পেশার রূপ বদল ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ২য় অধ্যায় সমাধান : মানুষ জন্মের পর থেকেই প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো কাজ করে চলছে। কিন্তু সব কাজকে পেশা বলা যায় না। মূলত জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ যে কাজ করে থাকে তাই পেশা হিসেবে বিবেচিত হয়। যেমন- চাকরি, ব্যবসায়, পোশাক তৈরি, কৃষিকাজ, রিকশা চালানো ইত্যাদি জীবিকা নির্বাহের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত হওয়ায়, এ গুলো পেশা হিসেবে গণ্য হবে।
দৈনন্দিন জীবনযাপন সহজ, সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে প্রত্যেক পেশারই রয়েছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশাল অবদান। পেশার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, প্রযুক্তির আবির্ভাব, প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, চাহিদার পরিবর্তন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিল্পায়ন প্রভৃতি কারণে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে মানুষের পেশার পরিবর্তন হচ্ছে।
পেশার রূপ বদল ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ২য় অধ্যায় সমাধান
মানুষ পূর্বের পেশা ছেড়ে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন পেশায় পেশার এরূপ পরিবর্তনকে পেশার রূপ বা ধরন পরিবর্তন বলা হয়। যেমন- টাইপরাইটারের পরিবর্তে কম্পিউটার ব্যবহার, গরুর গাড়ির পরিবর্তে অটোরিকশা ও সিএনজি, ঢেঁকির পরিবর্তে মেশিনে চাল ভাঙানো, তেল উৎপাদনের কাজে ঘানির পরিবর্তে মেশিন ব্যবহার ইত্যাদি।
বর্তমানে মানুষের প্রায় সকল কাজই করা যাচ্ছে প্রযুক্তির সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। তাই প্রযুক্তির এ বিপ্লবের কারণে অদূর ভবিষ্যতে এমন কিছু কাজের উদ্ভব হতে পারে, যা সৃষ্টি করবে নতুন পেশা। যার ফলে ভবিষ্যতেও মানুষ বর্তমানে অনেক পেশা ছেড়ে যুক্ত হবে নতুন পেশায়।
অভিজ্ঞতা-১ (দলগত কাজ) মূল বই: পৃষ্ঠা ২৩
ফিরে দেখা : শিক্ষকের নির্দেশনা মোতাবেক দলগত আলোচনার মাধ্যমে আমাদের চারপাশে আমরা যেসব পেশার মানুষের দেখা পাই তাদের কাজ বা পেশাগুলোর একটি তালিকা তৈরি করি। কাজটির জন্য নিচের বক্সটি ব্যবহার করি, প্রয়োজনে আরও ঘর যোগ করি। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ২৩)
উত্তর : আমার নাম আনিসুর রহমান, আমার বাড়ি ময়মনসিংহের খুরশিদ মহল গ্রামে। আমাদের এলাকায় বিভিন্ন পেশায় মানুষ বসবাস করেন। সবাই আমাদের গুরুজন। আমরা ৬ জন সহপাঠী মিলে প্রত্যেক পেশার প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমাদের এলাকায় কোন কোন পেশায় মানুষ থাকেন তার একটি তালিকা তৈরি করেছি। তালিকাটি নিচে উল্লেখ করা হলো-
কৃষক : জমি চাষ করেন।
ইলেকট্রিশিয়ান : বিদ্যুৎসংক্রান্ত কাজ করেন।
কামার : দা, কুড়াল ইত্যাদি তৈরি করেন।
কুমার : মাটির হাঁড়ি পাতিল তৈরি করেন।
জেলে : মাছ ধরেন।
দর্জি : কাপড় সেলাই করেন।
গোয়ালা : দুধ দোহন করেন।
তাঁতি : কাপড় বুনেন।
হকার : পত্রিকা বিলি করেন।
কাঠমিস্ত্রি : কাঠের আসবাবপত্র তৈরি করেন।
শিক্ষক : পাঠদান করেন।
ডাক্তার : চিকিৎসা সেবা দান করেন।
স্বর্ণকার : গহনা তৈরি করেন।
ডাকপিয়ন : চিঠিপত্র বিলি করেন।
নাপিত : চুল কাটেন।
চালক : গাড়ি চালনা করেন।
পরিচ্ছন্ন কর্মী : বাজার ও রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন।
মুচি : জুতা সেলাই করেন।
ধোপা : কাপড় ধৌত করেন।
রাজমিস্ত্রি : দালানকোঠা তৈরি করেন।
স্থপতি : স্থাপনার পরিকল্পনা, নকশা ও নির্মাণ ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত।
উকিল : আইনি সহায়তা করেন।
ব্যাংকার : ব্যাংকিং সেবা প্রদান করেন।
নার্স : সেবাদান করেন।
ব্যবসায়ী : পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করেন।
