►► আরো দেখুন: ওয়েবসাইট এসইওর কিছু ভুল ও বিপজ্জনক প্রাকটিস
এখানে আপনার লেখাগুলা সার্চ ইঞ্জিনে নিয়ে আসতে হলে আপনাকে আগে থেকেই ওই টপিকের ওপর কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। আর এভাবে সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে লিখলে আপনার লেখাটি একটা সময়ে সার্চ র্যাঙ্কিং এ চলে আসবে। আপনার তৈরি করা কনটেন্ট যদি ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইটে অধিক পরিমাণে ট্রাফিক বা ভিজিটর নিয়ে আসতে পারে, তাহলেই আপনি সফল।
অ্যাফিলিয়েট কনটেন্ট রাইটিং
আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ মোটামুটি পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলে অ্যাফিলিয়েট কনটেন্ট রাইটিং আপনার জন্য অনেকাংশেই সহজ হয়ে যাবে। এ ধরনের কনটেন্ট রাইটিং এ মূলত কোন পণ্য বা সার্ভিসের প্রচারণা করা হয়ে থাকে। যাতে করে আপনার লেখা কনটেন্ট দেখে কোন পাঠক ওই পণ্য বা সার্ভিস গ্রহণ করতে ইচ্ছুক থাকে।
মনে করুন, কোন একটি প্রতিষ্ঠান ডোমেইন এবং হোস্টিং প্রোভাইড করে থাকে। তারা আপনাকে নিয়োগ দিল তাদের সার্ভিসের জন্য প্রমোশনাল কিছু আর্টিকেল লিখে দিতে। সেক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে, আপনার লেখা আর্টিকেলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সার্ভিসের গুণগত মান তুলে ধরা, যাতে করে একজন ক্রেতা আপনার লেখাটি পরে তাদের সার্ভিস গ্রহণ করেন। বর্তমানে এফিলিয়েট কনটেন্ট রাইটিং বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে এবং এর চাহিদাও ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রোডাক্ট রিভিউ রাইটিং
কনটেন্ট রাইটিং এর ই্ ক্যাটাগরিটিও অনেকটা এ্যাফিলিয়েট কনটেন্ট রাইটিং এর মতো। তবে এখানে আপনাকে নিজ থেকে কোন প্রোডাক্টের জন্য প্রচারণা চালাতে হবে না। এখানে আপনাকে নির্দিষ্ট কোন প্রোডাক্টের রিভিউ লিখতে হবে। তবে সেই রিভিউ অবশ্যই আপনাকে নিয়োগ করা ক্লায়েন্টের প্রোডাক্টের ফেভারে হতে হবে। এ ধরনের কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে অনেক সময়ে কোন প্রোডাক্টের ডিসক্রিপশন বা বিবরণ লিখতে বলা হয়ে থাকে।
প্রুফ রিডিং ও এডিটিং
কনটেন্টের প্রুফ রিডিং ও এডিটিং কাজটা তুলানামূলকভাবে অন্যগুলোর থেকে সহজ। এখানে আপনাকে আগে থেকেই তৈরি করা কিছু্ কনটেন্ট দেয়া হবে। আপনার কাজ হবে সেই কনটেন্টগুলো থেকে ভুল খুঁজে বের করা এবং তা সংশোধন করা। এ ধরনের কাজে লেখকের ভাষাগত দক্ষতা ও বানানের দিকে লক্ষ্য রাখা অনিবার্য।
►► আরো দেখুন: ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানোর ১০ টি গোপন টেকনিক
প্রুফ রিডিং ও এডিটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে উক্ত কনটেন্টের বিশেষ কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করতে হতে পারে। অথবা কনটেন্টের নির্দিষ্ট কোন একটি সেকশন নতুন করে সাজাতেও বলা হতে পারে।
ট্রান্সলেশন বা অনুবাদ
একটি কনটেন্টকে এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় রূপান্তর করাই মূলত ট্রান্সলেশন। এটা সম্পর্কে আপনি আগে থেকেই অবগত রয়েছেন। বর্তমানে অনলাই মার্কেটপ্লেসে এমন অনেক কাজ পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়ে থাকে, কোন কনটেন্টকে অন্য একটি ভাষায় অনুবাদ করে দিতে। যেমন বাংলা একটি আর্টিকেলকে ইংরেজী করে দেয়া অথবা অন্য কোন ভাষায় অনুবাদ করা।
বই বা হার্ড কপি থেকে সফট কপি রাইটিং
কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে এটি একটি সহজতর কাজ। এ ধরনের প্রজেক্টে একজন ক্লায়েন্ট সাধারণত রাইটারকে কোন বই, পিডিএফ বা ইমেজ দিয়ে থাকেন। আপনার কাজ হচ্ছে নির্দিস্ট একটি সময়ের মধ্যে সেখানে থাকা লেখাগুলো নতুর করে লিখে তার সফট ফাইলটি ক্লায়েন্টকে দেয়া। লেখা শেষে কনটেন্টের সফট কপি সাধারণত টেক্সট ফাইল যেমন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড অথবা এক্সেল শীটে চাওয়া হতে পারে।
ব্লগ রাইটিং
আাপনার যদি নিজের একটি ব্লগভিত্তিক ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে আপনাকে আপনার ব্লগের জন্য কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। এখানে আপনি যেকোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন। তবে সেটা হতে হবে আপনার ব্লগটি মূলত কোন ক্যাটাগরির তার ওপর ভিত্তি করে। নিজের ব্লগের পাশাপাশি আপনাকে অন্যদের ব্লগেও গেস্ট ব্লগিং বা অতিথি লেখক হিসেবে কনটেন্ট তৈরির প্রয়োজন হতে পারে।
বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং জগতে এগুলো সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন কনটেন্ট রাইটিং জব। তবে এছাড়াও আরো অনেক ধরনের কনটেন্ট রাইটিং জব আপনি পেয়ে থাকবেন। যেমন: টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং, ই-বুক রাইটিং, একাডেমিক কনটেন্ট রাইটিং, শর্ট আর্টিকেল রাইটিং বা স্নিপেট রাইটিং, রি-রাইটিং, প্রেস রিলিজ রাইটিং, সিভি বা রিজিউম রাইটিং, ট্রান্সক্রিপশন বা অডিও ও ভিডিও থেকে টেক্সট রাইটিং, কোম্পানির নিউজ লেটার রাইটিং, কোম্পানির ই-মেইল রাইটিং, কোম্পানির অ্যাড বা ব্রশিউর রাইটিং, স্ক্রিপ রাইটিং, নিউজ কনটেন্ট রাইটিং, সামারাইজেশন রাইটিং, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেসেন্টেশান রাইটিং ইত্যাদি।
সবশেষে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে ভাষার জ্ঞান আবশ্যিক। যে ভাষাতেই লিখবেন তা যেন সুন্দর ও সহজবোধ্য হয়। এ কারণে একটা কনটেন্ট লিখতে আপনাকে আপনাকে প্রচুর পড়তে হবে এবং রিসার্চ করতে হবে। আর তখন নিজেই বুঝে যাবেন কোন লেখাটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে। অনলাইনে যাদের লেখা আপনার ভালো লাগবে সেই লেখকের লেখা অনুসরণ করুন। যে বিষয় নিয়ে লিখতে চান, সে সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখুন। আপনার সাফল্য নিশ্চিত।
প্রিয় পাঠক, কোর্সটিকায় আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান, তা জানিয়ে নিচে কমেন্ট করুন। ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন।
Discussion about this post