শিক্ষার্থীরা, এবছর যারা মানবিক শাখা হতে যুক্তিবিদ্যা পরীক্ষা দিতে যাচ্ছো, কোর্সটিকায় আজ তোমাদের জন্য পৌরনীতি ও সুশাসন অনুধাবন সাজেশন প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করব। তোমাদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ভিত্তিতে এ প্রশ্নগুলো তোমরা উত্তরসহ পেয়ে যাবে। যা তোমরা উত্তরসহ পিডিএফ হ্যান্ড নোট আকারে সংগ্রহ করতে পারবে।
পৌরনীতি ও সুশাসন অনুধাবন সাজেশন
১ম পত্রের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস থেকে প্রশ্ন
১. শব্দগত অর্থে পৌরনীতি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : শব্দগত অর্থে পৌরনীতি হলো নগররাষ্ট্রে বসবাসরত নাগরিকদের আচরণ ও কার্যাবলি সংক্রান্ত বিজ্ঞান।
পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Civics শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে দুটি ল্যাটিন শব্দ- Civis ও Civitas থেকে। Civis অর্থ ‘নাগরিক’, আর Civitas অর্থ ‘নগররাষ্ট্র’। সুতরাং উৎপত্তিগত অর্থে নগররাষ্ট্র ও নগরবাসী সম্পর্কিত রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে জ্ঞানের যে শাখা গড়ে উঠেছে তাই পৌরনীতি।
সংস্কৃত ভাষায় নগরকে ‘পুর’ বা ‘পুরী’ এবং নগরের অধিবাসীদের ‘পুরবাসী’ বলা হয়। আর পৌর হচ্ছে ‘পুর’ এর বিশেষণ যার অর্থ পুর বা নগর সংক্রান্ত বিষয়। প্রাচীন গ্রিসের এথেন্স, স্পার্টা ইত্যাদি ছিল এক একটি নগররাষ্ট্র। তবে বিশ্বের বর্তমান রাষ্ট্রগুলো প্রাচীন গ্রিসের ‘নগররাষ্ট্রের’ (City-State) মতো ছোট ও সরল নয়।
২. আইনের শাসন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আইনের শাসন বলতে আইনের চোখে সবার সমান হওয়া এবং সব কিছুর ওপরে আইনের প্রাধান্যের স্বীকৃতিকে বোঝায়। আইনের শাসনের অর্থ হচ্ছে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি এবং ছোট বড় নির্বিশেষে সবাই আইনের কাছে সমান। যে কেউ আইন ভঙ্গ করলে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে— এটাই আইনের শাসনের বিধান। আইনের শাসন ব্যক্তির সাম্য ও স্বাধীনতার রক্ষাকবচ।
৩. দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : দুটি কক্ষ বা পরিষদ নিয়ে গঠিত আইনসভাকে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বলে।
এ ধরনের আইনসভায় ‘নিম্নকক্ষ’ এবং ‘উচ্চকক্ষ’ নামে পৃথক দুটি পরিষদ থাকে। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নিম্নকক্ষ গঠিত হয় এবং তা তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষমতার অধিকারী। বিশ্বের বেশিরভাগ আইনসভার উচ্চকক্ষই পরোক্ষভাবে নির্বাচিত বা মনোনীত আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গ নিয়ে গঠিত হয়। উচ্চকক্ষ আইনসভার নিম্নকক্ষের ক্ষমতা ও কাজের মধ্যে ভারসাম্য রাখে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, কানাডা, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা রয়েছে।
৪. ধর্ম কীভাবে আইনের উৎস হিসেবে কাজ করে?
উত্তর : ধর্ম আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
প্রাচীন সমাজব্যবস্থায় ধর্মের একচেটিয়া প্রভাব ছিল এবং মানুষের জীবন অনেকটা ধর্মীয় অনুশাসনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হতো। যেমন- প্রাচীন কালে রোমের আইনকানুন কিংবা মধ্যযুগের নগররাষ্ট্রের আইনকানুন ধর্মের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমানদের ব্যক্তিগত আইন ধর্মকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। ইহুদীদের আইনও ধর্মভিত্তিক।
বর্তমানে ধর্ম ও ধর্মীয় গ্রন্থের আলোকে অনেক আইন প্রণীত হচ্ছে। যেমন- বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক সম্পত্তি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইনটি কুরআন ও হাদীসের আলেকে প্রণীত হয়েছে। আবার হিন্দু বিবাহ, সামাজিক সম্পর্ক ও উত্তরাধিকার আইনগুলো হিন্দুধর্মের বিধি-বিধানের সাথে সংগতি রেখে প্রণীত হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, ধর্ম আইনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
৫. স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ ও অটুট রাখার জন্য কতগুলো পদ্ধতি রয়েছে। এগুলোকে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলা হয়। স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এটি সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথকে সুগম করে। স্বাধীনতা অর্জনের পর তা রক্ষা করাও অত্যন্ত জরুরি।
ব্রিটিশ রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হ্যারল্ড জোসেফ শাস্কি এর মতে, ‘সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা না থাকলে অধিকাংশ ব্যক্তি স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। স্বাধীনতার অনেকগুলো রক্ষাকবচ রয়েছে। যেমন- আইন, সংবিধানে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সামাজিক ন্যায়বিচার, দায়িত্বশীল সরকারব্যবস্থা, সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ইত্যাদি।
৬. তথ্য অধিকার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : তথ্য অধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি মানবাধিকার। রাষ্ট্রের বিধানাবলি মানা সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো বিষয়ে নাগরিকের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে তথ্য অধিকার বলে। আইনানুগ কোনো প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কর্তৃপক্ষের গঠন, উদ্দেশ্য, কার্যাবলি, কর্মসূচি, দাপ্তরিক নথিপত্র, আর্থিক সম্পদের বিবরণ ইত্যাদিকে তথ্য বলা হয়। প্রত্যেক নাগরিকেরই তথ্য জানার এবং জানানোর অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের ৫ এপ্রিল “তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ পাস করে। এ আইনটি সাংবাদিক, গবেষক, মানবাধিকারকর্মী, সমাজসেবকসহ নাগরিক সমাজের উপকারে আসছে এবং কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রশংসা কুড়িয়েছে।
৭. রাজনৈতিক দল বলতে কী বোঝ?