সাংবাদিক : সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার করেন।
প্রকৌশলী : প্রযুক্তিগত উন্নয়নসাধন করেন।
অভিজ্ঞতা-২ (দলগত কাজ) মূল বই: পৃষ্ঠা ২৭
(ক) কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতসমূহের বর্ণনার আলোকে বক্স ২.১ এর তালিকার পেশা বা কাজগুলোকে কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতভুক্ত কর।
(খ) তোমার এলাকার পেশা ছাড়াও কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য পেশা বা কাজের নামও ছক ২.১ এ যুক্ত কর। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ২৭)
উত্তর : আমরা ৬ জন সহপাঠী মিলে বক্স ২.১ এর তালিকায় উল্লিখিত পেশা বা কাজগুলো এবং বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য পেশা বা কাজগুলোকে কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতভুক্ত করেছি। নিচে ছকাকারে এর তালিকা উপস্থাপন করা হলো- (বিশেষ দ্রষ্টব্য: ছকটি পিডিএফ উত্তরমালায় দেখানো হয়েছে)
অভিজ্ঞতা-৩ (দলগত কাজ) মূল বই: পৃষ্ঠা ২৯
ছক ২.১ এর মাধ্যমে তোমরা দলগতভাবে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের পেশা বা কাজের তালিকা প্রণয়ন করেছ। এবার গত ২০ বছরে এসব পেশা বা কাজের কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে এবং গত ২০ বছরে কোন কোন পেশা বা কাজের চাহিদা কমেছে বা বেড়েছে তা বের কর। গত ২০ বছরে কোন কোন পেশা বা কাজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে তারও তালিকা তৈরি কর। এর জন্যে তোমরা তোমাদের পরিবার বা এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করতে পার অথবা ইন্টারনেট, পত্রিকা বা অন্যকোনো বইয়ের সহায়তা নিতে পার। (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ২৯)
উত্তর : আমরা সহপাঠীরা মিলে পরিবারের সাথে এবং অভিজ্ঞ আত্মীয়ের সাথে আলাপ করেছি। এছাড়া ইন্টারনেটেও এ সম্পর্কে ভিডিও দেখেছি। পরবর্তীতে আমরা সবাই মিলে অর্থনৈতিক খাতওয়ারি পেশার বা কাজের কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে তার তালিকা প্রস্তুত করেছি। নিচে ছকাকারে একটি তালিকা উপস্থাপন করা হলো-
অভিজ্ঞতা-৪ (দলগত কাজ) মূল বই: পৃষ্ঠা ৩১
বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতের শ্রমের চাহিদা সময়ের সাথে পরিবর্তনের শতকরা হার গ্রাফে তোমরা দেখেছ (লেখচিত্রে)। এবার দলগতভাবে আলোচনা করে দেশীয় শ্রমবাজারে এই খাতগুলোর পরিবর্তনের ধারা খুঁজে বের কর- (জীবন ও জীবিকা বই: পৃষ্ঠা ৩১)
- কৃষি খাতের পরিবর্তনের ধারা
- শিল্প খাতের পরিবর্তনের ধারা
- সেবা খাতের পরিবর্তনের ধারা
- পরিবর্তনের ধারায় কৃষি ও সেবা খাতের কর্মসংস্থানের তুলনামূলক অবস্থা
পেশার রূপ বদল ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ২য় অধ্যায় সমাধান
উত্তর : আমরা ক্লাসের সহপাঠীরা চারটি দলে ভাগ হয়ে একেক দল একেকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করেছি। এক্ষেত্রে শ্রেণিশিক্ষক প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংকেত ও ধারণা দিয়েছে। আমরা সবাই আলোচনায় সক্রিয় ছিলাম। নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
কৃষি খাতে পরিবর্তনের ধারা : পূর্বে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের সাথে যুক্ত ছিল। তখন কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার তুলনামূলক কম হওয়ার কারণে কায়িক বা শ্রমের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। অতীতে কৃষকরা লাঙল-জোয়াল, মই ও হালের গরু বা মহিষ দিয়ে জমি চাষ করত।
