বিদেশ গমনে ভ্রমণকারীর প্রথম প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট হচ্ছে পাসপোর্ট। আর এখন যেহেতু পাসপোর্টেও ডিজিটালাইজেশন এসেছে তাই আপনার ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ সম্পর্কে জানা দরকার। কেননা আপনি যদি সকল নিয়মগুলো নিজেই জানেন, তবে দালালের খপ্পরে পরে অধিক খরচ করতে হবে না।
বর্তমানে অনলাইনে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা খুবই সহজ। আপনি আপনার ফোন বা কম্পিউটার থেকে নিজেই নিজের বাসায় বসে প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। পূর্বে আবেদনের পর পাসপোর্ট হাতে পেতে অনেকটা সময় লেগে যেত। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা নেই।
এখন আপনি প্রাথমিক আবেদন পূরণ করে কোনরূপ পূর্ব শিডিউল ছাড়াই স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে আবেদন সাবমিট করতে পারবেন। আর ধারণা করা যায়, সবকিছু ঠিক থাকলে মাত্র ১ মাস সময়ের মধ্যেই আপনি আপনার বহুকাঙ্খিত পাসপোর্টটি হাতে পেয়ে যাবেন।
আজকের এই আর্টেকেলে আমরা ২০২৩ সালে পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। পাশাপাশি একটি সফল আবেদন করার জন্য আপনাকে কি কি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং কি কি কাগজপত্র লাগবে, তাও উল্লেখ করবো। আশা করি সম্পূর্ণ আলোচনা আপনার জন্য বিশেষ ফলপ্রসূ হবে।
ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম
সরকারি বিভিন্ন কাজ ডিজিটালাইজড করার ফলে এখন ই-পাসপোর্ট করার নিয়মও অনেক সহজ হয়ে গেছে। আপনি এখন ঘরে বসে নিজে নিজেই পার্সপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রথমত E-Passport Online Registration Portal এ প্রবেশ করুন। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই Apply online নামে একটি বাটন দেখতে পাবেন। এটিতে ক্লিক করলেই আপনার আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগবে?
সাধারণ পাসপোর্ট এবং ই-পাসপোর্ট উভয়েরই তিন ধরনের ডেলিভারি আছে। আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর থেকে নির্ধারিত কর্মদিবস পর ই-পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যায়। এগুলো হচ্ছে:
১. Regular: ১৫ কর্মদিবস
২. Express: ৮ কর্মদিবসে
৩. Super Express: দুই কর্মদিবস
উল্লেখ্য, দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ২ কর্মদিবসের মধ্যে সুপার এক্সপ্রেস পাসপোর্ট প্রদান করা হয়।
সকল পাসপোর্টের খরচ এক নয়। ডেলিভারির সময়, পাসপোর্টের পৃষ্ঠা এবং মেয়াদের সময়সীমার ওপর পাসপোর্টের খরচ নির্ভর করে। যেমন:
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
- Regular: ৪ হাজার ২৫ টাকা
- Express: ৬ হাজার ৩২৫ টাকা
- Super Express: ৮,৬২৫ টাকা
৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
- Regular: ৫ হাজার ৭৫০ টাকা
- Express: ৮ হাজার ৫০ টাকা
- Super Express: ১০ হাজার ৩৫০ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
- Regular: ৬ হাজার ৩২৫ টাকা
- Express: ৮ হাজার ৬২৫ টাকা
- Super Express: ১২ হাজার ৭৫ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি ফি
- Regular: ৮ হাজার ৫০ টাকা
- Express: ১০ হাজার ৩৫০ টাকা
- Super Express: ১৩ হাজার ৮০০ টাকা
টাকা জমা দেবেন কোথায়?
ই-পাসপোর্টের আবেদনের অনলাইন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ি ফি প্রদান করতে হয়। সরকারি ওয়েবসাইটে অনলাইন এবং ব্যাংক উভয় পেমেন্টের কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে অনলাইন পেমেন্ট বন্ধ রয়েছে।
তাই সোনালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়াতে স্বশরীরে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে। ব্যাংক ডিপোজিট ফর্মে আবেদনকারীর নাম এবং ই-পাসপোর্টে দেয়া আবেদনকারীর নাম অভিন্ন হতে হবে।
এ সময় আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপির প্রয়োজন হতে পারে। পাশাপাশি অনলাইনে আবেদনের প্রিন্ট কপিটিও সাথে নিয়ে যাবেন।
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে?
অনলাইনে ই-পাসপোর্টের প্রাথমিক আবেদনের জন্য কোন কাগজপত্র লাগবে না। তবে প্রাথমিক আবেদন সম্পন্ন হলে নিচে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো নিয়ে স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে স্ব-শরীরে উপস্থিত হতে হবে।
- অনলাইন আবেদনের প্রিন্ট কপি
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- ব্যাংকের ফি জমা দেওয়ার রশিদ
তবে সকল ক্ষেত্রেই মনে রাখতে হবে যে, জিজ্ঞাসিত সকল তথ্য সঠিক দিতে হবে। কেননা পুলিশ ভেরিফিকেশনে আপনার দেওয়া তথ্যের ব্যতিক্রম পাওয়া গেলে পাসপোর্ট পেতে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ বিষয়টি সাবধানতার সাথে হ্যান্ডেল করতে হবে।
Discussion about this post