উত্তর : রাজনৈতিক দল হলো কোনো নীতি বা আদর্শের সমর্থনে সংগঠিত সংঘবিশেষ, যা সাংবিধানিক উপায়ে সরকার গঠন ও দেশ পরিচালনার চেষ্টা করে। সাধারণত রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য থাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ, সরকার গঠন ও পরিচালনা, নিজেদের নির্বাচনি অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও সব নাগরিকের কল্যাণের জন্য কাজ করা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে জনগণ রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করে পরোক্ষভাবে শাসন কাজে অংশগ্রহণ করে। তাই রাজনৈতিক দলই হলো প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের প্রাণ।
৮. জনমত গঠনে সংবাদপত্রের ভূমিকা লিখ।
উত্তর : সংবাদপত্র জনমত গঠনের অন্যতম মাধ্যম। সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে জনগণ দেশ-বিদেশের যাবতীয় খবরাখবর জানতে পারে। আবার সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনগণ বিভিন্ন অভাব অভিযোগ ও দাবি-দাওয়া সম্পর্কে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সংবাদপত্র যেমন সরকারের প্রশংসা করে, তেমনি গঠনমূলক সমালোচনাও করে। আর এ সমালোচনার ভয়ে সরকার তার কার্যক্রম পরিচালনায় সংযত থাকে। এজন্যই বলা হয়। প্রেস যেভাবে বলে, জনমত সেভাবে গড়ে ওঠে। তবে মিথ্যা ও বিকৃত সংবাদ পরিবেশন করা উচিত নয়। কেননা, তা সুষ্ঠু জনমত গঠনে সহায়ক নয়।
৯. জাতি রাষ্ট্র বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : জাতীয়তার ভিত্তিতে সৃষ্ট রাষ্টই হচ্ছে জাতি রাষ্ট। সুনির্দিষ্ট ভূ-খণ্ডে স্বশাসনের লক্ষ্যে জাতি রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ জনসমষ্টি যখন অন্যদের থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র মনে করে এবং এজন্য স্বাধীন হতে চায় বা স্বাধীনতা অর্জন করে তখন সেই রাষ্ট্রকেই জাতি রাষ্ট্র বলে। বিপুল জনসংখ্যা ও বিশাল আয়তন হচ্ছে জাতি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। সাধারণত জাতি রাষ্ট্রের নিজস্ব পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত এবং অভিন্ন জাতীয় লক্ষ্য থাকে।
১০. ভাষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐক্য কীভাবে জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি করে?
