পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৯ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : র্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা খাদ্যভিত্তিক দারিদ্যের শিকার। মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় ২,১২২ কিলো ক্যালরি গ্রহণ করার জন্য পর্যাপ্ত খাবার কেনার সম্পদ তাদের কাছে নেই। খাদ্যে ক্যালরি ঘাটতি ছাড়াও এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য সুষম নয়। তাদের প্রতি বেলার খাদ্যেই শস্যের প্রাধান্য রয়েছে।
তারা প্রতিদিন যে ক্যালরি গ্রহণ করে, তার ৮০ শতাংশই আসে শস্য হতে, যার মধ্যে চালই প্রধান। চর্বি, তেল এবং প্রোটিনযুক্ত খাদ্য তারা সামান্যই গ্রহণ করে। এই ধরনের সমতাহীন খাদ্যের বড় শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা। পুরুষের তুলনায় নারী শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজন রয়েছে।
পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৯ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ বর্ণনা কর।
উত্তর: বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ আর্থসামাজিক নিরাপত্তার অভাব। আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক মনে করেন যে, পুত্র সন্তান বৃদ্ধ পিতামাতাকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। অধিক নিরাপত্তার আশায় তারা একাধিক পুত্র সন্তান কামনা করেন। ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
২. খাদ্যনিরাপত্তা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: খাদ্যনিরাপত্তা বলতে কেবল খাদ্যপ্রাপ্তিকে বোঝায় না। খাদ্যের প্রাপ্যতা, খাদ্য ক্রয় করার ক্ষমতা এবং খাদ্যের পুষ্টি-এই তিনটি বিষয়কেই বোঝানো হয়। অবশ্য বাংলাদেশের খাদ্যে যেহেতু খাদ্যশস্যের, বিশেষ করে চালের প্রাধান্য রয়েছে, সেহেতু চালের সরবরাহ এবং মূল্যের স্থিতিশীলতাই খাদ্যনিরাপত্তা অর্জনের মূল বিষয়।
৩. পরিবেশগত দুর্যোগের কারণগুলো বর্ণনা কর।
উত্তর: পরিবেশগত দুর্যোগের কারণগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো:
পরিবেশকে ঘিরেই মানুষ বেড়ে উঠেছে। আবার মানুষের কারণে কোনো না কোনোভাবে প্রতিনিয়তই পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এগিয়ে নিতে একের পর এক গাছপালা কেটে, বন উজাড় করে মানুষ শিল্প কারখানা গড়ে তুলেছে। এর ফলে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান যেমন: মাটি, বায়ু, পানি দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের আরেক কারণ হলো- বনাঞ্চল হ্রাস ও এর অবক্ষয়।
৪. নিরক্ষরতা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: নিরক্ষরতা বাংলাদেশের একটি অন্যতম নাগরিক সমস্যা। লেখাপড়া না জানার কারণে নিরক্ষর ব্যক্তি রাষ্ট্র ও সমাজের উপকারে আসে না বরং সমাজের বোঝাস্বরূপ। বাংলাদেশের অধিকাংশ লোকই গ্রামে বাস করে। নিরক্ষর বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝায়, যার কোনো অক্ষর জ্ঞান নেই, এমনকি যিনি তার নাম পর্যন্ত লিখতে পারেন না। গ্রামের বহু লোকই নিরক্ষর।
৫. সুশাসনের অভাবে সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: অপরাধীকে খুঁজে বের করে শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক চাপের কারণে প্রশাসন অনেক সময় নীরব ভূমিকা পালন করে। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে। যেমন: দুর্বল প্রশিক্ষণ, পুরনো অস্ত্র, পুলিশ ও জনসংখ্যার ভারসাম্যহীন অনুপাত, যা সন্ত্রাস দমনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকাকে দুর্বল করে। এসব কারণে অনেক দুর্বল সন্ত্রাসীও শক্তি প্রদর্শনে সক্ষম হয়। তাছাড়া উন্নত প্রশিক্ষণ না পাওয়ার কারণে অনেক সময় বিদ্যমান গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দ্বারা সমকালীন সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না।
৬. বাংলাদেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা খাদ্যভিত্তিক দারিদ্যের শিকার। মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় ২,১২২ কিলো ক্যালরি গ্রহণ করার জন্য পর্যাপ্ত খাবার কেনার সম্পদ তাদের কাছে নেই। খাদ্যে ক্যালরি ঘাটতি ছাড়াও এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য সুষম নয়। তাদের প্রতি বেলার খাদ্যেই শস্যের প্রাধান্য রয়েছে। তারা প্রতিদিন যে ক্যালরি গ্রহণ করে, তার ৮০ শতাংশই আসে শস্য হতে, যার মধ্যে চালই প্রধান। চর্বি, তেল এবং প্রোটিনযুক্ত খাদ্য তারা সামান্যই গ্রহণ করে। এই ধরনের সমতাহীন খাদ্যের বড় শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা। পুরুষের তুলনায় নারী শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজন রয়েছে।
৭. নিরক্ষরতা দূরীকরণে সরকার ও নাগরিকের করণীয় কী?
