পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৫ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : প্রত্যেকটি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কিছু নিয়মকানুন থাকে। সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য, শাসকের ক্ষমতা, নাগরিক ও শাসকের ক্ষমতা এবং নাগরিক ও শাসকের সম্পর্ক কিরূপ হবে তা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকে।
আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ কীভাবে গঠিত হবে, এদের কোনটার কী ক্ষমতা হবে, জনগণ রাষ্ট্র প্রদত্ত কী কী অধিকার ভোগ করবে, তাদের কী কী কর্তব্য পালন করতে হবে এসব বিষয় সংবিধানে উল্লেখ থাকে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের গুরুত্ব অপরিসীম।
পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৫ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. সংবিধান কী?
উত্তর: সংবিধান হলো রাষ্ট্রের দর্পণ। রাষ্ট্র পরিচালনার নিয়মাবলির সমষ্টিকে সংবিধান বলে। এ্যারিস্টটলের ভাষায় “সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্রের এমন এক জীবন পদ্ধতি যা রাষ্ট্র স্বয়ং বেছে নিয়েছে।” সংবিধানকে রাষ্ট্রের পরিচালনার মৌলিক দলিল বলা হয়।
২. উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা কর।
উত্তর: যেদেশের সংবিধান যত উন্নত, সেদেশও সে জাতি তত উন্নত। উত্তম সংবিধান লিখিত ও সুস্পষ্ট। এ সংবিধান সংক্ষিপ্ত এবং সংশোধনের দিক থেকে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে, যাতে জাতীয় প্রয়োজনে সংশোধন করা যায়। এ সংবিধান মৌলিক অধিকারের সংযোজন। এখানে জনগণের কাক্সিক্ষত দলিল হিসেবে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে। উত্তম সংবিধান জনগণের চাহিদা, বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাছাড়া উত্তম সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি উল্লেখিত থাকে।
৩. বাংলাদেশের সংবিধান তৈরির ইতিহাস লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সংবিধান তৈরির জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান প্রণয়ন করে গণপরিষদে উত্থাপন করে। গণপরিষদে ১৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দেওয়ার পর পরিমার্জিত হয়ে ৪ নভেম্বর ১৯৭২ গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে তা কার্যকর হয়।
৪. বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মূল বিষয়বস্তু লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী গৃহীত হয় ১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এ সংশোধনী অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। এছাড়াও এ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থায় যে উপরাষ্ট্রপতির পদ রাখা হয়েছিল, তা বিলুপ্ত করা হয়।
৫. রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: প্রত্যেকটি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কিছু নিয়মকানুন থাকে। সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য, শাসকের ক্ষমতা, নাগরিক ও শাসকের ক্ষমতা এবং নাগরিক ও শাসকের সম্পর্ক কিরূপ হবে তা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকে। আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ কীভাবে গঠিত হবে, এদের কোনটার কী ক্ষমতা হবে, জনগণ রাষ্ট্র প্রদত্ত কী কী অধিকার ভোগ করবে, তাদের কী কী কর্তব্য পালন করতে হবে এসব বিষয় সংবিধানে উল্লেখ থাকে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের গুরুত্ব অপরিসীম।
৬. বাংলাদেশ এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র কেন?
উত্তর: বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মতো কোনো অঙ্গরাজ্য বা প্রদেশ নেই। জাতীয় পর্যায়ে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা সমগ্র দেশ পরিচালিত হয়। আর তাই বাংলাদেশ এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র।
৭. বাংলাদেশের আইনসভার গঠন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাংলাদেশের আইনসভা এককক্ষবিশিষ্ট। এটি সার্বভৌম আইন প্রণয়নকারী সংস্থা। আর এ সংস্থার নাম জাতীয় সংসদ। বর্তমানে জাতীয় সংসদ ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। তাছাড়া সংসদের মেয়াদ ৫ বছর।
৮. বাংলাদেশের সংবিধানের কাঠামো ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাংলাদেশের সংবিধান একটি লিখিত দলিল। এ দলিলে ১৫৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এটি ১১টি ভাগে বিভক্ত। তাছাড়া বাংলাদেশ সংবিধানে একটি প্রস্তাবনাসহ ৪টি তফসিল রয়েছে।
৯. অলিখিত সংবিধানের ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: যে সংবিধানের অধিকাংশ বিষয় অলিখিত থাকে তাকে অলিখিত সংবিধান বলে। এ ধরনের সংবিধান প্রথা, সামাজিক রীতিনীতি চিরাচরিত নিয়ম ও আচার-অনুষ্ঠানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। যেমন: ব্রিটিশ সংবিধান অলিখিত সংবিধান।
১০. “ব্রিটিশ সংবিধান তৈরি হয়নি, গড়ে উঠেছে”—কেন বলা হয়?
উত্তর: সংবিধান গড়ে ওঠার অন্যতম পদ্ধতি হলো ক্রমবিবর্তন। ব্রিটেনের সংবিধান ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে লোকাচার ও প্রথার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ ব্রিটিশ সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়নি; বরং ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে। আর তাই বলা হয়, ব্রিটিশ সংবিধান তৈরি করা হয়নি, গড়ে উঠেছে।
আরও দেখো—পৌরনীতি ও নাগরিকতা অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৫ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য এই অধ্যায় থেকে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো—প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্নের জন্য উপরের লিংকটি ভিজিট করো।
Discussion about this post