উত্তর : ভাষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐক্য জাতীয়তাবোধ গঠনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
মানুষের মনের ভাব প্রকাশের প্রধান বাহন হচ্ছে ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি। এগুলোর মাধ্যমে মানুষের ভাবের আদান প্রদান হয়। এ ভাবের আদান প্রদানই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রকৃষ্ট উপায়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে সহায়তা করেছিল। এ থেকেই পরিলক্ষিত হয় ভাষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐক্য মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি করে।
২য় পত্রের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস থেকে প্রশ্ন
১. বঙ্গভঙ্গ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : বঙ্গভঙ্গ বলতে ১৯০৫ সালে বাংলা প্রেসিডেন্সিকে ২ ভাগে বিভক্ত করাকে বোঝায়।
প্রায় ২ লক্ষ বর্গমাইল আয়তনের বাংলা প্রেসিডেন্সিকে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে পূর্ব বঙ্গ ও আসাম এবং বাংলা প্রদেশ নামে ২টি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়। ব্রিটিশ ভারতের তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করেন। যা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।
২. ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ হলো ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের একটি রাজনৈতিক মতবাদ।
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪০ সালের ২২ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিলে সভাপতির ভাষণে মুসলমানদের জন্য একটি স্বতন্ত্র আবাসভূমি গঠনের লক্ষ্যে ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ ঘোষণা করেন। তার মতে, হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ই ধর্মীয় দর্শন, সামাজিক রীতি, জীবন পরিচালনা, সাহিত্য, ইতিহাস প্রভৃতি ক্ষেত্রে দুটি স্বতন্ত্র অবস্থানে রয়েছে। সুতরাং জাতীয়তার মানদণ্ডে তারা পৃথক দুটি জাতি। তার এই মতবাদটি ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ নামে পরিচিত।
৩. ভাষা আন্দোলন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ভাষা আন্দোলন বলতে বোঝায় বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার দাবিতে সংঘটিত গণআন্দোলন।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পরপরই দেশটির রাষ্ট্রভাষা কি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ঘোষণা করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র- জনতা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে এবং রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিক, সফিকসহ আরো অনেকে শহিদ হন। এ আন্দোলনই ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত।
৪. ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : পাকিস্তানি শাসকচক্রের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালে সংঘটিত বাংলার মানুষের তীব্র আন্দোলনই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। ১৯৬৮ সালের নভেম্বরের ছাত্র অসন্তোষকে কেন্দ্র করে এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।
সব শ্রেণির বাঙালির মধ্যে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের অভিন্ন দাবি ছিল স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পদত্যাগ। তবে শিল্প শ্রমিক এবং নিম্ন ও মধ্য আয়ের পেশাজীবীদের কাছে এটি ধীরে ধীরে পাকিস্তানীদের শোষণ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এ অভ্যুত্থান ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর সর্ববৃহৎ গণজাগরণ। এর মধ্য দিয়ে আইয়ুব খান সরকারের পতন ঘটেছিল।
৫. প্রজাতন্ত্র বলতে কি বোঝায়?
উত্তর : যে শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন তাকে প্রজাতন্ত্র বলে।
প্রজাতান্ত্রিক সরকার গণতান্ত্রিক সরকারের একটি রূপ। তবে সব প্রজাতন্ত্রে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের পদ্ধতি একইরূপ নয়। কোনো কোনো প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকে।
৬. গণপরিষদ গঠন করা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গণপরিষদ গঠন করা হয়।
সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ জারি করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, এ আদেশ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর হবে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের ১৬৯ জন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ জন সদস্য, সর্বমোট ৪৬৯ জন সদস্যের মধ্য থেকে ৪০৩ জন সদস্য নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হয়। এর মধ্যে ৪০০ জন ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় একজন ন্যাপ (মোজাফফর) এবং অন্য ২ জন ছিলেন স্বতন্ত্র।
৭. মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের আয় ব্যয়ের ওপর আইনসভার পূর্ণনিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। এ নিয়ন্ত্রণকে কার্যকর করার জন্য এমন এক কর্তৃপক্ষ থাকা প্রয়োজন যা স্বাধীনভাবে মজুতকৃত অর্থব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষা করে এর রিপোর্ট আইনসভায় পেশ করবে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে নিয়োগ দান করেন। এটি একটি সাংবিধানিক পদ।
৮. সরকারি কর্ম-কমিশনের গঠন লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশ সংবিধানের ১৩৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন সভাপতি ও আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে সেরূপ অন্যান্য সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন গঠিত হবে। রাষ্ট্রপতির ৫৭নং অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য সংখ্যা সভাপতিসহ অনুরূপ ৬ জন এবং অনূর্ধ্ব ১৫ জন নির্ধারিত করা হয়। সংবিধানের ১৩৮ (১) অনুচ্ছেদ মোতাবেক কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং ১৩৯ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যরা ৫ বছর অথবা ৬৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্ব স্ব পদে বহাল থাকবেন।
৯. অটিজম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : অটিজম মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের একটি জটিল প্রতিবন্ধকতা, যা শিশুর জন্মের এক বৎসর ছয়মাস হতে তিন বৎসরের মধ্যে প্রকাশ পায়। এ ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাধারণত শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা বা ত্রুটি থাকে না। এমনকি তাদের চেহারা, অবয়ব অন্যান্য সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মতোই থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান করা, কম্পিউটার চালনা বা গাণিতিক সমাধানসহ অনেক জটিল বিষয়ে এ ধরনের ব্যক্তিরা বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করে থাকে।
১০. বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর : বৈদেশিক নীতি হলো জাতীয় নীতির সেই অংশ, যা বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
১. সবার সাথে বন্ধুত্ব: বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ ঘোষণা করেন।
২. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা: বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা এবং সমতা বজায় রাখা।
শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমরা উত্তরসহ সংগ্রহ করতে পারবে। পৌরনীতি ও সুশাসন অনুধাবন সাজেশন প্রশ্ন উত্তর পেতে প্রতিটি অধ্যায়ের নামের ওপর ক্লিক করো। তাহলেই প্রতিটি অধ্যায়ের আলাদা আলাদা প্রশ্নোত্তর ডাউনলোড করার অপশন পাবে।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post