হাত দিয়ে ধান রোপণ করত, কাঁচি দিয়ে ফসল কাটত, কৃষিতে সেচের কাজে দোন কিংবা সেঁউতি ব্যবহার করতো। এসব কিছু বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে সমান পরিমাণ কাজের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে কম শ্রমিক প্রয়োজন হয়। যেমন- এখন জমি চাষে পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়, বর্তমানে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দ্বারা ধান রোপণ করা হয়, রিপার যন্ত্র দ্বারা ফসল কাটা হয়, সেচ পাম্প দ্বারা জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়। ফলে কৃষিকাজে প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে একজন কৃষি শ্রমিককে কৃষি মেশিন চালনায় দক্ষ হতে হয়।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি আরও আধুনিক হয়েছে। যেমন- কম্বাইন্ড হারভেস্টর দ্বারা ফসল কেটে মাড়াই করে বস্তাবন্দী অথবা ট্রাক ভর্তি করা যাচ্ছে। চীনের মতো দেশে ড্রন ব্যবহার করে সেচ প্রদান করে থাকে। প্রতিকূল পরিবেশে উৎপাদনযোগ্য ও উন্নতমানের বীজ তৈরির জন্য জিন প্রযুক্তিসহ আরও নানা ধরনের প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির উদ্ভব হচ্ছে।
শিল্প খাতের পরিবর্তনের ধারা : একসময় শিল্প খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার কম ছিল। শিল্প ছিল কায়িক শ্রমনির্ভর। যেমন- আগে হাতে ঘোরানো মেশিনে কিংবা পায়ে চালিত মেশিনে কাপড় সেলাই করা হতো। তখন কোনো ইলেকট্রিক বা অটোমেটিক মেশিন ছিল না। বর্তমানে ইলেকট্রিক বা অটোমেটিক মেশিনে কাপড় সেলাই করা হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে শিল্প খাতে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।
৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ২য় অধ্যায় সমাধান
বড় বড় কারখানায় আধুনিক মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হচ্ছে পোশাক, খাদ্যসামগ্রী, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, ওষুধসহ আরও অনেক কিছু। এমনকি একসময় যেখানে নৌকা তৈরি করাও কঠিন ছিল সেখানে বর্তমানে দেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ে ওঠেছে। সারাবিশ্বে চলমান শিল্পবিপ্লবের ধারা শিল্প উৎপাদনে ব্যাপক প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এনেছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক টেকনোলজির ব্যবহার ভবিষ্যতে শিল্প উৎপাদনের ধারা পাল্টে দেবে এবং উৎপাদনশীলতা আরও বৃদ্ধি করবে। এছাড়া ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও শিল্পপণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অধিকতর ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই শিল্পায়ন ধারার প্রসার ঘটবে।
সেবা খাতের পরিবর্তনের ধারা : আধুনিক প্রযুক্তিগত উন্নয়নসাধনের কারণে সেবা খাতে পেশার ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। শ্রমবাজারে নতুন নতুন পেশার চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। আগে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যাংকিং, অফিসসহ বিভিন্ন সেবা খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার তেমন ছিল না। স্বশরীরে যেয়ে মানুষকে সেবা নিতে হতো। যেমন- কোনোকিছু কম্পোজের প্রয়োজন হলে টাইপরাইটারের কাছে যেতে হতো, কিংবা স্বশরীরে যেয়ে ব্যাংক কার্যদিবসে সেবা নিতে হতো, চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষ হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ওপর নির্ভর করত।
রোগ নির্ণয়ে ছিল না কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি। রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ছিল সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্ল্যাকবোর্ড ও চক ব্যবহার করে শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করত। কিন্তু বর্তমানে সেবার সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার হওয়ায় মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে বহুমুখী উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসে কাজ করে যেকোনো স্থানে তা পাঠাতে সক্ষম হচ্ছে।