উত্তর: নিরক্ষরতা জাতীয় সমস্যা। একে মোকাবিলা করা সবার দায়িত্ব। নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে সরকার ও নাগরিকের ভূমিকা সমান গুরুত্বপূর্ণ। দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা নিরক্ষর। এই বিশাল নিরক্ষর জনসমষ্টিকে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন করা একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। শিক্ষিত সকল মানুষকে এ দায়িত্ব নিতে হবে। আর যারা নিরক্ষর, তাদের নিজেদেরকেও লেখাপড়া শিখতে আগ্রহী হতে হবে। সকলে সম্মিলিতভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে পারলে জাতীয় উন্নয়ন অর্জন করা সম্ভব হবে।
৮. নিরক্ষরতা পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর: সরকারের প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৯৯৭ সালে ‘সম্পূর্ণ সাক্ষরতা আন্দোলন’ (Total Literacy Movement) শুরু করে। সম্পূর্ণ সাক্ষরতা আন্দোলনের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালের মধ্যে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে নিরক্ষরতার হার খুবই বেশি। এর মূল কারণ তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা। দরিদ্র শ্রেণির সন্তানেরা মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও লেখাপড়া করতে পারে না। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী টাকার অভাবে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। এর মধ্যেও বর্তমানে ধনাঢ্য ব্যক্তি অথবা বেসরকারি ব্যাংক অথবা সংস্থা অর্থ সাহায্য দিয়ে দরিদ্র অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে অবদান রাখছে।
৯. খাদ্য নিরাপত্তা কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: খাদ্যনিরাপত্তা বলতে যেমন খাদ্য প্রাপ্তিকে বোঝায় তেমনি খাদ্যের প্রাপ্যতা, খাদ্য ক্রয় করার ক্ষমতা এবং খাদ্যের পুষ্টিÑ এই তিনটি বিষয়কেও বোঝানো হয়। অবশ্য বাংলাদেশের খাদ্যে যেহেতু খাদ্যশস্যের, বিশেষ করে চালের প্রাধান্য রয়েছে, সেহেতু চাউলের সরবরাহ এবং মূল্যের স্থিতিশীলতাই খাদ্যনিরাপত্তা অর্জনের মূল বিষয়।
১০. রাজনৈতিক সন্ত্রাস কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোনো কোনো রাজনৈতিক দল, সংগঠন বা গোষ্ঠীবিশেষ রাজনীতির নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অবলম্বন করে। ধর্মের নামে এদের কাউকে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে দেখা যায়। শ্রেণি সংগ্রামের নামেও কোনো কোনো দল বা সংগঠন সহিংস তৎপরতায় লিপ্ত হয়। আবার দেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায়ও কখনো কখনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে দেখা যায়। এসবই রাজনৈতিক সন্ত্রাস।
আরও দেখো—পৌরনীতি ও নাগরিকতা অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৯ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য এই অধ্যায় থেকে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো—প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্নের জন্য উপরের লিংকটি ভিজিট করো।
Discussion about this post