ফলে সৃষ্টি হচ্ছে ফিল্যান্সিংয়ের মতো পেশা। মানুষ ঘরে বসে ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে। ডিজিটাল লেনদেনের কারণে এখন ব্যাংকে যেয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হয় না। মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় মানুষ যেকোনো স্থান থেকে বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ, অর্থ স্থানান্তরসহ অন্যান্য সেবা পাচ্ছে। ফলে ইন্টারনেট, মোবাইলভিত্তিক বিভিন্ন ব্যবস্থার কর্মসংস্থান হচ্ছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক, আধুনিক হাসপাতাল, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে। এভাবে প্রযুক্তির উন্নয়নে শ্রমবাজারে নতুন নতুন পেশার চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে জেনেটিক নার্স, কম্পিউটার ফরেনসিক ইনভেস্টিগেটর, অনলাইন চ্যাট সাপোর্ট, ডেটা এন্ট্রি ও এডমিন সাপোর্টসহ শ্রমবাজারে বিভিন্ন পেশার চাহিদা সৃষ্টি হবে।
পরিবর্তনের ধারায় কৃষি ও সেবা খাতের কর্মসংস্থানের তুলনামূলক অবস্থা : কৃষি ও সেবা উভয় খাতের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে কায়িক শ্রম কমেছে। বিশেষ করে পূর্বে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের সাথে যুক্ত ছিল। কৃষিকাজে যেহেতু আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কম ছিল তাই অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন ছিল।
যদিও কৃষিকাজে প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে ও কৃষি খাতের আধুনিকায়নে বেশ কিছু নতুন পেশা সৃষ্টি হয়েছে তারপরেও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তির আধুনিকতার ছোঁয়ায় কৃষিকাজে কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে কৃষিকাজে শ্রমিক ছাড়াও কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কৃষিজ উৎপাদিত ফসল দেশের বাজারে চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। কৃষি তথ্য সেবা, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান কৃষির উন্নয়নে কাজ করছে, যা একসময় ছিল। সুতরাং কৃষি খাতেও শ্রমবাজারে নতুন নতুন পেশার চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে।
তবে একটি দেশ যখন প্রযুক্তি খাতে উন্নতিসাধন করে, অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে যায়, তখন শ্রমশক্তিতে কৃষি অবদান কমে এবং সেবা খাত সম্প্রসারিত হয়। এছাড়া অনেক মানুষ শহরমুখী হওয়ায় কৃষিকাজের পেশা ছেড়ে সেবা খাতে নিজেকে নিযুক্ত করছে। এছাড়া তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়নে সেবা খাতে কাজের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। অতীতের তুলনায় শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, অফিস, ব্যাংকিং জাতীয় সেবা খাতের চাহিদা অনেক বেড়েছে। একইসাথে বেড়েছে সংশ্লিষ্ট পেশার চাহিদা।
যার ফলে মানুষ নতুন নতুন কাজে দক্ষতা অর্জন করে সেবামূলক খাতের পেশায় নিজেকে যুক্ত করছে। এছাড়া সেবা খাতে আয় ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বেশি হওয়ায় মানুষ কৃষি খাতে নিজেকে নিযুক্ত করার চেয়ে সেবা খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির উন্নয়ন যত বেশি হবে সেবা খাতের শ্রমবাজার আরও সম্প্রসারিত হবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তাই শ্রমবাজারে এই খাতে পেশার চাহিদা ও যোগান উভয়ই বাড়বে।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা সব অধ্যায়ের সমাধান
উপরে দেওয়া ‘উত্তরমালা’ অপশনে ক্লিক করে পেশার রূপ বদল ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ২য় অধ্যায় সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post